দক্ষিণ কোরিয়া
কোরীয় প্রজাতন্ত্র 대한민국 দে-হান্-মিন্-গুক্ | |
---|---|
নীতিবাক্য: 널리 인간세상을 이롭게 하라 (홍익인간) ("সমগ্র মানব জাতির কল্যাণ") | |
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | সিউল |
সরকারি ভাষা | কোরীয় |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | দক্ষিণ কোরীয়, কোরীয় |
সরকার | রাষ্ট্রপতি শাসিত প্রজাতন্ত্র |
ইউন-সক ইয়ল | |
হান ডাক সু | |
• জাতীয় সংসদের স্পিকার | মুন হি-সাঙ্গ |
• প্রধান বিচারপতি | কিম মিয়ঙ্গ-সু |
• সাংবিধানিক আদালতের রাষ্ট্রপতি/ প্রধান | ইউ নাম-সক |
সংস্থাপন | |
• মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা | মার্চ ১ ১৯১৯ (দে জুরি) |
• স্বাধীনতা (জাপান হতে) | আগস্ট ১৫ ১৯৪৫ |
• প্রথম প্রজাতন্ত্র | আগস্ট ১৫ ১৯৪৮ |
সেপ্টেম্বর ১৭ ১৯৯২ | |
ফেব্রুয়ারি ২৫ ১৯৮৮ | |
• প্রথম রাজ্য গঠিত | অক্টোবর ৩ ২৩৩৩ BC |
আয়তন | |
• মোট | ১,০০,৩৬৩ কিমি২ (৩৮,৭৫০ মা২) (১০৭তম) |
• পানি (%) | ০.৩ |
জনসংখ্যা | |
• ২০১৯ আনুমানিক | ৫১,৭০৯,৯০৩ (২৮তম) |
• ঘনত্ব | ৫০৭/কিমি২ (১,৩১৩.১/বর্গমাইল) (২৩তম) |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০১৯ আনুমানিক |
• মোট | $২.৩২০ট্রিলিয়ন[১] (১৪ম) |
• মাথাপিছু | $৪৪,৭৪০ (২৯তম) |
মানব উন্নয়ন সূচক (২০২১) | ০.৯২৫[২] অতি উচ্চ · ১৯তম |
মুদ্রা | উয়ন (₩) (KRW) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+৯ (কোরীয় মান সময়) |
গাড়ী চালনার দিক | ডান |
কলিং কোড | +৮২ |
ইন্টারনেট টিএলডি | .kr, .한국 |
দক্ষিণ কোরিয়া পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র যা কোরীয় উপদ্বীপের দক্ষিণাংশ নিয়ে গঠিত। এর সরকারি নাম কোরীয় প্রজাতন্ত্র (কোরীয়: 대한민국 দে-হান্-মিন্-গুক্)। দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তরে উত্তর কোরিয়া, পূর্বে পূর্বসমুদ্র, দক্ষিণে ও দক্ষিণ-পূর্বে কোরিয়া প্রণালী, যা জাপান থেকে দেশটিকে পৃথক করেছে, এবং পশ্চিমে পীত সাগর। সিউল হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম শহর ও রাজধানী।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে কোরীয় উপদ্বীপের উত্তর অংশটি সোভিয়েত ইউনিয়নের সেনারা এবং দক্ষিণ অংশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা দখলে রেখেছিল। ১৯৪৮ সালে এ থেকে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া রাষ্ট্রদ্বয়ের আবির্ভাব হয়। ১৯৫০-১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধের পরে ধ্বংসপ্রায় দক্ষিণ কোরিয়া ১৯৯৩ সালে এসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতিগুলির একটিতে পরিণত হয় এবং সেই সঙ্গে এশিয়ান চার ড্রাগনে পরিণত হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]অবিভক্ত কোরিয়া মূলত জাপানিদের দখলে ছিল। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হেরে যাবার সময় জাপানিরা সমাজতান্ত্রিক দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে আত্মসমর্পণ করে। তার ফলে অবিভক্ত কোরিয়া ২ ভাগে ভাগ হয়ে যায়। তখন উত্তর কোরিয়া ১৯৫০ সালে সমাজতান্ত্রিক দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নের মতাদর্শে সমাজতান্ত্রিক ব্লকে চলে যায়, অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া পুঁজিবাদি আমেরিকার মতাদর্শে এর পুঁজিবাদি ব্লকে যোগদান করে। তখন থেকে কোরিয়া ২টি ভিন্ন নাম যথা উত্তর ও দক্ষিণ তথা ২টি ভিন্ন অর্থনৈতিক ব্যবস্থাতে চলতে শুরু করে। দক্ষিণ কোরিয়াতে আমেরিকার পুঁজিবাদ আর উত্তর কোরিয়াতে সোভিয়েত ইউনিউনের মত সমাজতন্ত্রবাদ চালু হয়। এটিই ১৯৪৮ সালে পথ দেখিয়েছে অবিভক্ত কোরিয়াকে বিভক্তিকরণ। উত্তর কোরিয়ার সরকারি নাম রাখা হয় গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া আর দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি নাম রাখা হয় প্রজাতন্ত্রী কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার রাজধানীর হয় পিয়ং ইয়াং আর দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীর হয় সিউল।
