সুভাষ চক্রবর্তী
মাননীয় সুভাষ চক্রবর্তী | |
---|---|
মন্ত্রী, পরিবহন দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার | |
কাজের মেয়াদ ১৯৯৬ – ২০০৯ | |
পূর্বসূরী | শ্যামল চক্রবর্তী |
উত্তরসূরী | রণজিৎ কুন্ডু |
মন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রক, পশ্চিমবঙ্গ সরকার | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮৭ – ২০০৯ | |
পূর্বসূরী | যতীন চক্রবর্তী |
উত্তরসূরী | কান্তি গাঙ্গুলি |
মন্ত্রী, পর্যটন দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮৭ – ১৯৯৬ | |
বিধায়ক | |
কাজের মেয়াদ ১৯৭৭ – ২০০৯ | |
পূর্বসূরী | গণপতি সুর |
উত্তরসূরী | সুজিত বসু |
নির্বাচনী এলাকা | বেলগাছিয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৮ মার্চ ১৯৪২ ঢাকা, ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ৩ আগস্ট ২০০৯ (বয়স ৬৭) কলকাতা |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
রাজনৈতিক দল | ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) (১৯৬৪ থেকে) |
দাম্পত্য সঙ্গী | রমলা চক্রবর্তী |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
জীবিকা | রাজনীতি, সমাজকর্মী |
সুভাষ চক্রবর্তী (১৮ মার্চ ১৯৪২[১]-৩ আগস্ট ২০০৯) একজন ভারতীয় বাঙালি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং পশ্চিমবঙ্গ সিপিআই(এম)-এর অবিসংবাদী নেতা ছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্রীড়া, পরিবহন, এবং যুব দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে রাজনীতিতে আসেন।
প্রথম জীবন
[সম্পাদনা]সুভাষ চক্রবর্তী ১৯৪২ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতা ছিলেন হেমচন্দ্র চক্রবর্তী এবং মাতা ছিলেন লাবন্যপ্রভা দেবী। দমদম উদ্বাস্তু কলোনিতে বসবাস করা কালীন সুভাষ চক্রবর্তীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের শুরু হয়।
সুভাষ চক্রবর্তী দমদম মতিঝিল কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে তিনি পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশনের সম্পাদক হন এবং আরও পরে তিনি ভারতের ছাত্র ফেডারেশন-এর সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে তিনি অবিভক্ত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে (সিপিআই) যোগ দেন এবং ১৯৬৪ সালে দল বিভক্ত হলে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-এর সাথে যুক্ত হন।[২] সুভাষ চক্রবর্তী ভারতীয় ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সহ-সভাপতি হিসাবেও কাজ করেন।
পরিবার
[সম্পাদনা]সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তীও সিপিআইএম-এর একজন সদস্যা। রমলা চক্রবর্তী বর্তমানে সিপিআইএমের মহিলা সংগঠনের রাজ্য সভাপতি। সুভাষ চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর তিনি সুভাষ চক্রবর্তীর আসন থেকে সিপিআইএম প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]সুভাষ চক্রবর্তী তার পুরো রাজনৈতিক জীবনে সমগ্র বাংলা জুড়ে দারুন জনপ্রিয় ছিলেন। ১৯৭৭ সালে প্রথম বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার সময় তিনি প্রথমবার বেলগাছিয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারে যুব, ক্রীড়া এবং দুগ্ধ দপ্তরের মন্ত্রী হন। ১৯৮৭ সালে সুভাষ চক্রবর্তী সরকারের যুব ও পর্যটন দপ্তরের পূর্ণমন্ত্রী হন। ১৯৯১ সালে গঠিত বিধানসভায় তিনি একই দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি পরিবহন ও ক্রীড়া মন্ত্রী হন। ২০০১ সালে তিনি এইচআরবিসির অতিরিক্ত মন্ত্রী হন। ২০০৬ সালে তিনি পরিবহন, ক্রীড়া ও যুব সেবা মন্ত্রী হন। তিনি আমৃত্যু পরিবহন, যুব এবং ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন।
মৃত্যু
[সম্পাদনা]সুভাষ চক্রবর্তী ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে কিডনি ও ফুসফুসে সমস্যাজনিত কারণে কলকাতার আমরি হাসপাতালে ভর্তি হন। এক সপ্তাহ পর, ৬৭ বছর বয়সে সুভাষ চক্রবর্তী মারা যান। মৃত্যুর পর তার বয়স নিয়ে খানিকটা বিতর্ক দানা বাঁধে। কেউ কেউ বলেন মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৮ আবার কেউ কেউ বলেন তার বয়স হয়েছিল ৬৬। [৩][৪]
সুভাষ চক্রবর্তী মারা যাবার পর কমিউনিস্ট নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, যাকে সুভাষ চক্রবর্তী তার আদর্শ মনে করতেন, তিনি মন্তব্য করেন, "আমার যাবার সময় হয়েছে কিন্তু হাস্যকরভাবে আমি জীবিত অথচ সুভাষ আর নেই। সুভাষ ছিল একজন অত্যন্ত দক্ষ নেতা"।[৫] সুভাষ চক্রবর্তী মারা যাবার পাঁচ মাস পর জ্যোতি বসুও একই হাসপাতালে মারা যান।
ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি বলেন, "আমি বিস্মিত। কষ্ট হচ্ছে। আমি জানতাম গত কয়েকমাস ধরে সুভাষদা অসুস্থ ছিলেন। তিনি মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। আমি ছোটবেলা থেকেই পারিবারিক বন্ধু হিসাবে তাঁকে চিনতাম"। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী রুদ্ধ কণ্ঠে বলেন সুভাষ চক্রবর্তী তার দাদার মতো ছিলেন- "আমি তাঁকে প্রচন্ড ভালোবাসতাম। তিনি দল নির্বিশেষে সবাইকে সাহায্য করতেন। প্রতিদিন ১০০-১৫০ লোক তার বাড়িতে আসতেন সাহায্য চাইতে। এবং কেউই খালি হাতে ফিরে যেতেন না। যে কারও বিপদেই তিনি পাশে থাকতেন।"
সুভাষ চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর কলকাতা ময়দানের ক্লাবগুলি তাঁদের নিজ নিজ পতাকা অর্ধেক নামিয়ে রেখে সুভাষ চক্রবর্তীর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে।[৫]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সুভাষ চক্রবর্তী"। গণশক্তি পাত্রিকা। ২১ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ ক খ "'আমি প্রথমে হিন্দু, তার পর ব্রাহ্মণ, তারও পরে কমিউনিস্ট'"। Zee24Ghanta.com। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "WB Minister Subhas Chakraborty Dead"। হেডলাইন্স ইন্ডিয়া। ৬ আগস্ট ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০০৯।
- ↑ "West Bengal Communist leader dies"। বিবিসি। ২০০৯-০৮-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-০৩।
- ↑ ক খ "Senior WB minister Subhas Chakraborty passes away"। জি নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ আগস্ট ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০২০।
- ১৯৪২-এ জন্ম
- ২০০৯-এ মৃত্যু
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রী
- পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদ
- পশ্চিমবঙ্গের ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) এর রাজনীতিবিদ
- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ১৯৭৭-১৯৮২
- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ১৯৮২-১৯৮৭
- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ১৯৮৭-১৯৯১
- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ১৯৯১-১৯৯৬
- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ১৯৯৬-২০০১
- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ২০০১-২০০৬
- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ২০০৬-২০১১