বৌদ্ধধর্ম
বৌদ্ধধর্ম (সংস্কৃত: बौद्धधर्मः, পালি: বৌদ্ধধম্ম) একটি ভারতীয় ধর্ম বা দার্শনিক ঐতিহ্য।[১] এটি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ধর্ম[২][৩] যার অনুসারী সংখ্যা ৫২০ মিলিয়নেরও বেশি বা বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৭ শতাংশের অধিক এবং তারা বৌদ্ধ হিসেবে পরিচিত।[৪][৫] বৌদ্ধধর্ম বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্য, বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিক চর্চাকে ধারণ করে যেগুলো মূলত সিদ্ধার্থ গৌতমের মৌলিক শিক্ষা ও এর ব্যাখ্যাকৃত দর্শনের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ ও ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে প্রাচীন ভারতে একটি শ্রমণ ঐতিহ্য হিসেবে উৎপত্তিলাভ করে এবং এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। বৌদ্ধধর্মের তিনটি প্রধান বিদ্যমান শাখা সাধারণত পণ্ডিতদের দ্বারা স্বীকৃত: থেরবাদ, মহাযান ও বজ্রযান।
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
৫২ কোটি | |
প্রতিষ্ঠাতা | |
সিদ্ধার্থ গৌতম | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া, মধ্য এশিয়া | |
ধর্ম | |
থেরবাদ, মহাযান, বজ্রযান | |
ধর্মগ্রন্থ | |
বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ, ত্রিপিটক, পালি ত্রিপিটক, মহাপ্রজ্ঞাপারমিতা সূত্র | |
ভাষা | |
পালি, সংস্কৃত, তিব্বতি, চীনা |
বুদ্ধের চার আর্যসত্য মোতাবেক বৌদ্ধধর্মের লক্ষ্য হল তৃষ্ণা বা আসক্তি ও অবিদ্যার ফলে উদ্ভূত দুঃখ নিরসন করা।[৬] অধিকাংশ বৌদ্ধ ঐতিহ্য নির্বাণলাভের মাধ্যমে অথবা বোধিসত্ত্বকে অনুসরণপূর্বক সংসার তথা মৃত্যু ও পুনর্জন্মচক্রের অবসান ঘটিয়ে স্বতন্ত্র সত্তাকে অতিক্রম করার ওপর জোর দিয়ে থাকে।[৭][৮][৯] বৌদ্ধ চিন্তাধারাগুলোতে তাদের মোক্ষলাভের উপায়ের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের আপেক্ষিক গুরুত্ব ও ধর্মসম্মতি এবং তাদের নির্দিষ্ট শিক্ষা ও অনুশীলনের ক্ষেত্রে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।[১০][১১] ব্যাপকভাবে উদ্যাপিত অনুশীলনগুলোর মধ্যে রয়েছে বুদ্ধ, ধর্ম ও সংঘের শরণ নেওয়া, নৈতিকতা, ভিক্ষুত্ব, ধ্যান এবং পারমিতার চর্চা।
থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে ব্যাপকভাবে অনুসৃত হয়। মহাযান বৌদ্ধধর্ম—পুণ্যভূমি, জেন, নিচিরেন, শিঙ্গোন ও তিয়ান্তাই ঐতিহ্য যার অন্তর্ভুক্ত—মূলত পূর্ব এশিয়া জুড়ে পাওয়া যায়। বজ্রযান বৌদ্ধধর্ম—যা ভারতীয় মহাসিদ্ধদের তন্ত্রসাধনা ও শিক্ষা দ্বারা উদ্ভূত—একটি পৃথক শাখা অথবা মহাযান বৌদ্ধধর্মের একটি ধারা হিসেবে বিবেচিত হয়।[১২] তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম—যা অষ্টম শতাব্দীর ভারতের বজ্রযান শিক্ষাবলিকে ধারণ করে—হিমালয় অঞ্চল, মঙ্গোলিয়া[১৩] ও কালমিকিয়াতে চর্চিত হয়।[১৪]
ব্যুৎপত্তি
