ভারতীয় রেলের সাংগঠনিক পরিকাঠামো
ভারতীয় রেলওয়ে সাংগঠনিক পরিকাঠামো ভারতীয় রেলের একাধিক কার্যসম্পাদনাকারী বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত। সারা বিশ্বে সাধারণত এইভাবেই রেলওয়ে সংগঠন পরিচালিত হয়। ভারতীয় রেল এই সাংগঠনিক পরিকাঠামোর ব্যাপারে বিশেষ পরীক্ষানিরীক্ষার পথে যায়নি। ব্রিটিশ যুগ থেকেই তাই এই পরিকাঠামোর মূল ব্যবস্থাটি অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
রেলওয়ে বোর্ড
[সম্পাদনা]ভারতীয় রেলের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপন সংস্থা হল রেল মন্ত্রকের অধীনস্থ রেলওয়ে বোর্ড। এই বোর্ডের শীর্ষে থাকেন একজন চেয়ারম্যান, যিনি রেলমন্ত্রীর কাছে যাবতীয় রিপোর্ট পেশ করেন। চেয়ারম্যানকে বাদ দিলে এই বোর্ডের সদস্যসংখ্যা পাঁচ। ক্ষেত্রীয় রেলওয়ের জেনেরাল ম্যানেজারেরা এবং উৎপাদন সংগঠনগুলি রেলওয়ে বোর্ডের কাছে রিপোর্ট পেশ করে।
কার্যসম্পাদনাকারী শাখাসমূহ
[সম্পাদনা]ভারতীয় রেলওয়ের বিভিন্ন ক্যাডারবাহিনীগুলি হল:
- নন-টেকনিক্যাল পরিষেবা, ইউপিএসসি দ্বারা আয়োজিত সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা বা আইএএস (অ্যালায়েড) সার্ভিসেস পরীক্ষার দ্বারা নিয়োগীকৃত
- ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ট্রাফিক সার্ভিস (আইআরটিএস)
- ইন্ডিয়ান রেলওয়ে অ্যাকাউন্টস সার্ভিস (আইআরএএস)
- ইন্ডিয়ান রেলওয়ে পারসোনেল সার্ভিস (আইআরপিএস)
- রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (আরপিএফ)
- টেকনিক্যাল পরিষেবা, ইউপিএসসি আয়োজিত ইন্ডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সামিনেশন দ্বারা নিয়োগীকৃত
- ইন্ডিয়ান রেলওয়ে সার্ভিস অফ (সিভিল) ইঞ্জিনিয়ারস (আইআরএসই)
- ইন্ডিয়ান রেলওয়ে সার্ভিস অফ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারস (আইআরএসইই)
- ইন্ডিয়ান রেলওয়ে সার্ভিস অফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারস (আইআরএসএমই)
- ইন্ডিয়ান রেলওয়ে স্টোর সার্ভিস (আইআরএসএস)
- ইন্ডিয়ান রেলওয়ে সার্ভিস অফ সিগন্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (আইআরএসএসই)
- ইউপিএসসি আয়োজিত কম্বাইন্ড মেডিক্যাল একজামিনেশন দ্বারা নিয়োগীকৃত
- ইন্ডিয়ান রেলওয়ে মেডিক্যাল সার্ভিস (আইআরএমএস)
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম রেলওয়ে ব্যবস্তা এই ভারতীয় রেল স্থানীয় স্তরে পরিচালিত হয়ে থাকে। ভারতীয় রেল ১৬টি ক্ষেত্রীয় রেলে বিভক্ত। একজন জেনেরাল ম্যানেজারের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিটি ক্ষেত্রীয় রেলওয়ে আধা-স্বশাসিত সংস্থা। এইভাবে একটি মৌলিক সংস্থার সৃষ্টি হয় এবং কার্যসম্পাদনাকারী শাখাগুলি নিম্নলিখিত দুইভাবে দ্বৈত নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে:
