আবু হামিদ আল-গাজ্জালি
আল-গাজ্জালী | |
---|---|
الغزالي | |
উপাধি | হুজ্জাতুল ইসলাম (সম্মানসূচক)[১] |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | মুহাম্মদ ইবনে আহমদ আত-তুসী আল-গাজ্জালী আনু. ১০৫৮ |
মৃত্যু | ১৪ জমাদিউস সানি ৫০৫ হিজরি ১৯ ডিসেম্বর ১১১১ (বয়স ৫২–৫৩) |
ধর্ম | ইসলাম |
যুগ | ইসলামি স্বর্ণযুগ |
অঞ্চল | সেলজুক সাম্রাজ্য (নিশাপুর)[২]:২৯২ আব্বাসীয় খিলাফত (বাগদাদ) / (জেরুজালেম) / (দামেস্ক) [২]:২৯২ |
আখ্যা | সুন্নি[৩][৪] |
শিক্ষালয় | শাফেয়ী |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | আশআরি[৫][৬] |
প্রধান আগ্রহ | সুফিবাদ, ধর্মতত্ত্ব (কালাম), দর্শন, যুক্তিবিজ্ঞান, ইসলামি আইনশাস্ত্র |
উল্লেখযোগ্য কাজ | এহইয়াউ উলুমিদ্দিন, মাকাসিদুল ফালাসিফা, তাহাফুতুল ফালাসিফা, কিমিয়ায়ে সা'আদাত, আল-ইকতিসাদ ফিল ইতিক্বাদ, আল-মুস্তাসফা মিন ইলমুল উসুল |
অন্য নাম | আল-গাজেল |
মুসলিম নেতা | |
যার দ্বারা প্রভাবিত | |
যাদের প্রভাবিত করেন
|
আল-গাজ্জালি (আনু. ১০৫৮ – ১৯ ডিসেম্বর ১১১১; ٱلْغَزَّالِيُّ), পূর্ণ নাম আবু হামিদ মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ তুসী আল-গাজ্জালি (أَبُو حَامِدٍ مُحَمَّدُ بْنُ مُحَمَّدٍ ٱلطُّوسِيُّ ٱلْغَزَالِيُّ),[ক][২৭][২৮][২৯][৩০] তিনি সবচেয়ে অন্যতম এবং প্রভাবশালী দার্শনিক, ধর্মতত্ত্ববিদ, আইনবিদ, যুক্তিবিদ ও রহস্যবাদী হিসাবে পরিচিত।[৩১][৩২] তিনি বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক অঞ্চলেই ইমাম গাজ্জালি হিসেবে বেশি পরিচিত।
তাকে পঞ্চম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়,[৩৩][৩৪] হাদিস অনুসারে, মুজাদ্দিদ হল বিশ্বাসের পুনরুজ্জীবনকারী, যিনি প্রতি ১০০ বছরে একবার ইসলামি সম্প্রদায়ের বিশ্বাস পুনরুদ্ধার করতে হাজির হন।[৩৫][৩৬][৩৭]
তার কাজগুলি তার সমসাময়িকদের দ্বারা এতটাই প্রশংসিত হয়েছিল যে আল-গাজ্জালীকে "ইসলামের প্রামাণ্য অবয়ব" (হুজ্জাতুল ইসলাম) সম্মানসূচক উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল।[১]
আল-গাজ্জালী বিশ্বাস করতেন যে ইসলামী আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য মৃতপ্রায় হয়ে গেছে এবং মুসলমানদের প্রথম প্রজন্মের দ্বারা শেখানো আধ্যাত্মিক বিজ্ঞানগুলি ভুলে গেছে।[৩৮] এই বিশ্বাস তাকে এহইয়াউ উলুমিদ্দিন ("ধর্মীয় বিজ্ঞানের পুনরুজ্জীবন") শিরোনামে তার সেরা রচনা লিখতে পরিচালিত করেছিল।
জীবন
[সম্পাদনা]আল-গাজ্জালী ইরানের খোরাসান প্রদেশের অন্তর্গত তুস নগরীতে ১০৫৮ খ্রিস্টাব্দ মোতাবেক ৪৫০ হিজরি সনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ আল-গাজ্জালী। গাজ্জাল শব্দের আভিধানিক অর্থ সুতা কাটা। কারও মতে ইমাম গাজ্জালীর বংশের লোকেরা সম্ভবত সুতার ব্যবসা করতেন, তাই তাদের বংশ উপাধি গাজ্জালী নামে পরিচিত। এই মহামনীষী খ্রিষ্টাব্দ ১১১১ সনের ১৯ ডিসেম্বর মোতাবেক ৫০৫ হিজরি সনে নিজ জন্মভূমি তুস নগরীতে সুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ইতিহাস থেকে জানা যায়, মৃত্যুর দিন ভোর বেলায় তিনি ফজরের নামাজ আদায় করেন এবং তার ভাইয়ের কাছ থেকে নিয়ে নিজ হাতে কাফনের কাপড় পরিধান করেন এবং কেবলার দিকে মুখ করে শুয়ে পড়েন। এভাবেই এই নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নেন এই মহান দার্শনিক। ইরানের অমর কবি ফেরদৌসীর সমাধির পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। এটাই বহুল প্রচলিত।