আক্ষরিক অর্থে "বুদ্ধ" বলতে একজন জ্ঞানপ্রাপ্ত, উদ্বোধিত, জ্ঞানী, জাগরিত মানুষকে বোঝায়। উপাসনার মাধ্যমে উদ্ভাসিত আধ্যাত্মিক উপলব্ধি এবং পরম জ্ঞানকে বোধি বলা হয় (যে অশ্বত্থ গাছের নিচে তপস্যা করতে করতে বুদ্ধদেব বুদ্ধত্ব লাভ করেছিলেন তার নাম এখন বোধি বৃক্ষ)। সেই অর্থে যে কোনও মানুষই বোধিপ্রাপ্ত, উদ্বোধিত এবং জাগরিত হতে পারে। সিদ্ধার্থ গৌতম এইকালের এমনই একজন "বুদ্ধ"। বুদ্ধত্ব লাভের পূর্ববর্তী (জাতকে উল্লেখিত) জীবন সমূহকে বলা হয় বোধিসত্ত্ব। বোধিসত্ত্ব জন্মের সর্বশেষ জন্ম হল বুদ্ধত্ব লাভের জন্য জন্ম। ত্রিপিটকে, বোধিসত্ত্ব হিসেবে ৫৪৭ (মতান্তরে ৫৫০) বার বিভিন্ন কূলে (বংশে) জন্ম নেবার ইতিহাস উল্লেখ আছে যদিও সুমেধ তাপস হতে শুরু করে সিদ্ধার্থ পর্যন্ত অসংখ্যবার তিনি বোধিসত্ত্ব হিসেবে জন্ম নিয়েছেন ।[১৫] তিনি তার আগের জন্মগুলোতে প্রচুর পুণ্যের কাজ বা পারমী সঞ্চয় করেছিলেন বিধায় সর্বশেষ সিদ্ধার্থ জন্মে বুদ্ধ হবার জন্য জন্ম গ্রহণ করেন। বুদ্ধত্ব লাভের ফলে তিনি এই দুঃখময় সংসারে আর জন্ম নেবেন না, এটাই ছিলো তার শেষ জন্ম। পরবর্তী মৈত্রেয় বুদ্ধ জন্ম না নেওয়া পর্যন্ত পৃথিবীতে তার শাসন চলবে।
গৌতম বুদ্ধের জীবনী
উত্তর-পূর্ব ভারতের কপিলাবস্তু নগরীর ক্ষত্রিয় রাজা শুদ্ধোধন এর পুত্র ছিলেন সিদ্ধার্থ (গৌতম বুদ্ধ)। খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩ অব্দে এক শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে লুম্বিনি কাননে (বর্তমান নেপাল) জন্ম নেন সিদ্ধার্থ(গৌতম বুদ্ধ)। তার জন্মের ৭ দিন পর মহামায়া মারা যান। তার জন্মের অব্যাবহিতকাল পর অসিত নামক এক সন্ন্যাসী কপিলাবস্তু নগরীতে আসেন। তিনি সিদ্ধার্থকে দেখে ভবিষ্যৎবানী করেন যে, সিদ্ধার্থ ভবিষ্যতে হয় চারদিকজয়ী (চক্রবর্তী রাজা) রাজা হবেন, নয়ত একজন মহান মানব হবেন। মা মারা যাবার পর সৎ মা মহাপ্রজাপতি গৌতমী তাকে লালন পালন করেন, তাই তার অপর নাম গৌতম। ছোটোবেলা থেকেই সিদ্ধার্থ সব বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন। কিন্তু সিদ্ধার্থ সংসারের প্রতি উদাসীন ছিলেন বলে তাকে সংসারী করানোর লক্ষ্যে ১৬ বছর বয়সে রাজা শুদ্ধোধন যশোধরা (যিনি যশ ধারণ করেন) মতান্তরে যশোধা বা গোপা দেবী নামক এক সুন্দরী রাজকন্যার সাথে তার বিয়ে দেন। রাহুল নামে তাদের একটি ছেলে সন্তান হয়। ছেলের সুখের জন্য রাজা শুদ্ধোধন চার ঋতুর জন্য চারটি প্রাসাদ তৈরি করে দেন। কিন্তু উচুঁ দেয়ালের বাইরের জীবন কেমন তা জানতে তিনি খুবই ইচ্ছুক ছিলেন। একদিন রথে চড়ে নগরী ঘোরার অনুমতি দেন তার পিতা। নগরীর সকল অংশে আনন্দ করার নির্দেশ দেন তিনি, কিন্তু সিদ্ধার্থের মন ভরল না। প্রথম দিন নগরী ঘুরতে গিয়ে একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি, দ্বিতীয় দিন একজন অসুস্থ মানুষ, তৃতীয় দিন একজন মৃত ব্যক্তি এবং চতুর্থ দিন একজন সন্ন্যাসী দেখে তিনি সারথি ছন্দককে প্রশ্ন করে জানতে পারেন জগৎ দুঃখময়। তিনি বুঝতে পারেন সংসারের মায়া, রাজ্য, ধন-সম্পদ কিছুই স্থায়ী নয়। তাই দুঃখের কারণ খুঁজতে গিয়ে ২৯ বছর বয়সে গৃহ্ত্যাগ করেন। দীর্ঘ ৬ বছর কঠোর সাধনার পর তিনি বুদ্ধগয়া নামক স্থানে একটি বোধিবৃক্ষের নিচে বোধিজ্ঞান লাভ করেন। সবার আগে বুদ্ধ তার ধর্ম প্রচার করেন পঞ্চ বর্গীয় শিষ্যের কাছে; তারা হলেন কৌন্ডিন্য, বপ্প, ভদ্দিয় (ভদ্রিয়), মহানাম এবং অশ্বজিত। এরপর দীর্ঘ ৪৫ বছর বুদ্ধ ভারতের বিভিন্ন স্থানে তার বৌদ্ধ ধর্মের বাণী প্রচার করেন। এবং তার প্রচারিত বাণী ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশেও দিকে-দিকে ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে খ্রিস্টপূর্ব ৪৮৩ অব্দে তিনি কুশীনগর নামক স্থানে ৮০ বছর বয়সে মৃত্যু বরন করেন। গৌতম বুদ্ধের প্রচারিত বাণীর মূল অর্থ হল অহিংসা।
