বিষয়বস্তুতে চলুন

ম্যারি কম (চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ম্যারি কম
থিয়েটারে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকউমং কুমার
প্রযোজক
চিত্রনাট্যকারসাইওয়ান কারদাস
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকার
সঙ্গীত:
  • শশী সুমন
  • শিভম
  • পটভূমি স্কোর:
  • রোহিত কুলকার্নি
চিত্রগ্রাহককেইকো নাকাহারা
সম্পাদক
  • রাজেশ জি. পান্ডে
  • সঞ্জয় লীলা বনসালি
প্রযোজনা
কোম্পানি
  • বনসালি প্রোডাকশনস
  • ভাইকম১৮ মোশন পিকচারস
পরিবেশকভাইকম১৮ মোশন পিকচারস
মুক্তি
  • ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ (2014-09-05)
স্থিতিকাল১২২ মিনিট[]
দেশভারত
ভাষাহিন্দি
নির্মাণব্যয়১৮০ মিলিয়ন[]
আয়প্রা. ১.০৪ বিলিয়ন[]

ম্যারি কম ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া উমং কুমার পরিচালিত এবং ভাইকম১৮ মোশন পিকচারস এবং সঞ্জয় লীলা বনসালি প্রযোজিত একটি ভারতীয় হিন্দি-ভাষী জীবনী ক্রীড়া চলচ্চিত্র। ছবিতে ফিল্ম স্টার প্রিয়াঙ্কা চোপড়া মুখ্য শিরোনাম-চরিত্র তথা উপাধিপ্রাপ্ত বক্সার এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন এবং সহঅভিনেতা হিসাবে রয়েছেন তাঁর স্বামী ও পরামর্শদাতার ভূমিকায় যথাক্রমে দর্শন কুমার এবং সুনীল থাপামেরি কম নামের এই চিত্রে নিঙগবো তে অনুষ্ঠিত ২০০৮ ওয়ার্ল্ড বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ এ কমের বক্সার হওয়ার যাত্রা চিত্রিত করা হয়েছে। ছবিটিতে হিন্দি প্লেব্যাক গায়িকা হিসাবে চোপড়ার আত্মপ্রকাশ ঘটে।

মেরি কম এর কাহিনী বিন্যাসের আভাস লেখক সাইওয়ান কারদাস যখন কুমারের কাছে প্রকাশ করেছিলেন তখন কম অসংখ্য সাফল্য অর্জন করলেও ভারতে ততো পরিচিত নাম ছিলেন না। ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক এ ব্রোঞ্জ পদক জয়ের ফলে তাঁর স্বীকৃতি লাভেরও আগে কুমার কমের কাছে ছবিটির অনুমতি চেয়েছিলেন। পেশীবহুল দেহ গঠনের জন্য চোপড়া চার মাস ধরে ব্যাপক শারীরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং খেলাধুলা ও কমের স্বতন্ত্র বক্সিং স্টাইল শেখেন। মুখ্য ফটোগ্রাফি ২০১৩ সালের জুন মাসে ফিল্মিস্তান এ শুরু হয়েছিল। এখানেই বক্সিং সিকোয়েন্সের চিত্রগ্রহণ করা হয়েছিল। কমের নিজের রাজ্য মণিপুর এ সুটিং করার পরিকল্পনা করার পরেও নিরাপত্তার কারণে তা বাতিল করে ধর্মশালা এবং মানালি তে সুটিং করার জন্য সেখানেই মণিপুরের একটি বড় অংশ গড়ে নেওয়া হয়েছিল।

২০১৪ টরেন্টো আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভাল এ চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার হয়ে। এই উৎসবের শুরুর রাতে প্রদর্শিত এটিই প্রথম হিন্দি ছবি। ১৮০ মিলিয়ন বাজেটে নির্মিত মেরি কম ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়ার পর সাধারণভাবে সাধুবাদসহ পর্যালোচনা এবং চোপড়ার অভিনয় প্রসংশিত হয়। মুক্তির পরে ভারতীয় চলচ্চিত্রে ছবিটি মহিলা প্রধান সর্বকালের সর্বোচ্চ উদ্বোধনী সপ্তাহের রেকর্ড অর্জন করে। বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন ক'রে আয় হয় ২.০৪ বিলিয়ন। মহিলা অভিনেতার নেতৃত্বে সর্বাধিক উপার্জনকারী ভারতীয় চলচ্চিত্রগুলির মধ্যেও স্থান পেয়েছে মেরি কম

সারা ভারতজুড়ে পুরস্কার অনুষ্ঠানে মেরি কম বেশ কয়েকটি প্রশংসা লাভ করে। ছবিটি সার্বিক বিনোদনসম্পন্ন সেরা জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে এবং সেরা চলচ্চিত্রের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার এর মনোনয়ন পেয়েছিল; চোপড়া সেরা অভিনেত্রী মনোনীত হয়েছিলেন। উপরন্তু চোপড়া স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড এবং প্রডিউসার গিল্ড ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট অ্যাকট্রেস ইন এ লিডিং রোল লাভ করেছেন।

পটভূমি

[সম্পাদনা]

মণিপুর এর ইম্ফল এর এক কৃষকের (ধানের) মেয়ে মাঙ্গতে চুঙ্গেইজং কম কাঙ্গাতেই তে ১৯৯১ এর বিমানের দুর্ঘটনার অবশেষ থেকে একটি বক্সিং গ্লাভ পায়। গ্লাভ দেখে মুগ্ধ কম বাবার অমত সত্ত্বেও বক্সিং সম্পর্কে গভীর আগ্রহী হয়ে বেড়ে উঠতে থাকেন। প্রথম দিকে লড়াইয়ের সময় সে একটি ছেলেকে তাড়া করে বক্সিং জিমে পৌঁছোন। জিমের কোচ নরজিৎ সিংও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন ডিঙ্গকো সিং এর কোচ ছিলেন। এই বিষয়টি বুঝতে পেরে কম তাঁকে তাঁর বক্সিংয়ের আকাঙ্ক্ষার কথা বলেন। তিনি পরের তিরিশ দিনের জন্য তাঁকে জিমটি দেখার জন্য বলেন এবং আরও বলেন যে তিনি কেবলমাত্র তাঁর মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহের সঞ্চার হয়েছে দেখার পর তবেই তিনি তাঁকে বক্সিং শেখাবেন। তিনি জিম পরিদর্শন শুরু করেন এবং তাঁর মাকে জানান। তবে তাঁর বাবাকে অবশ্যই নয়। দিন কেটে গেলেও তাঁর কোচ তাঁর সম্পর্কে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করেন না। কমের আত্মোৎসর্গ এবং জেদের কারণে সিং তাঁকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। পরে তিনি তাঁর নামটি পাল্টে ম্যারি কম করার পরামর্শ দেন।

কম অর্থের জন্য এক স্থানীয় পালোয়ানকে চ্যালেঞ্জ জানান যাতে সেই অর্থ দিয়ে তাঁদের গৃহপালিত গরুটিকে ফিরে পেতে পারেন। তাঁদের পরিবারকে আর্থিক সমস্যার কারণে গরুটিকে বিক্রি করতে হয়েছিল। এখানেই তাঁর দেখা হয় ফুটবলার ওনলার কমের সাথে। রাজ্য-স্তরের চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পরে এই খেলাধুলায় নিজেকে জড়িত রাখার জন্য তাঁকে তাঁর বাবার মোকাবিলা করতে হয়। তাঁর বাবা যখন তাঁকে তাঁর এবং বক্সিংয়ের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বলেন তখন তিনি অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ক্রীড়াটিকেই বেছে নেন। টেলিভিশনে ২০০২ উইমেনস ওয়ার্ল্ড অ্যামেচার বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ এ তাঁর বিজয়ী হওয়ার ম্যাচটি দেখার পরে তাঁর বাবা কমের সাথে সমঝোতা করেন এবং খেলাধুলার প্রতি কমের অনুরাগ বুঝতে না পারার জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। এদিকে ওনলার তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং কখনই তাঁকে বক্সিং ছাড়তে বলেন না বলে অঙ্গীকার করন। তিনি ২০০৬ উইমেনস ওয়ার্ল্ড অ্যামেচার বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পরে কম তাঁর কোচের অসন্তুষ্টি সত্ত্বেও বিয়ে করতে রাজি হন। বিয়ের পরে কম গর্ভবতী হন এবং তার পরিবার দেখাশোনার জন্য তাঁর ক্যারিয়ার ছেড়ে দেন।

