সুবাহ বাংলা
সুবাহ বাংলা | |||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৫৭৬–১৭৬৫ | |||||||||||||||||||||
বাম পাশের পতাকা: মুঘল সাম্রাজ্যের সময় ডান পাশের পতাকা: বাংলার নবাব শাসনের অধীনে | |||||||||||||||||||||
বাংলা সুবাহ এর মানচিত্র | |||||||||||||||||||||
অবস্থা | মুঘল সুবাহ (১৫৭৬–১৭১৭) স্বাধীন রাষ্ট্র (১৭১৭–১৭৫৭) | ||||||||||||||||||||
রাজধানী | |||||||||||||||||||||
প্রচলিত ভাষা | ফার্সি (দাপ্তরিক) বাংলা (জনসাধারণ) | ||||||||||||||||||||
ধর্ম | ইসলাম (সংখ্যাগরিষ্ঠ) হিন্দু ধর্ম এবং অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় ধর্ম | ||||||||||||||||||||
সরকার | মুঘল সুবাহ (১৫৭৬–১৭১৭) স্বাধীন রাষ্ট্র (১৭১৭–১৭৫৭) | ||||||||||||||||||||
বাংলার নবাব | |||||||||||||||||||||
• প্রথম নবাব | মুর্শিদ কুলি খান | ||||||||||||||||||||
• শেষ নবাব | মির্জা মুহম্মদ সিরাজ-উদ-দৌলা | ||||||||||||||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | আধুনিক যুগের শুরুতে | ||||||||||||||||||||
১৫৭৬ | |||||||||||||||||||||
• পূর্ব বাংলার বারো-ভূঁইয়া ভূখণ্ডের সংযোজন | ১৬১১ | ||||||||||||||||||||
• বাংলার নবাব এবং মুঘলদের কাছ থেকে স্বাধীনতা | ১৭১৭ | ||||||||||||||||||||
১৭৪১–১৭৫১ | |||||||||||||||||||||
১৭৫৭ | |||||||||||||||||||||
• বিলুপ্ত | ১৭৬৫ | ||||||||||||||||||||
মুদ্রা | টাকা, মোহর | ||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||
বর্তমানে যার অংশ | বাংলাদেশ ভারত (পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, এবং ওড়িশা) |
সুবাহ বাংলা (ফার্সি: صوبه بنگاله, প্রতিবর্ণীকৃত: সূবাহ্ বাঙ্গালাহ্;) বা মুঘল বাংলা ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের একটি সুবাহ, যা ১৬শ থেকে ১৭শ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে বর্তমানের বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বাংলা সালতানাত ভেঙে গেলে এই সুবাহের উদ্ভব হয়, এবং সেই সময়ের বিশ্বের অন্যতম বড় এ সাম্রাজ্যটি বিলীন হয়ে যায়। বাংলা সালতানাত যা বিশ্বের একটি প্রধান বাণিজ্যিক দেশ ছিল, তার বিলুপ্তির পর এবং যখন এই অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়, তখন এই রাজ্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলা ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ অঞ্চল।
সুবাহ বাংলাকে বিভিন্ন সময় "জাতিসমূহের স্বর্গরাজ্য"[৪] এবং "বাংলার স্বর্ণযুগ"[৫][৬] হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এর একাই এশিয়া থেকে ডাচ আমদানির ৪০% হিস্যা ছিল।[৭] বাংলার পূর্বাঞ্চল বস্ত্র উৎপাদন এবং জাহাজ নির্মাণের মতো শিল্পে বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ ছিল[৮] এবং এটি ছিল রেশম এবং সুতির বস্ত্র, ইস্পাত, সল্টপিটার এবং কৃষি ও শিল্পজাত পণ্যের একটি প্রধান রপ্তানিকারক দেশ।[৯] অ্যাংলো-বাংলা যুদ্ধের মূলেও ছিল এই অঞ্চলটি।[১০]
১৮শ শতাব্দীতে বাংলা একটি আধা-স্বাধীন রাজ্য হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল, যা মুঘল সার্বভৌমত্বের অধীনে বাংলার নবাবদের শাসনে ছিল। এটি প্রোটো-শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করেছিল, যা প্রথম শিল্প বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে,[১১][১২][১৩] বিশেষ করে বস্ত্র উৎপাদন শিল্পে। ১৭৫৭ এবং ১৭৬৪ সালে কোম্পানি পলাশীর যুদ্ধ এবং বক্সারের যুদ্ধে বাংলার নবাবকে পরাজিত করে এবং বাংলা ব্রিটিশ বলয়ের অধীনে আসে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বারা বাংলা বিজিত হওয়ার পরে এটি শিল্পহীন হয়ে পড়েছিল।[১১][১২][১৩][৯] ১৭৬৫ সালে সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম কোম্পানিকে বাংলার রাজস্ব অধিকার প্রদান করেন এবং ১৭৯৩ সালে বিচারিক অধিকার প্রদান করেন। ১৮০৩ সালে সম্রাট কোম্পানির রাজাধিরাজ ত্যাগ করেন এবং মুঘল সাম্রাজ্যের "বঙ্গ, বিহার এবং ওড়িশা প্রদেশ" আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ফোর্ট উইলিয়াম প্রেসিডেন্সিতে সংযুক্ত করা হয়। ১৮১৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আইন ১৮১৩ এর মাধ্যমে কোম্পানির অঞ্চলগুলির সার্বভৌমত্ব ক্রাউনকে হস্তান্তরিত করা হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]বাংলাদেশে ইসলাম |
---|
মুঘল সাম্রাজ্য
[সম্পাদনা]অধ্যাপক রিচার্ড ইটন জানান যে, বাংলার ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যগুলি এর মাটিকে এতটাই উর্বর এবং জলবায়ুকে অনুকূল করে তুলেছিল যে এটি মহাদেশব্যাপী তুর্কি-মঙ্গোল বিজয় ও অভিবাসন প্রক্রিয়ার একটি শেষ বিন্দুতে পরিণত হয়েছিল।[১৪]
প্রথম মুঘল সম্রাট বাবরের রাজত্বকালে বাংলা মুঘলদের অধীন হতে শুরু করে। ১৫২৯ সালে বাবর ঘঘরার যুদ্ধের সময় শাহী বাংলার সুলতান নাসিরউদ্দিন নুসরত শাহকে পরাজিত করেন। বাবর পরবর্তীকালে বাংলার কিছু অংশ তার সাম্রাজ্যে সংযুক্ত করেন। তার পুত্র এবং উত্তরসূরি হুমায়ুন বাংলার রাজধানী গৌড় দখল করেন। সেখানে তিনি ছয় মাস অবস্থান করেছিলেন।[১৫] শের শাহ সুরির বিজয়ের কারণে পরবর্তীতে হুমায়ুন পারস্যে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। শের শাহ সুরি মুঘল এবং শাহী বাংলা উভয়ের রাজত্বে ক্ষণকালের জন্য বাধাগ্রস্থ করেছিলেন।
১৫৭৬ সালে রাজমহলের যুদ্ধে বাংলার সুলতান দাউদ খান কররানীর পরাজয়ের পর, মুঘল সম্রাট আকবর মূল বারো সুবাহর একটি হিসেবে বাংলার নাম ঘোষণা করেন, যার সীমানা ছিল বিহার, ওড়িশা এবং মায়ানমার পর্যন্ত। ১৫৮৬ সালের ২৪ নভেম্বর এক রাজকীয় সমন দিয়ে আকবর পুরো সাম্রাজ্যে একসাথে সুবাহ প্রশাসন চালু করেন। তবে তপন রায়চৌধুরীর দৃষ্টিতে বাংলায় মুঘল শক্তির একীভূতকরণ এবং প্রদেশটির মূল নিয়ন্ত্রণ ১৫৯৪ সালে শুরু হয়েছিল।[১৬]
