ইসতানা নুরুল ইমান
ইসতানা নুরুল ইমান | |
---|---|
সাধারণ তথ্যাবলী | |
স্থাপত্যশৈলী | ব্রুলাইয়ের ইসলামী ও মালয় |
শহর | বন্দর সেরি বেগাওয়ান |
দেশ | ব্রুনাই |
সম্পূর্ণ | ১৯৮৪ |
নির্মাণব্যয় | US$ ১.৫ বিলিয়ন (BN$ ৫ বিলিয়ন) |
কারিগরী বিবরণ | |
কাঠামো ব্যবস্থা | মালয় ও ইসলাম |
তলার সংখ্যা | ভূগর্ভস্থ মেঝেসহ প্রায় ১৭ |
তলার আয়তন | ২১,৫২,৭৮২ বর্গফুট (২,০০,০০০ মি২) |
নকশা ও নির্মাণ | |
স্থপতি | লেওনার্দো ভি. লোকসিন (সামগ্রিক) ও খুয়ান চ্যু (অভ্যন্তর)[১] |
ইসতানা নুরুল ইমান (জউই: ايستان نور الإيمان; বাংলা: বিশ্বাসের প্রাসাদের আল) ব্রুনাইয়ের সুলতান, হাসসান আল-বলকিয়াহের বাসস্থান এবং ব্রুনাই সরকারের প্রধান আসন সংরক্ষণস্থল ব্রুনাই নদীর বাঁকে, রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ানের কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এই প্রাসাদের অবস্থান। রাজকীয় আতিথেয়তা ও রাজ্যের উতসবের কেন্দ্রবিন্দু এই প্রাসাদ মেঝের আয়তনের ভিত্তিতে এই প্রাসাদকে বিশ্বের সর্ববৃহত বসবাসযোগ্য প্রাসাদ হিসেবে গণ্য হয়।
নকশা ও নির্মাণ
[সম্পাদনা]প্রাসাদের নাম "ইসতানা নুরুল ইমান" এসেছে মালয় ভাষার "ইসতানা" ও আরবি শব্দ "নূর-ওল ইমান" শব্দ জোড়া থেকে। আরবি শব্দটির অর্থ "বিশ্বাসের আলো"। ফিলিপিনো ভিসায়োন স্থাপত্য প্রকৌশলী লেওনার্দো ভি লোকসিন এই প্রাসাদের নকশা করেন। ব্রুনাইয়ের ইসলাম ভাবমর্যাদা ও মালয় প্রভাব তাঁর নকশায় প্রাসাদের সোনালী গম্বুজে দেখতে পাওয়া যায় প্রাসাদের অভ্যন্তরীন নকশায় নিয়োজিত ছিলেন নকশাবিদ খুয়ান চ্যু। এই নকশাবিদ দুবাইয়ের বুর্জ আল আরব নকশার জন্য বিখ্যাত ১৯৮৪ সালে শেষ হওয়া এই প্রাসাদের নির্মাণে প্রায় ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমান অর্থ খরচ হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাসাদ
[সম্পাদনা]"বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাসাদ" খেতাব নির্ণয় বিতর্কিত এবং দুরূহ কেননা বিভিন্ন দেশ নিজেদের স্বীয় অনন্য মানদণ্ড ব্যবহার করে নিজেদের প্রাসাদকে সর্বোচ্চ বলে দাবী করে। বিভিন্ন মানদণ্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় ইসতানা নুরুল ইমান, বাকিংহাম প্রাসাদ, কুইরিনাল প্রাসাদ, মাদ্রিদের রাজ প্রাসাদ, নিষিদ্ধ নগরী ,কাসের্তার প্রাসাদ, প্রাগ প্রাসাদ, ল্যুভর প্রাসাদ এবং রোমানিয়ার সংসদীয় প্রাসাদ সবচেয়ে বড় প্রাসাদরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে।
গিনেজ বুক অব রেকর্ডসের মানদণ্ডের হিসেবে, একটি প্রাসাদকে অবশ্যই রাজ পরিবারের বসবাসের জন্য ব্যবহৃত হতে হবে এবং শুধুমাত্র প্রাসাদের মেঝেকেই প্রাসাদের আয়তন হিসেবে গণ্য করা হবে। আর এই মানদণ্ড অনুযায়ী ব্রুনাইয়ের রাজপ্রাসাদ ইসতানা নুরুল ইমান বর্তমানে "সবচেয়ে বড় রাজপ্রাসাদ" হিসেবে মর্যাদাপ্রাপ্ত।[২] একই সাথে এই প্রাসাদ একটি মাত্র পরিবার কর্তৃক নির্মিত সবচেয়ে বড় বাসস্থল মর্যাদাপ্রাপ্ত।[৩] প্রাসাদটিতে মোট ১,৭৮৮টি কক্ষ রয়েছে। এর মাঝে ভোজনসভার কক্ষটিতে একই সাথে পাঁচ হাজারেরও বেশি অতিথি আপ্যায়ন সম্ভব। প্রাসাদের মসজিদে প্রায় দেড় হাজার মানুষের প্রার্থনার ব্যবস্থা রয়েছে।[৪] ব্রুনাইয়ের সুলতানের ২০০টি পোলো পনির জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আস্তাবলের পাশাপাশি প্রাসাদে রয়েছে ১১০টি গাড়ির গ্যারেজ। ৫টি সুইমিং পুল সংবলিত প্রাসাদের মেঝের আয়তন দুই লক্ষ বর্গমিটার বা ২,১৫২,৭৮২ বর্গফুট।
ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]ব্রুয়ানিয়ের সুলতান তার আনুষ্ঠানিক অতিথিদের এই প্রাসাদেই আপ্যায়ন করেন। এছাড়াও ব্রুনাই সরকার রাজ্যের কর্ম সম্পাদনে এই প্রাসাদ ব্যবহার করে। উল্লেখ্য, ইসতানা নুরুল ইমান প্রাসাদে ব্রুনাই-এর প্রধানমন্ত্রীর কর্মক্ষেত্র এবং এখান থেকে ব্রুনাই সরকার পরিচালিত হয়।
প্রবেশাধিকার
[সম্পাদনা]বাৎসরিক ইসলাম ধর্মের উৎসব ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যেই একমাত্র প্রাসাদটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। অন্যথা প্রাসাদে জনসাধারনের প্রবেশাধিকার নেই। তিনদিন ঈদ উপলক্ষ্যে ১১০,০০০-এরও বেশি দর্শনার্থী এই প্রাসাদে আসে, যাদের খাবার রাজপরিবার কর্তৃক দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এছাড়াও কমবয়েসী বাচ্চাদের ঈদ উপলক্ষ্যে সবুজ প্যাকেটে অর্থ দেয়া হয়। এছাড়া হিজরী রমজান মাসের শেষের দশদিন তাহাজ্জুদের নামাজ ও তারাবিহর নামাজের জন্য প্রাসাদ উন্মুক্ত থাকে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Ploysri Porananond; Victor T. King (২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। Tourism and Monarchy in Southeast Asia। Cambridge Scholars Publishing। পৃষ্ঠা 28–29। আইএসবিএন 978-1-4438-1661-8।
- ↑ "Largest residential palace"। Guinness World Records। ৩০ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১৫।
- ↑ Guinness World Records
- ↑ Bartholomew, James. The Richest Man in the World, Penguin Books Ltd; New Ed edition (22 February 1990).