বুদ্ধের দর্শন
বুদ্ধের দর্শনের প্রধান অংশ হচ্ছে দুঃখের কারণ ও তা নিরসনের উপায়। বাসনা হল সর্ব দুঃখের মূল। বৌদ্ধমতে সর্বপ্রকার বন্ধন থেকে মুক্তিই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য- এটাকে নির্বাণ বলা হয়। নির্বাণ শব্দের আক্ষরিক অর্থ নিভে যাওয়া (দীপনির্বাণ, নির্বাণোন্মুখ প্রদীপ), বিলুপ্তি, বিলয়, অবসান। কিন্তু বৌদ্ধ মতে নির্বাণ হল সকল প্রকার দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ। এই সম্বন্ধে বুদ্ধের চারটি উপদেশ যা চারি আর্য সত্য (পালিঃ চত্বারি আর্য্য সত্যানি) নামে পরিচিত। তিনি অষ্টাঙ্গিক মার্গ উপায়ের মাধ্যমে মধ্যপন্থা অবলম্বনের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন।
পরকাল
বুদ্ধ পরকাল সম্বন্ধে অনেক কিছুই বলে গেছেন, পরকাল নির্ভর করে মানুষের ইহ জন্মের কর্মের উপর। মৃত্যুর পর মানুষ ৩১ লোকভুমির যে কোনো একটিতে গমন করে। এই ৩১ লোকভুমি হছে ৪ প্রকার অপায় : তীর্যক (পশু-পাখি কুল), প্রেতলোক (প্রেত-পেত্নী), অসুর (অনাচারী দেবকুল), নরক (নিরয়)। ৭ প্রকার স্বর্গ : মনুষ্যলোক, চতুর্মহারাজিক স্বর্গ, তাবতিংশ স্বর্গ, যাম স্বর্গ, তুষিত স্বর্গ, নির্মানরতি স্বর্গ, পরনির্মিত বসবতি স্বর্গ। রুপব্রম্মভূমি (১৬ প্রকার) = ১৬ প্রকার রুপব্রম্মভূমি । অরুপব্রম্মভূমি ( ৪ প্রকার) = ৪ প্রকার অরুপব্রম্মভূমি । মোট ৩১ প্রকার । এই ৩১ প্রকার লোকভুমির উপরে সর্বশেষ স্তর হচ্ছে নির্বাণ ( পরম মুক্তি ) [১৬] যেমন : ইহজন্মে মানুষ যদি মাতৃহত্যা , পিতৃহত্যা , গুরুজনের রক্তপাত ঘটায় তাহলে মৃত্যুর পর সেই মানুষ চতুর অপায়ে (তীর্যক, প্রেতলোক, অসুর, নরক) জন্মগ্রহণ করে, আর ইহজন্মে মানুষ যদি ভালো কাজ করে তাহলে মৃত্যুর পর সেই মানুষ বাকি ২৭ লোকভূমিতে যেকোনো এক ভূমিতে জন্মগ্রহণ করতে হবে।
নির্বাণ
যদিও আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ পশ্চিমে সবচেয়ে বেশি পরিচিত, বিভিন্ন বৌদ্ধ ঐতিহ্যে বিভিন্ন ধরনের পথ এবং প্রগতির মডেল ব্যবহার করা হয়েছে এবং বর্ণনা করা হয়েছে। যাইহোক, তারা সাধারণত মৌলিক অনুশীলন যেমন শিলা (নীতিশাস্ত্র), সমাধি (ধ্যান, ধ্যান) এবং প্রজ্ঞা (জ্ঞান), যা তিনটি প্রশিক্ষণ হিসাবে পরিচিত। একটি গুরুত্বপূর্ণ অতিরিক্ত অনুশীলন হল প্রতিটি জীব এবং বিশ্বের প্রতি সদয় এবং সহানুভূতিশীল মনোভাব। কিছু বৌদ্ধ ঐতিহ্যেও গুরুত্বপূর্ণ, এবং তিব্বতি ঐতিহ্যে দেবতা ও মন্ডলগুলির দৃশ্যায়ন গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন বৌদ্ধ ঐতিহ্যে পাঠ্য অধ্যয়নের মূল্যকে ভিন্নভাবে বিবেচনা করা হয়। এটি থেরবাদের কেন্দ্রীয় এবং তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যখন জেন ঐতিহ্য একটি অস্পষ্ট অবস্থান নেয়। বৌদ্ধ চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা হল মধ্যপথ (মধ্যমপ্রতিপাদ)। এটি ছিল বুদ্ধের প্রথম ধর্মোপদেশের একটি অংশ, যেখানে তিনি আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ উপস্থাপন করেছিলেন যা ছিল তপস্বীবাদের চরমতা এবং হেডোনিস্টিক ইন্দ্রিয় আনন্দের মধ্যে একটি 'মধ্যম পথ'।