বিষয়বস্তুতে চলুন

অস্টিন ম্যাথুজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অস্টিন ম্যাথুজ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
অস্টিন ডেভিড জর্জ ম্যাথুজ
জন্ম৩ মে, ১৯০৪
পেনার্থ, গ্ল্যামারগন, ওয়েলস
মৃত্যু২৯ জুলাই, ১৯৭৭
পেনরিন বে, ল্যানডাডনো, কাইরনারভনশায়ার, ওয়েলস
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ২৯৮)
১৪ আগস্ট ১৯৩৭ বনাম নিউজিল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৮১
রানের সংখ্যা ৫৯১৯
ব্যাটিং গড় ১৫.৭০
১০০/৫০ -/- ২/১৪
সর্বোচ্চ রান ২* ১১৬
বল করেছে ১৮০ ৪৭৯৮৩
উইকেট ৮১৬
বোলিং গড় ৩২.৫০ ২৩.৪০
ইনিংসে ৫ উইকেট ৪৫
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/১৩ ৭/১২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ১২৪/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

অস্টিন ডেভিড জর্জ ম্যাথুজ (ইংরেজি: Austin Matthews; জন্ম: ৩ মে, ১৯০৪ - মৃত্যু: ২৯ জুলাই, ১৯৭৭) গ্ল্যামারগনের পেনার্থ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩০-এর দশকের শেষদিকে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন ও নর্দাম্পটনশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন অস্টিন ম্যাথুজ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯২৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত অস্টিন ম্যাথুজের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী অস্টিন ম্যাথুজ উচ্চমানের বোলিং ভঙ্গীমা সহকারে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। নিখুঁত ধাঁচের বোলিংয়ের ফলে বলকে উইকেটেই রাখতে সমর্থ হতেন। নিচেরসারির কার্যকরী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। দুইটি প্রথম-শ্রেণীর শতরানের উভয়টিই ১৯২৯ ও ১৯৩৪ সালে নর্দাম্পটনশায়ারে থাকাকালীন করেছিলেন।

প্রায় একক ও অনবদ্য খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন তিনি। পেনার্থে জন্মগ্রহণ করেন ও ল্যামপিটারে সেন্ট ডেভিডসে অধ্যয়ন করেছিলেন তিনি। ১৯২৭ থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। ঐ পর্যায়ে দূর্বলতর কাউন্টি দলটির কার্যকরী সদস্যের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপন করে কাউন্টি দলের নিয়মিত সদস্য হিসেবে দলকে পরিচালনা করতেন। ৫৬৭টি উইকেট লাভের জন্যে তাকে ২৬.৪৫ গড়ে রান খরচ করতে হয়। এছাড়াও, দুইটি শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

নর্দাম্পটনশায়ারে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

গ্ল্যামারগনের পেনার্থে জন্মগ্রহণকারী অস্টিন ম্যাথুজ কিশোর অবস্থাতেই কার্ডিফ ক্লাবের পক্ষে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন।[] সহজাত উচ্চতার সুবিধে নিয়ে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার ও মারকুটে ব্যাটসম্যানের দ্বৈত ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার ন্যায় প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখতে শুরু করেন। তবে, ১৯২৬ সালে নর্দাম্পটনে চলে যান ও আবাসকালীন শর্ত পূরণপূর্বক নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলার উপযুক্ত হন। তাকে নবি ক্লার্ক ও মিডিয়াম পেসার আলবার্ট থমাসের সাথে দলে অংশগ্রহণের প্রশ্নে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হয়। ১৯২৮ সাল থেকে স্বাভাবিকভাবে ও ১৯২৯ সাল থেকে নিয়মিতভাবে খেলতে শুরু করেন। কিন্তু, শুরুরদিকের বছরগুলোয় বোলারের তুলনায় ব্যাটসম্যান হিসেবেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। এজবাস্টনে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ১১৬ রানের ইনিংস খেলেন।[] মাত্র ৪৫ রানের ঘাটতি থাকায় চার অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি তিনি। তবে, কাউন্টি দলটির পক্ষে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করেন।[] কিন্তু, ১৯৩০ সালে তিনি কোন অর্ধ-শতরানের ইনিংসই খেলতে পারেননি।[] তার ব্যাটিংয়ের মান দূর্বলতর হতে থাকে। ১৯৩৫ সালের পর আর কোন অর্ধ-শতরান করতে পারেননি তিনি।[] এরপর থেকে তাকে কেবলই বোলার হিসেবে খেলানো হয়।

১৯৩৩ সালের গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে ৯৩ উইকেট পান। নবি ক্লার্কের সাথে নতুন বলে বোলিং জুটি গড়েন। ১৯৩৫ সালে অত্যন্ত দূর্বলমানের খেলা প্রদর্শন করেন। কিন্তু, ১৯৩৬ সালে নর্দাম্পটনশায়ার ঘুরে দাঁড়ায় ও যে-কোন কাউন্টি দলের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান। উইজডেনের ভাষায়, তিনি একাকী দলের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন ও অন্যতম সেরা মৌসুমগুলো এ কাউন্টির পক্ষে খেলেছিলেন।[]

গ্ল্যামারগনে স্থানান্তর

[সম্পাদনা]

এরপর, ১৯৩৭ সালে স্টো স্কুলে কোচের দায়িত্ব পালন করেন। কোন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেয়ার ইচ্ছে তার ছিল না। তবে, জ্যাক মার্সার আঘাতপ্রাপ্ত হলে মরিস টার্নবুলের অনুরোধক্রমে গ্ল্যামারগন দলকে সহায়তাকল্পে এগিয়ে আসেন।

কাউন্টি দলের পক্ষে নিজস্ব তৃতীয় খেলায় সাসেক্সের বিপক্ষে ১৩২ রান খরচায় চৌদ্দ উইকেট লাভ করেন। হ্যাস্টিংসের ঐ পিচটি ব্যাটসম্যানদের উপযোগী ছিল। এর দুই সপ্তাহ পরই বিতর্কিতভাবে তাকে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে দশ মৌসুমে ২৬.৫৩ গড়ে উইকেট পান। ১৯৩৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর বোলিং গড়ে শীর্ষে ছিলেন। এছাড়াও, ১৯৩৮ ও ১৯৪৬ সালে এ সাফল্যের পুণরাবৃত্তি ঘটান। এ পর্যায়ে ১৯৩৩ সালের সংগৃহীত ৯৩ উইকেট লাভের সমকক্ষ হন ও সমারসেটের বিপক্ষে অনুপযোগী পিচে ৭/১২ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান।[]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন অস্টিন ম্যাথুজ। ১৪ আগস্ট, ১৯৩৭ তারিখে ওভালে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

এক পক্ষকাল পূর্বে হ্যাস্টিংসে ১৩২ রান খরচায় চৌদ্দ উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শনের পর ওভালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে তাকে ইংল্যান্ড দলে রাখা হয়। বোলিং অনুপযোগী পিচে তিনি বেশ ভালোমানের সমীহযোগ্য বোলিং করেন। তবে, খুব কমই সফল হন।

১৯৩৭ সালে নিউজিল্যান্ড দল ইংল্যান্ড সফরে আসে। ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ডেনিস কম্পটনের সাথে তার একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। উভয় ইনিংসেই ওয়াল্টার হ্যাডলিকে আউট করে দুই উইকেট পান তিনি। এছাড়াও, খেলায় তিনি সর্বমোট দুই রান ও একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। এরপর, আর তাকে ইংল্যান্ড দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় দলকে প্রশিক্ষণ দেন। জীবনের শেষ দিনগুলোয় মাঝে-মধ্যে ক্রিকেট বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করতেন ও যুদ্ধ পরবর্তী সময়কালে কোচিংয়ের ধরনের তুখোড় সমালোচকের ভূমিকায় আবির্ভূত হন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হবার পর ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত গ্ল্যামারগনের পক্ষে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। মাত্র ১৫.৮৮ গড়ে ২২৫ উইকেট লাভ করেন। এ বোলিং পরিসংখ্যান নর্দাম্পটনশায়ারে অবস্থানের বৈপরীত্য বহন করে। ১৯৪৬ সালে ১৪.২৯ গড়ে ৯৩ উইকেট পান। যুদ্ধের অল্প কিছুকাল পর কাউন্টি দলটির সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। ১৯৩৪ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোচের দায়িত্বে ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি রাগবি খেলায়ও দক্ষ ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর রাগবি খেলায় ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলতেন। নর্দাম্পটন আরএফইউ ক্লাবের অধিনায়কত্ব করেন। এছাড়াও, ইস্ট মিডল্যান্ড ও পেনার্থেও খেলেছেন তিনি। ফাইনাল ওয়েলস ট্রায়াল ক্যাপের অধিকারী হন। ১৯২৯ সালে পেনার্থে থাকাকালীন ওয়েলস রাগবি ট্রায়ালিস্ট ছিলেন ও তার ক্যাপ পেনার্থ ক্লাবে সংরক্ষিত আছে। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৭ সাল পযন্ত নর্দাম্পটন আরএফসির অধিনায়কত্ব করেন। স্বীয় পিতা ফ্রেডরিকের সাথে তার ক্যাপও পেনার্থ আরএফসিতে একত্রে রাখা আছে। এছাড়াও, অস্টিন ম্যাথুজ টেবিল টেনিস খেলতেন।

১৯৪৮ সালে প্রথমবারের মতো সম্মিলিত অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ আর.ইউ. দলকে নিয়ে আর্জেন্টিনায় যান ও রেফারির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি কোচিংয়ের বিষয়ে প্রগাঢ় জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন ও ১৯৬৬ সালের উইজডেন সংস্করণে মন্তব্য করেন যে, ‘ক্রিকেট একটি খেলা - বিষয় নয়’।

২৯ জুলাই, ১৯৭৭ তারিখে ৭৩ বছর বয়সে কাইরনারভনশায়ার পেনরিন বে এলাকায় অস্টিন ম্যাথুজের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Brief profile of Austin Matthews
  2. Warwickshire v Northamptonshire in 1929
  3. Batting for Northamptonshire in County Championship 1929
  4. Batting for Northamptonshire in County Championship 1930
  5. First Class Batting in Each Season
  6. Brookes, Wilfred H. (editor); John Wisden's Cricketer's Almanack; Seventy-Fourth Edition (1937), Part II, p. 427.
  7. Preston, Hubert (editor); Wisden Cricketers' Almanack, Eighty-Fourth Edition (1947), p. 262.

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]