কম যমজ সন্তানের জন্ম দেন এবং সরকারী চাকরির জন্য আবেদন করেন। তবে তিনি প্রদত্ত পুলিশ কনস্টেবলের পদ প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি মনে করেন যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বক্সার হিসাবে তাঁর আরও ভাল পদ প্রাপ্য। শিক্ষা হয় যে লোকে তাঁকে আর চিনতে পারছে না যাতে তাঁর ক্ষতি হচ্ছে। ওনলার তাঁকে পুনরায় বক্সিং প্রশিক্ষণ শুরু করতে উৎসাহ দেন। স্বামীকে ঘরে যমজ সন্তানদের দেখাশোনা করতে রেখে তিনি আবারও জিমের সাথে যোগ দেন। তাঁর কোচ তাঁর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনও বিরক্ত। তবে কম জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ফিরে আসেন। তাঁর প্রতিপক্ষের চেয়ে ভাল পারফরম্যান্স সত্ত্বেও বিচারকদের আপাত পক্ষপাতিত্বের কারণে তিনি ম্যাচটি হেরে যান। কম তাদের উপর ক্রোধে চেয়ার ছুড়ে মারেন। ফলে নিষেধাজ্ঞা নেমে আসে। পরে তিনি একটি ক্ষমা প্রার্থনার চিঠি লেখেন। কর্মকর্তারা সেটি গ্রহণ করলেও তাঁকে তাঁরা কেবল অপমান করতে ছাড়েন না।

তাঁকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তখন কম নরজিৎ সিংকে রাজি করান। কারণ তিনি মনে করেন যে তিনিই তাঁর কাছ থেকে সবচেয়ে সেরাটিকে ব্যবহার করতে পারবেন। প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি ২০০৮ এআইবিএ উইমেন ওয়ার্ল্ড বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ এ অংশ নিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছেন। এদিকে ওনলার তাঁকে তাঁর এক সন্তানের ভেন্ট্রিকিউলার সেপটাল ত্রুটি থাকা সম্পর্কে অবহিত করেন। পরবর্তী লড়াইয়ে কম নিজেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হন। প্রতিপক্ষের নকআউট পাঞ্চের পরে কম দর্শকদের মধ্যে তাঁর স্বামী এবং শিশুদের সম্পর্কে একটি ভ্রান্তিদৃশ্য দেখতে শুরু করেন। তার পরই তিনি তাঁর শক্তি ফিরে পেয়ে আবার লড়াই করে চ্যাম্পিয়নশিপে জয়লাভ করেন। পদকটি গ্রহণ করার সময় মঞ্চে তিনি জানতে পারেন যে তাঁর ছেলের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছিল। পরে তাঁকে "ম্যাগনিফিসেন্ট মেরি" ডাকনাম দেওয়া হয়। পটভূমিতে ভারতীয় জাতীয় সংগীত বাজানোর সাথে সাথে উত্তোলিত হয় ভারতীয় পতাকা।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Mary Kom (2014)"British Board of Film Classification। ২৭ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৪ 
  2. Malvania, Urvi (২৬ মে ২০১৫)। "A boxer, a queen and a movie studio"Business Standard। ২৬ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৫ 
  3. Dasgupta, Surajeet (৩১ অক্টোবর ২০১৪)। "Breaking the myths about box office hits"Business Standard। ১ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৭