বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল | |
সংক্ষেপে | বিসিসি |
---|---|
গঠিত | ১৯৮৩ (জাতীয় কম্পিউটার কমিটি হিসেবে) ১৯৯০ (বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল হিসেবে) |
ধরন | সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান |
উদ্দেশ্য | তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি |
সদরদপ্তর | আগারগাঁও,ঢাকা, বাংলাদেশ |
অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৪৬′৪৩″ উত্তর ৯০°২২′২৮″ পূর্ব / ২৩.৭৭৮৬৭° উত্তর ৯০.৩৭৪৩৮° পূর্ব |
যে অঞ্চলে কাজ করে | বাংলাদেশ |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
প্রধান অঙ্গ | কাউন্সিল |
প্রধান প্রতিষ্ঠান | তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ |
ওয়েবসাইট | www |
প্রাক্তন নাম | জাতীয় কম্পিউটার বোর্ড |
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় আগারগাঁও, ঢাকা, বাংলাদেশে অবস্থিত।[১] বিসিসি ১৯৮৩ সালে জাতীয় কম্পিউটার কমিটি (NCC) নামে পরিচিত ছিল এবং ১৯৯০ সালে জাতীয় সংসদের ৯নং আইন মাধ্যমে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে রূপান্তরিত হয়।[১]
প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বিসিসি দেশের প্রযুক্তি খাতে বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (তথ্য ও প্রযুক্তি) উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী একটি প্রতিষ্ঠান। বিসিসি বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে জাতীয় তথ্য ও প্রযুক্তি পরিকল্পনা, কৌশল এবং নীতি তৈরি করে। বিসিসি দেশের তথ্য ও প্রযুক্তির স্ট্যান্ডার্ড ও স্পেসিফিকেশন নির্ধারণ, অবকাঠামো তৈরি, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এবং এর সাথে সম্পর্কিত নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শ প্রদান করে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা, সাইবার অপরাধের সাথে সম্পর্কিত সমস্যা শনাক্তকরণ, তদন্ত, প্রতিকার, প্রতিরোধ এবং দমনের পাশাপাশি আইসিটি অডিট পরিচালনা করে থাকে।[২][৩]
বিসিসি দেশের তথ্য ও প্রযুক্তির অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাগভনেট, ইনফো-সরকার ফেজ-II ও ফেজ-III, কানেক্টেড বাংলাদেশ সহ আরো অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে যার অনেকগুলো ইতোমধ্যেই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।[৪][৫] বিসিসি মানব সম্পদ উন্নয়নেও কাজ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবন্ধী, ট্রান্সজেন্ডার এবং নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে।[৬]
দেশে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষার প্রচার এবং উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় শিশু ও কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড, আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ওয়ার্ল্ড ফাইনাল এর মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আয়োজন করে আসছে। এই ইভেন্টগুলি বিভিন্ন বয়স এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকদের দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ করে দেয়, দেশের স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেমকে এগিয়ে নেয় এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ায়। ২০২২ সালে বিসিসি ঢাকায় ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ওয়ার্ল্ড ফাইনাল আয়োজন করে।[৭]
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বিসিসি বেশ কয়েকটি পুরস্কার এবং স্বীকৃতি পেয়েছে। এর মধ্যে WITSA পুরস্কার, WSIS বিজয়ী পুরস্কার, ASOCIO ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যাওয়ার্ড,ওপেন গ্রুপ প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড এবং জনপ্রশাসন পদক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সরকার “জাতীয় কম্পিউটার কমিটি” প্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৮৮ সালে এই কমিটিকে “জাতীয় কম্পিউটার বোর্ড” নামে নামকরণ করা হয়। ১৯৮৯ সালে “বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অধ্যাদেশ” জারি করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে জাতীয় সংসদের ৯নং আইন “বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল আইন, ১৯৯০”[৮] এর বলে জাতীয় কম্পিউটার বোর্ডকে “বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল” নামে রূপান্তর করে একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বিসিসি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের অধীন পরিচালিত হয়। ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে তৎকালীন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা হয়।[১]
কালের পরিক্রমায় তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য বিসিসি'র কার্যক্রমের পরিধি আরো বিস্তৃত হয়। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে ন্যস্ত করা হয়।[১]
উদ্দেশ্য
[সম্পাদনা]বিসিসি'র উদ্দেশ্যসমূহ হল:[৯]
- জাতীয় তথ্য ও প্রযুক্তি নীতি, কৌশল ও পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে তথ্য ও প্রযুক্তির কার্যকর প্রয়োগ এবং সম্প্রসারণ করা;
- স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করা;
- ই-গভর্নমেন্ট বাস্তবায়ন করা;
- সরকারি সংস্থাসমূহ ও বেসরকারি অংশীদারদের মধ্যে সমন্বয় করে জাতীয় তথ্য ও প্রযুক্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা;
- তথ্য ও প্রযুক্তিতে গবেষণা ও উন্নয়নকে উৎসাহিত করা;
- তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক শিল্পের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলা।
দায়িত্ব
[সম্পাদনা]বিসিসি'র দায়িত্বসমূহ হল:[৮]
- দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কমপিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহ দান করা;
- জাতীয় অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে কম্পিউটারের ব্যবহারিক কাঠামোর উন্নয়ন করা এবং কমপিউটার সংক্রান্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পেশাগত মান উন্নীত করা;
- তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকগণকে উপযোগী করিয়া গড়িয়া তোলা;
- কমপিউটার সম্পর্কিত মানবসম্পদ ও দক্ষতা বৃদ্ধি করিয়া উহা বিশ্ববাজারে রপ্তানি করার জন্য উৎসাহ দান করা;
- কমপিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে জাতীয় কৌশল ও নীতি নির্ধারণ করা ও উহা বাস্তবায়ন করা;
- কমপিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকার এবং অন্যান্য সংস্থার সহিত সহযোগিতা করা এবং তদ্সম্পর্কে তাহাদিগকে পরামর্শ দান করা;
- সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার উৎসাহিত করা;
- তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা সংক্রান্ত পরামর্শ দান করা;
- কমপিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পাঠাগার ও পরীক্ষাগার (ল্যাবরেটরী) নির্মাণ করা এবং উহাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা এবং ঐগুলি সংরক্ষণ করা;
- তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা, পর্যালোচনা করা এবং উহাদের প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
- কমপিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রণয়ন এবং প্রকল্প ও সাময়িকী প্রকাশ করা;