১৭শ শতাব্দীতে মোগলগণ বারো জন ভূস্বামীর বিরোধিতার সম্মুখীন হন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ঈসা খান। বাংলা একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ সাম্রাজ্যে পরিণত হয় এবং বহুত্ববাদী সরকারের নীতির কারণে তা শক্ত অবস্থান লাভ করে। মুঘলেরা ১৬১০ সাল থেকে ঢাকায় নতুন সাম্রাজ্যবাদী মহানগরী গড়ে তোলে, যেখানে ছিল সুবিন্যস্ত বাগান, দুর্গ, সমাধি, প্রাসাদ এবং মসজিদ।[১৭] সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে শহরটিকে তার নামে "জাহাঙ্গীরনগর" নামকরণ করা হয়। ঢাকা মুঘল সাম্রাজ্যের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে আবির্ভূত হয়, জানা যায় সাম্রাজ্যের সর্ববৃহৎ রপ্তানি কেন্দ্র ছিল মসলিন বস্ত্রকে ঘিরে।[১৮]
১৬৬৬ সালে চট্টগ্রামে মুঘলেরা যুদ্ধে জয় লাভ করে আরাকান রাজ্য দখল করে এবং বন্দর নগরীর নিয়ন্ত্রণ পুনরায় নিয়ে নেয়, যার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছিল ইসলামাবাদ।[১৯] পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত অঞ্চলে মুঘল বাংলার একটি উপরাষ্ট্র তৈরি করা হয় এবং ১৭১৩ সালে চাকমা সম্প্রদায়ের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[২০]
১৫৭৬ থেকে ১৭১৭ সাল এই সময়টাতে বাংলা মুঘল সুবেদার দ্বারা শাসিত হয়। রাজপরিবারের সদস্যগণ প্রায়ই এই পদে নিযুক্ত হতেন। যুবরাজ শাহ সুজা ছিলেন সম্রাট শাহজাহান এর পুত্র। তিনি তার ভাই আওরঙ্গজেব, দারা শিকোহ ও মুরাদ বাকশ এর সাথে উত্তরাধিকার দন্ধের সময়কালে বাংলার মুঘল সম্রাট হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেন। তিনি শেষ পর্যন্ত আওরঙ্গজেবের সৈন্যবাহিনী দ্বারা পরাজিত হয়েছিলন। সুজা আরাকানে পালিয়ে যান, যেখানে তার পরিবারের সদস্যদের ম্রাউক ইউ এর রাজার নির্দেশে হত্যা করা হয়। আওরঙ্গজেবের সময়কালে শায়েস্তা খান অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন সুবাদার ছিলেন। একসময় বাংলার সুবেদার যুবরাজ মুহাম্মদ আজম শাহ, ১৭০৭ সালে চার মাসের জন্য মুঘল সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হোন। সুবেদার ২য় ইব্রাহীম খান ইংরেজ এবং ফরাসি বণিকদের বাংলায় বাণিজ্য করার সুযোগ দেন। শেষ সুবেদার যুবরাজ আজিম-উস-শান ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম, ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে চন্দননগরে ফোর্ট অর্লেন্স এবং ওলন্দাজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে চুঁচুড়ায় দুর্গ নির্মানের অনুমতি দেন।
আজম-উস-শান এর আমলে তার প্রধানমন্ত্রী মুর্শিদকুলি খাঁ বাংলার খুব ক্ষমতাবান একজন হিসেবে উদিত হন। তিনি সাম্রাজ্যের রাজকোষের নিয়ন্ত্রণ লাভ করেন। আজম-উস-শান বিহারে চলে গেলে ১৭১৭ সালে মুঘল আদালাত প্রধানমন্ত্রীর পদ বংশানুক্রমিক নবাবে উন্নীত করেন। খান মুর্শিদাবাদে নতুন রাজধানী গড়েন। তার বংশধরেরা নাসিরি রাজবংশ গঠন করেন। আলীবর্দী খান ১৭৪০ সালে নতুন রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। নবাব মূল বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার এক বিশাল অংশ শাসন করেন।
বাংলার স্বাধীন নবাবগণ
[সম্পাদনা]বাংলার নবাব[২১][২২][২৩][২৪] ছিলেন মুঘল ভারতের সুবাহ বাংলার বংশানুক্রমিক শাসক। রাজ্যের বা স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশের নবাবকে ইউরোপীয় গ্র্যান্ড ডিউকের উপাধির সাথে তুলনা করা যেতে পারে। ১৮শ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাংলার নবাব কার্যত স্বাধীন শাসক ছিলেন এবং বাংলার কিছু অংশ এবং অন্যান্য অংশ যেমন বর্তমান দিনের সার্বভৌম দেশ বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান রাজ, কুচবিহার রাজ্যের মত বাংলার রাজারা শাসন করতেন।[২৫][২৬][২৭] তাদের প্রায়ই বাংলার, বিহারের এবং ওড়িশার নবাব বলা হত। নবাবরা মুর্শিদাবাদে অবিস্থান করতেন, যা বাংলার কেন্দ্রস্থলে ছিল। নবাবরা মুঘল সম্রাটের নামে মুদ্রা প্রচলন অব্যাহত রাখতেন। কিন্তু সমস্ত বাস্তবিক উদ্দেশ্যে, নবাবরা স্বাধীন সম্রাটের মতো শাসন করতেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] দিকের নবাবদের অধীনে বাংলা মুঘল দরবারের আর্থিক মেরুদণ্ডে পরিণত হয়েছিল, দিল্লির সাম্রাজ্যিক কোষাগারে প্রবাহিত তহবিলের অর্ধেকেরও বেশি প্রদান করত।[২৮]
বাংলার রাজারা, বাংলার নবাবরা প্রোটো-শিল্পায়নের একটি সময়কাল তত্ত্বাবধান করতেন। বাংলা-বিহার-ওড়িশা ত্রিভুজ ছিল সুতি মসলিন কাপড়, সিল্ক কাপড়, জাহাজ নির্মাণ, গানপাউডার, শোধনকৃত লবণ এবং ধাতব কর্মের একটি প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র। মুর্শিদাবাদ, ঢাকা, পাটনা, সোনারগাঁও, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কাসিমবাজার, বালেশ্বর, পাইপেলি এবং হুগলিসহ অন্যান্য শহর, নগর এবং বন্দরে কারখানা স্থাপন করা হয়েছিল। এই অঞ্চলটি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, অস্ট্রিয়ান ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, অস্টেন্ড কোম্পানি এবং ওলন্দাজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছিল।
ব্রিটিশ কোম্পানি শেষ পর্যন্ত নবাবদের কর্তৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে। ১৭৫৬ সালে কলকাতার যুদ্ধের পর, যেখানে নবাবের বাহিনী প্রধান ব্রিটিশ ঘাঁটিতে আক্রমণ করে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে একটি নৌবহর পাঠায়, যারা ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে পরাজিত করে। মীর জাফরকে পুতুল নবাব হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। তাঁর উত্তরসূরি মীর কাসিম ব্রিটিশদের উৎখাত করার বৃথা চেষ্টা করেছিলেন। ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে বাংলার নবাব মীর কাসিম, অযোধ্যার নবাব সুজা-উদ-দৌলা এবং মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের পরাজয় ব্রিটিশদের সমগ্র ভারতে সম্প্রসারণের পথ প্রশস্ত করে। টিপু সুলতানের নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ ভারতের মহীশূর রাজ্য উপমহাদেশের সবচেয়ে ধনী রাজতন্ত্র হিসাবে বাংলার নবাবকে অতিক্রম করে; কিন্তু এটি স্বল্পস্থায়ী ছিল এবং ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ যুদ্ধে শেষ হয়। এরপর ব্রিটিশরা মারাঠা এবং শিখদের পরাজিত করার দিকে মনোনিবেশ করে।
বাংলার নবাবরা ব্রিটেন, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধিত্বকারী যৌথ স্টক কোম্পানিসহ বহু ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তির সাথে চুক্তি করেছিলেন।
মারাঠা আক্রমণ
[সম্পাদনা]পুনরুত্থিত হিন্দু মারাঠা সাম্রাজ্য আঠারো শতকে সমৃদ্ধ বাংলার বিরুদ্ধে নৃশংস আক্রমণ চালায়, যা বাংলার নবাবদের পতনকে আরও ত্বরান্বিত করে। বিহার দখল[২৯] ও পশ্চিমবঙ্গের হুগলি নদীর পূর্ব পর্যন্ত মারাঠা বাহিনী আক্রমণ চালায়।[৩০] বাঙ্গালীদের কাছে এরা বর্গি নামে পরিচিত। তারা গ্রাম পোড়ানোর কৌশল প্রয়োগ করে এবং স্থানীয় জনগণের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণহত্যা চালায়, যা বাংলার অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়। আক্রমণগুলির সমসাময়িক বিবরণীতে মারাঠাদের দ্বারা নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ করা,[৩১][৩২][৩৩][৩৪][৩৫] এবং আক্রান্তদের অঙ্গহানি করার উল্লেখও রয়েছে।[৩৬][৩৭]
আক্রমণগুলি বাংলার অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল, কারণ মারাঠা আক্রমণে নিহত হওয়া অনেক লোক ছিল বণিক, তাঁতি, রেশম এবং তুঁত চাষকারীর অন্তর্ভুক্ত।[৩০] উদাহরণস্বরূপ, কাশিম বাজারে ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে মারাঠারা তাঁতীদের তাঁতসহ অনেক ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ফেলে যেখানে রেশম তৈরি করার মালামাল রাখা হতো।[২৯]
মারাঠা আগ্রাসন ঠেকাতে বাংলার নবাব মারাঠাদেরকে বাংলা ও বিহারের চৌথা (চার ভাগের এক ভাগ) হিসাবে প্রতিবছর ১.২ মিলিয়ন টাকা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হতো, ফলস্বরূপ মারাঠারা আর বাংলায় আক্রমণ না করতে রাজি হয়।[৩৮] নাগপুরের রঘুজী ভোঁসলের নেতৃত্বে অভিযানগুলি ওড়িশার উপর অলিখিতভাবে মারাঠা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল, যা ১৭৫২ সালে মারাঠা আধিপত্যে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়।[৩৯] বাংলার নবাবগণও পূর্ববর্তী বছরগুলির চৌথার বকেয়ার হিসেবে মারাঠাদের ৩.২ মিলিয়ন রুপি দিয়েছিলেন।[৪০] বাংলা ব্রিটিশদের দখল না হওয়া অবধি ১৭৫৮ সাল পর্যন্ত মারাঠাদের কাছে বাংলার নবাব এই চৌথাটি প্রদান করতেন।[৪১]
ব্রিটিশ উপনিবেশ
[সম্পাদনা]১৮শ শতাব্দীর শেষের দিকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অঞ্চলের প্রধান সামরিক শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়। তারা ১৭৫৭ সালে ফরাসি-মিত্র সিরাজ-উদ-দৌলাকে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত করে, যা মূলত নবাবের একসময়ের বিশ্বাসভাজন জেনারেল মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ঘটে। কোম্পানি বাংলার, বিহার এবং ওড়িশার নবাবের রাজ্যগুলির উপর প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ লাভ করে। ১৭৬৫ সালে বক্সারের যুদ্ধে বিজয়ের পরে তারা মুঘল দরবারের পক্ষে কর সংগ্রহের অধিকার লাভ করে। বাংলা, বিহার এবং ওড়িশাকে বাংলা প্রেসিডেন্সির অংশ করে তোলা হয় এবং ১৭৯৩ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহ আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্তৃত্বের অবসান ঘটায়, যখন ব্রিটিশ রাজ ভারতে কোম্পানির শাসনের স্থলাভিষিক্ত হয়।
অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তিও বাংলার ভূখণ্ডে ছোট উপনিবেশ গড়ে তোলে, যার মধ্যে রয়েছে ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ডাচ বাংলা বসতি, চন্দননগরে ফরাসি উপনিবেশ, শ্রীরামপুরে ডেনিশ উপনিবেশ এবং বাঁকিপুরে হাবসবুর্গ রাজবংশের অস্টেন্ড কোম্পানির বসতি।
সামরিক অভিযানসমূহ
[সম্পাদনা]জোওো ডি ব্যারোসের মতে,[৪২] ভালো গোলন্দাজ বাহিনী থাকার কারণে আরাকান ও ত্রিপুরার চেয়ে বাংলার সেনাবাহিনীর সামরিক আধিপত্য বেশি ছিল।[৪৩] বাংলার সেনাবাহিনীর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কামান ছিল। বাংলা ইউরোপে বারুদ এবং শোরার (সল্টপিটার) বড় রপ্তানিকারক ছিল।[৪৪] মুঘল সেনাবাহিনী ইদ্রাকপুর দুর্গ, সোনাকান্দা দুর্গ, হাজীগঞ্জ দুর্গ, লালবাগ দুর্গ এবং জঙ্গলবাড়ী দুর্গ সহ এই অঞ্চল জুড়ে অনেক দুর্গ তৈরি করে। মুঘলরা আরাকানি এবং পর্তুগিজ জলদস্যুদের বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করে। মধ্যযুগের শেষের দিকে এবং আধুনিক যুগের শুরুতে, বাংলা তার নৌবাহিনী এবং জাহাজ নির্মাণের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল।
মুঘলদের উল্লেখযোগ্য সামরিক লড়াইয়ের তালিকে নিচে দেয়া হলঃ
যুদ্ধ | সাল | সেনাপতি | শত্রু | প্রতিদ্বন্দ্বী সেনাপতি | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|
তুকারয়ের যুদ্ধ | ১৫৭৫ | আকবর | বাংলা সালতানাত | দাউদ খান কররানী | মুঘল জয়ী |
রাজমহলের যুদ্ধ | ১৫৭৬ | প্রথম খান জাহান | বাংলা সালতানাত | দাউদ খান কররানী | মুঘল জয়ী |
ভাতির যুদ্ধ | ১৫৭৬-১৬১১ | খান জাহান ১ শাহবাজ খান কামবোহ রাজা মানসিংহ |
বারো ভুঁইয়া | ঈসা খাঁ মুসা খান |
মুঘল জয়ী |
আহোম-মুঘল সংঘর্ষ | ১৬১৫-১৬৮২ | কাসেম খান চিশতী মীর জুমলা রাম সিং ১ |
আহোম সাম্রাজ্য | আহোম রাজবংশ | আহোম জয়ী |
মুঘল আরাকান যুদ্ধ | ১৬৬৫-১৬৬৬ | শায়েস্তা খান | মারুক-ইউ সাম্রাজ্য | থিরি থুধাম্মা | মুঘল জয়ী |
বর্ধমানের যুদ্ধ | ১৭৪৭ | আলীবর্দী খান | মারাঠা সাম্রাজ্য | জানোজী ভোঁসলে | মুঘল জয়ী |
অন্ধকূপ হত্যা | ১৭৫৬ | সিরাজ-উদ-দৌলা | ব্রিটিশ সাম্রাজ্য | রজার ডার্কি | মুঘল জয়ী |
পলাশীর যুদ্ধ | ১৭৫৭ | সিরাজ-উদ-দৌলা | ব্রিটিশ সাম্রাজ্য | রবার্ট ক্লাইভ | ব্রিটিশ জয়ী |
-
মুনিম খানের কাছ থেকে দাউদ খান একটি পোশাক নিচ্ছে
-
ডালমডাল কামান
-
বাছাওয়ালি কামান