[১৭][১৮] বৌদ্ধধর্মে, হার্ভে বলেছেন, পুনর্জন্ম ব্যাখ্যা করার জন্য "নির্ভরশীল উদ্ভূত" (শর্তযুক্ত উদ্ভূত, প্রতিত্যসমুত্পাদ) মতবাদটিকে 'মধ্যম উপায়' হিসাবে দেখা হয় ' এই মতবাদের মধ্যে যে একটি সত্তার একটি "স্থায়ী আত্মা" পুনর্জন্মের সাথে জড়িত (অনন্তবাদ) এবং "মৃত্যু চূড়ান্ত এবং পুনর্জন্ম নেই" (বিনাশবাদ)৷[১৯][২০]
প্রাথমিক গ্রন্থে মুক্তির পথ
মুক্তির পথের (মার্গ) একটি সাধারণ উপস্থাপনা শৈলী প্রাথমিক বৌদ্ধ পাঠ্য মতে "স্নাতক আলোচনা", যেখানে বুদ্ধ ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেন৷[২১] প্রারম্ভিক গ্রন্থে, ক্রমিক পথের অসংখ্য ভিন্ন ক্রম পাওয়া যায় .[২২] বিভিন্ন বৌদ্ধ বিদ্যালয়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুল ব্যবহৃত উপস্থাপনাগুলির মধ্যে একটি হল আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ, বা "সম্ভ্রান্তদের আটফোল্ড পথ" (Skt. 'āryāṣṭāṅgamārga')। এটি বিভিন্ন বক্তৃতায় পাওয়া যেতে পারে, সবচেয়ে বিখ্যাত ধম্মাচক্র প্রবর্তন সুত্ত (ধর্ম চাকা কে ঘুরিয়ে দেওয়ার দেশনা)।
বৌদ্ধধর্মের মূলনীতি
- দুঃখ
- দুঃখ সমুদয়: দুঃখের কারণ
- দুঃখ নিরোধ: দুঃখ নিরোধের সত্য
- দুঃখ নিরোধ মার্গ: দুঃখ নিরোধের পথ
- সম্যক দৃষ্টি, (সম্যক ধারণা বা চিন্তা) (Right View),
- সম্যক সংকল্প, (Right Resolve),
- সম্যক বাক্য, (Right Speech),
- সম্যক আচরণ, (Right Action),
- সম্যক জীবিকা (জীবনধারণ), (Right Livelihood),
- সম্যক প্রচেষ্টা, (Right Effort),
- সম্যক স্মৃতি (মনন), (Right Mindfulness),
- সম্যক সমাধি (একাগ্রতা) (Right Samadhi/Concentration)।
এই আটটি উপায়কে একত্রে বলা হয় আয্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ, যার দ্বারা জীবন থেকে দুঃখ দূর করা বা নির্বাণ প্রাপ্তি সম্ভব। এই আয্য অষ্টাঙ্গিক মার্গের উপর ভিত্তি করেই বৌদ্ধ ধর্মে দশ শীল, অষ্টশীল এবং পঞ্চশীলের উৎপত্তি। অষ্টাঙ্গিক মার্গকে বৌদ্ধ ধর্মের মূল ভিত্তি বলা যায়, যা মধ্যপথ নামে অধিক পরিচিত।
ত্রিশরণ মন্ত্র
আর্যসত্য এবং অষ্টবিধ উপায় অবলম্বনের পূর্বে ত্রিশরণ মন্ত্র গ্রহণ করতে হয়। এই মন্ত্রের তাৎপর্য:
- বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি - আমি বুদ্ধের শরণ নিলাম। বোধি লাভ জীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য। বুদ্ধত্ব মানে পূর্ণ সত্য, পবিত্রতা, চরম আধাত্মিক জ্ঞান।
- ধম্মং শরণং গচ্ছামি - আমি ধর্মের শরণ নিলাম। যে সাধনা অভ্যাস দ্বারা সত্য লাভ হয়, আধ্যাত্মিকতার পূর্ণ বিকাশ হয় তাই ধর্ম।
- সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি - আমি সঙ্ঘের শরণ নিলাম। যেখানে পূর্ণ জ্ঞান লাভের জন্য ধর্মের সাধনা সম্যক্ ভাবে করা যায় তাই সঙ্ঘ।
- আরও আছে বুদ্ধের ৯ গুণ,ধর্মের ৬ গুণ,সংঘের ৯ গুণ।
