বিষয়বস্তুতে চলুন

সুশোভন সরকার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুশোভন সরকার
জন্ম১৯ আগস্ট ১৯০০
কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ
মৃত্যু২৬ আগস্ট ১৯৮২ (বয়স ৮২)
কলকাতা ভারত
মাতৃশিক্ষায়তনপ্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা , অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাঐতিহাসিক
পুরস্কাররবীন্দ্র পুরস্কার(১৯৮১)

সুশোভন সরকার (১৯ আগস্ট ১৯০০ - ২৬ আগস্ট ১৯৮২) একজন ভারতের ভারতীয় বাঙালি ঐতিহাসিক। [] প্রগাঢ় পাণ্ডিত্যসম্পন্ন ঐতিহাসিক হিসাবে তিনি উনিশ শতকের বাংলায় নবজাগরণের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের যোগসূত্র বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখিয়েছেন এবং রবীন্দ্র পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

সুশোভন সরকারের জন্ম পিতার কর্মক্ষেত্র মেদিনীপুরের কাঁথিতে। তবে আদি নিবাস ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবারের সরিষাতে। পিতার ছিলেন বিহার-ওড়িশা র ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুরেশচন্দ্র সরকার। সুশোভন সরকারের শৈশব কাটে বিহারে। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইতিহাসে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে বি.এ ও এম.এ (১৯২৩) পাশ করেন। ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করলে মাতার বিরাগভাজন হয়ে পৈতৃক ভিটা ত্যাগ করেন।১৯২৩-২৫ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে ইতিহাসে ডিগ্রি পান।

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

দেশে ফিরে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের রিডার নিযুক্ত হন। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজে আসেন এবং ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন। কমিউনিস্ট মনোভাবাপন্ন সুশোভন সরকার পার্টির সদস্য না হয়েও তাদের নানাভাবে সাহায্য করতেন। আর সেজন্য তার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ হতে পারেন নি। ১৯৫৬ -৬১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান ছিলেন।১৯৬২-৬৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। সুশোভন সরকার ১৯২৬ - ৩৬ খ্রিস্টাব্দের এই সময়কালে বিশ্বভারতী কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন।

লেখালেখি

[সম্পাদনা]

১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত 'পরিচয়' পত্রিকাগোষ্ঠীর সদস্য তিনি বিজন রায় ছদ্মনামে পরিচয়ের প্রথম সংখ্যা থেকেই লেখেন 'রুশ বিপ্লবের পটভূমিকা'। অমিত রায় ছদ্মনামে লিখেছেন Notes on the Bengal Renaissance (বাংলার নবজাগরণের ওপর কতিপয় টীকা), 'বাংলার ইতিহাসের ধারা' প্রভৃতি। বাংলার নবজাগরণ নিয়ে ইংরাজিতে যে পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থঅন দ্য বেঙ্গল রেনেসাঁস রচনা করেন, তার জন্য তিনি ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্র পুরস্কার পান। তার শেষ গ্রন্থ হল 'রবীন্দ্রস্মৃতি'। সুশোভন সরকারের কন্যা শিপ্রা সরকার ও পুত্র সুমিত সরকারও ইতিহাসবিদ। তাঁরা যথাক্রমে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। সুশোভন সরকারের স্ত্রী রেবা সরকার ছিলেন প্রখ্যাত পরিসংখ্যানবিদ প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশের কনিষ্ঠ ভগিনী।

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

সুশোভন সরকার ৮২ বছর বয়সে কলকাতায় ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দের ২৬ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ৮২৬,৮২৭ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