-
১৬৬৬ সালে মোগল ও আরাকানীদের মধ্যে চট্টগ্রামের যুদ্ধ
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]মুঘল স্থাপত্য বাংলায় বিস্তার লাভ করতে থাকে ১৬শ, ১৭শ এবং ১৭ শতকে। ১৫৮২ সালের বগুড়ার খেরুয়া মসজিদ প্রথম দিকের অন্যতম একটি নিদর্শন।[৪৫] তারা আগের সুলতানি আমলের স্থাপত্যশৈলী প্রতিস্থাপন করে। যেটা সব চেয়ে বেশি প্রয়োগ করা হয়েছিল ঢাকায়। বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত মুঘল নগরী পূর্বের ভেনিস নামে পরিচিতি লাভ করেছিল।[৪৬] লালবাগ কেল্লা ব্যাপকভাবে বাগান, ফোয়ারা, একটি মসজিদ, একটি কবর, একটি বৈঠক খানা (দিওয়ান-ই খাস) এবং দরজাযুক্ত একটি দেয়াল দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছিল। ঢাকার বড় কাটরা এবং ছোট কাটারা ছিল সকল ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। এই শহরের আরও অন্যান্য স্থাপ্যতের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ধানমন্ডি শাহী ঈদগাহ (১৬৪০), সাত গম্বুজ মসজিদ (১৬৮০), হাজী শাহাবাজের মাজার ও মসজিদ (১৬৭৯) এবং খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ (১৭০৪)।[৪৫] বাংলার নবাবগণের আমলে মুর্শিদাবাদ শহরও মুঘল স্থাপ্যতের স্বর্গে পরিণত হয়। কাটরা মসজিদ (১৭২৩) এখানকার সবচেয়ে লক্ষণীয় স্থাপত্য।
গ্রামীণ পশ্চাৎপদ অঞ্চলে দেশীয় বাঙালি ইসলামিক শৈলীর সাথে মুঘল উপাদান যুক্ত করে জাঁকজমকপুর্ন স্থাপত্য তৈরি হতে থাকে। যার মধ্যে অন্যতম চমৎকার শৈলী হচ্ছে টাঙ্গাইলের আতিয়া মসজিদ (১৬০৯)।[৪৫] বেশ কিছু অনন্য পোড়ামাটির হিন্দু মন্দির স্থাপত্য এই সময়কালে তৈরি করা হয়েছিল। এসবের মধ্যে কান্তজীর মন্দির (১৭০৪) এবং বিষ্ণুপুরের মন্দিরসমুহ (১৬০০-১৭২৯) উল্লেখযোগ্য।
-
মসজিদের কারুশিল্প
-
মন্দিরের কারূশিল্প
-
রাজকীয় ভবন
-
বিবি পরীর মাজার
-
লালবাগ দুর্গের দরবার হল ও হাম্মাম খানা
-
বড় কাটরার গেট
-
আধুনিক কালের ঢাকার বড় কাটরার একটি থ্রিডি পুনর্গঠন
শিল্প
[সম্পাদনা]প্রকৃত বাঙালি-মুঘল শিল্প জামদানির মসলিন কাপড়ে প্রতীয়মান হয়। জামদানি ফরাসি তাঁতিরা প্রথম তৈরি করেছিলেন। এই শিল্প বাঙালি-মুসলিম তাঁতিদের হাতে আসে জুহুলাস নামে একজনের হাত ধরে। এই শিল্প ঐতিহাসিকভাবেই ঢাকা শহরের চারপাশ দিয়ে গড়ে উঠেছিল। শহরটিতে প্রায় ৮০,০০০ তাঁতি ছিল। জামদানীতে ঐতিহ্যগতভাবেই জ্যামিতিক পুষ্পশোভিত নকশা থাকতো। এই নকশায় কখনো কখনো ইরানি কিছু কাপড়ের নকশার সাদৃশ্য পাওয়া যায়। জামদানী সকলের মন জয় করে এবং বাংলার নবাব ও দিল্লির আদালতের রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে।[৪৭][৪৮] এক ধরনের আঞ্চলিক বাঙালি মুঘল শৈলী ১৮ শতকে মুর্শিদাবাদে উন্নতি লাভ করেছিল।
-
জামদানি মসলিন
-
সেতার বাজানোরত মহিলার মুর্সিদাবাদের-শৈলী চিত্র
-
গাজী বাংলার বাঘের উপরে সওয়ার হয়েছেন এমন একটি স্ক্রোল পেইন্টিং
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাংলা জয় করার পরে ১৭৬৯ সালে বাংলার জনস্ংখ্যা ছিল ৩ কোটি যা ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পর ব্যাপক ভাবে কমে যায়।[৪৯] তখন সমগ্র ভারতের জনসংখ্যা ১৭৫০ সালে ছিল ১৯ কোটি[৫০] ( যার মধ্যে বাংলার জনসংখ্যা রয়েছে ১৬% ), যেখানে ১৭৫০ সালে এশিয়ার জনসংখ্যা অনুমান করা হয় ৫০ কোটি[৫১] ( যার মধ্যে বাংলার জনসংখ্যা রয়েছে ৬%) এবং বিশ্বের জনসংখ্যা ১৭৫০ সালে ৭৯ কোটি ছিল বলে অনুমান করা হয়[৫১] ( যার মধ্যে বাংলার জনসংখ্যা রয়েছে ৩.৮%)।
ব্রিটিশ শাসনের আগে বাংলার রাজধানী ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ছিল দশ লাখের বেশি।[৫২]
ধর্ম
[সম্পাদনা]বাংলা মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ ও হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিয়ে একটি সমৃদ্ধ প্রদেশ ছিল।[৫৩] স্থানীয় সূফী নেতারা ইসলামী ও বাঙালি সংস্কৃতিচর্চা একত্রিত করেছিলেন যা বাঙালি মুসলিম সমাজকে বিকশিত করেছিল।[৫৪]
অভিবাসন
[সম্পাদনা]মুঘল আমলে সাফাভি সাম্রাজ্য থেকে ব্যাপকভাবে অভিবাসী বাংলায় আসতে থাকে। ফার্সি প্রশাসক ও সামরিক কমান্ডারদের বাংলায় মুঘল সরকার কর্তৃক তালিকাভুক্ত হয়।[৫৫] একটি আর্মেনী সম্প্রদায় ঢাকায় বসবাস শুরু করে এবং কাপড়ের ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তার করে, এতে তাদের ৩.৫% শুল্ক প্রদান করতে হতো।[৫৬]
অর্থনিতি এবং বাণিজ্য
[সম্পাদনা]মুঘল সাম্রাজ্যের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল ছিল বাংলার সুবাহ। এটাকে নন্দকানন হিসেবে বর্ণনা করা হতো। অভ্যন্তরীণ সম্পদের অর্ধেকই উৎপাদন হতো এই অঞ্চল থেকে। এই অঞ্চল থেকে শস্য, সুতি মুসলিন ও সিল্ক, মদ ও ওয়াইন, লবণ, অলংকার, ফল, ধাতু এবং মুক্তা রফতানি করা হতো। ১৭ এবং ১৮ শতকে ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলো মুঘল বাংলায় অনেক ব্যবসায়িক খাত তৈরি করে। ঢাকা মুঘল বাংলার সবচেয়ে বড় শহর এবং বাণিজ্যিক রাজধানী ছিল। চট্টগ্রাম ছিল সবচেয়ে বড় বন্দর নগরী। উপকূলবর্তী বাণিজ্যিক অঞ্চল আরাকান, অযোধ্যা, বালেশ্বর, আচেহ, জহর, বান্তাম, মাকাসসার, শ্রীলঙ্কা, বন্দর আব্বাস, মক্কা, জেদ্দা, বসরা, আদিন, মাস্কাট, মখা এবং মালদ্বীপ এর সাথে যোগাযোগ ছিল।[৫৭][৫৮][৫৯]
পার্থসারথীর অনুমান অনুসারে ১৮শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বাংলায় এবং ব্রিটেনে তাঁত ও চরকা কাজের জন্য শস্যের মজুরি তুলনীয় ছিল।[৬০] তবে তথ্যের স্বল্পতার কারণে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে আরও গবেষণা প্রয়োজন।[৬১]
বাংলায় অনেক ব্যবসায়ী ও ব্যাংকার ছিল। তাদের মধ্যে ছিল জগত শেঠ পরিবার, যারা এই অঞ্চলের সবচেয়ে ধনী ব্যাংকার ছিল।
কৃষি সংস্কার
