সিউডোফেড্রিন
সিউডোফেড্রিন এলকালয়েড (উপক্ষার) এফেড্রিনের একটি রাসায়নিক জাতক। এফেড্রিন এলকালয়েডকে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করলে সিউডোফেড্রিন তৈরী হয়। [১] এক কেজি সিউডোফেড্রিনের মূল্য ৬৭ ডলার। [২]
ব্যবহার
[সম্পাদনা]সর্দি-কাশির ওষুধ তৈরির উপাদান সিউডোফেড্রিন ব্যবহৃত হয়। ফুসফুস, কান-গলার প্রদাহ, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও অ্যালার্জি উপশমের ওষুধে সিউডোফেড্রিন ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির ১৫-২০টি ব্র্যান্ড ট্যাবলেট ও সিরাপ পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ওষুধ তৈরির জন্য বৈধভাবে ব্রাজিল, ইতালি, ভারত, চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে সিউডোফেড্রিন আমদানি করে। আমদানি করা সিউডোফেড্রিন দিয়ে আট ধরনের ওষুধ প্রস্তুত করে স্থানীয় ওষুধ কোম্পানি।[২]
অপব্যবহার
[সম্পাদনা]সিউডোফেড্রিন এর সঙ্গে ক্যাফেইন মিশিয়ে মাদকদ্রব্য তৈরি করা হচ্ছে। সিউডোফেড্রিন দিয়েই মেটাফেটামিন তৈরি করা হয়, যা ইয়াবা নামে পরিচিত মাদকের একটি উপাদান। মেটাফেটামিন ও ক্যাফেইন দিয়েই ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরি করা হয়।ক্যাফেইনও একটি উদ্দীপক এলকালয়েড যা চা ও কফির উদ্দীপক উপাদান। শুধু বাংলাদেশেই বছরে ৩০০ কোটি ডলার মূল্যের ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি হয়। এক কেজি সিউডোফেড্রিনের মূল্য ৬৭ ডলার। এই পরিমাণ সিউডোফেড্রিন দিয়ে ৪ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরি করা সম্ভব। যার মূল্য দাঁড়ায় ৬ লাখ ডলারেরও বেশি।বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে ধংশ করার জন্য প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ প্রচুর পরিমাণে সিউডোফেড্রিন উৎপাদন করছে এবং তা দিয়ে ইয়াবা তৈরি করা হচ্ছে ও বাংলাদেশে পাচার করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ওষুধ নির্মাতা গ্লাক্সোস্মিথকিন এর বাংলাদেশ শাখা ২০১০ সাল থেকে সিউডোফেড্রিন দিয়ে ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
আইন ও নিয়ন্ত্রণ
[সম্পাদনা]সিউডোফেড্রিন ওভার দ্য কাউন্টার ওষুধ বা সেই সব ওষুধ যেগুলো ক্রেতা সরাসরি প্রেসক্রিপশন ছা্ড়াই কিনতে পারে এমন ওষুধ নয়. এটি কিনতে হলে সরকারী অনুমোদন লাগে। ব্যাপক অপব্যবহারের কারণে বিশ্বজুড়ে সিউডোফেড্রিন অপব্যবহার এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অবৈধ মাদক ইয়াবা ট্যাবলেটের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার কারণে সিউডোফেড্রিন নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সম্প্রতি মেক্সিকোও সিউডোফেড্রিন আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। [৩]