স্বপ্নসন্ধানী
স্বপ্নসন্ধানী ভারতের কলকাতার একটি বাংলা থিয়েটার দল। এটি ১৯৯২ সালের ২৯ মে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বপ্নসন্ধানী বেশকয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক সম্মানিত হয়েছে। স্বপ্নসন্ধানী, কৌশিক সেনের অভিনয়ে এবং দিকনির্দেশনাটি দ্বারা চিহ্নিত হয়েছে। ২০১৭ সালের,নভেম্বরে পরিবর্তন আনা এবং গ্রুপের সৃজনশীলতা অন্বেষণ করার জন্য কৌশিক সেন দলের নির্দেশনা বন্ধ করে দেন।২০১৮ সাল থেকে দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নতুন সম্পাদনা শুরু করা হবে। ইতিমধ্যে দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, স্বপ্নসন্ধানি এর পরবর্তী স্ক্রিপ্ট লেখায় ব্যস্ত, জর্জ অরওয়েলের (ইংরেজি: Nineteen Eighty-Four, '১৯৮৪') এর উপন্যাস অবলম্বনে।[১]
প্রতিষ্ঠাতার দৃষ্টিকোণ
[সম্পাদনা]স্বপ্নসন্ধানী থিয়েটারে সুপারস্টারের পরিবর্তে,জোর দেওয়া হয় সাধারণভাবে নতুন অ-পেশাদার অংশগ্রহণকারীদের। থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা কৌশিক সেনের, কথায়- "সবসময় নতুন যুবকদের প্রশিক্ষণ উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আমি মনেকরি, দুই রকম দল আছে, এক যারা খুবই আগ্রহী,শিখতে এবং অনুশীলন করতে চায় এবং অন্য যারা অনেক প্রতিভাবান। আমি এই দুই রকম দলকে সম্পূর্ণভাবে মিলন করার চেষ্টা করি। নাটক 'ভয়' তে, দুইটি প্রধান ভূমিকায় নতুন মুখ ব্যবহার করা হয়েছে। আবার'বীরপুরুষ' এ কাঞ্চন মল্লিকের মতন পেশাদার অভিনেতার সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় নতুন মুখও ব্যবহার করা হয়েছে। আগে,আমি 'প্রথম পার্থ'তে নতুন মুখ নিয়েছিলাম।আমি বলতে পেরে গর্বিত যে 'স্বপ্নসন্ধানী' এর অনেক ভালো অভিনেতা আছেন যারা অন্য মাধ্যমের পেশাদার অভিনেতা হিসেবে খুব ভাল করছেন"।[২]
সম্পাদনা
[সম্পাদনা]২০০৬ সাল থেকে প্রতি শনিবার সুজাতা সদানে নিয়মিতভাবে স্বপ্নসন্ধানী সম্পাদনা শুরু হয়। ফলে একাডেমি অফ ফাইন আর্টস, মধুসূদন মঞ্চ প্রভৃতি প্রধান থিয়েটারে ফ্রি স্লটের জন্য লাইনের অপেক্ষা করতে তাদের প্রয়োজনমুল্যতা হয়েনি।এছাড়া থিয়েটার ফেস্টিভ্যালগুলিতে অংশগ্রহণ,ন্যাশনাল থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল (৭ বার), এনএসডি (ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা) দ্বারা সংগঠিত বার্ষিক ফেস্টিভ্যাল। প্রত্যেক বছরের সম্পাদিত থিয়েটারগুলি হল প্রাচ্য (২০০৩), দুশ্মান নাম্বার ওয়ান (২০০৪)। "সমুদ্রের মৌনা" এবং "বঙ্কু বাবুর বন্ধু" (২০০৭)। বিদুশক (২০০৯)।দর্জিপাড়ার মরজিনারা (২০১০), ম্যাকবেথ (২০১৩) থানা থেকে আসছি (২০১৪)।[৩] ন্যাশনাল থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল (২ বার),নন্দীকার দ্বারা সংগঠিত বার্ষিক ফেস্টিভ্যাল। রং শঙ্কর থিয়েটার উৎসব (১ বার ২০০৬ সালে)।নিনাসাম থিয়েটার ফেস্টিভাল ( ১ বার ২০০৪ সালে)।
মুখ্য প্রযোজনা
[সম্পাদনা]২০১৫ পর্যন্ত স্বপ্নসন্ধানী ২২ টি পূর্ণ-দৈর্ঘের নাটক এবং ১২ টি ছোট নাটক প্রদর্শিত হয়েছে।[৩] নিম্নরূপ:
- আঁখি পল্লব (১৯৯২)।
- যদুবংশ (১৯৯৩)।
- খোজ (১৯৯৪)।
- টিকটিকি (১৯৯৫)।
- মার্জনীয় (১৯৯৬)।
- প্রথম পার্থ (১৯৯৭)।
- তারা তিন বোন (১৯৯৮)।
- মুখোমুখি বসিবার (২০০০)।
- অনামী অঙ্গনা (২০০১)।
- প্রাচ্য (২০০২)।
- মানুষ (২০০২)।
- দুশ্মান নাম্বার ওয়ান (২০০৩)।
- কলকাতা'র ইলেকট্রা (২০০৪)।
- আজকে আমার ছুটি (২০০৫)।
- সমুদ্রের মৌনা (২০০৫)।
- ভালো রাক্ষোশের গলোপো (২০০৫)।
- মাল্যবান (২০০৬)।
- ময়দানব (২০০৬)।
- বঙ্কু বাবুর বন্ধু (২০০৬)।
- সুপ্রভাত (২০০৬)।
- ডাকঘর (২০০৬)।
- বিদুষক (২০০৬)।
- হারগজ (২০০৮) বাংলাদেশী লেখিকা সেলিম আল-দীনের একটি কর্মের উপর ভিত্তি করে লেখা।[২]
- উইনশে জুন (২০০৮)।
- দর্জিপাড়ার মরজিনারা (২০০৯),লিখেছেন ব্রাত্য বসু।[৪]
- ভয় (২০০৯)।
- বীরপুরুষ (২০১০)।
- ছোট বকুলপুরের যাত্রী (২০১০)।
- ম্যাকবেথ (২০১২) উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের লেখা ম্যাকবেথের উপর ভিত্তি করে বাংলা থিয়েটার।[৫]
- থানা থেকে আসছি (২০১৩)।
- পুনশছ (২০১৪)।
- কর্কটক্রান্তির দেশ (২০১৫)।
- ইউনেস্কো (UNESCO) প্রকল্পের অধীনে স্ট্রিট প্লে - 'আমাদের মেয়েবেলা'।
সেলিব্রিটি ব্যক্তিত্ব
[সম্পাদনা]কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব স্বপ্নসন্ধানী থিয়েটারে সঙ্গে যুক্ত নিম্নরূপ:
- বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় পরিচালনা করেছেন 'টিকটিকি'।
- বাংলা চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলি স্বপ্নসন্ধানীকে থিয়েটার সুপ্রভাতে অভিনয় করেছেন, যা জীবনানন্দ দাশের একটি উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি।[৬]
- অভিনেত্রী অর্পিতা পাল থিয়েটারে অভিনয় করেছেন "নোটির পূজো", যা সফল হয়েছে।[৫]
- টেলিভিশন তারকা দেবদূত ঘোষ এবং রজতাভ দত্ত "সেই সুমউলি" এ অভিনয় করেছেন।[৫]
- অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক, ব্রাত্য বসু লিখিত লেখা দর্জিপাড়ার মরজিনারাতে অভিনয় করেছেন।[৭]
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
[সম্পাদনা]- চিত্রা সেন
- কৌশিক সেন
- রেশমি সেন।[৮]
- দ্বিতীপ্রিয়া।[৮]
- রবীন্দ্রনাথ জানা, একজন বাঙালি অভিনেতা।
- রিদিদ সেন, একজন বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেতা। কৌশিক সেনের পুত্র।
- কাঞ্চন মল্লিক,একজন বাংলা চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন অভিনেতা।
- লাবনি সরকার, একজন বাংলা চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন অভিনেত্রী।
পুরস্কার
[সম্পাদনা]- এশীয় রঙিন শিরোমণি পুরস্কার (১৯৯৫)।[৩]
- পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি (১৯৯৬)।[৩]
- কলাকার পুরস্কার (১৯৯৮), বেস্ট ডিরেক্টর "তারা তিন বোন"।[৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Kaushik Sen quits, Debesh takes over theatre group - Times of India"।
- ↑ ক খ "Kaushik Sen Interview"।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Article on Swapnasandhani"। ১৭ মার্চ ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১৮।
- ↑ Das, Mohua (মে ২৮, ২০০৯)। "Way of all flesh"। Calcutta, India: Way of all flesh। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১২।
- ↑ ক খ গ "Performance speaks louder than star power"। Times of India। এপ্রিল ১২, ২০১২। ৪ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১২।
- ↑ "A rolling repertory Stage On & Off"। The Telegraph। Calcutta, India। নভেম্বর ৪, ২০০৬।
- ↑ Das, Mohua (মে ২৮, ২০০৯)। "Thursday , May 28, 2009"। Telegraph। Calcutta, India। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১২।
- ↑ ক খ "Interview of Kaushik Sen"।