[সম্পাদনা]মুঘলরা বাংলার বদ্বীপকে কেন্দ্র করে একটি বিশাল অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকল্প চালু করেছিল যা তার জনসংখ্যার বিন্যাস বজায় রাখে।[৬২] সরকার কৃষিজমি সম্প্রসারণের জন্য উর্বর ভাটি অঞ্চলে বিস্তীর্ণ বনভূমি সাফ করে। তারা কৃষক ও জায়গিরদার সহ জনবসতিদেরকে এই বদ্বীপে বসতি স্থাপনের জন্য উৎসাহিত করে। সুফীদেরকে গ্রামের অধ্যক্ষ বা প্রধান হিসাবে নিয়োগ হয়। সম্রাট আকবর ফসল ও কর সংগ্রহের উন্নতির জন্য আধুনিক বাংলা ক্যালেন্ডারটিকে পুনরায় সংস্কার করেছিলেন। এই সুবাহ অঞ্চলটি উপমহাদেশের বৃহত্তম শস্য উৎপাদক হয়ে ওঠে।
আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরিতে এবং কিছুটা মির্জা নাথনের বাহারিস্তান-ই-গায়বী তে আমরা বঙ্গীয় রাজস্ব প্রশাসনের স্বল্প বিবরণ পাই।[৩২] আইন-ই-আকবরির মতে,
“প্রতি বছরের চাহিদা কিস্তিতে আট মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হ্তো, তারা (রায়ত) নিজেরাই রাজস্ব প্রাপ্তির জন্য নির্ধারিত স্থানে মোহর ও টাকা নিয়ে আসে, কারণ এখানে সরকার এবং চাষীদের মধ্যে শস্যের বিভাজন প্রচলিত ছিল না। ফসল সর্বদা প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকত, ফলে পরিমাপের উপর জোর দেওয়া হ্তো না এবং ফসলের প্রাক্কলন অনুসারে রাজস্ব দাবিগুলি নির্ধারণ করা হতো।”[৩২]
বিপরীতে বাহারিস্তান বলে যে বসন্ত এবং শরতের ফসলের পরে প্রতি বছর দুটি সংগ্রহ ছিল। এতে আরও বলা হয়েছে, অন্তত কিছু এলাকায় জরিপ ও জমি পরিমাপের ভিত্তিতে রাজস্ব দাবি করা হয়।[৬৩]
বাঙালি কৃষকরা ১৬০০ থেকে ১৬৫০ সালের মধ্যে লাভজনক নতুন নতুন ফসলের চাষ শুরু করে যার মধ্যে তুঁত চাষ এবং রেশম চাষের কৌশল শিখেছিল। সুবাহ বাংলার বিশ্বের একটি রেশম উৎপাদনকারী অঞ্চল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[৬৪]
বর্ধিত কৃষি উৎপাদনশীলতা খাদ্যের দাম কমিয়ে দিয়েছিল। এর ফলে ভারতীয় বস্ত্রশিল্প উপকৃত হয়েছিল। ব্রিটেনের তুলনায় রৌপ্য মুদ্রার মানের ভিত্তিতে দক্ষিণ ভারতে শস্যের দাম প্রায় অর্ধেক এবং বাংলায় এক-তৃতীয়াংশ ছিল। এর ফলে ভারতীয় বস্ত্রের জন্য রৌপ্য মুদ্রার দাম কমে যায়, যা তাদেরকে বৈশ্বিক বাজারে মূল্যগত সুবিধা দিয়েছিল।[৬৫]
শিল্প অর্থনীতি
[সম্পাদনা]অর্থনৈতিক ইতিহাসবিদ ইন্দ্রজিৎ রায়ের মতে ১৭শ শতাব্দীতে বাংলা একটি সমৃদ্ধ প্রদেশ ছিল, বস্ত্র উৎপাদন এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বৈশ্বিকভাবে বিখ্যাত ছিল।[৮] বাংলার রাজধানী ঢাকা ছিল সাম্রাজ্যের আর্থিক রাজধানী, যার জনসংখ্যা ছিল দশ লক্ষের বেশি এবং আনুমানিক ৮০,০০০ দক্ষ তাঁতি ছিল। এটি রেশম ও সুতির বস্ত্র, ইস্পাত, শোরাক এবং কৃষি ও শিল্পজাত পণ্য রপ্তানি করত।[৯] এই সময়ে বাংলায় খনিখনন, ধাতুবিদ্যা এবং শিপিংকে প্রোটো-শিল্পায়ন হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।[৬৬]
বহু ইতিহাসবিদ আর. সি. দত্তের দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে লিখেছেন, "বাংলার লুণ্ঠন সরাসরি ব্রিটেনে শিল্প বিপ্লবে অবদান রেখেছিল।"[১১][১২][১৩][৬৭] এই বিশ্লেষণটি বুঝায় যে বাংলায় সংগৃহীত পুঁজি শিল্প বিপ্লবের সময় ব্রিটিশ বস্ত্র শিল্পে বিনিয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়েছিল এবং ব্রিটিশ সম্পদকে অনেক বৃদ্ধি করেছিল, একই সময়ে বাংলার শিল্পায়নের ক্ষতি করেছিল।[১১][১২][১৩][৯]
ইতিহাসবিদ ইন্দ্রজিৎ রায়ের মতে, পলাশীর যুদ্ধের পরেও কয়েক দশক ধরে দেশের শিল্পগুলো সম্প্রসারিত হয়েছিল। যদিও ১৭৯০-এর দশক থেকে উপনিবেশ-ভিত্তিক মূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং রাষ্ট্রে বৈষম্য শুরু হয়েছিল, তবুও বাংলার শিল্পগুলো কিছু তুলনামূলক সৌকর্য ধরে রেখেছিল। রায় উল্লেখ করেছেন যে "বাংলার উদ্যোক্তারা সুতির এবং রেশম বস্ত্র শিল্পের মতো শিল্প চালিয়ে যান যেখানে স্থানীয় বাজারের সহায়তা ছিল" এবং প্রধান শিল্পায়নহীনতা ঘটে ১৮৩০ থেকে ১৮৫০ সালের দিকে।[৬৮]
টেক্সটাইল শিল্প
[সম্পাদনা]মুঘল শাসনের অধীনে, বিশ্বব্যাপী মসলিন ও রেশম ব্যবসায়ের কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাংলা। মুঘল আমলে তুলা উৎপাদনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রটি ছিল বাংলা, বিশেষত রাজধানী ঢাকা এর আশেপাশে অঞ্চল,এজন্য মধ্য এশিয়ার মতো দূরবর্তী বাজারগুলিতে মসলিনকে "ডাকা" বলা হত।[৫৪]
বাংলা ছিল বিশ্বব্যাপী মসলিন, পাট এবং রেশম বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল। সেই যুগে পাট এবং সুতির উৎপাদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল বাংলা, বিশেষ করে এর রাজধানী ঢাকা, যার ফলে মসলিনকে দূরবর্তী বাজার যেমন মধ্য এশিয়ায় "ঢাকা" বলা হতো।[৬৯] দেশে, ভারতের অনেক অংশ বাংলার পণ্য যেমন চাল, রেশম এবং সুতির বস্ত্রের উপর নির্ভর করত। বিদেশে, ইউরোপীয়রা বাংলার পণ্য যেমন সুতির বস্ত্র, রেশম এবং আফিমের উপর নির্ভর করত; উদাহরণস্বরূপ, এশিয়া থেকে ডাচ আমদানির ৪০% সরবরাহ করত বাংলা, যার মধ্যে ৫০% এর বেশি বস্ত্র এবং প্রায় ৮০% রেশম ছিল।[৭] বাংলার লবণশোরা ইউরোপে প্রেরিত হত, আফিম ইন্দোনেশিয়ায় বিক্রি হত, কাঁচা রেশম জাপান এবং নেদারল্যান্ডসে রপ্তানি হত এবং সুতি ও রেশমের বস্ত্র ইউরোপ, ইন্দোনেশিয়া এবং জাপানে রপ্তানি হত।[৭০] পাট বাণিজ্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।
জাহাজ নির্মাণ শিল্প
[সম্পাদনা]বাংলায় একটি বৃহৎ জাহাজ নির্মাণ শিল্প ছিল। ইন্দ্রজিৎ রায় অনুমান করেন যে ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে বাংলার জাহাজ নির্মাণের বার্ষিক উৎপাদন ছিল ২২৩,২৫০ টন, যেখানে ১৭৬৯ থেকে ১৭৭১ সালের মধ্যে উত্তর আমেরিকার উনিশটি উপনিবেশে উৎপাদিত হয়েছিল ২৩,০৬১ টন।[৭১] তিনি আরও মূল্যায়ন করেন যে বাংলায় জাহাজ মেরামতের কাজ খুবই উন্নত ছিল।[৭১]
জাহাজ নির্মাণে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন ছিল বাংলার চালের জাহাজে সমতল ডেক ডিজাইনের প্রবর্তন, যার ফলে জাহাজের খোল আরও শক্তিশালী এবং ধাপযুক্ত ডেক ডিজাইনের ঐতিহ্যগত ইউরোপীয় জাহাজের কাঠামোগতভাবে দুর্বল খোলের তুলনায় কম ফুটো হওয়ার প্রবণতা ছিল। ১৭৬০-এর দশকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পরবর্তীতে বাংলার চালের জাহাজের সমতল ডেক এবং খোলের ডিজাইন অনুকরণ করে, যা শিল্প বিপ্লবের সময় ইউরোপীয় জাহাজের নৌযোগ্যতা এবং নৌচালনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি আনে।[৭২]
প্রশাসনিক বিভাগ
[সম্পাদনা]১৫৮২ সালে রাজস্ব বন্দোবস্তের জন্য টোডর মল বাংলার সুবাহকে ২৪টি সরকারে (জেলা) বিভক্ত করেন, যার ১৯টি ছিল মুল বাংলায় এবং বাকি ৫টি উড়িষ্যাতে। ১৬০৭ সালে জাহাঙ্গীরের সময়কালে উড়িষ্যাকে আলাদা একটি সুবাহ করা হয়। ১৬৫৮ সালে এই ১৯ সরকার পরবর্তিতে ৬৮২টি পরগনায় বিভক্ত করা হয়, শাহ্ সুজা পরবর্তি রাজস্ব বন্দোবস্তের জন্য এটি করেন।[৭৩] নতুন ১৫টি সরকার এবং ৩৬১টি পরগনা এতে যুক্ত হয়। ১৬৭২ সালে মুর্শিদ কুলি খান পুরো সুবাহকে ১৩টি চাকলায় বিভক্ত করেন, যা পরবর্তিতে ১৬৬০টি পরগনায় বিভক্ত করা হয়।
প্রথমে সুবাহর রাজধানী ছিল তান্ডায়। ১৫৯৫ সালের ৯ নভেম্বর, রাজমহলে নতুন রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেন মান সিংহ ১, যিনি এর নাম দেন আকবরনগর।[৭৪] সুবাদার ইসলাম খান চিশতী ১৬১০ সালে রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত করেন[৭৫] এবং নাম দেয়া হয় জাহাঙ্গীরনগর। ১৬৩৯ সালে শাহ্ সুজা পুনরায় রাজমহলে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। ১৬৬০ সালে মুজ্জাম খান (মীর জুমলা) আবার রাজধানী ঢাকায় নিয়ে আসেন। ১৭০৩ সালে বাংলার দিওয়ান মুর্শিদ কুলি খান তার দপ্তর ঢাকা থেকে মকসুদাবাদে নিয়ে যান এবং পরবর্তিতে যার নাম রাখা হয় মুর্শিদাবাদ।
১৬৫৬ সালে শাহ সুজা সরকারদের পুনর্গঠিত করেন এবং ওড়িশাকে সুবাহ বাংলাতে যুক্ত করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
যেসব সরকার (জেলা) এবং পরগনা (তহশিল) বাংলার সুবাহতে ছিলঃ
সরকার | পরগনা |
---|---|
উদম্বর (তান্ডা) (আধুনিক যুগের এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে উত্তর বীরভূম, রাজমহল এবং মুর্শিদাবাদ) | ৫২ পরগনা |
জান্নাতবাদ | ৬৬ পরগনা |
ফতেহাবাদ
আধুনিক যুগের এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে বৃহত্তর ফরিদপুর এবং ফরিদপুর জেলার পশ্চিমাঞ্চল (আলফাডাঙ্গা উপজেলা, বোয়ালমারী উপজেলা ও মধুখালী উপজেলা) ব্যাতিত || ৩১ পরগনা | |
মাহমুদাবাদ আধুনিক যুগের এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে বৃহত্তর কুষ্টিয়া, ফরিদপুর জেলার পশ্চিমাঞ্চল (আলফাডাঙ্গা উপজেলা, বোয়ালমারী উপজেলা ও মধুখালী উপজেলা), মাগুরা জেলা এবং ঝিনাইদহ জেলা | ৮৮ পরগনা |
খলিফাতাবাদ | ৩৫ পরগনা |
বকলা | ৪ পরগনা |
পূর্ণিয়া | ৯ পরগনা |
তাজপুর পশ্চিম (দিনাজপুর) | ২৯ পরগনা |
ঘোড়াঘাট (দক্ষিণ রংপুর বিভাগ, বগুড়া) | ৮৪ পরগনা |
পিঞ্জারা | ২১ পরগনা |
বারবাকাবাদ (পশ্চিম দিনাজপুর) | ৩৮ পরগনা |
বাজুহা | ৩২ পরগনা |
সোনারগাঁও বর্তমানের ঢাকা বিভাগ ফরিদপুর অঞ্চল ব্যাতিত | ৫২ পরগনা |
সিলেট | ৮ পরগনা |
চট্টগ্রাম | ৭ পরগনা |
সরিফাবাদ | ২৬ পরগনা |
সুলাইমানাবাদ | ৩১ পরগনা |
সপ্তগ্রাম (আধুনিক হুগলি জেলা ও হাওড়া জেলা) | ৫৩ পরগনা |
মান্দরন | ১৬ পরগনা |
উড়িষ্যার সরকার:
সরকার | মহল |
---|---|
জলেশ্বর | ২৮ |
ভদ্রক | ৭ |
কটক | ২১ |
কলিং দন্ডপাট | ২৭ |
রাজ মহেন্দ্রীহ | ১৬ |
সরকার
[সম্পাদনা]১৫৭৬ থেকে ১৭১৭ সালের মাঝের সময়টাতে রাজ্য সরকার মুঘলদের নিযুক্ত একজন ভাইসরয় (সুবেদার নাজিম) দ্বারা পরিচালিত হয়। ভাইসরয় তার নিজের মন্ত্রিসভা এবং চার প্রধানমন্ত্রীদের (দেওয়ান) সাথে নিয়ে ব্যাপক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মুল বাংলার, বিহার ও উড়িষ্যার জন্য তিন সহকারী সুবাদারের ছিলেন, যারা নায়েব নাজিম হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিস্তৃত জমিদারী আভিজাত্য মুঘলগণ বাংলায় প্রতিষ্ঠা করেন। অভিজাতগণ শুল্ক ও লভ্যাংশ সংগ্রহ করার জন্য নিযুক্ত ছিলেন। ভূস্বামীগণ জায়গীর উপাধি লাভ করেছিলেন। কাজি উপাধি প্রধান বিচারপতির জন্য সংরক্ষিত ছিল। মনসবদাররা মুঘল সেনাবাহিনীর প্রধান এবং ফজুদাররা ছিলেন জেনারেল। মুঘলরা আকবরের আমলে ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্ববাদের জন্য প্রশংসিত হয়েছিলেন এবং আকবর সেসময় তার প্রবর্তিত ধর্ম দীন-ই-ইলাহির প্রচার শুরু করেন। পরবর্তিতে শাসকগণ আরও রক্ষণশীল ইসলামে জোর দেন।
১৭১৭ সালে মুঘল সরকার তাদের প্রভাবশালী সহকারী ভাইসরয় ও প্রধানমন্ত্রী মুর্শিদ কুলি খানের সাথে দ্বন্দ্বের কারণে ভাইসরয় আজিম-উস-শানকে সরিয়ে নেয়।[৭৬] ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য মুঘল আদালত বাংলায় বংশগত আধিপত্য অনুমোদন দেয়। ফলে খান দাপ্তরিক উপাধি নাজিম নামে পরিচিতি লাভ করে। তিনি নাসিরি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭৪০ সালে গিরিয়ার যুদ্ধে আলীবর্দী খান অভ্যুত্থান ঘটান এবং স্বল্পস্থায়ী আফসার রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে। সকল বাস্তবতার প্রেক্ষিতে নাজিমগণ স্বাধীন শাসক হিসেবে কাজ করতে থাকেন। ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো নওয়াব হিসেবে তাদের প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করেন।[৭৭]
সুবাহদারদের তালিকা
[সম্পাদনা]ব্যক্তির নাম[৭৮] | শাসনকাল | ||
---|---|---|---|
মুনিম খান খান-ই-খানান منعم خان، خان خاناں |
২৫ সেপ্টেম্বর ১৫৭৪ - ২৩ অক্টোবর ১৫৭৫ | ||
হোসেন কুলি বেগ খান জাহান ১ حسین قلی بیگ، خان جہاں اول |
১৫ নভেম্বর ১৫৭৫ - ১৯ ডিসেম্বর ১৫৭৮ | ||
মুজাফফর খান তুরবারি مظفر خان تربتی |
১৫৭৯ - ১৫৮০ | ||
মির্জা আজিজ কোকা খান-ই-আজম میرزا عزیز کوکہ،خان اعظم |
১৫৮২ - ১৫৮৩ | ||
শাহবাজ খান কামবোহ شھباز خان کمبوہ |
১৫৮৩ - ১৫৮৫ | ||
সাদিক খান صادق خان |
১৫৮৫ - ১৫৮৬ | ||
ওয়াজির খান তাজিক وزیر خان |
১৫৮৬ - ১৫৮৭ | ||
সাঈদ খান سعید خان |
১৫৮৭ - ১৫৯৪ | ||
রাজা মানসিংহ ১ راجہ مان سنگھ |
৪ জুন ১৫৯৪ - ১৬০৬ | ||
কুতুবুদিন কোকা قطب الدین خان کوکہ |
২ সেপ্টেম্বর - মে ১৬০৭ | ||
জাহাঙ্গীর কুলি বেগ جہانگیر قلی بیگ |
১৬০৭ - ১৬০৮ | ||
ইসলাম খাঁ ১ ইসলাম খান চিশতী اسلام خان چشتی |
জুন ১৬০৮ - ১৬১৩ | ||
কাসিম খান চিশতি قاسم خان چشتی |
১৬১৩ - ১৬১৭ | ||
ইব্রাহীম খান ফাতেহ জং ابراہیم خان فتح جنگ |
১৬১৭ - ১৬২২ | ||
মোহাবাত খান محابت خان |
১৬২২ - ১৬২৫ | ||
মির্জা আমানুল্লাহ খান জামান ২ میرزا أمان اللہ ، خان زماں ثانی |
১৬২৫ | ||
মোকাররম খান مکرم خان |
১৬২৫ - ১৬২৭ | ||
ফিদাই খান فدای خان |
১৬২৭ - ১৬২৮ | ||
কাসিম খান জুইনিকাসেম মনিজা قاسم خان جوینی، قاسم مانیجہ |
১৬২৮ - ১৬৩২ | ||
মীর মুহাম্মাদ বাকির আজম খান میر محمد باقر، اعظم خان |
১৬৩২ - ১৬৩৫ | ||
মীর আব্দুস সালাম ইসলাম খান মাশহাদি اسلام خان مشھدی |
১৬৩৫ - ১৬৩৯ | ||
সুলতান শাহ সুজা شاہ شجاع |
১৬৩৯-১৬৬০ | ||
মীর জুমলা ২ میر جملہ |
মে ১৬৬০ - ৩০ মার্চ ১৬৬৩ | ||
মির্জা আবু তালিব শায়েস্তা খান ১ میرزا ابو طالب، شایستہ خان |
মার্চ ১৬৬৪ - ১৬৭৬ | ||
আজম খান কোকা, ফিদাই খান ২ اعظم خان کوکہ، فدای خان ثانی |
১৬৭৬ - ১৬৭৭ | ||
সুলতান মুহাম্মদ আজম শাহ আলিজাহ محمد اعظم شاہ عالی جاہ |
১৬৭৮ - ১৬৭৯ | ||
মির্জা আবু তালিব শায়েস্তা খান ১ میرزا ابو طالب، شایستہ خان |
১৬৭৯ - ১৬৮৮ | ||
ইব্রাহীম খান ইবনে আলি মাদান খান ابراہیم خان ابن علی مردان خان |
১৬৮৮ - ১৬৯৭ | ||
সুলতান আজিম-উস-শান عظیم الشان |
১৬৯৭ - ১৭১২ | ||
১৭১২-১৭১৭ তে অন্যরা নিযুক্ত হয়েছিলেন কিন্তু প্রকাশ করা হয় নাই। সহকারী সুবেদার মুর্শিদ কুলি খান সেসময় নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন | |||
মুর্শিদ কুলি খান مرشد قلی خان |
১৭১৭ - ১৭২৭ |
নবাব নাজিমদের তালিকা
[সম্পাদনা]প্রতিকৃতি | উপাধিগত নাম | ব্যক্তিগত নাম | জন্ম | শাসনকাল | মৃত্যু |
---|---|---|---|---|---|
জাফর খান বাহাদুর নাসিরি | মুর্শিদ কুলি খান | ১৬৬৫ | ১৭১৭-১৭২৭ | ৩০ জুন ১৭২৭ | |
আলা-উদ-দিন হায়দার জং | সরফরাজ খান বাহাদুর | ? | ১৭২৭-১৭২৭ | ২৯ এপ্রিল ১৭৪০ | |
সুজা-উদ-দৌলা | সুজাউদ্দিন মুহাম্মদ খাঁ | আনুমানিক ১৬৬০ | জুলাই, ১৭২৭ – ২৬ আগস্ট ১৭৩৯ | ২৬ আগস্ট ১৭৩৯ | |
আলা-উদ-দিন হায়দার জং | সরফরাজ খান বাহাদুর | ? | ১৩ মার্চ ১৭৩৯ - এপ্রিল ১৭৪০ | ২৯ এপ্রিল ১৭৪০ | |
হাসিম উদ-দৌলা | মোহাম্মদ আলীবর্দী খান বাহাদুর | ১০ মে ১৬৭১ এর আগে | ২৯ এপ্রিল ১৭৪০ – ৯ এপ্রিল ১৭৫৬ | ৯ এপ্রিল ১৭৫৬ | |
সিরাজ উদ-দৌলা | মোহম্মদ সিরাজউদ্দৌলা | ১৭৩৩ | এপ্রিল ১৭৫৬ - ২ জুনে ১৭৫৭ | ২ জুলাই ১৭৫৭ |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ মোঃ আখতারুজ্জামান (২০১২)। "তান্ডা"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "Rajmahal - India"। Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ "Dhaka - national capital, Bangladesh"। Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ "The paradise of nations | Dhaka Tribune"। web.archive.org। ২০১৯-০৫-১৭। Archived from the original on ২০১৯-০৫-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০১।
- ↑ Pakistan Quarterly (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯৫৬।
- ↑ Islam, Sirajul (১৯৯২)। History of Bangladesh, 1704-1971: Economic history (ইংরেজি ভাষায়)। Asiatic Society of Bangladesh। আইএসবিএন 978-984-512-337-2।
- ↑ ক খ Om Prakash (২০০৬)। "Empire, Mughal"। John J. McCusker। History of World Trade Since 1450। World History in Context। 1। Macmillan Reference USA। পৃষ্ঠা 237–240। ১৮ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ ক খ Indrajit Ray (২০১১)। Bengal Industries and the British Industrial Revolution (1757-1857)। Routledge। পৃষ্ঠা 57, 90, 174। আইএসবিএন 978-1-136-82552-1। ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ ক খ গ ঘ খন্দকার, হিশাম (৩১ জুলাই ২০১৫)। "Which India is claiming to have been colonised?"। দ্য ডেইলি স্টার (উপ-সম্পাদকীয়)।
- ↑ Vaughn, James M. (মার্চ ২০১৮)। "John Company Armed: The English East India Company, the Anglo-Mughal War and Absolutist Imperialism, c . 1675–1690"। Britain and the World। 11 (1): 101–137। ডিওআই:10.3366/brw.2017.0283।
- ↑ ক খ গ ঘ জুনি টি. টং (২০১৬)। Finance and Society in 21st Century China: Chinese Culture Versus Western Markets। CRC Press। পৃষ্ঠা ১৫১। আইএসবিএন 978-1-317-13522-7।
- ↑ ক খ গ ঘ জন এল এসপোসিটো, সম্পাদক (২০০৪)। The Islamic World: Past and Present। 1। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 174। আইএসবিএন 978-0-19-516520-3। ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ ক খ গ ঘ ইন্দ্রজিৎ রায় (২০১১)। Bengal Industries and the British Industrial Revolution (1757-1857)। Routledge। পৃষ্ঠা 7–10। আইএসবিএন 978-1-136-82552-1। ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ রিচার্ড এম ইটন (১৯৯৬)। The Rise of Islam and the Bengal Frontier:1204-1760। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা xxiii। আইএসবিএন 0-520-20507-3।
- ↑ কে.এম করিম (২০১২)। "হুমায়ুন"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ Raychaudhuri, Tapan (১৯৫৩)। Bengal under Akbar and Jahangir: An Introductory Study in Social History (English ভাষায়)। আইএসবিএন 978-81-215-0356-3। ওসিএলসি 1031927334।
- ↑ "Dhaka"। Encyclopædia Britannica। ১৪ জুলাই ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- ↑ Schmidt, Karl J. (২০১৫)। An Atlas and Survey of South Asian History। Routledge। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- ↑ Wheeler, Sir Robert Eric Mortimer (১৯৫৩)। The Cambridge History of India: The Indus civilization। Supplementary volume। Cambridge University Publishers। পৃষ্ঠা 237–।
- ↑ Saradindu Shekhar Chakma. Ethnic Cleansing in Chittagong Hill Tracts. p. 23.
- ↑ ফারুকী সালমা আহমেদ (২০১১)। A Comprehensive History of Medieval India: From Twelfth to the Mid-Eighteenth Century। Pearson Education India। পৃষ্ঠা ৩৬৬–। আইএসবিএন 978-81-317-3202-1।
- ↑ কুনাল চক্রবর্তী; শুভ্র চক্রবর্তী (২০১৩)। Historical Dictionary of the Bengalis। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা ২৩৭–। আইএসবিএন 978-0-8108-8024-5।
- ↑ "Bengal, nawabs of (act. 1756–1793), rulers in India"। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি (অনলাইন সংস্করণ)। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। ২০০৪। ডিওআই:10.1093/ref:odnb/63552। (সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন।)
- ↑ "ʿAlī Vardī Khān | nawab of Bengal"। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। ২৮ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২১।
- ↑ "Bengal | region, Asia"। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। ১৯ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২১।
- ↑ "Odisha - History"। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২১।
- ↑ সিলিমান, জায়েল (২৮ ডিসেম্বর ২০১৭)। "Murshidabad can teach the rest of India how to restore heritage and market the past"। Scroll.in। ৩ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২১।
- ↑ উইলিয়াম ডালরিম্পল (২০১৯)। The Anarchy: The Relentless Rise of the East India Company। Bloomsbury Publishing। পৃষ্ঠা 33। আইএসবিএন 978-1-63557-395-4।
- ↑ ক খ Chaudhuri, K. N. (২০০৬-১১-২৩)। The Trading World of Asia and the English East India Company: 1660-1760 (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-03159-2।
- ↑ ক খ Marshall, P. J. (২০০৬-১১-০২)। Bengal: The British Bridgehead: Eastern India 1740-1828 (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-02822-6।
- ↑ Gupta, Brijen Kishore (১৯৬২)। Sirajuddaullah and the East India Company, 1756-1757: Background to the Foundation of British Power in India (ইংরেজি ভাষায়)। Brill Archive।
- ↑ ক খ গ Edwardes, Allen (১৯৬৬)। The Rape of India: A Biography of Robert Clive and a Sexual History of the Conquest of Hindustan (ইংরেজি ভাষায়)। Julian Press।
- ↑ Sarkar, Sir Jadunath (১৯৬৪)। Fall of the Mughal Empire (ইংরেজি ভাষায়)। M. C. Sarkar।
- ↑ A History of the Freedom Movement: Being the Story of Muslim Struggle for the Freedom of Hind-Pakistan, 1707-1947 (ইংরেজি ভাষায়)। Renaissance Publishing House। ১৯৫৭।
- ↑ The New Cambridge Modern History (ইংরেজি ভাষায়)। CUP Archive। ১৯৬৭।
they indulged in the unspeakable practice of gang-rape
- ↑ McDermott, Rachel Fell (২০০১-০৬-২৮)। Mother of My Heart, Daughter of My Dreams: Kali and Uma in the Devotional Poetry of Bengal (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-803071-3।
- ↑ Coupland, Sir Reginald (১৯৪৬)। Britain and India, 1600-1945 (ইংরেজি ভাষায়)। Longmans, Green।
- ↑ Daniyal, Shoaib। "Forgotten Indian history: The brutal Maratha invasions of Bengal"। Scroll.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০৮।
- ↑ Sengupta, Nitish K. (২০১১)। Land of Two Rivers: A History of Bengal from the Mahabharata to Mujib (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin Books India। আইএসবিএন 978-0-14-341678-4।
- ↑ Mehta, Jaswant Lal (২০০৫-০১-০১)। Advanced Study in the History of Modern India 1707-1813 (ইংরেজি ভাষায়)। Sterling Publishers Pvt. Ltd। আইএসবিএন 978-1-932705-54-6।
- ↑ Sarkar, Jadunath (১৯৯১)। Fall Of The Mughal Empire- Vol. I (4Th Edn.) (ইংরেজি ভাষায়)। Orient Longman। আইএসবিএন 978-81-250-1149-1।
- ↑ Taraphadāra, Mamatājura Rahamāna; Dhaka, University of (১৯৯৯)। Husain Shahi Bengal, 1494-1538 A.D.: A Socio-political Study (ইংরেজি ভাষায়)। University of Dhaka।
- ↑ সালেহ উদ্দীন খান এবং সৈয়দ ওয়াহেদুজ্জামান (২০১২)। "সামরিক বাহিনী"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ সিরাজুল ইসলাম (২০১২)। "শোরা"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ ক খ গ "The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204–1760"। Publishing.cdlib.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- ↑ Hough, Michael (২০০৪)। Cities and Natural Process: A Basis for Sustainability। Psychology Press। পৃষ্ঠা 57–। আইএসবিএন 978-0-415-29854-4।
- ↑ "In Search of Bangladeshi Islamic Art"। www.metmuseum.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৩।
- ↑ Khandker, Hissam (৩১ জুলাই ২০১৫)। "Which India is claiming to have been colonised?"। The Daily Star (Op-ed)।
- ↑ Mukherjee, Janam (২০১৫)। Hungry Bengal: War, Famine and the End of Empire (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-020988-9।
- ↑ Bagchi, Amiya Kumar (২০০৮-০১-২৮)। Perilous Passage: Mankind and the Global Ascendancy of Capital (ইংরেজি ভাষায়)। Rowman & Littlefield Publishers। আইএসবিএন 978-1-4617-0515-4।
- ↑ ক খ Data from United Nations Department of Economic and Social Affairs, Population Division. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ মার্চ ২০১৪ তারিখে 1950–2100 estimates (only medium variants shown): (a) World Population Prospects: The 2008 Revision. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ মার্চ ২০০৭ তারিখে Estimates prior to 1950: (b) "The World at Six Billion", 1999. Estimates from 1950 to 2100: (c) "Population of the entire world, yearly, 1950 - 2100", 2013. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে
- ↑ "Which India is claiming to have been colonised?"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৭-৩১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০৫।
- ↑ Tong, Junie T. (২০১৬-০৪-১৫)। Finance and Society in 21st Century China: Chinese Culture versus Western Markets (ইংরেজি ভাষায়)। CRC Press। আইএসবিএন 978-1-317-13522-7।
- ↑ ক খ Eaton, Richard M. (১৯৯৬-০৭-৩১)। The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204-1760 (ইংরেজি ভাষায়)। University of California Press। আইএসবিএন 978-0-520-20507-9।
- ↑ আবদুল করিম (২০১২)। "ইরানি"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ আনসার আলী, সুশীল চৈাধুরী এবং সিরাজুল ইসলাম (২০১২)। "আর্মেনীয়"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ Pearson, M. (২০০৭)। The Indian Ocean। Routledge। আইএসবিএন 978-0-415-44538-2। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৪-২১।
- ↑ Khandker, Hissam (৩১ জুলাই ২০১৫)। "Which India is claiming to have been colonised?"। The Daily Star (Op-ed)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- ↑ Nanda, J. N. (২০০৫)। Bengal: The Unique State। Concept Publishing Company। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- ↑ Prasannan Parthasarathi (২০১১)। Why Europe Grew Rich and Asia Did Not: Global Economic Divergence, 1600-1850। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 39। আইএসবিএন 978-1-139-49889-0। ৪ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ Prasannan Parthasarathi (২০১১)। Why Europe Grew Rich and Asia Did Not: Global Economic Divergence, 1600–1850। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 45। আইএসবিএন 978-1-139-49889-0। ৪ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ Richard Maxwell Eaton (১৯৯৬)। The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204–1760। University of California Press। পৃষ্ঠা 312–313। আইএসবিএন 978-0-520-20507-9। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৬।
- ↑ Tapan Raychaudhuri (১৯৫৩)। Bengal under Akbar and Jahangir: An Introductory Study in Social History। Calcutta: A. Mukherjee। পৃষ্ঠা 24। ওসিএলসি 5585437।
- ↑ Richards, John F. (১৯৯৫)। The Mughal Empire (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-56603-2।
- ↑ Prasannan Parthasarathi (২০১১)। Why Europe Grew Rich and Asia Did Not: Global Economic Divergence, 1600–1850। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 42। আইএসবিএন 978-1-139-49889-0। ৪ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ Abhay Kumar Singh (২০০৬)। Modern World System and Indian Proto-industrialization: Bengal 1650–1800। I। Northern Book Centre। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 978-81-7211-201-1।
- ↑ Shombit Sengupta (৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "Bengal's plunder gifted the British Industrial Revolution"। The Financial Express। ১ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ Indrajit Ray (২০১১)। Bengal Industries and the British Industrial Revolution (1757-1857)। Routledge। পৃষ্ঠা 245–254। আইএসবিএন 978-1-136-82552-1।
- ↑ Richard Maxwell Eaton (1996), The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204-1760 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে, page 202, University of California Press
- ↑ John F. Richards (১৯৯৫)। The Mughal Empire। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 202। আইএসবিএন 978-0-521-56603-2।
- ↑ ক খ Indrajit Ray (২০১১)। Bengal Industries and the British Industrial Revolution (1757-1857)। Routledge। পৃষ্ঠা 174। আইএসবিএন 978-1-136-82552-1।
- ↑ "Technological Dynamism in a Stagnant Sector: Safety at Sea during the Early Industrial Revolution" (পিডিএফ)। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ Jarrett, H. S. (1949) [1891] The Ain-i-Akbari by Abul Fazl-i-Allami, Vol.II, (ed.) J. N. Sarkar, Calcutta: The Asiatic Society, pp.142-55
- ↑ Sarkar, Jadunath (১৯৮৪)। A History of Jaipur, c. 1503-1938। New Delhi: Orient Longman। পৃষ্ঠা 81। আইএসবিএন 81-250-0333-9।
- ↑ Gommans, Jos (২০০২)। Mughal Warfare: Indian Frontiers and Highroads to Empire, 1500-1700। Oxon: Routledge। পৃষ্ঠা 27। আইএসবিএন 0-415-23988-5।
- ↑ Chatterjee, Anjali (২০১২)। "Azim-us-Shan"। Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (দ্বিতীয় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৬।
- ↑ Islam, Sirajul (২০১২)। "Nawab"। Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (দ্বিতীয় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। ১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ Eaton, Richard M. (১৯৯৩)। The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204-1760। Berkeley: University of California Press। পৃষ্ঠা 325–6। আইএসবিএন 0-520-20507-3।