- বুদ্ধের ৯ গুণ
ইনি সেই ভগবান অর্হৎ সম্যক সম্বুদ্ধ
শীল
শীল অর্থ নিয়ম বা নীতি।বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে ভিক্ষু,শ্রমণ,গৃহী বা সাধারণ মানুষদের জন্য শীল রয়েছে।এই শীল পালন করা একান্ত নিজের উপর নির্ভরশীল।
পঞ্চশীল বা পাঁচ নীতি:
বুদ্ধ প্রবর্তিত গৃহী বা সাধারণ মানুষের জন্য।
- প্রাণী বা যাদের পাঁচ ইন্দ্রীয় আছে তাদের হত্যা না করা
- অদত্ত বস্তু বা পড়ে থাকা কোন বস্তু না নেয়া
- কামাচার বা অবৈধ্য সম্পর্ক না করা
- মিথ্যা কথা না বলা
- সুরা জাতীয় অর্থাৎ মদ,গাঁজা প্রভৃতি সেবন না করা বা না খাওয়া
দুঃখ
বুদ্ধ দুঃখ কি, দুঃখের কারণ, দুঃখ দূর করার উপায় সম্বন্ধে উপদেশ দিয়েছেন। তার মতে, জীবন দুঃখপূর্ণ। দুঃখের হাত থেকে কারও নিস্তার নেই। জন্ম, জরা, রোগ, মৃত্যু সবই দুঃখজনক। মানুষের কামনা-বাসনা সবই দুঃখের মূল। মাঝে মাঝে যে সুখ আসে তাও দুঃখ মিশ্রিত এবং অস্থায়ী। অবিমিশ্র সুখ বলে কিছু নেই। নিবার্ণ লাভে এই দুঃখের অবসান ঘটে। কামনা-বাসনার নিস্তারের মাঝে অজ্ঞানের অবসান ঘটে। এতেই পূর্ণ শান্তি অর্জিত হয়।[১৫]
ধর্মগ্রন্থ
"ত্রিপিটক" বৌদ্ধদের ধর্মীয় গ্রন্থের নাম যা পালি ভাষায় লিখিত। এটি মূলত বুদ্ধের দর্শন এবং উপদেশের সংকলন। পালি তি-পিটক হতে বাংলায় ত্রিপিটক শব্দের প্রচলন। তিন পিটকের সমন্বিত সমাহারকে ত্রিপিটক বোঝানো হয়েছে। এই তিনটি পিটক হলো বিনয় পিটক , সূত্র পিটক ও অভিধর্ম পিটক। পিটক শব্দটি পালি । এর অর্থ - ঝুড়ি, পাত্র , বক্স ইত্যাদি। অর্থাৎ যেখানে কোনো কিছু সংরক্ষণ করা হয়।[২৩] বৌদ্ধদের মূল ধর্মীয় গ্রন্থ । খ্রীষ্ট পূর্ব ৩য় শতকে সম্রাট অশোক এর রাজত্বকালে ত্রিপিটক পূর্ণ গ্রন্থ হিসাবে গৃহীত হয়। এই গ্রন্থের গ্রন্থনের কাজ শুরু হয়েছিল গৌতম বুদ্ধ এর মহাপরিনির্বানের তিন মাস পর অর্থাৎ খ্রীষ্ট পূর্ব ৫৪৩ অব্ধে এবং সমাপ্তি ঘটে খ্রীষ্ট পূর্ব প্রায় ২৩৬ অব্ধে । প্রায় তিনশ বছরে তিনটি সঙ্ঘায়নের মধ্যে এর গ্রন্থায়নের কাজ শেষ হয়। [২৪]
সাংস্কৃতিক প্রভাব
বৌদ্ধধর্ম বিভিন্ন সংস্কৃতির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে, বিশেষ করে এশিয়ায়। বৌদ্ধ দর্শন, বৌদ্ধ শিল্প, বৌদ্ধ স্থাপত্য, বৌদ্ধ রন্ধনশৈলী এবং বৌদ্ধ উত্সবগুলি এশিয়ার আধুনিক সংস্কৃতির প্রভাবশালী উপাদান, বিশেষ করে পূর্ব এশিয়া এবং সিনোস্ফিয়ারের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ইন্দোস্ফিয়ারে । লিটিয়ান ফাং এর মতে, বৌদ্ধধর্ম এই এশিয়ান অঞ্চলে "রাজনীতি, নীতিশাস্ত্র, দর্শন, সাহিত্য, শিল্প এবং রীতিনীতির মতো বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলিকে বিস্তৃত করেছে"।
বৌদ্ধ শিক্ষা আধুনিক হিন্দু ধর্মের পাশাপাশি অন্যান্য এশীয় ধর্ম যেমন তাওবাদ এবং কনফুসিয়ানিজমের বিকাশকে প্রভাবিত করেছে। উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন পণ্ডিতরা যুক্তি দিয়েছেন যে প্রধান হিন্দু চিন্তাবিদ যেমন আদি শঙ্কর এবং যোগ সূত্রের লেখক পতঞ্জলি, বৌদ্ধ ধারণা দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। একইভাবে, ভারতীয় যোগের প্রাথমিক বিকাশে বৌদ্ধ অনুশীলনগুলি প্রভাবশালী ছিল।
দিগনাগা এবং ধর্মকীর্তীর মত বৌদ্ধ দার্শনিকরা ভারতীয় যুক্তিবিদ্যা ও জ্ঞানতত্ত্বের বিকাশে অত্যন্ত প্রভাবশালী ছিলেন। নালন্দা এবং বিক্রমশীলার মতো বৌদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি ধ্রুপদী ভারতীয় জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা যেমন ব্যাকরণ, জ্যোতির্বিদ্যা / জ্যোতিষশাস্ত্র এবং চিকিৎসাবিদ্যা সংরক্ষণ করে এবং এশিয়া থেকে আসা বিদেশী ছাত্রদের শিক্ষা দিত। [২৫]
বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলি ছিল আয়ুর্বেদ, চীনা ওষুধ এবং তিব্বতীয় ওষুধ সহ ঐতিহ্যবাহী ওষুধের অধ্যয়ন ও অনুশীলনের প্রধান কেন্দ্র। পিয়ার্স সালগুয়েরোর মতে, বৌদ্ধ মঠগুলিতে "আমদানি করা এবং স্থানীয় থেরাপির সমন্বয়ের জন্য যথেষ্ট সুযোগ এবং প্রেরণা এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রেক্ষাপট ছিল যেখানে কার্যকরী কি ছিল তার মৌখিক এবং নির্বোধ জ্ঞান সঞ্চয় করা।" চিকিৎসা অনুশীলনের এই বৌদ্ধ কেন্দ্রগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ (যেমন নালন্দা ) চিকিৎসা পাঠ্য, মেটেরিয়া মেডিকা, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং প্রশিক্ষিত ডাক্তার তৈরি করেছিল যা বৌদ্ধ বিশ্বে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। [২৬] নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে অষ্টাঙ্গহণ্ডায়-সংহিতা রচনার স্থানও বলা হয়, যা চিকিত্সক বাগ্ভাতের একটি প্রভাবশালী চিকিৎসা কাজ। বৌদ্ধরা স্বাস্থ্যের জন্য এই ঐতিহ্যগত পদ্ধতিগুলি ছড়িয়ে দেয়, যাকে কখনও কখনও "বৌদ্ধ ঔষধ" বলা হয়, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে, যেখানে তারা আজ শ্রীলঙ্কা, বার্মা, তিব্বত এবং থাইল্যান্ডের মতো অঞ্চলে প্রভাবশালী রয়েছে।
তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ সংরক্ষণের প্রয়াসে, মন্দির এবং মঠের মতো বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানে স্কুল স্থাপন করা হয় যা জনগণকে শিক্ষিত করে এবং লেখালেখি ও সাক্ষরতার প্রচার করে। এটি বার্মার মতো কিছু ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ সমাজের মধ্যে সাক্ষরতার উচ্চ স্তরের দিকে পরিচালিত করে। ডেভিড স্টেইনবার্গের মতে, "প্রাথমিক ব্রিটিশ পর্যবেক্ষকরা দাবি করেছিলেন যে সুয়েজ এবং জাপানের মধ্যে বার্মা সবচেয়ে সাক্ষরিত রাজ্য ছিল এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে একজন ব্রিটিশ পর্যটক বিশ্বাস করেছিলেন যে ব্রিটিশ মহিলাদের তুলনায় বার্মিজ মহিলাদের সাক্ষরতার শতাংশ বেশি ছিল।"
বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলি পেপারমেকিং এবং ব্লক প্রিন্টিং সহ বই তৈরির সাথে সম্পর্কিত চীনা প্রযুক্তি গ্রহণের ক্ষেত্রেও অগ্রণী ছিল যা বৌদ্ধরা প্রায়শই বৃহৎ পরিসরে মোতায়েন করত। এই প্রযুক্তিগুলির প্রাথমিক বৌদ্ধ গ্রহণের উদাহরণ হল একটি বৌদ্ধ আকর্ষণ যা প্রথম টিকে থাকা মুদ্রিত পাঠ্য, চীনা ডায়মন্ড সূত্র (খ্রীস্টপূর্ব ৮৬৮) যা প্রথম পূর্ণ মুদ্রিত বই এবং প্রথম হাতে রঙিন মুদ্রণ, যা গুয়ানিনের একটি চিত্র সাল ৯৪৭.
