বিষয়বস্তুতে চলুন

জমিদার বাড়ি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন। এই ঐতিহাসিক নিদর্শনের মধ্যে একটি হচ্ছে জমিদার বাড়ি। যা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। এর সাথে এক-একটা জমিদার বাড়ির আছে এক একরকম ইতিহাস।

ভারত উপমহাদেশে মুঘলদের শাসনামল থেকে ব্রিটিশদের শাসনামল পর্যন্ত জমিদারি প্রথা চালু ছিল। তবে ব্রিটিশ শাসনামলের পূর্বে এই জমিদারী প্রথাকে "জায়গীরদারি" প্রথা বলা হতো। ব্রিটিশদের শাসনামলে ভারত উপমহাদেশে জমিদারীর প্রথা চালু হয় অন্যরকম আধুনিকভাবে। কারণ ব্রিটিশরা এই জমিদারী প্রথা দিয়ে ভারত উপমহাদেশকে আরও সহজভাবে শাসন করার জন্য একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। যা তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিশ "চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত" নামে ১৭৯৩ সালে জায়গিরদারি প্রথা বিলুপ্ত করে জমিদারী প্রথা চালু করেন। যার ফলে এটি "জায়গিরদারি" প্রথা থেকে "জমিদারী" প্রথায় রূপ নেয়। কর্নওয়ালিশ নিজেও ব্রিটিনের একজন জমিদার পরিবারের সদস্য ছিলেন। তার এই জমিদারী প্রথা চালু করার পিছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল পুরো ভারতবর্ষ থেকে সহজে সরকারি রাজস্ব আদায় করা। এছাড়াও সহজে ভারতবর্ষের মানুষকে তাদের শাসনকার্যের আওতায় রাখা। মধ্যযুগীয় বা মুঘল শাসনামলের জমিদারী প্রথা এই জমিদারী প্রথার সাথে একদম আলাদা ছিল।

তখনকার সময় ব্রিটিশদের কাছ থেকে যারা জমিদারী ক্রয় করে প্রজাদের উপর তাদের শাসনকার্য চালানোর জন্য একটি নির্ধারিত স্থানে প্রাসাদ তৈরি করে বিচারকার্য পরিচালনা করতেন এবং বসবাস করতেন। ঐ জমিদারদের তৈরি করা ঐ বাড়িকেই জমিদার বাড়ি বলা হতো বা হয়। জমিদাররা প্রজাদের উপর তাদের শাসনকার্য চালাতেন এই বাড়ি থেকেই। তাই জমিদারদের এই বাড়িগুলো প্রজাদের কাছে অর্থাৎ সাধারণ মানুষের কাছে জামিদার বাড়ি নামেই পরিচিতি পায়। তখনকার সময় জমিদাররা ছিলেন অনেক ধন-সম্পদের মালিক। তাই তারা তাদের বাড়িগুলো বানাতেন দালানের মধ্যে অপূর্ব কারুকাজ বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সুন্দর নকশা করে। যা বিভিন্ন জমিদার বাড়ি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়। নিচে বাংলাদেশে অবস্থিত জমিদার বাড়িগুলোর তালিকা দেখুন।

জমিদার বাড়ির তালিকা

[সম্পাদনা]

ঢ ঢোয়াইগাঁও জমিদার বাড়ী, নরসিংদী

[সম্পাদনা]

এখানকার জমিদার ছিলেন মুসলিম। তিনি একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। যা ঢোয়াইগাঁও জমিদার বাড়ী হিসেবে পরিচিত।

  • Fuldi Zamindar Bari / ফুলদী জমিদার বাড়ী, Kaligonj-Gazipur ফুলদী জমিদার বাড়ী সাবেক ঢাকা জেলার অন্তর্গত জয়দেবপুর মহকুমা, বর্তমানে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ফুলদী গ্রামে অবস্থিত। এই বাড়ীটি বৃটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর রূপগঞ্জ সার্কেলের দায়িত্ব প্রাপ্ত সার্কেল ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (সি.আই) ও জমিদার মাগন ইব্রাহীম খাঁ'র সুযোগ্যপুত্র মুন্সী মুহাম্মদ মাগন ছরওয়ার খাঁ ১৭৯৩ ইং সনে প্রতিষ্ঠিত ও নির্মাণ করেন। একই সময়ে তিনি সামান্য উত্তর দিকে ছোট পুত্র মুন্সী মুহাম্মদ মজহর খাঁ ওরফে টুকু মিয়া'র জন্য আরেকটি বাড়ী নির্মাণ করেন। ছরওয়ার খাঁ'র মৃত্যুর পর জমিদারী পরিচালনার দায়িত্ব পান তাঁর জেষ্ঠ পুত্র মুন্সী মুহাম্মদ সফদর খাঁ। তিনি মূলত ছরওয়ার খাঁ'র প্রথম নির্মিত বাড়ী ( যা বড় ছেলের জন্য নির্মিত বড় বাড়ী হিসেবে পরিচিত) থেকেই জমিদারী পরিচালনা করেন। যে কারণে এটি ফুলদী জমিদার বাড়ী (Fuldi Zamindar Bari) হিসেবে পরিচিত লাভ করে। এই বাড়ীতে আছে জামে মসজিদ, পারিবারিক কবরস্থান, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, বাজার, ঘাট বাঁধানো পুকুর। এক কথায় মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ।
  • পরবর্তীতে মুন্সী মুহাম্মদ সফদর খাঁ মৃত্যুবরণ করলে কিছু দিনের জন্য জেষ্ঠ পুত্র মোসলেহউদ্দিন আহমেদ খান জমিদারীর দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু হঠাৎ তিনি মারা গেলে অতি অল্প বয়সে সফদর খাঁ'র ছোটপুত্র মৌলভী মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ খান ওরফে আব্দু মিয়া জমিদার হিসেবে ৬৯ মৌজায় জমিদারী কায়েম করেন। জমিদার আব্দু মিয়ার মৃত্যুর পর তাঁর জেষ্ঠ পুত্র মোঃ মুক্তাজুল হোসেন খান ওরফে রাজা মিয়া জমিদারী উচ্ছেদের পূর্ব পর্যন্ত সুনামের সাথে জমিদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিসংযোগ

[সম্পাদনা]