- কমপিউটার, তথ্য প্রযুক্তি এবং তৎসংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের উপর আলোচনা ও কর্মশালার আয়োজন করা এবং তদ্সম্পর্কে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা;
- তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গবেষণা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পরিচালনার জন্য অনুদান প্রদান করা;
- তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে জাতীয় লক্ষ্য অর্জনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি ও বেসরকারি এবং দেশীয় ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগাযোগ স্থাপন করা ও সহযোগিতা করা;
- কাউন্সিলের কার্যাবলী সম্পাদনের প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে দেশী ও বিদেশি যে কোন প্রতিষ্ঠানের সহিত চুক্তি সম্পাদন করা;
- কমপিউটার সংক্রান্ত কোন বিশেষ কর্তব্য পালনের জন্য সরকার কর্তৃক আদিষ্ট হইলে উহা পালন করা;
- কমপিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির মান ও স্পেসিফকেশনস নির্ধারণ করা;
- উপরি-উক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা৷
বাংলাদেশে আইসিটি খাতের বিকাশে এই কার্যক্রমগুলি বাস্তবায়নে বিসিসি একাধিক উদ্যোগ এবং প্রকল্প গ্রহণ করে থাকে।
কাউন্সিল কমিটি
[সম্পাদনা]বিসিসি'র কাউন্সিল কমিটি বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ১২ জন ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত। প্রতিষ্ঠানটির সকল কার্যক্রম এই কাউন্সিল কমিটি তদারকি ও পরিচালনার করে। কাউন্সিল কমিটির গঠন নিম্নরূপ:[১০]
- সভাপতি: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী
- সহ-সভাপতি: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব
- সদস্য-সচিব: বিসিসি'র নির্বাহী পরিচালক
- সদস্য: বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা, আইটি ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমির ০৯ জন সদস্য।
সাংগঠনিক কাঠামো
[সম্পাদনা]বিসিসি'র সাংগঠনিক কাঠামো সরকারের বহুমুখী দায়িত্ব এবং উদ্যোগসমূহ দক্ষতার সাথে পরিচালনা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। বিসিসি'র সর্বোচ্চ কর্মকর্তা নির্বাহী পরিচালক। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক সরকারের জাতীয় আইসিটি অবকাঠামো উন্নয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা। নির্বাহী পরিচালকের অধীনে তিনটি বিভাগ রয়েছে। এই প্রতিটি বিভাগের প্রধান একজন সদস্য। এই প্রতিটি বিভাগ আরো বিভিন্ন উপবিভাগ নিয়ে গঠিত। প্রতিটি উপবিভাগ একজন পরিচালকের অধীনে পরিচালিত হয়। কারিগরি ও প্রযুক্তি বিভাগ ডেটা সেন্টার, সার্টিফাইং অথরিটি, অবজেক্ট আইডেন্টিফায়ার (ওআইডি) এবং সরকারি পর্যায়ের আইসিটি সাপোর্ট পরিষেবা প্রদান ইত্যাদির মতো বিভিন্ন কারিগরি ও প্রযুক্তিগত বিষয় পরিচালনা করে। নীতি, কৌশল এবং উন্নয়ন বিভাগ তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত নীতি, কৌশল এবং উন্নয়ন প্রচেষ্টা প্রণয়ন এবং তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে। সক্ষমতা উন্নয়ন এবং মানব সম্পদ বিভাগ আইসিটি খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রমের দায়িত্বে রয়েছে।
আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহ
[সম্পাদনা]প্রতিষ্ঠানটির সারা দেশে সাতটি আঞ্চলিক কার্যালয় আছে। আঞ্চলিক আঞ্চলিকসমূহ :
- চট্টগ্রাম কার্যালয়,
- রাজশাহী কার্যালয়,
- খুলনা কার্যালয়,
- সিলেট কার্যালয়,
- বরিশাল কার্যালয়,
- ফরিদপুর কার্যালয় এবং
- রংপুর কার্যালয়।
এই কার্যালয়সমূহ স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি অফিসসমূহের সাথে সমন্বয় করে স্থানীয় পর্যায়ে জাতীয় তথ্য ও প্রযুক্তি নীতি, কৌশল ও পরিকল্পনা এবং ই-গভর্নমেন্ট বাস্তবায়ন করে থাকে। এছাড়াও এই কার্যালয়সমূহ স্থানীয় পর্যায়ে আইসিটি শিল্পে আইসিটি প্রশিক্ষণ, আইসিটি পাঠ্যক্রম এবং মানব সম্পদ উন্নয়নে কাজ করে। এই কার্যালয়সমূহ স্থানীয় আইসিটি প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে সমন্বয় করে স্থানীয় পর্যায়ে আইসিটি শিক্ষা অডিট তত্ত্বাবধান, সক্ষমতা উন্নয়ন, কর্মশালা, সেমিনার, অনলাইন ট্রেনিং এবং ই-লার্নিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
সেবা ও কার্যক্রমসমূহ
[সম্পাদনা]সিএ অপারেশন এবং নিরাপত্তা
[সম্পাদনা]বিসিসি'র সিএ অপারেশন এবং নিরাপত্তা বাংলাদেশ সরকারের একমাত্র সরকারি সার্টিফাইং অথরিটি হিসাবে কাজ করে। প্রতিষ্ঠানটি সিএ অপারেশন তত্ত্বাবধান, নীতি ও বিধিমালার কার্যকর প্রয়োগ, ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর ব্যবস্থাপনা এবং ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর সার্টিফিকেটসমূহ একটি সুরক্ষিত রিপোজিটরিতে সংরক্ষণ করে থাকে। বিসিসি সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে সিকিউর ডিজিটাল সার্টিফিকেট, ওয়েব-বেইজড SSL সার্টিফিকেট, PKI টুলস এবং ই-সিগনেচার প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশে সুরক্ষিত ইলেকট্রনিক তথ্য আদান-প্রদান ও যোগাযোগ নিশ্চিত করে।[১১][১২]
নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ সরকারের ই-গভর্নমেন্ট নেটওয়ার্ক পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে ২০১৪ সালে বিসিসি'র অধীনে জাতীয় নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার (এনওসি) গঠিত হয়েছিল। এই নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টারটি সারা দেশে সরকারি নেটওয়ার্ক পরিকল্পনা, স্থাপন, গবেষণা ও উন্নয়ন, পরিচালনা, আপগ্রেড, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তা প্রদান করে। এ সেন্টারটি মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মাঠ প্রশাসনে ইন্টারনেট, অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক ও সরকারি ভিডিও কনফারেন্স নেটওয়ার্ক সংযোগ প্রদান করে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নেটওয়ার্ক স্ট্যান্ডার্ড এবং স্পেসিফিকেশন প্রস্তুত করার ক্ষেত্রেও পরামর্শ প্রদান করে থাকে। বর্তমানে জাতীয় নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার বিভিন্ন উপজেলা পর্যন্ত ১৮,৮৩৪ টি সরকারি অফিসে নেটওয়ার্ক সংযোগ পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ পরিষেবা প্রদান করছে। বিসিসি জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প ‘ইনফো সরকার ৩’ এর অধীনে ২৬০০ টি ইউনিয়নের নেটওয়ার্ক সংযোগ পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ পরিষেবা প্রদান করছে।[১৩]
ডাটা সেন্টার
[সম্পাদনা]বিসিসি বাংলাদেশে একটি টিয়ার-III সার্টিফাইড জাতীয় ডেটা সেন্টার পরিচালনা করে যা সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক ডিজিটাল পরিষেবা প্রদান করে। এই ডেটা সেন্টারটি দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য ক্লাউড সার্ভিস এবং ডিজিটাল ডেটা স্টোরেজ পরিষেবা প্রদান করে থাকে।[১৪]
জাতীয় ডেটা সেন্টারটি বিভিন্ন ধরনের ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস প্রদান করে থাকে যেমন ক্লাউড স্টোরেজের জন্য ইলাস্টিক ক্লাউড সার্ভার (ECS), ইমেজ ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস (IMS) ও ইলাস্টিক ভলিউম সার্ভিস (EVS)। ক্লাউড ব্যাকআপের জন্য জাতীয় ডেটা সেন্টারটি ভলিউম ব্যাকআপ সার্ভিস (VBS) ও ক্লাউড সার্ভার ব্যাকআপ সার্ভিস (CSBS) সার্ভিস প্রদান করে থাকে। ডেটা সেন্টারটি বিভিন্ন ক্লাউড নেটওয়ার্ক পরিষেবা প্রদান করে যেমন ভার্চুয়াল প্রাইভেট ক্লাউড (VPC), ইলাস্টিক আইপি (EIP), ইলাস্টিক লোড ব্যালেন্সার (ELB) এবং ভার্চুয়াল ফায়ারওয়াল (VFW)। এছাড়াও ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার, লোড ব্যালেন্সার, ই-মেইল সার্ভিস, ওয়েব হোস্টিং, ব্যাকআপ এবং কো-লোকেশন পরিষেবা প্রদান করে। যেকোনো নিরাপত্তাজনিত ঘটনা পর্যবেক্ষণ এবং মোকাবেলা করতে ডেটা সেন্টারটির একটি নিবেদিত সিকিউরিটি টিমও আছে।[১৫]
সফটওয়্যার এন্ড হার্ডওয়্যার কোয়ালিটি টেস্টিং এন্ড সার্টিফিকেশন (এসএইচকিউটিসি)
[সম্পাদনা]বিসিসি বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রণালয়, সংস্থার ই-গভর্নমেন্ট পরিষেবা সরবরাহের জন্য সরকারিভাবে ডেভেলপকৃত অথবা ক্রয়কৃত বিভিন্ন সফটওয়্যার সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ফাংশনাল, পারফরম্যান্স এবং সিকিউরিটি টেস্টিং করে থাকে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি হার্ডওয়্যার টেস্টিং পরিচালনা, হার্ডওয়্যারের গুণমান নিশ্চায়ন এবং সফটওয়্যার সার্টিফিকেশন প্রদান করে থাকে।[১৬][১৭]
গবেষণা, উদ্ভাবন এবং উন্নয়ন
[সম্পাদনা]বিসিসি বর্তমান বিশ্বের অত্যাধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করে আইটিতে বিভিন্ন গবেষণাধর্মী, উদ্ভাবন এবং উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকে। এগুলোর মধ্যে কাটিং এজ টেকনোলজি ব্যবহার করে অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট অন্যতম। প্রতিষ্ঠানটি তার ক্লায়েন্ট এবং অংশীদারদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যার গবেষণালব্ধ উদ্ভাবনী সমাধান দিয়ে থাকে। বিসিসি সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও ই-গভর্ন্যান্স বাস্তবায়নে যথোপযুক্ত মান নির্ধারণ এবং সরকারি বিভিন্ন কার্যক্রম ও সেবার মধ্যে আন্তঃকার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে। প্রতিষ্ঠানটি সম্ভাবনাময়ী আইসিটি গ্রাজুয়েটদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা বিকাশের জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। বিসিসি দেশের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী আইটি কর্মীদের বিকাশ এবং আইসিটি বাণিজ্যিকরণে কাজ করে।[১৮]
নীতি, কৌশল এবং পরিকল্পনা
[সম্পাদনা]বিসিসি নীতি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং পর্যবেক্ষণ কার্যে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করে। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে গবেষণা এবং জরিপ পরিচালনা করে এবং জাতীয় প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ডেভেলপ করে।
আইসিটি বিষয়ক পরামর্শ সেবা
[সম্পাদনা]বিসিসি বিভিন্ন সরকারি এবং পাবলিক প্রতিষ্ঠানকে আইসিটি সম্পর্কিত পরামর্শমূলক পরিষেবা প্রদান করে যেমন হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের রিকোয়ারমেন্ট অ্যানালাইসিস, টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন প্রস্তুত, সার্ভিস অটোমেশনের করার জন্য রিকোয়ারমেন্ট অ্যানালাইসিস এবং দরপত্র তৈরি ও মূল্যায়ন করা ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠানটি সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে চাহিদা মাফিক ওয়েবসাইট এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট করে দেয়। এছাড়াও বিসিসি আইসিটি প্রফেশনাল নিয়োগে পরামর্শক সহায়তা প্রদান করে।[১৯]
কম্পিউটার সামগ্রী অকেজো ঘোষণা
[সম্পাদনা]বিসিসি বিভিন্ন সরকারি অফিস থেকে পুরানো, অপ্রচলিত বা অকার্যকর হার্ডওয়্যার শনাক্তকরণ এবং অপসারণ করার জন্য কম্পিউটার সামগ্রী অকেজো ঘোষণা পরিষেবা প্রদান করে। এই পরিষেবাটি সঠিক প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণপূর্বক ইলেকট্রনিক বর্জ্য নিষ্পত্তি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করতে সাহায্য করে।[২০]
অবজেক্ট আইডেন্টিফায়ার (ODI)
[সম্পাদনা]২০১২ সালের ৩০ জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ) বাংলাদেশে অবজেক্ট আইডেন্টিফিকেশনের জন্য বিসিসিকে জাতীয় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (RA) হিসেবে কাজ করার অনুমোদন দেয়। বাংলাদেশের ওআইডি ২.১৬.৫০
দিয়ে শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটি RA হিসেবে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দকৃত ওআইডি ফ্রেমওয়ার্ক থেকে ওআইডি বরাদ্দ এবং ব্যবস্থাপনা করে থাকে। বিসিসি ওআইডি নিবন্ধনের প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান, সংগতি নিশ্চায়ন, নিবন্ধিত ওআইডিগুলোকে আন্তর্জাতিক রিপোজিটরি থেকে অনুমোদন, আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের টেলিকমিউনিকেশন স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন সেক্টরের সাথে সমন্বয়, বৈধ অবজেক্টসমূহকে নিশ্চায়ন এবং ওআইডি ব্যবহারকারীদের সহায়তা প্রদান করে থাকে।[২১]
বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-গভ সার্ট)
[সম্পাদনা]বিসিসি'র বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-গভ সার্ট) বাংলাদেশের জাতীয় কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম। বিজিডি ই-গভ সার্ট দেশের অভ্যন্তরে সাইবার নিরাপত্তাজনিত হুমকি প্রতিরোধ এবং দমন করার জন্য দায়বদ্ধ। বাংলাদেশের সাইবার জগতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিডি ই-গভ সার্ট টিম আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে থাকে। বিসিসি কম্পিউটার সংক্রান্ত নিরাপত্তাজনিত বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে রিভিউ গ্রহণ, পদক্ষেপ গ্রহণ, গবেষণা ও উন্নয়ন পরিচালনা করার পাশাপাশি সরকারের ইনফরমেশন সিস্টেমসমূহের সাইবার নিরাপত্তা হুমকি ও দুর্বল দিক সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করে থাকে। এছাড়াও বিজিডি ই-গভ সার্ট বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, একাডেমিসমূহের সাথে সাথে দেশের নাগরিক সমাজের সামগ্রিক সাইবার নিরাপত্তা উন্নত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও বিজিডি ই-গভ সার্ট ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সিকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। [২২][২৩][২৪][২৫]
বিসিসি ইন্সিডেন্ট হ্যান্ডলিং, ডিজিটাল ফরেনসিক, সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, সাইবার থ্রেট ইন্টেলিজেন্স, আইটি অডিট, সাইবার সেন্সর, ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং সচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদিসহ বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক সেবা প্রদান প্রদান করে থাকে। এই সেবাসমূহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইবার সিকিউরিটি ইন্সিডেন্ট শনাক্ত করে প্রতিরোধ, দমন, ইনফরমেশন সিস্টেমের সম্ভাব্য দুর্বলতাগুলো শনাক্ত করতে এবং সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে সহায়তা করে। [২২][২৩][২৪][২৬][২৫]
ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ সরকার ওপেন TOGAF ৯.২ এর মত শীর্ষস্থানীয় ফ্রেমওয়ার্কের মানদণ্ডের ভিত্তিতে একটি জাতীয় এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করেছে যা বাংলাদেশ জাতীয় ডিজিটাল আর্কিটেকচার ফ্রেমওয়ার্ক নামে পরিচিত। এই ফ্রেমওয়ার্কটি বাংলাদেশের চাহিদা ও কৌশলগত লক্ষ্য পূরণের জন্য কাস্টমাইজেশন করা হয়েছে।
