বিষয়বস্তুতে চলুন

জাম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জাম
Syzygium cumini
জাম গাছ (Syzygium cumini)
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
শ্রেণীবিহীন: সপুষ্পক উদ্ভিদ
শ্রেণীবিহীন: য়ুদিকটস
শ্রেণীবিহীন: রোজিডস
বর্গ: মির্টালেস
পরিবার: মির্টাসিয়া
গণ: সি

জিজিয়াম

প্রজাতি: এস. ক্যুমিনি
দ্বিপদী নাম
সিজিজিয়াম ক্যুমিনি
(L.) Skeels.
প্রতিশব্দ[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  • Eugenia cumini (L.) Druce
  • Eugenia jambolana Lam.
  • Syzygium jambolanum DC.
পাকা কালো জাম
পাকা কালো জামের পরিণত বীজ।

জাম, বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium cumini, Myrtaceae পরিবারভুক্ত একটি ফল। জাম নানা দেশে নানা নামে পরিচিত, যেমন জাম্বুল, জাম্ভুল, জাম্বু, জাম্বুলা, জাভা প্লাম, জামুন, কালোজাম, জামব্লাং, জাম্বোলান, কালো প্লাম, ড্যামসন প্লাম, ডুহাট প্লাম, জাম্বোলান প্লাম, পর্তুগিজ প্লাম ইত্যাদি। তেলুগু ভাষায় একে বলা হয় নেরেদু পান্ডু, মালায়ালাম ভাষায় নাভাল পাজহাম, তামিল ভাষায় নাভা পাজহাম এবং কন্নড় ভাষায় নেরালে হান্নু। ফিলিপাইনে একে বলা হয় ডুহাট।[]

বিবরণ

[সম্পাদনা]

জাম ফল দেখতে ১ থেকে ২.৫ সেন্টিমিটার লম্বা, প্রায় আয়তাকার। গাছ ১৪ থেকে ৬০ ফুট বা এর বেশিও লম্বা হতে পারে। পাতা সরল, বড়, চামড়া পুরু এবং চকচকে। গাছ চিরসবুজ। চকচকে পাতা এবং চিরসবুজ হবার কারণে এর আলংকরিক মান বেশ ভালো।

জাম গাছে মার্চ এপ্রিলে ফুল আসে। জামের ফুল ছোট এবং ঘ্রাণওয়ালা। মে জুন মাসে ফল বড় হয়। ফলটি লম্বাটে ডিম্বাকার। শুরুতে এটি সবুজ থাকে যা পরে গোলাপী হয় এবং পাকলে কালো বা কালচে বেগুনি হয়ে যায়। এটি খেলে জিহ্বা বেগুনি হয়ে যায়।

বিস্তার

[সম্পাদনা]

জাম ভারতবর্ষ থেকে সারা দুনিয়াতে ছড়িয়েছে এবং বর্তমানে এটি সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতে বেশ দেখা যায়। [] বাংলাদেশে প্রধানত দুই জাতের জাম পাওয়া জায়। জাতগুলি হলো ক্ষুদি- খুব ছোট জাত এবং মহিষে- বেশ বড় ও মিষ্টি। এটি বর্ষাকালে পাওয়া যায়। ফলের গা কালো এবং খুব মসৃণ পাতলা আবরণ দিয়ে ঢাকা। ফলের বহিরাবরণের ঠিক নিচ থেকেই গাঢ় গোলাপী রংয়ের টক মিষ্টি শাস।

পুষ্টিমান ও রাসায়নিক উপাদান

[সম্পাদনা]
জাম (NDB NO:09145)
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
শক্তি২৫১ কিজু (৬০ kcal)
১৫.৫৬ g
০.২৩ g
০.৭২ g
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
ভিটামিন এ৩ IU
থায়ামিন (বি)
১%
০.০০৬ মিগ্রা
রিবোফ্লাভিন (বি)
১%
০.০১২ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
২%
০.২৬০ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
৩%
০.১৬০ মিগ্রা
ভিটামিন বি
৩%
০.০৩৮ মিগ্রা
ভিটামিন সি
১৭%
১৪.৩ মিগ্রা
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
২%
১৯ মিগ্রা
লৌহ
১%
০.১৯ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম
৪%
১৫ মিগ্রা
ফসফরাস
২%
১৭ মিগ্রা
পটাশিয়াম
২%
৭৯ মিগ্রা
সোডিয়াম
১%
১৪ মিগ্রা
অন্যান্য উপাদানপরিমাণ
পানি৮৩.১৩ g
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল

জাম পাতার উপাদান নিচের ছকে দেয়া হলো।

জাম পাতা
Compound Percent
আমিষ 9.1
স্নেহ 4.3
আঁশ 17.0
ছাই 7
ক্যালসিয়াম 1.3
ফসফরাস 0.19
Source: http://www.hort.purdue.edu/newcrop/morton/jambolan.html

ব্যবহার

[সম্পাদনা]

জামের প্রধান ব্যবহার খাদ্য হিসেবে। টক মিষ্টি সুস্বাদু এই ফলটি বেশ জনপ্রিয়। কবিরাজী বা হেকিমী চিকিৎসায় এর কিছু ব্যবহার আছে; বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ, ভারতবর্ষ, ইন্দোনেশিয়া এবং চীন-এ জামের ব্যবহার হয়ে আসছে। জামের বীজ দিয়ে নানান রোগের আয়ুর্বেদী চিকিৎসা করা হয়, যেমন বহুমুত্র। [][]) ইউনানী এবং চৈনিক চিকিৎসাতেও এর ব্যবহার আছে। হজমের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, মাড়ির প্রদাহ ইত্যাদি রোগে জামের বীজ, ছাল ও পাতা ব্যবহৃত হয়। জাম থেকে মদ ও সিরকা তৈরি করা যায়। জামে বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি আছে। [][] পরিণত জাম গাছের গুঁড়ি থেকে যে কাঠ পাওয়া যায় তা দিয়ে দরজা জানালার ফ্রেম আসবাবপত্র তৈরি করা যায়।

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. [১]
  2. "Syzygium cumini"। ১৪ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১২ 
  3. [২] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে Article in The Hindu, retrieved June 23, 2007
  4. [৩][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] Tips for Health: Wofome
  5. [৪] TopTropicals plant catalog, retrieved November 3rd, 2010
  6. [৫] Antioxidant actions and phenolic and vitamin C contents of common Mauritian exotic fruits, by Amitabye Luximon-Ramma1, Theeshan Bahorun1,and Alan Crozier, retrieved November 3rd, 2010