প্রশাসনিক ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]দক্ষিণ কোরিয়ার প্রশাসনিক ব্যবস্থা একটি প্রধানমন্ত্রীশাসিত বহুদলীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের প্রধান। সরকারের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সরকার এবং আইনসভা উভয়ের উপর ন্যস্ত। বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ ও আইন প্রণয়ন বিভাগ হতে স্বাধীন। ১৯৪৮ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধানে ৫টি বড় সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রতিটি সংশোধনী একটি নতুন প্রজাতন্ত্রের সূচনা হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমান প্রজাতন্ত্রটি ১৯৮৮ সালের সংবিধান সংশোধনীর পরে বহাল হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে ৫ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। ইউন-সক ইয়ল ২০২২ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সমাজতান্ত্রিক ও মার্ক্সবাদী নেতা কিম ইল সংয়ের নেতৃত্বাধীন কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টির নিয়ন্ত্রণে উত্তর কোরিয়ায় একদলীয় শাসন চালু হয়, মূলত যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে পূণর্গঠনের জন্যে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নেয়া হয়। তারপর থেকে উত্তর কোরিয়া উন্নত হতে শুরু করে সমাজতান্ত্রিক পথে। দক্ষিণ কোরিয়া পুঁজিবাদি আমেরিকার মতাদর্শে এর পুঁজিবাদি ব্লকে যোগ দান করে। কিন্তু
সমাজতান্ত্রিক উত্তর কোরিয়ার উন্নয়ন আমেরিকা মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা এই দেশের রাজনীতি নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন তুলে ও নানা ভাবে সমাজতান্ত্রিক দেশ উত্তর কোরিয়া এর পতন এর জন্য কাজ শুরু করে। দক্ষিণ কোরিয়াতে আমেরিকার পুঁজিবাদ চালু হয়।
প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ
[সম্পাদনা]দক্ষিণ কোরিয়া প্রশাসনিকভাবে মোট ১৭টি অঞ্চল নিয়ে গঠিত। এই অঞ্চলগুলোকে তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে: মেট্রোপলিটান সিটি (Metropolitan Cities), প্রদেশ (Provinces), এবং বিশেষ শাসিত অঞ্চল (Special Administrative Regions)। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:[৩]
১. মেট্রোপলিটান সিটি (Metropolitan Cities)
মেট্রোপলিটান সিটি হলো বড় শহর যা সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে পরিচালিত হয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় ৮টি মেট্রোপলিটান সিটি রয়েছে:
সিউল (Seoul):
রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় শহর।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
বুসান (Busan):
দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।
সমুদ্রবন্দর এবং পর্যটনের জন্য বিখ্যাত।
ইনচন (Incheon):
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য বিখ্যাত।
সিউলের নিকটবর্তী হওয়ায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর।
ডেগু (Daegu):
ঐতিহাসিক এবং টেক্সটাইল শিল্পের জন্য পরিচিত।
গুয়াংজু (Gwangju):
শিল্প ও সংস্কৃতির শহর।
গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য ইতিহাসে বিখ্যাত।
ডেজন (Daejeon):
প্রযুক্তি এবং শিক্ষা কেন্দ্র।
উলসান (Ulsan):
দেশের প্রধান শিল্প এলাকা।
