নাসদীয়সূক্ত
হিন্দুধর্ম |
---|
ধারাবাহিকের অংশ |
নাসদীয়সূক্ত (সংস্কৃত: नासदीयसूक्तम्; সৃষ্টি-উৎপত্তি সূক্ত নামেও পরিচিত) হল ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের ১২৯তম সূক্ত। এটি বিশ্বতত্ত্ব ও ব্রহ্মাণ্ডের উৎপত্তির ধারণা ব্যাখা করে।[১] বিশ্বসৃষ্টির বিষয়ে বিশেষ কিছু টিকাসহ তথ্যপ্রদানের জন্য সূক্তটি ভারতীয় দার্শনিক ও পাশ্চাত্য দার্শনিক মহলে প্রসিদ্ধ।[২]
নাসদীয়সূক্তের মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষি প্রজাপতি পরমেষ্ঠী। সূক্তটির দেবতা হলেন ভাববৃত্ত। এটি ত্রিষ্টুপ ছন্দে সাতটি ঋকে রচিত। [৩]
সূক্ত
[সম্পাদনা]সংস্কৃত সূক্ত
[সম্পাদনা]नासदासीन्नो सदासीत्तदानीं नासीद्रजो नो व्योमा परो यत्।
किमावरीवः कुह कस्य शर्मन्नम्भः किमासीद्गहनं गभीरम् ॥১॥
न मृत्युरासीदमृतं न तर्हि न रात्र्या अह्न आसीत्प्रकेतः।
आनीदवातं स्वधया तदेकं तस्माद्धान्यन्न परः किञ्चनास ॥২॥
तम आसीत्तमसा गूहळमग्रे प्रकेतं सलिलं सर्वाऽइदम्।
तुच्छ्येनाभ्वपिहितं यदासीत्तपसस्तन्महिनाजायतैकम् ॥৩॥
कामस्तदग्रे समवर्तताधि मनसो रेतः प्रथमं यदासीत्।
सतो बन्धुमसति निरविन्दन्हृदि प्रतीष्या कवयो मनीषा ॥৪॥
तिरश्चीनो विततो रश्मिरेषामधः स्विदासीदुपरि स्विदासीत्।
रेतोधा आसन्महिमान आसन्त्स्वधा अवस्तात्प्रयतिः परस्तात् ॥৫॥
को अद्धा वेद क इह प्र वोचत्कुत आजाता कुत इयं विसृष्टिः।
अर्वाग्देवा अस्य विसर्जनेनाथा को वेद यत आबभूव ॥৬॥
इयं विसृष्टिर्यत आबभूव यदि वा दधे यदि वा न।
यो अस्याध्यक्षः परमे व्योमन्त्सो अङ्ग वेद यदि वा न वेद ॥৭॥
বাংলা প্রতিলিপি
[সম্পাদনা]নাসদাসীন্নো সদাসীত্তদানীং নাসীদ্রজো নো ব্যোমা পরো যৎ।
কিমাবরীবঃ কুহ কস্য শর্মন্নম্ভঃ কিমাসীদ্গহনং গভীরম্॥১॥
ন মৃত্যুরাসীদমৃতং ন তর্হি ন রাত্র্যা অহ্ন আসীৎপ্রকেতঃ ।
আনীদবাতং স্বধয়া তদেকং তস্মাদ্ধান্যন্ন পরঃ কিং চনাস॥২॥
তম আসীত্তমসা গূল়্হমগ্রেঽপ্রকেত সলিলং সর্বমা ইদম্ ।
তুচ্ছ্যনাভ্বপিহিতং যদাসীত্তপসস্তন্মহিনাজায়লতৈকম্॥ ৩॥
কামস্তদগ্রে সমবর্ততাধি মনসো রেতঃ প্রথমং যদাসীৎ।
সতো বন্ধুমসতি নিরবিন্দন্হৃদি প্রতীষ্যা কবয়ো মনীষা॥৪॥
তিরশ্চীনো বিততো রশ্মিরেষামধঃ স্বিদাসীদুপরি স্বিদাসীৎ।
রেতোধা আসন্মহিমান আসন্স্বধা অবস্তাৎপ্রয়তিঃ পরস্তাৎ॥৫॥
কো অদ্ধা বেদ ক ইহ প্র বোচৎকুত আজাতা কুত ইয়ং বিসৃষ্টিঃ।
অর্বাগ্দেবা অস্য বিসর্জনেনাথা কো বেদ যত আবভূব॥৬॥
ইয়ং বিসৃষ্টির্যত আবভূব যদি বা দধে যদি বা ন।
যো অস্যাধ্যক্ষঃ পরমে ব্যোমন্সো অঙ্গ বেদ যদি বা ন বেদ॥ ৭॥
অনুবাদ
[সম্পাদনা]তৎকালে যাহা নাই, তাহাও ছিল না, যাহা আছে তাহাও ছিল না। পৃথিবীও ছিল না, অতি দূরবিস্তার আকাশও ছিল না।
আবরণ করে এমন কি ছিল? কোথায় কাহার স্থান ছিল? দুর্গম ও গম্ভীর জল কি তখন ছিল?
তখন মৃত্যুও ছিল না, অমরত্বও ছিল না, রাত্রি ও দিনের প্রভেদ ছিল না।
কেবল সেই একমাত্র বস্তু বায়ুর সহকারিতা ব্যতিরেকে আত্মামাত্র অবলম্বনে নিশ্বাস প্রশ্বাস যুক্ত হইয়া জীবিত ছিলেন। তিনি ব্যতীত আর কিছুই ছিল না।
সর্বপ্রথমে অন্ধকারের দ্বারা অন্ধকার আবৃত ছিল। সর্বত্রই চিহ্ন বর্জিত ও চতুর্দিক জলময় ছিল।
অবিদ্যমান বস্তু দ্বারা সেই সর্বব্যাপী আচ্ছন্ন ছিলেন। তপস্যার প্রভাবে সেই এক বস্তু জন্মিলেন।
সর্বপ্রথমে মনের উপর কামের আবির্ভাব হইল। তাহা হইতে সর্বপ্রথম উৎপত্তি কারণ নির্গত হইল।
বুদ্ধিমানগণ বুদ্ধি দ্বারা আপন আপন হৃদয়ে পর্যালোচনা-পূর্বক অবিদ্যমান বস্তুতে বিদ্যমান বস্তুর উৎপত্তি স্থান নিরূপণ করিলেন।
রেতোধা পুরুষেরা উদ্ভব হইলেন। মহিমাসকল উদ্ভব হইলেন। উহাদিগের রশ্মি দুই পার্শ্বে ও নিম্নের দিকে এবং ঊর্ধ্ব দিকে রহিলেন।
কেই বা প্রকৃত জানে? কেই বা বর্ণনা করিবে? কোথা হইতে জন্মিল? কোথা হইতে নানা সৃষ্টি হইল?
দেবতারা এই সমস্ত নানা সৃষ্টির পর হইয়াছেন। কোথা হইতে যে হইল, তাহা কেই বা জানে?
এই নানা সৃষ্টি যে কোথা হইতে হইল, কেহ সৃষ্টি করিয়াছেন কি করেন নাই, তাহা তিনিই জানেন, যিনি ইহার প্রভুস্বরূপ পরমধামে আছেন। অথবা তিনিও না জানিতে পারেন।— অনুবাদক - রমেশচন্দ্র দত্ত[৪]
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
[সম্পাদনা]- জনপ্রিয় ভারতীয় তথ্যচিত্র সিরিজ ভারত এক খোঁজ-এর শীর্ষমন্তাজে নাসদীয় সূক্তের কিছু অংশ মূল সংস্কৃতে এবং এর হিন্দি অনুবাদে ব্যবহার করা হয়েছে। [৫]
- কসমস: আ পারসোনাল ভয়েজ-এর দশম পর্বে কার্ল সাগান কবিতাটি উদ্ধৃত করেন। [৬]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Swami Ranganathananda (১৯৯১)। Human Being in Depth: A Scientific Approach to Religion। SUNY Press। পৃষ্ঠা 21। আইএসবিএন 0-7914-0679-2।
- ↑ Wendy Doniger says of this hymn (10.129) "This short hymn, though linguistically simple... is conceptually extremely provocative and has, indeed, provoked hundreds of complex commentaries among Indian theologians and Western scholars. In many ways, it is meant to puzzle and challenge, to raise unanswerable questions, to pile up paradoxes." The Rig Veda. (Penguin Books: 1981) p. 25. আইএসবিএন ০-১৪-০৪৪৯৮৯-২.
- ↑ Brereton, Joel (১৯৯৯)। "Edifying Puzzlement: Ṛgveda and the Uses of Enigma"। Journal of the American Oriental Society। 10 (129)।Ṛgveda and the Uses of Enigma&rft.volume=10&rft.issue=129&rft.date=1999&rft.aulast=Brereton&rft.aufirst=Joel&rfr_id=info:sid/bn.wikipedia.org:নাসদীয়সূক্ত" class="Z3988">
- ↑ Avinash Sathaye, Translation of Nasadiya Sukta
- ↑ "Bharat Ek Khoj - Starting Track"। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১২।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১৬।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Joel P. Brereton, Edifying Puzzlement: Ṛgveda 10. 129 and the Uses of Enigma, Journal of the American Oriental Society (1999)
- P. T. Raju, The Development of Indian Thought, Journal of the History of Ideas (1952)
- Karel Werner, Symbolism in the Vedas and Its Conceptualisation, Numen (1977)
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]Carl Sagan's 'COSMOS' mentioning Nasadiya Sukta.YouTube link [১]