এ ফ্রেমওয়ার্কটি বাংলাদেশ জাতীয় এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার ফ্রেমওয়ার্ক (NEA) প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিয়ে গঠিত। এমন একটি উপাদান হলো ই-গভর্নমেন্ট ইন্টার-অপারেবিলিটি ফ্রেমওয়ার্ক যা বিভিন্ন সরকারি বিভাগ এবং সংস্থার মধ্যে নির্বিঘ্ন ইন্টিগ্রেশন এবং যোগাযোগ নিশ্চিত করে। মোবাইলে কার্যকর সার্ভিস ডেলিভারির জন্য প্রয়োজনীয় আর্কিটেকচার এবং মানসমূহ নির্ধারণ করতে মোবাইল সার্ভিস ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও আরেকটি উপাদান 'জাতীয় ই-সার্ভিস বাস'টি বিভিন্ন ই-সেবার মধ্যে ইন্টিগ্রেশন সহায়ক একটি মিডেলওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন বা প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে।
প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন
[সম্পাদনা]বিসিসি সারা দেশে তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ প্রদান, মানবসম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, মেগা ইভেন্ট, কর্মশালা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা এবং চাকরির মেলা আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ ও ট্রান্সজেন্ডাদের মতো সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য বেশ কিছু বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ ও মেলা আয়োজন করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে।
বাংলাদেশ কোরিয়া ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (বিকেআইআইসিটি)
[সম্পাদনা]বিসিসি'র অধীন একটি আইসিটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট হল বিকেআইআইসিটি। এই ইনস্টিটিউটটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাকরি বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে স্ট্যান্ডার্ড সার্টিফিকেশন কোর্স, ডিপ্লোমা এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা সহ বিভিন্ন আইসিটি-সম্পর্কিত কোর্স ও প্রোগ্রাম পরিচালনা করে থাকে। এই ইনস্টিটিউটটি সরকারি কর্মকর্তাদের আইসিটি দক্ষতা বাড়াতে কাস্টমাইজড কোর্সও পরিচালনা করে। এছাড়াও ইনস্টিটিউটটি বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও সংস্থার পক্ষে এই সকল প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে থাকে। বিসিসি কম্পিউটার দক্ষতা পরীক্ষাও টেস্ট নিয়ে থাকে এবং সরকারের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে ল্যাব ভাড়া দিয়ে থাকে।
ইনফরমেশন-টেকনোলজি ইঞ্জিনিয়ার্স এক্সামিনেশন (ITEE)
[সম্পাদনা]বিসিসি'র বাংলাদেশ আইসিটি -ইঞ্জিনিয়ার্স এক্সামিনেশন সেন্টার (BD ITech) প্রতি বছর বাংলাদেশে ইনফরমেশন টেকনোলজি ইঞ্জিনিয়ার্স এক্সামিনেশন (ITEE) পরিচালনা করে। ITEE জাপানের ইনফরমেশন টেকনোলজি প্রমোশন এজেন্সি (IPA) কর্তৃক পরিচালিত তথ্য প্রযুক্তিতে একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পরীক্ষা। এই পরীক্ষার মাধ্যমে আইটি ও নন-আইটি পেশাদার এবং গ্র্যাজুয়েটেরা তাদের আইটি জ্ঞান এবং দক্ষতার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করতে পারেন। ২০১৩ সাল থেকে বিডি-আইটেক জাপান সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে ITEE পরীক্ষা পরিচালনা, বাস্তবায়ন ও সার্টিফিকেশন প্রদান করে।
প্রকল্পসমূহ
[সম্পাদনা]দেশের আইসিটি অবকাঠামো উন্নয়নে বিসিসি বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করে আসছে। এরকম কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হল:
প্রকল্পের নাম | পটভূমি | প্রকল্প শুরুর সাল | উদ্দেশ্য |
---|---|---|---|
ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট
(বাংলাগভনেট) |
বাংলাদেশে একটি টেকসই আইসিটি ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা | ২০১০ | ● সমস্ত জেলা প্রশাসন, ৬৪ টি উপজেলা প্রশাসন, ২৪০ টি সরকারি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং ঢাকা জেলার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরগুলিকে সংযুক্ত করা।
● বাংলাদেশে ই-গভর্নমেন্ট পরিষেবাগুলোর বাস্তবায়নকে সহজতর ও প্রাপ্যতা সহজলভ্য করা। |
ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ফেজ-২ (ইনফো-সরকার-২)[২৯][৩০] | বাংলাগভনেট প্রকল্পে প্রতিষ্ঠিত আইসিটি ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও উন্নত করা | ২০১৩ | কভারেজ সম্প্রসারণ:
অতিরিক্ত পরিষেবা:
|
ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ফেজ-৩ (ইনফো-সরকার-৩) | ফেজ-২ থেকে নেটওয়ার্ক সংযোগ বিস্তৃত করা | ২০১৭ | কভারেজ সম্প্রসারণ:
|
টেলিযোগাযোগ সুবিধা বঞ্চিত এলাকাসমূহে ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি স্থাপন | যে সকল স্থানে ইনফো-সরকার-৩ এবং বিটিসিএল কর্তৃক নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপিত হয়নি সে রকম ৬১৭ দূরবর্তী এবং সুবিধাবঞ্চিত ইউনিয়নের অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপন করা | ২০১৮ | কভারেজ সম্প্রসারণ:
|
উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প
(iDEA) [২৫] |
একটি জাতীয় উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্ম এবং সহায়ক ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা | ২০১৬ | ● বাংলাদেশে একটি জাতীয় উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা।
● স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের পরামর্শ, ফান্ডিং, কো-ওয়ার্কিং স্পেস, মার্কেটিং এবং আইনি সহায়তা দেয়া। ● নীতিমালা ও কাঠামো প্রণয়ন করা। ● বাংলাদেশকে স্টার্টআপের গ্লোবাল হাব হিসেবে পরিচিত করানো। |
গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প [২৫][৩৩] | আন্তর্জাতিক পরিসরে নেতৃস্থানীয় ভাষা হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করা | ২০১৬ | ● আইসিটির মাধ্যমে কম্পিউটিংয়ে বাংলাকে বিশ্বব্যাপী একটি বিশিষ্ট ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
● বাংলা ভাষার বৈশিষ্ট্য প্রমিতকরণ, টুলস ও টেকনোলোজি ডেভেলপ করা। ● বাংলা ভাষাভিত্তিক কম্পিউটিং উন্নত করতে গবেষণা পরিচালনা করা |
সরকারের ভিডিও কনফারেন্সিং প্লাটফর্ম শক্তিশালীকরণ শীর্ষক প্রকল্প [২৫] | অনলাইন সভা, সেমিনার ইত্যাদি পরিচালনার জন্য মাননীয় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বিভিন্ন সরকারি অফিসে ৪কে রেজুলিউশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ভিত্তিক ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম স্থাপন করা। | ২০২১ | ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম স্থাপনকরণ
|
সাপোর্ট টু হাই-টেক পার্ক অথরিটি টু স্টাবলিশ হাই-টেক পার্ক অ্যাট কালিয়াকৈর, গাজীপুর [৫] | কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্ক এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণ | ২০১০ | |
এস্টাবলিশমেন্ট অব সাসেক ইনফরমেশন হাইওয়ে (বাংলাদেশ পার্ট)[৫] | SASEC ভুক্ত চারটি দেশের সাথে রিজিওনাল নেটওয়ার্ক স্থাপন। | ২০১০ | |
ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালী প্রকল্প[৫] | তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মহেশখালী দ্বীপের অধিবাসীদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন। | ২০১৭ | |
ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন[৫] | সরকারের সকল ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। | ২০১৬ | |
বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট ইআরপি প্রকল্প[৫][৩৪] | সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানের রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অটোমেশন করার লক্ষ্যে একটি সাধারণ সফটওয়্যার সিস্টেম ডেভেলপ করা | ২০১৬ | বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট এন্টারপ্রাইস রিসোর্সে প্ল্যানিং (ইআরপি) সফটওয়্যার তৈরি করা |
অবদানসমূহ
[সম্পাদনা]দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন
[সম্পাদনা]বিসিসি তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। ৩ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত বিসিসি এবং এর বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে ১৮৭,২০০ জন পুরুষ এবং ৪৬,৮০০ জন নারী সহ মোট ২,৩৬,০০০ জনেরও বেশী প্রশিক্ষণার্থীকে বিভিন্ন তথ্য ও প্রযুক্তি দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়েছে। বিশেষভাবে ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত, BKIICT এবং আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহে ৩৬,০০০ জনকে ডিপ্লোমা, পিজিডি এবং স্বল্পমেয়াদি বিভিন্ন কোর্সে প্রশিক্ষণ দিয়ে আন্তর্জাতিক চাকরি বাজারে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে প্রস্তুত করেছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষিত করেছে যার মধ্যে ৭,৮৯০ জন শিক্ষককে মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণ এবং ১১২,১৮৯ জন ছাত্র-ছাত্রীকে প্রাথমিক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, উদ্যোক্তা এবং তথ্য প্রযুক্তি পেশাজীবীদের আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI), ইন্টারনেট অব থিংস (IoT), ব্লকচেইন, রোবোটিকস, বিগ ডাটা, মেডিক্যাল স্ক্রাইব, সাইবার সিকিউরিটি ইত্যাদির মতো উদীয়মান প্রযুক্তি (Emerging Technology) সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ প্রদান করে। দেশের প্রশিক্ষণের মানকে আরো সমৃদ্ধ করতে বিসিসি কোর্সেরা, ফেসবুক ও ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুর এর মত খ্যাতি সম্পন্ন সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করছে। তাছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি দক্ষ জনশক্তির বিকাশকে আরো অগ্রসর করতে এবং বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষতা মূল্যায়ন এবং সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে।[৩৫]
অবকাঠামো উন্নয়ন
[সম্পাদনা]বিসিসি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের আইসিটি অবকাঠামো উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে কাজ করে। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন প্রকল্প ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়নে অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করেছে। যেমন আইসিটি টাওয়ার (যা পূর্বে বিসিসি টাওয়ার নামে পরিচিত) সম্প্রসারণ করা যার ফলে আইসিটি সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে একই প্রাঙ্গণে সমন্বিত করার সুযোগ হয়। যার ফলে ভবনটি সরকারের আইসিটি সম্পর্কিত কাজের "সেন্টার অফ এক্সিলেন্স" এ পরিণত হয়েছে।[৩৬]
বিসিসি বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন বিভিন্ন ইউনিয়নে সৌরশক্তির মাধ্যমে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র (ইউআইএসসি) স্থাপন করেছে, যা পরবর্তীতে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রতিষ্ঠানটির সারা দেশে বিভিন্ন উপজেলায় ইউআইএসসি মতো ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছে। বিসিসি দেশব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব এবং স্মার্ট ক্লাসরুম স্থাপন করেছে। বিসিসি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে সাইবার সেন্টারও স্থাপন করেছে।[৩৬]
এছাড়াও, বিসিসি জাতীয় ডেটা সেন্টার (টিয়ার III) স্থাপন করেছে, যা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা প্রদান করছে। প্রতিষ্ঠানটি যশোরে ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার এবং ২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি, কালীগঞ্জ, গাজীপুরে স্থাপিত বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম জাতীয় ডেটা সেন্টার (টিয়ার-IV) কেন্দ্র স্থাপন করেছে।[৩৬]
বিসিসি বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে দেশব্যাপী সরকারি নেটওয়ার্ক সংযোগের ব্যাকবোন স্থাপন করে দেশব্যাপী বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে হাই-স্পিড ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহ, সর্বশেষ প্রযুক্তির ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম স্থাপন করেছে। এর পাশাপাশি বিসিসি বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কৃষি তথ্য কেন্দ্র এবং টেলিমেডিসিন কেন্দ্র স্থাপন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ সচিবালয় এবং আইসিটি টাওয়ারে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন অফিসে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) সংযোগও স্থাপন করেছে। বর্তমানে কানেক্টেড বাংলাদেশ প্রকল্প আওতায় দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকার ইউনিয়নসমূহতে কানেক্টিভিটি প্রদান কার্যক্রম চলমান আছে। ডেটা আদান-প্রদান করার সক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশকে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল দ্বারা সংযুক্ত করেছে। বিসিসি ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালী’ প্রকল্পের অধীনে মহেশখালীতে একটি ৫০ মিটার উঁচু সেলফ সাপোর্টেট টাওয়ার স্থাপন করেছে যাতে সেখানে হাই-স্পিড ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা যায়। প্রতিষ্ঠানটি ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের অধীনে আইপি ক্যামেরা-ভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপনের মাধ্যমে সিলেট শহরকে একটি সেফ সিটিতে পরিণত করেছে।[৩৬]
বিসিসিতে আইডিয়া ফ্যাব ল্যাব, বিশেষায়িত নেটওয়ার্ক ল্যাব, সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার কোয়ালিটি টেস্টিং ল্যাব, ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব, সাইবার রেঞ্জ, ও সাইবার ডিফেন্স ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। এই ল্যাবসমূহে বিশ্বমানের উন্নত ডিভাইস ও প্রযুক্তি উপলব্ধ রয়েছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচারে সাইবার সেন্সর প্রযুক্তি স্থাপন করেছে।[৩৬]
স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়ন
[সম্পাদনা]তথ্যপ্রযুক্তি অগ্রগতির সাথে সাথে বাংলা ভাষাকে আরো বেশি সহজলভ্য এবং ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়ন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই স্ট্যান্ডার্ডসমূহ প্রণয়নের দায়িত্ব বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) হলেও বিসিসি'র দায়িত্ব হল কারিগরি খসড়া প্রস্তুত এবং ঘোষণা করা। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি স্ট্যান্ডার্ড তৈরি এবং একই সাথে বিদ্যমান স্ট্যান্ডার্ডগুলোকে আধুনিকায়নে কাজ সম্পন্ন করেছে। বাংলাদেশ বিদ্যমান আইসিটি স্ট্যান্ডার্ডগুলি হল:[৩৭]
- বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড স্পেসিফিকেশন ফর বাংলা কোডেড ক্যারেক্টার সেট ফর ইনফরমেশন ইন্টারচেঞ্জ (তৃতীয় সংশোধন) (
বিডিএস ১৫২০:২০১৮
): বিসিসি বাংলা লিপির জন্য অক্ষর এনকোডিং স্কিমকে সংজ্ঞায়িত করে যা বাংলাদেশে বিভিন্ন কম্পিউটার সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে তথ্য বিনিময় প্রক্রিয়া সহজ এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ করে। এই স্ট্যান্ডার্ডটি নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ এবং ডেটা শেয়ারিং নিশ্চিত করে, বাংলা ভাষায় সফটওয়্যার এবং কন্টেন্ট নির্মাণ ও বিকাশকে আরো গতিশীল করে এবং সর্বোপরি ডিজিটাল জগতে বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলার গ্রহণযোগ্যতা এবং ব্যবহারযোগ্যতা আরো বাড়িয়ে তোলে।[৩৭] - বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড স্পেসিফিকেশন ফর কম্পিউটার বাংলা কী-বোর্ড (প্রথম সংশোধন) (
বিডিএস ১৭৩৮:২০১৮
): কম্পিউটার সিস্টেমে বাংলা লিপি ইনপুট করার জন্য এই স্ট্যান্ডার্ডটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এই স্ট্যান্ডার্ডটি বাংলা লিপির কম্পিউটার কিবোর্ডের মান নির্ধারণ করে। বাংলা টাইপিংকে সঠিক ও সহজতর করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে চালু হওয়া এই স্ট্যান্ডার্ডটি বাংলা কী-বোর্ডগুলোর মধ্যে অভিন্নতা এবং সামঞ্জস্যতা নিশ্চিত করে।বিডিএস ১৭৩৮
স্ট্যান্ডার্ডটি কিবোর্ডের লেআউট, কী বিন্যাস এবং অন্যান্য কার্যকরী বৈশিষ্ট্যগুলোকে নির্ধারিত করে যা বাংলা ভাষাভাষীদের প্রয়োজন এবং চাহিদা পূরণ করে করে।[৩৭] - বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড কোডস ফর ইনফরমেশন ইন্টারচেঞ্জ (
বিডিএস ১৯৩৪:২০১৮
): দেশের অভ্যন্তরীণ কম্পিউটার সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের সামঞ্জস্যতা এবং ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য বাংলা অক্ষর এবং প্রতীকের ASCII-ভিত্তিক কোড প্রণয়নের জন্য জাতীয় মান নির্ণয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য প্রতিষ্ঠানটিবিডিএস ১৯৩৪:২০১৮
বা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড কোডস ফর ইনফরমেশন ইন্টারচেঞ্জ এর খসড়া প্রস্তুত করে। এই স্ট্যান্ডার্ডটি তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ব্যবহৃত অক্ষর এনকোডিং সিস্টেম সংজ্ঞায়িত করে যা বাংলাদেশে ASCII-ভিত্তিক বাংলা ভাষার বিভিন্ন জনপ্রিয় সফটওয়্যার পর্যালোচনা করে তৈরি করা হয়েছে এবং এতে মোট ২১০ টি বাংলা অক্ষর, প্রতীক এবং যৌগিক অক্ষর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। [৩৭]
উল্লেখযোগ্য ইভেন্টসমূহ
[সম্পাদনা]জাতীয় শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ২০১৮
বিসিসি তথ্য প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের আগ্রহকে আরো বিকাশিত করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে জাতীয় শিশু ও কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল। এই প্রতিযোগিতায় সারা দেশের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছিল। উক্ত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ৩০ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে বিসিসি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[৩৮]
ন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কম্পিটিশন (NCPC) ২০২০
[সম্পাদনা]বিসিসি কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা (এনসিপিসি) ঢাকায় “মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি)” তে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন দল অংশগ্রহণ করেছিল।[৩৯]
যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতা ২০২০
[সম্পাদনা]২০২০ সালের ২১ নভেম্বরে বিসিসি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় আইসিটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগী চারটি বিভাগে অংশগ্রহণ করেছিল। প্রতিযোগিতাটি ঢাকার প্রধান কার্যালয় সহ প্রতিষ্ঠানটির আঞ্চলিক অফিসসমূহে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[৪০][৪১]
iDEATHON
বিসিসি এবং দক্ষিণ কোরিয়া মিলিত ভাবে ২০২০ সালে বাংলাদেশে স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্য 'iDEATHON' প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল। এই প্রতিযোগিতায় শীর্ষ ৫ টি স্টার্টআপকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল এবং বিজয়ী স্টার্ট-আপগুলোর ১০ জন উদ্যোক্তাকে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় ৬ মাসের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। দেশের স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেমকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এই প্রতিযোগিতার লক্ষ্য ছিল।
বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১
[সম্পাদনা]স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে বিসিসি'র অধীনে iDEA প্রকল্পটি তরুণ উদ্যোক্তা এবং স্টার্টআপদের উৎসাহিত করার জন্য 'বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট-২০২১' আয়োজন করেছিল। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে সহ বিভিন্ন দেশের স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠান এবং উদ্ভাবকেরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। বিজয়ী স্টার্ট-আপকে এক লাখ মার্কিন ডলারের অনুদান দেয়া হয়।[৪২]
শেখ রাসেল দিবস ২০২১
[সম্পাদনা]মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'শেখ রাসেল দিবস ২০২১' উপলক্ষ্যে বিসিসি'র "আইসিটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের (এনডিডি সহ) ক্ষমতায়ন" প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত ৬০০ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে ৬০০ টি ল্যাপটপ বিতরণ করেন।[৭]
বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড ২০২১
[সম্পাদনা]২০২১ সালে বিসিসি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স এবং মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক এর সহযোগিতায় চতুর্থ বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড আয়োজন করা হয়েছিল।[৭]
আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আইসিটি বিভাগ, বিসিসি, ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ এবং টেকনোহাভেন কোম্পানি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে ২০২১ সালের ৮ থেকে ১০ অক্টোবরে আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[৭]
যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য গ্লোবাল আইটি চ্যালেঞ্জ ২০২১
[সম্পাদনা]কোভিড-১৯ মহামারি সত্ত্বেও প্রতিবন্ধী যুবকদের ২০২১ সালের গ্লোবাল আইটি চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী চারজন প্রতিযোগীর অসামান্য পারফরম্যান্স দেখা গেছে। প্রতিষ্ঠানটি সম্মানিত সেরা পুরস্কার (১ম স্থান) সহ চারটি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।[৭]
বাংলার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিযোগিতা ২০২১
[সম্পাদনা]বাংলার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিযোগিতা ২০২১ এর লক্ষ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গবেষক এবং ডেভেলপারদেরকে বাংলা ভাষা এবং প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য উৎসাহিত করা। বিসিসি বাংলা ভাষা সম্পর্কিত AI এবং তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার আগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে।[৪৩]
ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ২০২১
[সম্পাদনা]২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ এবং মাদ্রাসাগুলিতে ৬ষ্ঠ থেকে ১২শ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদেরকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে উৎসাহিত করা লক্ষ্যে ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা (NHSPC) আয়োজন করে।[৪৪][৪৫]
জাতীয় নারী প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা (এনজিপিসি) ২০২১
[সম্পাদনা]আইসিটি বিভাগ, বিসিসি এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এর কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ যৌথভাবে ৫ম জাতীয় নারী প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা (এনজিপিসি) ২০২১ আয়োজন করেছিল। সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল।[৭]
৪৫তম আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ওয়ার্ল্ড ফাইনাল ২০২২
[সম্পাদনা]৪৫তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ওয়ার্ল্ড ফাইনাল ২০২২ সালের ৬ থেকে ১১ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানটি আইসিটি বিভাগ, আইসিপিসি ফাউন্ডেশন, বিসিসি এবং এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল।[৭]
ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ২০২২
[সম্পাদনা]আইসিটি বিভাগ এবং বিসিসি যৌথভাবে ‘জানুক সবাই দেখাও তুমি’ স্লোগান নিয়ে ২০২২ সালের জাতীয় উচ্চ বিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। এই আয়োজন আইসিটি এবং প্রোগ্রামিংয়ে শিক্ষার্থীদের আরো উৎসাহিত এবং জাতীয় পর্যায়ে তাদের দক্ষতা যাচাই করতে সহায়তা করে।[৪৬]
Awards
[সম্পাদনা]উইটসা গ্লোবাল আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস ২০২০
[সম্পাদনা]বিসিসি'র ইনোভেশন ডিজাইন এবং এন্টারপ্রেনারশিপ একাডেমি (iDEA) প্রকল্পটি ২০২০ সালের উইটসা গ্লোবাল আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডসের পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বিভাগে রানারআপ হয়।[৪৭]
ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার ২০২০
[সম্পাদনা]২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটির অনলাইন নিয়োগ পোর্টাল প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার অর্জন করে।[৪৮]
ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডাব্লিউএসআইএস) উইনার পুরস্কার ২০১৯
[সম্পাদনা]২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ জাতীয় ডিজিটাল আর্কিটেকচার (বিএনডিএ) এবং ই-গভর্নমেন্ট ইন্টার-অপারেবলিটি ফ্রেমওয়ার্ক (ই-জিআইএফ) প্রতিষ্ঠার জন্য ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি উইনার পুরস্কার ২০১৯’ বিজয়ী হয়।[৪৯][৫০][৫১][৫২]
ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডাব্লিউএসআইএস) চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার ২০১৯
[সম্পাদনা]২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের জন্য জাতীয় আইসিটি অবকাঠামো নেটওয়ার্ক (ইনফো-সরকার) প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানটি 'ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি উইনার পুরস্কার ২০১৯' বিজয়ী হয়।[৫৩][৫৪][৫৫]
এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন ২০১৮ ডিজিটাল গভর্নমেন্ট পুরস্কার
[সম্পাদনা]বিসিসি'র ইনফো-সরকার ফেজ-৩ শীর্ষক প্রকল্প এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আইসিটি খাতে সবচেয়ে বড় ও মর্যাদাপূর্ণ সংস্থা এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন (অ্যাসোসিও) কর্তৃক অ্যাসোসিও ২০১৮ ডিজিটাল গভর্নমেন্ট পুরস্কার লাভ করেছে।[৫৬]
ই-এশিয়া ২০১৭
[সম্পাদনা]২০১৭ সালের এশিয়া প্যাসিফিক কাউন্সিল ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিজনেস সামিটে বিসিসি'র ইনফো-সরকার ফেজ ৩ প্রকল্পটি ই-এশিয়া ২০১৭ পুরস্কারে ভূষিত হয়।
DCD APAC পুরস্কার ২০১৯
[সম্পাদনা]বিসিসি কর্তৃক পরিচালিত 8-স্তর জাতীয় ডেটা সেন্টার (4TDC) প্রকল্প ডেটা সেন্টার নির্মাণ বিভাগে DCD APAC পুরস্কার ২০১৯ অর্জন করে।
ওপেন গ্রুপ প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডস ২০১৮
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ জাতীয় এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার (BNEA) এবং ই-গভর্নমেন্ট ইন্টারঅপারেবিলিটি ফ্রেমওয়ার্ক (e-GIF) প্রণয়নের মাধ্যমে ই গভারনেন্স প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবন বিভাগে 'ওপেন গ্রুপ প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডস ২০১৮' পেয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সফল করার জন্য সরকারি তথ্য এবং পরিষেবাগুলিকে ইন্টারঅপারেবল করার স্বীকৃতি সরূপ বিসিসি এই পুরস্কার বিজয়ী হয়।[৫৭][৫৮]
জনপ্রশাসন পুরস্কার ২০১৭
[সম্পাদনা]জনসেবায় উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিসিসিকে জনপ্রশাসন পুরস্কার ২০১৭ প্রদান করেছেন।
এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন ২০২১ পুরস্কার
[সম্পাদনা]বিসিসি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন "তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এনডিডিসহ সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ক্ষমতায়ন" শীর্ষক প্রকল্পটি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আইসিটি খাতে সবচেয়ে বড় ও মর্যাদাপূর্ণ সংস্থা এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন (অ্যাসোসিও) কর্তৃক Outstanding User Organization ক্যাটাগরিতে অ্যাসোসিও ২০২১ পুরস্কার লাভ করে।[৫৯]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ "বিসিসি'তে স্বাগতম"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) - গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "বিসিসি'র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "বিসিসি'র কর্মকাণ্ড"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। ৩০ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "প্রকল্পের বিবরণ"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ২৭ জুলাই ২০২৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "বিসিসি কর্তৃক সমাপ্ত প্রকল্পসমূহ"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ৩০ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "মানব সম্পদ উন্নয়ন"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ৩ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "ইভেন্টস"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ৩ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ ক খ "বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল আইন, ১৯৯০ ( ১৯৯০ সনের ৯ নং আইন )"। লজ অব বাংলাদেশ।
- ↑ "বিসিসি'র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "বিসিসি'র কাউন্সিল কমিটির"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ১১ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ "ABOUT BCC"। Certifying Authority (BCC-CA)।
- ↑ "LIST OF SERVICES"। Certifying Authority (BCC-CA)।
- ↑ "National e-Government Network - Network Operation Center (NOC) - Bangladesh Computer Council" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।
- ↑ "Our History – National Data Center"।
- ↑ "National Data Center – Bangladesh Computer Council"।
- ↑ আফরিন, সুহাদা (২০২২-১০-০৮)। "দেশেই সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের মান যাচাইয়ের সুযোগ"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ "Country opens centre to test software quality"। Bangladesh Computer Council। ২০১৭-০৭-২৬।
- ↑ "সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি (সিটিজেন্স চার্টার)"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ১১ মে ২০২৩।
- ↑ "ICT-related Consultancy Services"। ৩০ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Condemnation Service"। ৩০ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Object Identifier Management Guideline" (পিডিএফ)। Bangladesh Computer Council। জুলাই ২০১৩।
- ↑ ক খ "BGD e-GOV CIRT কি?"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ ক খ Team, BGD e-GOV CIRT | Bangladesh e-Government Computer Incident Response। "Services – BGD e-GOV CIRT | Bangladesh e-Government Computer Incident Response Team" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ ক খ Team, BGD e-GOV CIRT | Bangladesh e-Government Computer Incident Response। "About us – BGD e-GOV CIRT | Bangladesh e-Government Computer Incident Response Team" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "প্রকল্পের বিবরণ"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।
- ↑ "Project Details"। Bangladesh Computer Council।
- ↑ "National e-Government Network" (পিডিএফ)। Network Operation Center (NOC)। Bangladesh Computer Council। পৃষ্ঠা 7। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "Completed projects by BCC"। Bangladesh Computer Council (ইংরেজি ভাষায়)। ৩০ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "Completed projects by BCC"। Bangladesh Computer Council (ইংরেজি ভাষায়)। ৩০ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "National e-Government Network" (পিডিএফ)। Network Operation Center (NOC)। Bangladesh Computer Council। পৃষ্ঠা 8। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "Development of National ICT Infra-network for Bangladesh Government Phase-III (Info-Sarker Phase-3) (3rd Revised) Project"। Bangladesh Computer Council (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ মার্চ ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "Establishment of Broadband Connectivity in the Areas of Underprivileged Telecommunication Facilities (Connected Bangladesh) Project."। Bangladesh Computer Counci (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০১।
- ↑ "প্রকল্প পরিচিতি"। IPA। ১৬ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩।
- ↑ "Details - Bangladesh e-Government ERP"। www.itu.int। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৬।
- ↑ "Human Resource Development"। Bangladesh Computer Council। ৩ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "অবকাঠামো"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। ৩ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ ক খ গ ঘ "Standards Development"। Bangladesh Computer Council। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০১৮-০৪-১৭)। "মে মাসে জাতীয় শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২০-০২-২৬)। "জাতীয় কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ঢাবি, রানার্সআপ বুয়েট"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-২৩।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতা ২০২০" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।
- ↑ Dhakatimes24.com। "যুব প্রতিবন্ধীদের নিয়ে জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত"। Dhakatimes News। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ""বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১" এর সেরা ২৬ স্টার্ট-আপ পাচ্ছে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা অনুদান"। The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৯-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ "'বাংলার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা' প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় শাবি"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ Dhakatimes24.com। "ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত"। Dhakatimes News। ২০২১-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ লেখা (২০২১-০৭-০১)। "ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ২০২১–এর প্রস্তুতি"। kishor.alo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ "সারাদেশে ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ২০২২ –এর এক্টিভেশন ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত - TechJano"। techjano.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ "দেশের ৬ প্রতিষ্ঠান পেলো উইটসা অ্যাওয়ার্ড"। Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ ডেস্ক, অনলাইন (২০২০-০৯-০৮)। "জাতিসংঘের ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার পেল বিসিসি"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৬।
- ↑ "WSIS Prizes"। www.itu.int। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ "Bangladesh wins WSIS award"। Bangladesh wins WSIS award | theindependentbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ "BNDA | News"। bnda.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ "Bangladesh wins WSIS award for 6th time"। New Age | The Most Popular Outspoken English Daily in Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ "WSIS Prizes"। www.itu.int। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ "Bangladesh wins WSIS award for 6th time"। New Age | The Most Popular Outspoken English Daily in Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ "ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্প - ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্প"। infosarker3.bcc.gov.bd। ২০২৩-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ "ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্প - ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্প"। infosarker3.bcc.gov.bd। ২০২৩-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ "Open Group Award (The Open Group President's Award) 2019"। bnda.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৪।
- ↑ "ওপেন গ্রুপ প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড"। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।
- ↑ BonikBarta। "প্রতিবন্ধীদের ক্ষমতায়নে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেল বিসিসি"। প্রতিবন্ধীদের ক্ষমতায়নে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেল বিসিসি (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-২৪।