- আঞ্চলিক স্তরে কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ
- রেলওয়ে বোর্ড থেকে কার্যসম্পাদনার নীতি ও নির্দেশনা গ্রহণ
আঞ্চলিক সংগঠন
[সম্পাদনা]রেল অঞ্চল
[সম্পাদনা]ভারতীয় রেলের বর্তমান অঞ্চলগুলি হল:
নাম | নামসংক্ষেপ | সদর |
---|---|---|
মধ্য রেল | সিআর (CR) | মুম্বাই |
পূর্ব রেল | ইআর (ER) | কলকাতা |
পূর্ব মধ্য রেল | ইসিআর (ECR) | পটনা |
পূর্ব উপকূলীয় রেল | ইসিওআর (ECoR) | ভুবনেশ্বর |
কোঙ্কন রেল | কেআর (KR) | নবি মুম্বাই |
উত্তর রেল | এনআর (NR) | দিল্লি |
উত্তর মধ্য রেল | এনসিআর (NCR) | এলাহাবাদ |
উত্তর পশ্চিম রেল | এনডব্লিউআর (NWR) | জয়পুর |
উত্তর পূর্ব রেল | এনইআর (NER) | গোরখপুর |
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল | এনএফআর (NFR) | মালিগাঁও (গুয়াহাটি) |
দক্ষিণ রেল | এসআর (SR) | চেন্নাই |
দক্ষিণ মধ্য রেল | এসসিআর (SCR) | সেকেন্দ্রাবাদ |
দক্ষিণ পূর্ব রেল | এসইআর (SER) | কলকাতা |
দক্ষিণ পূর্ব মধ্য রেল | এসইসিআর (SECR) | বিলাসপুর, ছত্তিশগড় |
দক্ষিণ পশ্চিম রেল | এসডব্লিউআর (SWR) | হুবলি |
পশ্চিম রেল | ডব্লিউআর (WR) | মুম্বাই |
পশ্চিম মধ্য রেল | ডব্লিউসিআর (WCR) | জব্বলপুর |
প্রতিটি ক্ষেত্র নিজ নিজ এলাকাভুক্ত কর্মশালার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিযুক্ত। ভারতীয় রেলের উৎপাদন সংগঠনসমূহ এর অন্তর্গত নয়। সেগুলির জেনারেল ম্যানেজারেরা সরাসরি রেলওয়ে বোর্ডের কাছে রিপোর্ট পেশ করে।
বিভাগীয় সংগঠন
[সম্পাদনা]বিভাগীয় স্তরে ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিএমও) সংগঠনের কর্ণধার। বর্তমানে সারা দেশে ৬৭টি রেলওয়ে বিভাগ রয়েছে। এই বিভাগগুলি প্রধানত ট্রেনচালনার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এগুলির লোকো শেড (লোকোমোটিভ মেরামত কেন্দ্র), কোচিং ডিপো (প্যাসেঞ্জার ট্রেনের রিয়েপার হোম বেস) ও ওয়াগন ডিপো (ফ্রেট স্টকের রিপেয়ার ও রক্ষণাবেক্ষণ স্থল) থাকতে পারে।
প্রত্যেকটি বিভাগের সকল কার্যসম্পাদনাকারী (লাইন ও স্টাফ উভয় স্তরেই) সংগঠন বিদ্যমান থাকে। প্রশাসনিক ব্যাপারে এই সংগঠনগুলির প্রধানেরা ডিএমও-র নিকট রিপোর্ট পেশ করলেও নির্দেশনার প্রশ্নে তারা রেলওয়ে বোর্ড এবং নীতি নির্দেশিকার প্রশ্নে ক্ষেত্রীয় সদরের উপর নির্ভরশীল।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]সরকারি ওয়েবসাইটসমূহ
[সম্পাদনা]উত্তর রেল ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে
দক্ষিণ পূর্ব মধ্য রেল[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]