গাড়ি উৎপাদন এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য পরিচিত।
সেজং (Sejong):
নতুন প্রশাসনিক শহর।
অনেক সরকারি দপ্তর এখানে স্থানান্তরিত হয়েছে।
২. প্রদেশ (Provinces)
দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট ৯টি প্রদেশ রয়েছে। এগুলোকে "ডো (Do)" বলা হয়।
গেয়ংগি প্রদেশ (Gyeonggi-do):
সিউলের চারপাশে অবস্থিত।
দেশের অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা।
গ্যাংওন প্রদেশ (Gangwon-do):
পাহাড় এবং পর্যটনের জন্য বিখ্যাত।
২০১৮ সালের শীতকালীন অলিম্পিক এখানে অনুষ্ঠিত হয়।
চুংচেওং উত্তর প্রদেশ (Chungcheongbuk-do):
দেশের মাঝখানে অবস্থিত।
কৃষি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য পরিচিত।
চুংচেওং দক্ষিণ প্রদেশ (Chungcheongnam-do):
উন্নয়নশীল এলাকা।
শিল্প এবং পরিবহন কেন্দ্র।
গেয়ংসাং উত্তর প্রদেশ (Gyeongsangbuk-do):
ঐতিহাসিক শহর গেয়ংজু এখানে অবস্থিত।
ঐতিহাসিক স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত।
গেয়ংসাং দক্ষিণ প্রদেশ (Gyeongsangnam-do):
বুসানের কাছে অবস্থিত।
সমুদ্রবন্দর এবং শিল্প কেন্দ্র।
জেওল্লা উত্তর প্রদেশ (Jeollabuk-do):
কৃষি এবং ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত।
জেওল্লা দক্ষিণ প্রদেশ (Jeollanam-do):
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত।
জেজু প্রদেশ (Jeju-do):
এটি একটি দ্বীপ এবং জনপ্রিয় পর্যটন স্থান।
এটি দক্ষিণ কোরিয়ার একমাত্র স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ।
৩. বিশেষ শাসিত অঞ্চল (Special Administrative Regions)
দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমানে একটি বিশেষ শাসিত অঞ্চল রয়েছে:
জেজু (Jeju Special Self-Governing Province):
এটি একটি বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল।
পর্যটন এবং ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়ে বিশ্বব্যাপী পরিচিত।
প্রশাসনিক কাঠামো
মেয়র/গভর্নর: প্রতিটি প্রদেশ বা সিটির শীর্ষ কর্মকর্তা।
শহর এবং কাউন্টি: প্রতিটি প্রদেশ ছোট ছোট শহর এবং কাউন্টিতে বিভক্ত।
গুচ্ছ প্রশাসন: স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
ভৌগোলিক অবস্থা
[সম্পাদনা]দক্ষিণ কোরিয়া পূর্ব এশিয়ার কোরীয় উপদ্বীপের দক্ষিণ অর্ধাংশ নিয়ে গঠিত। এর উত্তরে উত্তর কোরিয়া, পশ্চিমে পীত সাগর, পূর্বে পূর্বসমুদ্র এবং দক্ষিণে পূর্ব চীন সাগর। কোরিয়া উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রসারিত। উত্তর হতে দক্ষিণাঞ্চলের দূরত্ব প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় ৩০% এলাকা নিম্নভূমি এবং বাকী অংশ উচ্চভূমি বা পর্বতমালা। নিম্নভূমির অধিকাংশই সমুদ্র উপকূলে, বিশেষত পশ্চিম উপকূলে প্রধান প্রধান নদীর অববাহিকাতে অবস্থিত। এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণগুলি হল সিউল শহরের চারপাশের হান নদী অববাহিকা, সিউলের দক্ষিণে বিয়েওংতায়েক উপকূলীয় সমভূমি, গেউম নদীর অববাহিকা, নাকদং নদীর অববাহিকা এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের ইয়েওংসান এবং হোনাম সমভূমিগুলি। দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্ব উপকূল ধরে একটি সরু সমভূমি বিস্তৃত।
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]"হান নদীর তীরে গড়ে উঠা অত্যাধুনিক শহর সিউল"