আধুনিক প্রভাব
পশ্চিমা বিশ্বে, বৌদ্ধধর্ম আধুনিক নতুন যুগের আধ্যাত্মিকতা এবং অন্যান্য বিকল্প আধ্যাত্মিকতার উপর একটি শক্তিশালী প্রভাব ফেলেছে। এটি 20 শতকের থিওসফিস্ট যেমন হেলেনা ব্লাভাটস্কির উপর এর প্রভাবের সাথে শুরু হয়েছিল, যারা প্রথম পশ্চিমাদের মধ্যে যারা বৌদ্ধ ধর্মকে একটি আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য হিসাবে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছিলেন।
অতি সম্প্রতি, বৌদ্ধ ধ্যানের অনুশীলনগুলি আধুনিক মনোবিজ্ঞানের বিকাশকে প্রভাবিত করেছে, বিশেষ করে মাইন্ডফুলনেস-ভিত্তিক স্ট্রেস রিডাকশন ( এমবিএসআর ) এবং অন্যান্য অনুরূপ মননশীলতা ভিত্তিক পদ্ধতির অনুশীলন। মনস্তত্ত্বের উপর বৌদ্ধধর্মের প্রভাবও আধুনিক মনোবিশ্লেষণের নির্দিষ্ট ফর্মগুলিতে দেখা যায়।
বৌদ্ধধর্ম ১৯৫০ এবং ৬০ এর দশকে ডিটি সুজুকির মতো লোকেদের মাধ্যমে এবং জ্যাক কেরোক এবং অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো ব্যক্তিত্বের উপর তার প্রভাবের মাধ্যমে আধুনিক অ্যাভান্ট-গার্ড আন্দোলনকেও প্রভাবিত করেছিল।
অন্যান্য ধর্মীয় ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্ক
শামানবাদ
শামানবাদ বৌদ্ধ সমাজে একটি ব্যাপক প্রথা। স্থানীয় শামানিক ঐতিহ্যের পাশাপাশি বৌদ্ধ মঠগুলি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। প্রাতিষ্ঠানিক অর্থোডক্সির অভাবের কারণে, বৌদ্ধরা স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়, তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যকে পূর্ব-বিদ্যমান শামানিক সংস্কৃতির সাথে মিশ্রিত করে। সম্প্রদায়ের মধ্যে খুব কম দ্বন্দ্ব ছিল, বেশিরভাগই পশু বলির শামানিক অনুশীলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ, যা বৌদ্ধরা নিজের পিতামাতাকে হত্যার সমতুল্য হিসাবে দেখে। যাইহোক, বৌদ্ধধর্মের জন্য বুদ্ধকে মহাজগতের সর্বশ্রেষ্ঠ সত্তা হিসেবে গ্রহণ করা প্রয়োজন, এবং স্থানীয় শামানিক ঐতিহ্যকে একটি নিকৃষ্ট মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল।
হিমালয় ধর্মের গবেষণায় দেখা গেছে যে বৌদ্ধ এবং শামানিক ঐতিহ্য অনেক ক্ষেত্রে ওভারল্যাপ করে: স্থানীয় দেবদেবীর উপাসনা, নিরাময়মূলক আচার এবং ভুতুড়ে। শামানিক গুরুং জনগণ বেশিরভাগ বৌদ্ধ বিশ্বাস গ্রহণ করেছে এবং পুনর্জন্ম গ্রহণ করেছে কিন্তু মৃত্যুর পরে "আত্মাকে নির্দেশিত করার" শামানিক আচার বজায় রাখে। জিওফ্রে স্যামুয়েল শামানিক বৌদ্ধধর্মের বর্ণনা করেছেন: " তিব্বতে চর্চা করা বজ্রযান বৌদ্ধধর্মকে শামানিক হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে, কারণ এটি তান্ত্রিক যোগের চেতনার বিকল্প অবস্থার মাধ্যমে বাস্তবতার একটি বিকল্প ধারণার সাথে যোগাযোগকে কেন্দ্র করে"। [২৭]
তথ্যসূত্র
- ↑ Siderits, Mark (২০১৯)। "Buddha"। The Stanford Encyclopedia of Philosophy। Metaphysics Research Lab, Stanford University।
- ↑ "Buddhism". (2009). In Encyclopædia Britannica. Retrieved 26 November 2009, from Encyclopædia Britannica Online Library Edition.
- ↑ Lopez (2001), p. 239.
- ↑ Pew Research Center (2012a).
- ↑ "Christianity 2015: Religious Diversity and Personal Contact" (পিডিএফ)। gordonconwell.edu। জানুয়ারি ২০১৫। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-২৯।
- ↑ Donner, Susan E. (এপ্রিল ২০১০)। "Self or No Self: Views from Self Psychology and Buddhism in a Postmodern Context"। Smith College Studies in Social Work। 80 (2): 215–227। এসটুসিআইডি 143672653। ডিওআই:10.1080/00377317.2010.486361। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ Gethin (1998), pp. 27–28, 73–74.
- ↑ Harvey (2013), p. 99.
- ↑ Powers (2007), pp. 392–393, 415.
- ↑ Williams (1989), pp. 275ff.
- ↑ Robinson & Johnson (1997), p. xx.
- ↑ White, David Gordon, সম্পাদক (২০০০)। Tantra in Practice। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 21। আইএসবিএন 978-0-691-05779-8।
- ↑ Powers (2007), pp. 26–27.
- ↑ "Candles in the Dark: A New Spirit for a Plural World" by Barbara Sundberg Baudot, p. 305
- ↑ ক খ "tr. Robert Chalmers ed. E. B. Cowell [1895], "The Jataka"; Volume 1-6"। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুলাই ২০১২।
- ↑ স্বধর্ম রত্ন চৈত্য , জিনবংশ মহাস্থবির - বুদ্ধ এডুকেশনাল ফাউন্ডেশন তাইওয়ান হতে প্রকাশিত । প্রকাশকাল : ২৫৩ বুদ্ধাব্দ/১৩৬৬ বঙ্গাব্দ , পৃষ্টা নং: ২১৪ , অধ্যায় : লোকপর্ব
- ↑ হার্ভে (2013), pp. 23, 81.
- ↑ Keown (1996), pp. 24, 59.
- ↑ হার্ভে (2013), p. 72.
- ↑ বুসওয়েল & লোপেজ (2003), p. 49, অন্তগ্রহদৃষ্টি.
- ↑ ক্যারোল অ্যান্ডারসন (2013), ব্যথা এবং এর সমাপ্তি, p.143
- ↑ Bucknell, Rod, "The Buddhist Path to Liberation: An Analysis of the Listing of Stages", The Journal of the International Association of Buddhist Studies ভলিউম 7, সংখ্যা 2, 1984
- ↑ ত্রিপিটক পরিচিতি - ডঃ সুকোমল বরুয়া ও সুমন কান্তি বরুয়া , পৃষ্ঠা ১-৩, বাংলা অ্যাকাডেমি
- ↑ ত্রিপিটক পরিচিতি - ডঃ সুকোমল বরুয়া ও সুমন কান্তি বরুয়া , পৃষ্ঠা ১৪, বাংলা অ্যাকাডেমি
- ↑ Dutt (1988), pp. 332–333.
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;:2
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Shamanism33
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
বহিঃসংযোগ
- Worldwide Buddhist Information and Education Network, BuddhaNet
- Early Buddhist texts, translations, and parallels, SuttaCentral
- East Asian Buddhist Studies: A Reference Guide, Robert Buswell and William Bodiford, UCLA
- Buddhist Bibliography (China and Tibet), East West Center
- Ten Philosophical Questions: Buddhism, Richard Hayes, Leiden University
- Readings in Theravada Buddhism, Access to Insight
- Readings in Zen Buddhism, Hakuin Ekaku (Ed: Monika Bincsik)
- Readings in Sanskrit Buddhist Canon, Nagarjuna Institute – UWest
- Readings in Buddhism ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ জুন ২০২১ তারিখে, Vipassana Research Institute (English, Southeast Asian and Indian Languages)
- Religion and Spirituality: Buddhism at Open Directory Project
- The Future of Buddhism series, from Patheos
- Buddhist Art ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে, Smithsonian
- Buddhism – objects, art and history, V&A Museum
- Buddhism for Beginners, Tricycle