শৈশব, কৈশোর ও শিক্ষাদীক্ষা
[সম্পাদনা]ছোট বেলায়ই তিনি তার বাবাকে হারান। তার শিক্ষা জীবন ও বাল্যকাল কাটে তুস নগরীতে। ইমাম আল গাজ্জালি (রহ•) তৎকালীন যুগের শ্রেষ্ঠতম ধর্মতত্ত্ববিদ আলেম ইমামুল হারামাইন আল জুয়াইনির কাছে কয়েক বছর অতিবাহিত করেন। পঞ্চম শতকের মধ্যভাগে এমন এক পরিস্থিতিতে ইমাম গাজ্জালী জন্মগ্রহণ করেন যখন পাশ্চাত্য ও গ্রিক দর্শনের বিস্তার লাভ করে ছিল। সে যুগে যে শিক্ষা পার্থিব উন্নতির বাহন হতে পারতো, প্রথমতসেই ধরনের শিক্ষা তিনি লাভ করেন। বাজারে যেসব বিদ্যার চাহিদা ছিল, তাতেও তিনি পারদর্শিতা অর্জন করেন। অতঃপর এ বস্তুকে নিয়ে তিনি ঠিক সেখানেই পৌঁছেন সেখানকার জন্যে এটি তৈরি হয়েছিল এবং তৎকালে একজন আলেম যতদূর উন্নতির কল্পনা করতে পারতেন, ততদূর তিনি পৌঁছে যান।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]তিনি পরিণত বয়সে ৪৮৪ হিজরিতে বাগদাদ গমন করেন। বাগদাদে তৎকালীন সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ নিযামিয়া মাদ্রাসায় তিনি অধ্যাপনায় যোগ দেন। মুসলিম দর্শন, ফিকাহ, ইলমুল কালাম (ধর্মতত্ত্ব) বিষয়ে তিনি সর্বকালের প্রাতঃস্মরণীয় মনীষীদের একজন। ইমাম গাজ্জালীর আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রতি ছিল অগাধ তৃষ্ণা। নিযামিয়া মাদ্রাসার অধ্যাপনা তার এই জ্ঞান পিপাসা নিবারণ করতে পারেনি। তাই অল্প সময়ের মধ্যে নিযামিয়া মাদ্রাসার অধ্যাপনা ছেড়ে সৃষ্টি রহস্যের সন্ধানে তিনি পথে বেরিয়ে পড়েন। প্রায় দশ বছর তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল সফর করে অবশেষে আবার তিনি বাগদাদে তিনি তৎকালীন দুনিয়ার বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় বাগদাদের নেজামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রেকটর নিযুক্ত হন। নেজামুল মুলক তুসী মালিক শাহ সালজুকী ও বাগদাদের খলিফার দরবারে যোগ্য আসন লাভ করেন। সমকালীন রাজনীতিতে এত বেশি প্রভাব বিস্তার করেন যে, সালজুকী শাসক ও আব্বাসীয় খলিফার মধ্যে সৃষ্ট মতবিরোধ দুর করার জন্যে তার খেদমত হাসিল করা হতো। পার্থিব উন্নতির এই পর্যায়ে উপনিত হবার পর অকস্মাৎতার জীবনে বিপ্লব আসে। নিজের যুগের তত্ত্বগত নৈতিক ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও তমুদ্দুনিক জীবনধারাকে যত গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন, ততই তার মধ্যে বিদ্রোহের আগুন জ্বলতে থাকে এবং ততই বিবেক তারস্বরে শুরু করে যে, এই পুঁতিগন্ধময় সমুদ্রে সন্তরণ করা তোমার কাজ নয়, তোমার কাজ অন্য কিছু। অবশেষে সমস্ত রাজকীয় মর্যাদা, লাভ, মুনাফা, ও মর্যদাপূর্ণ কার্যসমূহেকে ঘৃণাভাবে দূরে নিক্ষেপ করেন। কেননা এগুলোই তার পায়ে শিকল পরিয়ে দিয়েছিল। অতঃপর ফকির বেশে দেশ পর্যটনে বেরিয়ে পড়েন। বনে-জঙ্গলে ও নির্জন স্থানে বসে নিরিবিলিতে চিন্তায় নিমগ্ন হন। বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মুসলমানদের সংগে মেলামেশা করে তাদের জীবনধারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। দীর্ঘকাল মোজাহাদা ও সাধনার মাধ্যমে নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে থাকেন। ৩৮ বছর বয়সে বের হয়ে পূর্ণ দশ বছর পর ৪৮বছর বয়সে ফিরে আসেন। ওই দীর্ঘকালীন চিন্তা ও পর্যবেক্ষণের পর তিনি যে কার্য সম্পাদন করেন তা হলো এই যে, বাদশাহদের সংগে সম্পর্কেচ্ছেদ করেন। এবং তাদের মাসোহারা গ্রহণ করা বন্ধ করেন। বিবাদ ও বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকার জন্যে শপথ করেন। সারকারী প্রভাবাধীনে পরিচালিত শিক্ষায়তনসমূহে কাজ করতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং তুসে নিজের একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান কায়েম করেন। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি নির্বাচিত ব্যক্তিদের বিশেষ পদ্ধতিতে তালিম দিয়ে তৈরি করতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু সম্ভবতঃ তার এ প্রচেষ্টা কোনো বিরাট বৈপ্লবিক কার্য সম্পাদন করতে সক্ষম হয়নি, কেননা এ পদ্ধতিতে কাজ করার জন্যে তার আয়ু তাকে পাঁচ ছয় বছরের বেশি অবকাশ দেয়নি।
সামাজিক জীবন সংস্কারমূলক কাজ
[সম্পাদনা]গ্রিক দর্শন গভীরভাবে অধ্যায়ন করার পর তিনি তার সমালোচানা করেন এবং জবরদস্ত সমালোচানা করেন যে, তার যে শ্রেষ্ঠত্ব ও শক্তিমত্তা মুসলমানদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল, তা হ্রাসপ্রাপ্ত হয় এবং লোকেরা যে সমস্ত মতবাদকে চরম সত্য বলে মেনে নিয়েছিল, কোরআন ও হাদীসের শিক্ষাসমূহকে যার ফলে ছাঁচে ঢালাই করা ছাড়া দ্বীনের উদ্ধারের আর কোন উপায় পরিদৃষ্ট হচ্ছিল না, তার আসল চেহারা অনেকাংশে জনগণের সম্মুখে উম্মক্ত হয়ে যায়। ইমামের এই সমালোচানার প্রভাব শুধু মুসলমান দেশসমূহেই সীমাদ্ধ থাকেনি বরং ইউরোপে উপনীত হয় এবং সেখানে গ্রিক দর্শনের কর্তৃত্ব খতম করার এবং আধুনিক সমালোচনা ও গবেষণা যুগের দ্বারোদঘাটন করার ব্যাপারে অংশগ্রহণ করে।
ন্যায় শাস্ত্র গভীর জ্ঞান না রাখার কারণে ইসলামের সমর্থকগণ দার্শনিক ও মুতাকাল্লিমদের মোকাবিলায় যেসব ভুল করছিল তিনি সেগুলো সংশোধন করেন। পরবর্তীকালে ইউরোপের পাদ্রিরা যে ভুল করেছিল ইসলামের এই সমর্থকরা ঠিক সেই পর্যায়ে ভুল করে চলছিল। অর্থাৎ ধর্মীয় আকিদা-বিশ্বাসের যুক্তি প্রমাণকে কতক সুস্পষ্ট অযৌক্তিক বিষয়াবলীর ওপর নির্ভরশীল মনে করে অযথা সেগুলোকে মূলনীতি হিসেবে গণ্য করা,অতঃপর ঐ মনগড়া মূলনীতিগুলোকেও ধর্মীয় আকিদা-বিশ্বাসের মধ্যে শামুল করে যারা সেগুলো অস্বীকার করে তাদেরকে কাফের গণ্য করা আর যে সমস্ত দলিল প্রমাণ অভিজ্ঞতা বা পর্যবেক্ষণের সাহায্যে মনগড়া ঐ নীতিগুলোর গলদ প্রমাণিত হয়, সেগুলোকে ধর্মের জন্যে বিপদস্বরুপ মনে করা। এ জিনিসটিই ইউরোপকে নাস্তিক্যবাদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। মুসলিম দেশ সমুহে এ জিনিসটিই বিপুল বিক্রমে কাজ করে যাচ্ছিল এবং জনগণের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করছিল। কিন্তু ইমাম গাজ্জালী যথাসময়ে এর সংশোধন করেন। তিনি মুসলমানদেরকে জানান যে, অযৌক্তিক বিষয়সমুহের ওপর তোমাদের ধর্মীয় আকিদা-বিশ্বাসের প্রমাণ নির্ভরশীল নয় বরং এর পেছনে উপযুক্ত প্রমাণ আছে। কাজেই ঐ গুলোর ওপর জোর দেয়া অর্থহীন।
তিনি ইসলামের আকিদা-বিশ্বাস ও মুলনীতিসমূহের এমন যুক্তিসম্মত ব্যাখ্যা পেশ করেন যে, তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে সে যুগে এবং তার পরবর্তী কয়েক যুগ পর্যন্ত ন্যায়শাস্ত্র ভিত্তিক কোনো কোনো প্রকার আপত্তি উত্থাপিত হতে পারতো না। এই সংগে তিনি শরিয়তের নির্দেশাবলী এবং ইবাদতের গূঢ় রহস্য ও যৌক্তিকতাও বর্ণনা করেন এবং এমন একটি চিত্র পেশ করেন যার ফলে ইসলাম যুক্তি ও বুদ্ধির পরীক্ষার বোঝা বহন করতে পারবে না বলে যে ভুল ধারণা মানুষের মনে স্থানলাভ করেছিল, তা বিদূরিত হয়।
তিনি সমকালীন সকল মাযহাবী ফেরকা এবং তাদের মতবিরোধ পূর্ণরূপে পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে ইসলাম ও কুফরের পৃথক পৃথক সীমারেখা নির্ধারণ করেন এবং কোন সীমারেখার মধ্যে মানুষের জন্যে মত প্রকাশ ও ব্যাখ্যা করার স্বাধীনতা আছে, কোন সীমারেখা অতিক্রম করার অর্থ ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়া ইসলামের আসল আকিদা বিশ্বাস কি কি এবং কোন কোন জিনিসকে অনর্থন ইসলামী আকিদার মধ্যে শামিল করা হয়েছে তা বিবৃত করেন। তার এই পর্যালোচনার ফলে পরস্পর বিবদমান ও পরস্পর কাফের আখ্যাদানকারী ফেরকাসমুগের সুড়ঙ্গের মধ্য হতে অনেক বারুদ বের হয়ে যায় এবং মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গীতে ব্যাপকতা সৃষ্টি হয়।
তিনি দ্বীনের জ্ঞানকে সঞ্জীবিত ও সতেজ করেন। চেতনাবিহীন ধার্মিকতাকে অর্থহীন গণ্য করেন। অন্ধ অণুসৃতির কঠোর বিরোধাতা করেন। জনগণকে পুনর্বার খোদার কিতান ও রসূলের সুন্নতের উৎস ধারার দিকে আকৃষ্ট করেন। ইজতিহাদের প্রাণশক্তিকে সঞ্জীবিত করার চেষ্টা করেন। এবং নিজের যুগের প্রায় প্রত্যেকটি দলের ভ্রান্তি ও দূর্বলতার সমালোচনা করে তাদেরকে ব্যাপকভাবে সংশোধনের আহবান জানান।
তিনি পুরাতন জরাজীর্ন শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করেন এবং একটি নয়া শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকল্পনা পেশ করেন। সে সময় পর্যন্ত মুসলমানদের মধ্যে যে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন ছিল, তার মধ্যে দুই ধরনের ত্রুটি পরিলক্ষিত হচ্ছিল। প্রথমটি হলো এই যে, দ্বীন ও দুনিয়ার শিক্ষাব্যস্থা পৃথক ছিল। এর ফলস্বরূপ দ্বীন ও দুনিয়ার মধ্যে পৃথকীকরণ দেখা দেয়। ইসলাম এটিকে মূলতঃভ্রান্ত মনে করে।দ্বিতীয়টি এই যে, শরিয়তের জ্ঞান হিসাবে এমন অনেক বিষয় পাঠ্য তালিকাভুক্ত ছিল, যা শরিয়তের দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। এর ফলে দ্বীন সম্পর্কে জনগনের ধারণা ভ্রান্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় এবং কতিপয় অপ্রয়োজনীয় বিষয় গুরুত্ব অর্জন করার কারণে ফিরকাগত বিরোধ শুরু হয়। ইমাম গাজ্জালী (র) এই গলদগুলো দূর করে একটি সুসামঞ্জস্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেন। তার সমকালীন লোকেরা তার এই মহান কর্মকাণ্ডের ঘোর বিরোধিতা করে। কিন্তু অবশেষে সকল মুসলিম দেশে এ নীতি স্বীকৃতি লাভ করে এবংপরবর্তীকালে যতগুলো শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় তার সবগুলোই ইমাম নির্ধারিত পথেই প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানকাল পর্যন্ত আরবি মাদ্রাসাসমুহের কারীকুলামে যে সমস্ত ব্ই শামিল আছে, তার প্রাথমিক নকসা ইমাম গজ্জালী (র) তৈরি করেন।
তিনি জনসাধারণের নৈতিক চরিত্র পূর্ণরূপে পর্যালোচনা করেন। উলামা,মাশায়েখ,আমির-ওমরাহ,বাদশাহ ও জনসাধাণের প্রত্যেকের জীবন প্রণালী অধ্যয়নের সুযোগ তিনি পান। নিজে পরিভ্রমণ করে প্রাচ্য জগতের একটি অংশের অবস্থা প্রত্যক্ষ করেন। তার এহইয়া -উল-উলুম কিতাবটিএই অধ্যায়নের ফল। এ কিতাবে তিনি মুসলমানদের প্রত্যেকটি শ্রেণীর নৈতিক অবস্থার সমালোচনা করেন, প্রত্যেকটি দোষ্কৃতির মূল এবং তার মনস্তাত্ত্বিক ও তমুদ্দুনিক কারণসমুহ অনুসন্ধান করেন এবং ইসলামের নির্ভুল ও সত্যিকার নৈতিক মানদণ্ড পেশ করার চেষ্টা করেন।
তিনি সমকালীন রাষ্ট্রব্যবস্থারও অবাধ সমালোচনা করেন্ সমকালীন শাসক গোষ্ঠীকেও সরাসরি সংশোধনের দিকে আকৃষ্ট করতে থাকেন এবং এই সংগে জনগণের মধ্যেও জূলুম-নির্যাতনের সম্মুখে স্বেচ্ছায় নত না হয়ে অবাধ সমালোচনা করার প্রেরণা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চালাতে থাকেন।এহইয়া-উল-উলুম এর একস্থানে লেখেনঃআমাদের জামানার সুলতানদের সমস্ত বা অধিকাংশ ধন-সম্পদ হারাম। আর একস্থানে লেখেন এই সুলতানদের নিজেদের চেহারা অন্যকে না দেখানো উচিত এবং অন্যদের চেহারা না দেখা উচিত।এদের জুলুমকে ঘৃণা করা এদের অস্তিত্বকে পছন্দ না করা, এদের সংগে কোন প্রকার সম্পর্ক না রাখা এবং এদের সংগে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের থেকেও দূরে অবন্থান করা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্যে অপরিহার্য। অপর একস্থানে দরবারে প্রচলিত আদব -কায়দা ও বাদশাহ পূজার সমালোচনা করেন বাদশাহ ও আমির -ওমরাহর অণুসৃত সামাজিক রীতিনীতির নিন্দা করেন, এমনকি তাদের দালান কোঠা পোশাক-পরিচ্ছদ গৃহের সাজ সরঞ্জাম সব কিছুকেই নাপাক গণ্য করেন। শুধু এখানেই ক্ষান্ত হননি বরং তিনি নিজের যুগের বাদশাহদের নিকট একটি বিস্তারিত পত্র লেখেন। পত্রের মাধ্যমে তাকে ইসলাম প্রবর্তিত রাষ্ট্র পদ্ধতির দিকে আহবান জানান, শাসকের দায়িত্ব বুঝান এবং তাকে জানান যে, তার দেশে যে জুলুম হচ্ছে তা তিনি নিজেই করেন বা তার অধীন কর্মচারীরা করেন,সবকিছুর জন্যে তিনিই দায়ী। একবার বাধ্য হয়ে রাজ দরবারে যেতে হয় তখন আলোচনা প্রসঙ্গে বাদশাহর মুখের ওপর বলেনঃ “স্বর্ণ অলংকারের ভারে তোমার ঘোড়ার পিঠ ভাঙেনি তো কি হয়েছে, অনাহারে -অর্ধহারে মুসলমানদের পিঠতো ভেঙে গিয়েছে”। তার শেষ যুগে যে সকল উজির নিযুক্ত হন তাদের প্রায় সবার নিকট তিনি পত্র লেখেন এবং জনগনের দুরবস্থার প্রতি তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জনৈক উজিরকে লেখেনঃ “জুলুম সীমা অতিক্রম করেছে। যেহেতু আমাকে স্বচক্ষে এসব দর্শন করতে হতো তাই নির্লজ্জ ও নির্দয় জালেমদের কীর্তিকলাপ প্রত্যক্ষ না করার জন্যে প্রায় এক বছর থেকে আমি তুসের আবাস উঠিয়ে নিয়েছি”। ইবনে খালদুনের বর্ণনা মতে এতদূর জানা যায় যে, তিনি পৃথিবীর যে কোনো এলাকাতেই হোক না কেন নির্ভেজাল ইসলামী নীতি ও আদর্র্শের ভিত্তিতে একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করতেন। কাজেই তার ইঙ্গিতেই দুর প্রতীচ্যে (আফ্রিকায়)তার জনৈক ছাত্র, মুওয়াহিদ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু ইমাম গাজ্জালীর কর্মকাণ্ডে এই রাজনৈতিক রূপ ও রং নেহাতই গৌণ ছিল। রাজনৈতিক বিপ্লব সাধনের জন্যে তিনি কোনো নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালাননি এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থার ওপর সামান্যতম প্রভাব ও বিস্তার করতে সক্ষম হননি। তার পরবর্তীকালে জাহেলীয়াতের কর্তৃত্বাধীনে মুসলিম জাতিসমূহের অবস্থা উত্তরোত্তর অবনতির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এমনকি এক শতাব্দির পর তাতারীরা তুফানের ন্যায় মুসলিম দেশসমুহের ওপর দিয়ে ছুটে চলে এবং তাদের সমগ্র তমুদ্দুনকে বিধ্স্ত করে দেয়।[৩৯] সাফল্য: ইমাম গাজ্জালীর সাফল্য ও শ্রেষ্ঠত্বের পেছনে দুটি কারণ রয়েছে, যথা-
- গ্রিক দর্শনের সঙ্গে ইসলামের ঘোর মোকাবেলার দিনে তিনিই ছিলেন মুসলমানদের কর্ণধার। আর এ সংগ্রামে ইসলামী ধর্মশাস্ত্র বিজয়ী হয়ে ছিল।
- শরিয়ত ও মারেফাতকে পরস্পরের সান্নিধ্যে এনেছিলেন। তিনি সুফিবাদের পরিপূর্ণতা দান করেন। তার গ্রন্থের অসংখ্য বাণী আমাদের মনকে নাড়া দেয়। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখ করা হল। যথা-
- ক. তিনটি বস্তু মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। ‘লোভ, হিংসা ও অহংকার।’
- খ. তিনটি অভ্যাস মানুষের জন্য সর্বমুখী কল্যাণ ডেকে আনে। আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি সন্তুষ্ট থাকা, বিপদের সময় দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া এবং যে কোন সংকটে ধৈর্য ধারণ করা।
- গ. মানবজীবনের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হচ্ছে তার ‘মন এবং জবানকে’ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সমর্থ হওয়া।
- ঘ. দুই ধরনের লোক কখনও তৃপ্ত হতে পারে না- জ্ঞানের অম্বেষী এবং সম্পদের লোভী।
- ঙ. আয়নায় নিজের চেহারা দেখ, যদি সুদর্শন হও তবে পাপের কালিমা লেপন করে ওকে কুৎসিত করো না! আর যদি কালো-কুশ্রী হয়ে থাক, তবে ওকে পাপ-পঙ্কিলতা মেখে আরও বীভৎস করে তুলো না।
- চ. আল্লাহর প্রত্যেকটি ফয়সালাই ন্যায়বিচারের ওপর ভিত্তিশীল। সুতরাং কোন অবস্থাতেই অভিযোগের ভাষা যেন তোমার মুখে উচ্চারিত না হয়।
- ছ. ক্রোধ মনুষ্যত্বের আলোকশিখা নির্বাপিত করে দেয়।
- জ. শক্ত কথায় রেশমের মতো নরম অন্তরও পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়।
- ঝ. সাফল্যের অপর নামই অধ্যবসায়।
ইমাম গাজ্জালি (রহ•) ইসলামকে মধ্যযুগীয় অনৈসলামিক দার্শনিক চিন্তাধারার পঙ্গুকারী প্রভাব থেকে মুক্ত করে পবিত্র কোরআন-হাদিসের শিক্ষায় মুসলমানদের ফিরিয়ে আনেন। তাই তার এই অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য তাকে ‘হুজ্জাতুল ইসলাম’ বা ‘ইসলামের রক্ষক’ বলা হয়ে থাকে।
লেখনী ও বই
[সম্পাদনা]ইমাম গাজ্জালি (রহ•) চারশ’র ও অধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তার অধিকাংশ বইগুলোতে ধর্মতত্ব, দর্শন ও সুফিবাদ আলোচনা করেছেন। তার কয়েকটি প্রসিদ্ধ গ্রন্থের নাম উল্লেখ করা হলঃ
০১. এহইয়া উলুমুদ্দীন[৪০],
০২. তাহাফাতুল ফালাসিফা,
০৩. কিমিয়ায়ে সা’আদাত,
০৪. হাকিকাতুর রুহু,
০৫. দাকায়েকুল আখবার,
০৬. আসমাউল হুসনা,
০৭. ফাতাওয়া,
০৮. মিশকাতুল আনোয়ার,
০৯. আসরার আল মোয়ামেলাতুদ্দিন,
১০. মিআর আল ইলম,
১১. মুনক্বীয,
১২. মুকাশাফা'তুল কুলুব
১৩. আল ইক্বতিসাদ ফিল ই'তিক্বাদ ইত্যাদি।
১৪. মিনহাজুল আবেদীন।
১৫. বিদায়াতুল হেদায়াহ।
(ইবনে কাসির রহ: এর বিদায়া ওয়ান নেহায়া আলাদা বই)
জীবন দর্শন
[সম্পাদনা]ইমাম আল গাজ্জালি ছিলেন মুসলিম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক। তার চিন্তাধারাকে মুসলিম ধর্মতত্ত্বের বিবর্তন বলে ধরা হয়। ফালাসিফা বা দার্শনিকদের বিরুদ্ধে তিনি বলেন- দার্শনিক মতবাদ কখনও ধর্মীয় চিন্তার ভিত্তি হতে পারে না। প্রয়োজনীয় সত্য সম্পর্কে শুধু ওহির জ্ঞান পাওয়া সম্ভব। তিনি সমকালীন দার্শনিকদের দর্শন-চিন্তার অপূর্ণতা দেখতে পান এবং তাদের সমালোচনা করেন। তাহাফাতুল ফালাসিফা গ্রন্থে তিনি দার্শনিকদের চিন্তার শূন্যতা প্রমাণ করেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]উদ্ধৃতি