দক্ষিণ কোরিয়াকে টাইগার অর্থনীতির দেশ বলা হয়।কোরিয়ান সংস্কৃতিতে ড্রাগন হল শক্তিমত্তা, জ্ঞান, সাহসিকতা, সৌভাগ্যের প্রতীক। জাপান, ভিয়েতনাম , কোরিয়া কোন না কোন সময় চীন শাসিত হওয়ায় এদের সংস্কৃতিতেও ড্রাগন এর প্রভাব অনেক।দ্রুত শিল্পায়ন ও জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে উঁচু মান সংরক্ষণ করে পূর্ব এশিয়ার চারটি দেশ ; হংকং, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ান বর্তমানে উন্নত দেশের কাতারে অন্তর্ভুক্ত । দ্রুততম সময়ে আর্থিক দিক দিয়ে শীর্ষ অবস্থানের কারণে এদেরকে অনেকে উদিয়মান টাইগার , আবার অনেকে ড্রাগন অর্থনীতির দেশ হিসেবে নামকরণ করেন।
দুই কোরিয়ার যুদ্ধের পর দক্ষিণ কোরিয়া ছিল বিশ্বের অন্যতম গরীব দেশ। মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৬৪ ডলার। তখনকার রিপোর্ট অনুযায়ী আফ্রিকার অন্যতম দরিদ্র দেশ কংগোর চেয়ে অর্থনৈতিকভাবে খারাপ অবস্থানে ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। কোরীয় যুদ্ধে নিহত হয়েছে হাজার হাজার সামরিক এবং বেসামরিক নাগরিক। যুদ্ধ পরবর্তী খাবারের স্বল্পতার কারণে কোরিয়ানদেরকে জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন সংস্থার দেওয়া খাবারের পিছনে ছুটতে হয়েছে। যুদ্ধে ধ্বংস হয়েছিল অধিকাংশ মৌলিক অবকাঠামো। স্বাভাবিকভাবেই কোরিয়ার অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থা ছিল একেবারেই নিন্ম অবস্থানে।
দক্ষিণ কোরিয়া তাদের কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে অবাধ বাণিজ্য ও রপ্তানিমুখি কৌশল এ দেশের সীমানা উম্মুক্তকরণ সহ সমুদ্র বন্দর, অবকাঠামো উন্নয়ন, নিজেদের স্বল্প মজুরির শ্রমশক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিল্পায়ন এবং পরিকল্পিত আর্থিক সেবার মাধ্যমে ষাট থেকে নব্বই এর দশক পর্যন্ত টানা জিডিপি এর হার দশ এর কাছাকাছি ধরে রেখেছে।
দক্ষ এবং শিক্ষিত মানব সম্পদের সাথে সাথে সফটওয়্যার, রোবটিক্স , ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি প্রভৃতি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, উৎকর্ষতা এবং রপ্তানিমুখি কৌশল দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতিকে মজবুত ভীতের উপর দাড় করিয়েছে। বর্তমানে জাহাজ নির্মাণে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কোরিয়া। টানা পাঁচবছরের বেশি সময় ধরে ইন্টারনেটের গতিতে কোরিয়া নাম্বার ওয়ান । স্যামসাং, এলজি, হুন্দাইসহ ১০টির বেশি কোম্পানী এখন সারাবিশ্বের বাঘা বাঘা কোম্পানীরগুলোকে পিছনে ফেলেছে। সেবায় বিশ্বের সেরা এয়ারপোর্টের দখল অনেকদিন ধরেই ইনছন এয়ারপোর্টের হাতে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর দক্ষিণ কোরিয়ার পোর্ট সিটি বুসানে। এসব অর্থনৈতিক শক্তির পরিচায়ক। আর্থিক যোগ্যতা বিবেচনায় (ঋণ ,মূল্যস্ফীতি ,স্থিতিশীল মুদ্রা ব্যবস্থা, বাজেট ঘাটতি ইত্যাদি) দক্ষিণ কোরিয়াকে এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে।এত দ্রুত সময়ে অন্যকোন দেশ এত বেশি উন্নত হতে পারেনি বলেই উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য দক্ষিণ কোরিয়া একটি মডেল। বড় বড় অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে ইকোনমিস্ট কিংবা গার্ডিয়ানের মত বিখ্যাত পত্রিকাগুলো অর্থনীতির জন্য কোরিয়াকে মডেল হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, হংকং এর মত দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পনির্ভর রপ্তানিমুখি শক্তিশালি অর্থনৈতিক অবস্থান বোঝাতে ড্রাগন অর্থনীতির দেশ বলা হয়ে থাকে।
জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]সর্বশেষ আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী ২০২২ ডিসেম্বরের শেষে দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যা ছিল ৫ কোটি ১৮ লাখ ২৯ হাজার ২৩ জন। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ হাজার ৮৩৮ জন কম।
শিক্ষা
[সম্পাদনা]সাক্ষরতার হারঃ মোট - ৯৮.৩% পুরুষ - ৯৯.৫% নারী - ৯৭.৩%
জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা
[সম্পাদনা]সংস্কৃতি
[সম্পাদনা]দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতি উদ্ভূত হয়েছে প্রাচীন সংস্কৃতি থেকে। ১৯৪৮ সালে কোরিয়ার বিভক্ত হওয়ার ফলে উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতির তারতম্য দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতি হচ্ছে অত্যাধুনিক। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের কারণে পোশাক-পরিচ্ছেদ, রন্ধন, বাসস্থান ইত্যাদিতে জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন হয়েছে, আর এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার আধুনিক সংস্কৃতি। কোরিয়া সংস্কৃতি এশিয়া ও বিশ্বে জনপ্রিয় হয়েছে বলে একে বলা হয় কোরীয় ঢেউ।
উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক বিভক্তিকরণই অপসারণ করেছে আধুনিক কোরীয় সংস্কৃতি। তথাপি উভয় রাষ্ট্রের পাঁচ হাজারাধিক বছরের ইতিহাস এবং বিশ্বের প্রাচীন ইতিহাসের মধ্যে অন্যতম। সুদূর প্রাচীনকালে কোরীয় উপদ্বীপ এর লগ্ন থেকেই সেখানে মানবজাতি বসবাস করতে আরম্ভ করে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতি উদ্ভূত হয়েছে প্রাচীন সংস্কৃতি থেকে। ১৯৪৮ সালে কোরিয়ার বিভক্ত হওয়ার ফলে উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতির তারতম্য দেখা দিয়েছে। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া মিউজিকের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। তারা গত ২ দশকে অসংখ্য সংগীত ব্যান্ড গঠন করেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়েছে। (বয়জ গ্রুপ) BTS,Exo,Shinee,Big bang,Seventeen,TXT,Stray Kids,Ateez,NCT,The boyz,Astro,MonsterX,Way V,Ikon,&Team ইত্যাদি বয় ব্যান্ড।
(গার্লস গ্রুপ) Blackpink,Girls Generation,Itzy,Twice,New Jeans,Aespa,Red Velvet ,Nmixx, Ive ইত্যাদি আরো অনেক গার্লস ব্যান্ড সারা বিশ্ব কাঁপাচ্ছে। একই সাথে তারা অর্জন করে নিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ সব অ্যাওয়ার্ড। গানের মাধ্যমে তারা তাদের দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরে। এবং এই গানের মাধ্যমে তারা নিউ জেনারেশনকে আরো আগ্রহী,আত্মবিশ্বাসী ও উদগ্রীব করে তোলে।
এবং ২০১৮ সালে BTS জাতিসঙ্গের স্থায়ী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এবং এ পর্যন্ত তারা কয়েকবার জাতিসংঘে অথিতি হিসেবে বক্তব্যও রেখেছে। এবং ২০২২ সালে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে তারা হোয়াইট হাউসে যান এবং প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করে।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০০৮।
- ↑ "Human Development Report 2021/2022" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। United Nations Development Programme। ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ Camară, Gabriel (২০২৪-০৬-২১)। "Housing in the Margins. Negotiating Urban Formalities in Berlin"s Allotment Gardens Housing in the Margins. Negotiating Urban Formalities in Berlin"s Allotment Gardens , Hanna Hilbrandt, Hoboken, Wiley, 2021, ix+175 pp., ISBN 9781119540915 (hardback), €22.60 (paperback), ISBN 9781119540939 (paperback), ISBN 9781119540960 (pdf), ISBN 9781119540908 (epub), €20.99 (e-book), ISBN 9781119540946 (ebook)"। Housing, Theory and Society: 1–3। আইএসএসএন 1403-6096। ডিওআই:10.1080/14036096.2024.2370683। line feed character in
|শিরোনাম=
at position 84 (সাহায্য)
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |