ভুট্টা
Maize | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
বিভাগ: | Magnoliophyta |
শ্রেণী: | Liliopsida |
বর্গ: | Poales |
পরিবার: | Poaceae |
গণ: | Zea |
প্রজাতি: | Z. mays |
দ্বিপদী নাম | |
Zea mays L. |
ভুট্টা (বৈজ্ঞানিক নাম Zea mays) একপ্রকারের খাদ্য শস্য। এই শস্যটির আদি উৎপত্তিস্থল মেসোআমেরিকা।[১][২] ইউরোপীয়রা আমেরিকা মহাদেশে পদার্পণ করার পর এটি পৃথিবীর অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে।
পুষ্টি মূল্য
[সম্পাদনা]ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টার পুষ্টিমান বেশি। এতে প্রায় ১১% আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় উপাদান রয়েছে। আমিষে প্রয়োজনীয় এ্যামিনো এসিড, ট্রিপটোফ্যান ও লাইসিন অধিক পরিমাণে আছে। এছাড়া হলদে রংয়ের ভুট্টা দানায় প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৯০ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন বা ভিটামিন "এ" থাকে।
ব্যবহার
[সম্পাদনা]ভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবং ভুট্টার গাছ ও সবুজ পাতা উন্নত মানের গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবেও এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছ। শুধু পশু, মুরগির খামার ও মাছের চাহিদা মিটানোর জন্যই বছরে প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার টন ভুট্টা দানা প্রয়োজন। বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন জমিতে পানি জমে না থাকে। জুমচাষেও ভুট্টার আবাদ হয়।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি
[সম্পাদনা]জমি তৈরীর শেষ পর্যায়ে অনুমোদিত ইউরিয়ার এক তৃতীয়াংশ এবং এ সময় হেক্টর প্রতি জিংক সালফেট ১০-১৫কেজি,বোরন সার ৫-৭ কেজি এবং গোবর সার ৫ টন প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। অন্যান্য ইউরিয়া সারের সবটুকু ছিটিয়ে জমি চাষ দিতে হবে। বাকি ইউরয়া সমান ২ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তি বীজ গজানোর ২৫-৩০ দিন পরএবং দ্বিতীয় কিস্তি- বীজ গজানোর ৪০-৫০ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে। চারা গজানোর ৩০ দিনের মধ্যে জমি থেকে অতিরিক্ত চারা তুলে ফেলতে হবে। চারার বয়স এক মাস না হওয়া পর্যন্ত জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা
[সম্পাদনা]উচ্চ ফলনশীল জাতের ভুট্টার আশানুরূপ ফলন পেতে হলে রবি মরশুমে সেচ প্রয়োগ অত্যাবশ্যক। উদ্ভাবিত জাতে নিম্নরূপ ৩-৪টি সেচ দেওয়া যায়।
- প্রথমসেচ : বীজ বপনের ১৫-২০ দিনের মধ্যে (৪-৬ পাতা পর্যায়)
- দ্বিতীয়সেচ : বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে (৮-১২ পাতা পর্যায়)
- তৃতীয়সেচ : বীজ বপনের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে (মোচা বের হওয়া পর্যায়)
- চতুর্থসেচ : বীজ বপনের ৮৫-৯৫ দিনের মধ্যে (দানা বাঁধার পূর্বপর্যায়)
ভুট্টার ফুল ফোটা ও দানা বাঁধার সময় কোন ক্রমেই জমিতে যাতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জমিতে আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী দিয়ে দমন করতে হবে। ভুট্টার চারা অবস্থায় কাটুই পোকার আক্রমণ হলে হাত দিয়ে তা মেরে ফেলতে হবে।
রোগ ব্যবস্থাপনা