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Hunt Janin, The Pursuit of Learning in the Islamic World, p. 83. আইএসবিএন ০৭৮৬৪১৯৫৪৭
- ↑ ক খ Griffel, Frank (২০০৬)। Meri, Josef W., সম্পাদক। Medieval Islamic civilization : an encyclopedia। New York: Routledge। আইএসবিএন 978-0415966900।
- ↑ Meri, Josef W.; Bacharach, Jere L. (২০০৬)। Medieval Islamic Civilization: A-K। Taylor and Francis। পৃষ্ঠা 293। আইএসবিএন 978-0415966917।
- ↑ Böwering, Gerhard; Crone, Patricia (২০১৩)। The Princeton Encyclopedia of Islamic Political Thought। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 191। আইএসবিএন 978-0691134840।
Ghazali (ca. 1058–1111) Abu Hamid Muhammad b. Muhammad al-Ghazali al-Tusi (the “Proof of Islam”) is the most renowned Sunni theologian of the Seljuq period (1038–1194).
- ↑ A.C. Brown, Jonathan (২০০৯)। Hadith: Muhammad's Legacy in the Medieval and Modern World (Foundations of Islam)। Oneworld Publications। পৃষ্ঠা 179। আইএসবিএন 978-1851686636।
- ↑ Leaman, Oliver (২০০৬)। The Qur'an: An Encyclopedia। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 84। আইএসবিএন 978-0415326391।
- ↑ Smith, Margaret (১৯৩৬)। "The Forerunner of Al-Ghazali"। The Journal of the Royal Asiatic Society of Great Britain and Ireland। 68 (1): 65–78। এসটুসিআইডি 163151146। জেস্টোর 25182038। ডিওআই:10.1017/S0035869X00076358।
- ↑ "Al-Ghazali was a direct student of Al-Juwayni"।
- ↑ Frank Griffel, Al-Ghazali's Philosophical Theology, p 62.
- ↑ Frank Griffel, Al-Ghazali's Philosophical Theology, p 81.
- ↑ Frank Griffel, Al-Ghazali's Philosophical Theology, p 76. আইএসবিএন ০১৯৯৭২৪৭২৫
- ↑ Frank Griffel, Al-Ghazali's Philosophical Theology, p. 77. আইএসবিএন ০১৯৯৭২৪৭২৫
- ↑ Marenbon, John (২০০৭)। Medieval Philosophy: an historical and philosophical introduction। Routledge। পৃষ্ঠা 174। আইএসবিএন 978-0-415-28113-3।
- ↑ Frank Griffel, Al-Ghazali's Philosophical Theology, p 75. আইএসবিএন ০১৯৯৭২৪৭২৫
- ↑ Andrew Rippin, The Blackwell Companion to the Qur'an, p 410. আইএসবিএন ১৪০৫১৭৮৪৪২
- ↑ The Influence of Islamic Thought on Maimonides Stanford Encyclopedia of Philosophy, June 30, 2005
- ↑ Karin Heinrichs, Fritz Oser, Terence Lovat, Handbook of Moral Motivation: Theories, Models, Applications, p 257. আইএসবিএন ৯৪৬২০৯২৭৫৩
- ↑ Muslim Philosophy ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৩-১০-২৯ তারিখে, Islamic Contributions to Science & Math, netmuslims.com
- ↑ James Robert Brown, Philosophy of Science: The Key Thinkers, p. 159. আইএসবিএন ১৪৪১১৪২০০২
- ↑ Sayf Din al-Amidi Stanford Encyclopedia of Philosophy, September 18, 2019
- ↑ Frank Griffel, Al-Ghazali's Philosophical Theology, p 71.
- ↑ Ayn al-`Ilm wa Zayn al-Hilm, Muqadimmah, Page 1
- ↑ Frank Griffel, Al-Ghazali's Philosophical Theology, p 74.
- ↑ "Ghazali"। Collins English Dictionary। HarperCollins। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৯।
- ↑ টেমপ্লেট:Cite American Heritage Dictionary
- ↑ "Ghazālī, al-"। মেরিয়াম-ওয়েবস্টার ডিকশনারি (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৯।
- ↑ Guntern, Gottlieb (২০১০)। The Spirit of Creativity: Basic Mechanisms of Creative Achievements (ইংরেজি ভাষায়)। University Press of America। পৃষ্ঠা ৩৭। আইএসবিএন 978-0-7618-5051-9।
- ↑ http://www.ibe.unesco.org/sites/default/files/ghazalie.pdf ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩১ মে ২০২২ তারিখে « Al-Ghazali was born in A.D. 1058 (A.H. 450) in or near the city of Tus in Khurasan to a Persian family of modest means... »
- ↑ Battin, Margaret Pabst (২০১৫-০৯-১১)। The Ethics of Suicide: Historical Sources (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-938581-2।
A native of Khorassan, of Persian origin, the Muslim theologian, sufi mystic, and philosopher Abu Hamid Muhammad al-Ghazali is one of the great figures of Islamic religious thought....
- ↑ Bloch, Ernst (২০১৯)। Avicenna and the Aristotelian Left। New York: Columbia University Press। পৃষ্ঠা 77। আইএসবিএন 9780231175357।
Abu Hamid Muhammad ibn Muhammad al-Ghazali (ca.1058-1111) was a Persian antirationalist philosopher and theologian.
- ↑ "Ghazali, al-"। The Columbia Encyclopedia। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১২।
- ↑ Ludwig W. Adamec (2009), Historical Dictionary of Islam, p.109. Scarecrow Press. আইএসবিএন ০৮১০৮৬১৬১৫.
- ↑ William Montgomery Watt, Al-Ghazali: The Muslim Intellectual, p. 180. Edinburgh: Edinburgh University Press, 1963.
- ↑ Rosmizi, Mohd; Yucel, Salih (২০১৬)। "The Mujaddid of his age: Al-Ghazali and his inner spiritual journey"। UMRAN - International Journal of Islamic and Civilizational Studies (English ভাষায়)। 3 (2): 1–12। আইএসএসএন 2289-8204। ডিওআই:10.11113/umran2016.3n2.56।
- ↑ Smith, Jane I. (১৯৯৯)। Islam in America। New York: Columbia University Press। পৃষ্ঠা ৩৬। আইএসবিএন 0-231-50039-4। ওসিএলসি 51444071।
- ↑ Willard Gurdon Oxtoby, Oxford University Press, 1996, p 421
- ↑ Dhahabī, Muḥammad ibn Aḥmad (১৯৮৪)। Sīr al-a'lām al-nublā' (আরবি ভাষায়)। 25। Beirut।
- ↑ Böwering, Gerhard; Crone, Patricia; Mirza, Mahan; Kadi, Wadad; Zaman, Muhammad Qasim; Stewart, Devin J. (২০১৩)। The Princeton Encyclopedia of Islamic Political Thought (ইংরেজি ভাষায়)। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 191। আইএসবিএন 978-0691134840।
- ↑ [১] ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন,সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী
- ↑ [২][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] মাওলানা মুহিউদ্দীন খান অনুবাদকৃত
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- হক, মনযূরুল (৭ জুন ২০২১)। "ইমাম গাজালি ও তাঁর শিক্ষাদর্শন"। দৈনিক প্রথম আলো।
মন্তব্য
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Al-Ghazali website
- Ghazali Series page at the Islamic Texts Society
- Ghazali and Islamic reform
- Ghazali and the Revival of Islamic Scholarship
- Full text of Incoherence of the Philosophers, from Al-Ghazali website
- Al-Ghazali স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি-র ভুক্তি, লিখেছেন Frank Griffel
- Short commentary on The Alchemy of Happiness
- The Alchemy of Happiness, by Mohammed Al-Ghazzali, the Mohammedan Philosopher, trans. Henry A. Homes (Albany, N.Y.: Munsell, 1873). See original text in The Online Library of Liberty ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ মে ২০১৩ তারিখে.
- "Al-Ghazali Contra Aristotle: An Unforeseen Overture to Science In Eleventh-Century Baghdad". Richard P. Aulie. PSCF 45. March 1994. pp. 26–46.
- Abu Hamid Al-Ghazali, in https://web.archive.org/web/20120415041817/http://www.intellectualencounters.org/
- (ফরাসি) Profession de Foi de l'Imam Al Ghazali