দাউদ পাশা (উজিরে আজম)
দাউদ | |
---|---|
উসমানীয় সাম্রাজ্যের ১৮তম উজিরে আজম | |
কাজের মেয়াদ ১৪৮২ – ১৪৯৭ | |
সার্বভৌম শাসক | দ্বিতীয় বায়েজীদ |
পূর্বসূরী | ইসহাক পাশা |
উত্তরসূরী | আহমেদ পাশা হারসেকি |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | আনু. ১৪৪৬ আলবেনিয়া |
মৃত্যু | ২০ অক্টোবর ১৪৯৮ ডেমোটিকা, উসমানীয় সাম্রাজ্য (বর্তমান গ্রিস) | (বয়স ৫১–৫২)
জাতীয়তা | উসমানীয়-আলবেনীয় |
দাম্পত্য সঙ্গী | ফুলানে সুলতান |
সন্তান | সুলতানজাদা মুহাম্মাদ বে |
দাউদ পাশা (তুর্কি: Koca Davut Paşa; ১৪৪৬ – ১৪৯৮) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের একজন আলবেনীয় সেনাপতি। তিনি দ্বিতীয় বায়েজীদের শাসনামলে ১৪৮২ থেকে ১৪৯৭ সাল পর্যন্ত উসমানীয় সাম্রাজ্যের উজিরে আজম ছিলেন। তিনি দ্বিতীয় বায়েজীদের কন্যা উসমানীয় শাহজাদীকে বিয়ে করে উসমানীয় রাজবংশের দামাত ("বর") হয়েছিলেন। কিন্তু যে শাহজাদীকে বিবাহ করেছিলেন তার নাম অজানা। তাদের একজন পুত্র ছিল। তার নাম সুলতানজাদা মেহমেদ বে। তিনি তার চাচাতো ভাই শাহজাদা আহমেদের কন্যা ফাতেমা সুলতানকে বিয়ে করেছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]দাউদ পাশা সম্ভবত একজন ধর্মান্তরিত মুসলিম এবং পূর্বে খ্রিস্টান আলবেনীয় ছিলেন। তিনি শৈশবকালে ইস্তাম্বুলে থাকতেন এবং উসমানীয় সেনাবাহিনীর (যেখানে তাকে কর্মজীবন গড়ার জন্য তার নিজের পরিবার পাঠিয়েছিল) বিভিন্ন পদে তাকে বাধ্যতামূলক ভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সেখানে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।[১][২]
সামরিক অভিযান
[সম্পাদনা]১৪৭৩ সালে আনাতোলিয়া প্রদেশের বেইলারবে হিসাবে, তিনি ওটলুকবেলির যুদ্ধে আক কোয়ুনলুর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তমূলক বিজয়ে উসমানীয় সেনাবাহিনীর অন্যতম সেনাপতি ছিলেন।[৩] ১৪৭৮ সালে সুলতান মুহাম্মাদ ফাতিহ দ্বারা আলবেনিয়ার শকোডারের বিরুদ্ধে অগ্রসর হওয়া সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণ তাকে দেওয়া হয়েছিল, যিনি ক্রুজের বিরুদ্ধে যাত্রা করেছিলেন। দাউদ পাশা শহরটি দখল করতে সক্ষম হন। দুর্গটি লেঝের লীগের শেষ দুর্গ ছিল। এভাবে উসমানীয়-আলবেনীয় যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।[২] ১৪৭৯ সালে তিনি বসনিয়ার সানজাকের গভর্নর (সানজাক-বে) হন এবং আকিনজি অশ্বারোহীদের বিশাল বাহিনীর সেনাপতি হিসাবে হাঙ্গেরি রাজ্যের বিরুদ্ধে ব্যাপক আক্রমণ ও অভিযান চালিয়েছিলেন।[৪]
উজিরে উজির হিসেবে তিনি ১৪৮৭ সালে উসমানীয়-মামলুক যুদ্ধে উসমানীয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। শুরুতে দাউদ পাশা মামলুকদের বিরুদ্ধে একটি সর্বাত্মক আক্রমণাত্মক অভিযানের পরিকল্পনা করেছিলেন কিন্তু দ্বিতীয় বায়েজীদ তার পরিকল্পনা বাতিল করে দেন। দ্বিতীয় বায়েজীদ তাকে তুরগুতলু এবং ভারসাক উপজাতিদের আক্রমণ করার জন্য নিযুক্ত করেন। দাউদ পাশা যখন তুরগুত ও ভারসাক অঞ্চলে পৌঁছেছিলেন, তখন উপজাতির প্রধানসহ ভারসাক নেতারা তার কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন এবং উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতি আনুগত্যের শপথ করেছিলেন।[৩]
তিনি ১৪৯৮ সালের ২০ অক্টোবর ডেমোটিকাতে মারা যান।
জনকল্যাণমূলক কাজ
[সম্পাদনা]দাউদ পাশার জনসাধারণের কাজগুলি মূলত ইস্তাম্বুলের আর্কেডিয়াস ফোরাম অঞ্চলে পাওয়া যায়। ঐ এলাকায় তিনি ১০৮টি দোকান নিয়ে একটি মসজিদ, একটি মাদ্রাসা, একটি স্কুল, একটি ধর্মশালা, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য একটি স্যুপ রান্নাঘর এবং ১৪৮৫ সালে একটি সর্বজনীন ফোয়ারা নির্মাণ করেন।[৫][৬] ফলস্বরূপ পুরো পাড়াটির নামকরণ করা হয়েছিল দাভুতপাশা পাড়া। বর্তমানে এটি ফাতিহ জেলার অংশ। ইয়েনিকাপি পাড়ায় তিনি একটি প্রাসাদ, একটি অবতরণ মঞ্চ, এগারোটি দোকান এবং সার্বজনীন স্নানাগার তৈরি করেছিলেন। তার অন্যান্য জনসাধারণের কাজের মধ্যে রয়েছে বিটোলায় একটি বেদেস্তান এবং স্কপিয়ে এবং বুরসার দোকান।[৫] স্কপিয়েতে দাউদ পাশার স্নানাগারগুলি বলকান অঞ্চলের বৃহত্তম স্নানাগার। বর্তমানে এটি একটি আর্ট গ্যালারী হিসাবে ব্যবহৃত হয়।[৭]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Shaw, Stanford J. (১৯৭৬-১০-২৯)। History of the Ottoman Empire and modern Turkey। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 72। আইএসবিএন 978-0-521-29163-7। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ ক খ Babinger, Franz; Manheim, Ralph; Hickman, William C. (১৯৯২)। Mehmed the Conqueror and His Time। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 362। আইএসবিএন 978-0-691-01078-6। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ ক খ Har-El, Shai (১৯৯৫)। Struggle for domination in the Middle East: the Ottoman-Mamluk War, 1485-91। BRILL। পৃষ্ঠা 149। আইএসবিএন 978-90-04-10180-7। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ Setton, Kenneth M.; Hazard, Harry W.; Zacour, Norman P., সম্পাদকগণ (১৯৮৯)। A History of the Crusades, Volume VI: The Impact of the Crusades on Europe। Madison and London: University of Wisconsin Press। পৃষ্ঠা 329। আইএসবিএন 0-299-10740-X।
- ↑ ক খ Singh, Nagendra Kr (২০০২-০৯-০১)। International encyclopaedia of Islamic dynasties। Anmol Publications PVT. LTD.। পৃষ্ঠা 366। আইএসবিএন 978-81-261-0403-1। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ Behar, Cem (২০০৩)। A neighborhood in Ottoman Istanbul: fruit vendors and civil servants in the Kasap İlyas Mahalle। SUNY Press। পৃষ্ঠা 32। আইএসবিএন 978-0-7914-5682-8। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ Evans, Thammy (২০১০-০১-০১)। Macedonia। Bradt Travel Guides। পৃষ্ঠা 117। আইএসবিএন 978-1-84162-297-2। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১০।
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী ইসহাক পাশা |
উসমানীয় সাম্রাজ্যের উজিরে আজম ১৪৮২–১৪৯৭ |
উত্তরসূরী আহমেদ পাশা হারসেকি |