[সম্পাদনা]ভুট্টারবীজ পচা এবং চারা গাছের রোগ
[সম্পাদনা]বীজ পচা এবং চারা নষ্ট হওয়ার কারণে সাধারণত ক্ষেতে ভুট্টা গাছের সংখ্যা কমে যায়। নানা প্রকার বীজ ও মাটি বাহিত ছত্রাক যেমন পিথিয়াম, রাইজোকটনিয়া, ফিউজেরিয়াম, বীজ বপন, চারা ঝলসানো, রোগ ও শিকড়পচা রোগ ঘটে থাকে। জমিতে রসের পরিমাণ বেশি হলে এবং মাটির তাপমাত্রা কম থাকলে বপনকৃত বীজের চারা বড় হতে অনেক সময় লাগে। ফলে এ সময়ে ছত্রাকের আক্রমণের মাত্রা বেড়ে যায়।
প্রতিকার
[সম্পাদনা]- সুস্থ্য, সবল ও ক্ষতমুক্ত বীজ এবং ভুট্টার বীজ পচা রোগ প্রতিরোধী বর্ণালী ওমোহর জাত ব্যবহার করতে হবে।
- উত্তমরূপে জমি তৈরী করে পরিমিত রস ও তাপমাত্রায় (১৩ সে. এর বেশি) বপন করতে হবে।
- থিরাম বা ভিটাভেক্স (০.২৫%) প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করলে ভুট্টার বীজ পচারোগের আক্রমণ অনেক কমে যায়।
ভুট্টারপাতা ঝলসানো রোগ দমন
[সম্পাদনা]হেলমিনথোসপরিয়াম টারসিকাম ও হেলমিনথোসপরিয়াম মেইডিস নামক ছত্রাকদ্বয় এ রোগ সৃষ্টি করে। প্রথম ছত্রাকটি দ্বারা দেশে ভুট্টার পাতা ঝলসানো রোগ বেশি হতে দেখা যায়। হেলমিনথোসপরিয়াম টারসকাম দ্বারা আক্রান্ত গাছের নিচের দিকের পাতায় লম্বাটে ধূসর বর্ণের দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে গাছের উপরের অংশে তা বিস্তার লাভ করে। রোগের প্রকোপ বেশি হলে পাতা আগাম শুকিয়ে যায় এবং গাছ মরে যায়।এ রোগের জীবাণু গাছের আক্রান্ত অংশে অনেক দিন বেঁচে থাকে জীবাণুর বীজকণা বা কনিডিয়া বাতাসের সাহায্যে অনেক দূর পর্যন্ত সুস্থ্ গাছে ছড়াতে পারে। বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হলে এবং ১৮-২৭ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রায় এ রোগের আক্রমণ বেড়ে যায়।
প্রতিকার
[সম্পাদনা]- রোগ প্রতিরোধী জাতের (মোহর) চাষ করতে হবে।
- আক্রান্ত ফসলে টিল্ট ২৫০ ইসি (০.০৪%) ১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতেহবে।
- ভুট্টা তোলার পর জমি থেকে আক্রান্ত গাছ সরিয়ে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
ফসল সংগ্রহ
[সম্পাদনা]দানার জন্য ভুট্টা সংগ্রহের ক্ষেত্রে মোচা চক্চক্ খড়ের রং ধারণ করলে এবং পাতা কিছুটা হলদে হলে সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। এ অবস্থায় মোচা থেকে ছড়ানো বীজের গোড়ায় কালো দাগ দেখা যাবে। ভুট্টাগাছের মোচা ৭৫-৮০% পরিপক্ব হলে ভুট্টা সংগ্রহ করা যাবে। বীজ হিসেবে মোচার মাঝামাঝি অংশ থেকে বড় ও পুষ্ট দানা সংগ্রহ করতে হবে।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
কাঁচা রেশমযুক্ত স্ত্রী পুষ্প বিন্যাস
-
পরিপক্ব রেশম
-
বৃন্ত, মঁজরী এবং রেশম
-
পুরুষ ফুল
-
পূর্ণ বর্ধিত ভুট্টা চারাগাছ
-
বৃন্তের উপর পরিপক্ব ভুট্টা
-
ভুট্টা শাঁঁস
-
ভুট্টা চারাগাছ চিত্র
-
ভুট্টার কর্ণের সাথে শাঁসের অনিয়মিত সারি
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "The Evolution of Corn"। University of Utah HEALTH SCIENCES। ১৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "Archaeological evidence of teosinte domestication from Guilá Naquitz, Oaxaca"। PNAS। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১৮।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |