আলি
আলি ইবনে আবু তালিব ছিলেন ( আরবি: علي ابن أبي طالب, প্রতিবর্ণীকৃত: ʿAlī ibn ʾAbī Ṭālib; জন্ম: আনু. ১৩ সেপ্টেম্বর ৬০১ – আনু. ২৯ জানুয়ারি, ৬৬১ খ্রি.) [৫][৬] ইসলামের নবি মুহম্মাদ সা. এর চাচাতো ভাই, জামাতা ও সাহাবি, যিনি ৬৫৬ থেকে ৬৬১ সাল পর্যন্ত খলিফা হিসেবে গোটা মুসলিম বিশ্ব শাসন করেন। সুন্নি ইসলাম অনুসারে তিনি চতুর্থ রাশিদুন খলিফা। শিয়া ইসলাম অনুসারে তিনি মুহম্মাদ সাঃ এর ন্যায্য স্থলাভিষিক্ত ও প্রথম ইমাম।[১০][১১][১২][১৩][১৪] তিনি ছিলেন আবু তালিব ইবনে আবদুল মুত্তালিব ও ফাতিমা বিনতে আসাদের পুত্র, ফাতিমার স্বামী এবং হাসান ও হুসাইনের পিতা।[৪][১৫] তিনি আহল আল-কিসা ও আহল আল-বাইতের একজন সদস্য।[১৬][১৭]
ʿআলি ইবনে ʾআবি ত়ালিব علي ابن أبي طالب | |||||
---|---|---|---|---|---|
তালিকা
| |||||
৪র্থ খলিফা সুন্নি ইসলাম | |||||
খিলাফত | ৬৫৬–৬৬১[৪] | ||||
পূর্বসূরি | উসমান ইবনে আফফান | ||||
উত্তরসূরি | হাসান ইবনে আলি | ||||
১ম ইমাম শিয়া ইসলাম | |||||
ইমামত | ৬৩২–৬৬১ | ||||
উত্তরসূরি | হাসান ইবনে আলী | ||||
জন্ম | আনু. ১৫ সেপ্টেম্বর ৬০১ (১৩ রজব ২১ হিজরি)[৪][৫][৬] মক্কা, হেজাজ, আরব উপদ্বীপ[৪][৭] | ||||
মৃত্যু | আনু. ২৯ জানুয়ারি ৬৬১ (২১ রমজান ৪০ হিজরি) (বয়স ৫৯)[৫][৬][৮][৯] কুফা, ইরাক, রাশিদুন খিলাফত | ||||
সমাধি | |||||
দাম্পত্য সঙ্গিনী | |||||
সন্তান | |||||
| |||||
স্থানীয় নাম | عَلِيّ ٱبْن أَبِي طَالِب | ||||
বংশ | আহল আল-বাইত | ||||
বংশ | বনু হাশিম | ||||
রাজবংশ | কুরাইশ | ||||
পিতা | আবি তালিব ইবনে আব্দুল মুত্তালিব | ||||
মাতা | ফাতিমা বিনতে আসাদ | ||||
ধর্ম | ইসলাম | ||||
মৃত্যুর কারণ | আলি হত্যাকাণ্ড | ||||
সমাধি | ইমাম আলি মসজিদ, নাজাফ, ইরাক ৩১°৫৯′৪৬″ উত্তর ৪৪°১৮′৫১″ পূর্ব / ৩১.৯৯৬১১১° উত্তর ৪৪.৩১৪১৬৭° পূর্ব | ||||
স্মৃতিস্তম্ভ | ইমাম আলি মসজিদ, নাজাফ প্রদেশ, ইরাক | ||||
অন্যান্য নাম |
| ||||
পরিচিতির কারণ | জ্ঞান, প্রজ্ঞা, বীরত্ব, সাহসিকতা, নেতৃত্ব, আধ্যাত্মিকতা, দার্শনিকতা, বাগ্মিতা, ন্যায়বিচার | ||||
উল্লেখযোগ্য কর্ম | মুসহাফ আলি, আল-জাফর, নাহজুল বালাগা, গুরার আল-হিকাম ওয়া দুরার আল-কালিম, দীওয়ান আল-ইমাম আলি ইবনে আবি তালিব, সহিফা আল-আলবিয়া | ||||
প্রতিদ্বন্দ্বী | |||||
আত্মীয় | মুহম্মদ ﷺ (চাচাতো ভাই ও শ্বশুর) | ||||
সামরিক কর্মজীবন | |||||
আনুগত্য |
| ||||
কার্যকাল | ৬২৩–৬৩২ ৬৫৬–৬৬১ | ||||
যুদ্ধ/সংগ্রাম |
| ||||
আরবি নাম | |
---|---|
ব্যক্তিগত (ইসম) | আলি |
পৈত্রিক (নাসাব) | ʿআলি ইবন ʾআবি ত়ালিব ইবন আব্দুল মুত্তালিব ইবন হাশিম ইবন আব্দ মনাফ ইবন কুসাই ইবন কিলাব |
ডাকনাম (কুনিয়া) | আবুল হাসান[৪] |
উপাধি (লাক্বাব) | আবু তুরাব |
হযরত আলি (রা.) ছিলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর খুবই ঘনিষ্ঠ। ছোটবেলা থেকেই নবী করীম (সা.) তাঁর যত্ন নিতেন। তাঁর পালন-পোষণ এবং শিক্ষার দায়িত্ব নিতেন। হযরত মুহাম্মদ (সা.) যখন ইসলাম প্রচার শুরু করেন, তখন খুব কম বয়সেই (৯ থেকে ১১ বছর বয়সে( আলি (রা.) ইসলাম গ্রহণ করেন।[১৮] তিনি ইসলামের ইতিহাসে প্রথম কয়েকজন মুসলিমের একজন ছিলেন। নবী করীম (সা.) আলি (রা.) কে নিজের ভাই, অভিভাবক এবং একদিনের উত্তরসূরি হিসেবে গণ্য করতেন[১৮][১৯] । তিনি আলি (রা.) এর উপর অত্যন্ত আস্থা রাখতেন। হিজরতের রাতে, যখন কুরাইশরা নবী করীম (সা.) কে হত্যা করার জন্য তাঁর ঘরে আসে, তখন আলি (রা.) নিজের জীবন ঝুঁকিয়ে নবী করীম (সা.) কে রক্ষা করেন এবং তাঁর বিছানায় শুয়ে থাকেন। এই ঘটনা ইসলামী ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। মদিনায় আসার পর নবী করীম (সা.) এবং মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপিত হয়। সেখানেও আলি (রা.) নবী করীম (সা.) এর খুব কাছের সাহাবি হিসেবে ছিলেন এবং নবী করীম (সা.) তাকে তার ভাই হিসেবে বেছে নেন।[২০]। বিভিন্ন যুদ্ধে তিনি সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি অনেক যুদ্ধে পতাকাবাহকের দায়িত্ব পালন করেছেন।[১৮]
হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পরলোকগমনের পর মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্ব কার কাছে থাকবে, এই প্রশ্নটি ইসলামী ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বিশেষ করে, হযরত আলি (রা.) এর খিলাফতের অধিকার নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে একটি বড় ফাটল সৃষ্টি হয়, যার ফলে শিয়া ও সুন্নি এই দুটি প্রধান মতবাদে বিভক্ত হয়।[২০] হযরত মুহাম্মদ (সা.) যখন বিদায় হজ্জ থেকে ফিরে আসেন, তখন গাদীর খুম নামক স্থানে তিনি একটি বিখ্যাত বক্তৃতা দেন। এই বক্তৃতায় তিনি বলেন, "আমি যার মাওলা, এই আলি তার মাওলা।" এই বাক্যটি ইসলামী ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাক্য হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু 'মাওলা' শব্দের অর্থ নিয়ে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। শিয়ারা মনে করেন, এই বাক্যের মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ (সা.) আলি (রা.) কে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে নির্দেশ করেছেন। অন্যদিকে, সুন্নিরা মনে করেন, 'মাওলা' শব্দের অর্থ শুধুমাত্র বন্ধু বা ভালবাসার বস্তু।[২০][২১] হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ইন্তেকালের পর যখন আলি (রা.) তাঁর দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন একদল মুসলমান সকীফাতে মিলিত হয় এবং আবু বকরকে খলিফা নির্বাচিত করে।[২২] আলি (রা.) এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেননি, তবে তিনিও নিজে খলিফা হওয়ার জন্য কোন পদক্ষেপ নেননি। পরবর্তীতে, আবু বকরের মৃত্যুর পর উমর (রা.) এবং উসমান (রা.) খলিফা হন। আলি (রা.) তাদের শাসনামলেও মুসলিম সমাজের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিতেন তবে । তবে, যুদ্ধ ও রাজনৈতিক কার্যকলাপে অংশ নেননি।[২৩] উসমান (রা.) এর খিলাফতকালে মুসলিম সমাজে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যাগুলোর কারণে উসমান (রা.) শহীদ হন। এরপর মুসলমানদের এক বিরাট অংশ আলি (রা.) কে খলিফা হিসেবে নির্বাচিত করে। কিন্তু আলি (রা.) এর খিলাফতকালেও বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে। এই সংঘর্ষের ফলে ইসলামি ইতিহাসে প্রথম ফিতনা শুরু হয়। এই বিভক্তি ইসলামী ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং এর প্রভাব আজও বিদ্যমান। শিয়া ও সুন্নি এই দুটি মতবাদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও, তারা উভয়ই ইসলামের মূল নীতিগুলোতে বিশ্বাসী।
হযরত উসমান (রা.) এর মৃত্যুর পর ৬৫৬ সালে হযরত আলি (রা.) ইসলামের খলিফা নির্বাচিত হন। কিন্তু খিলাফতের শুরু থেকেই তিনি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। মক্কায় আয়েশা (রা.), তালহা এবং জুবাইরের নেতৃত্বে একটি দল খিলাফতের বিরোধিতা করেন এবং উটের যুদ্ধে হযরত আলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। এই যুদ্ধে হযরত আলি (রা.) বিজয়ী হন। এরপর সিরিয়ার গভর্নর মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান উসমানের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার দাবিতে হযরত আলির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। সিফফিনের যুদ্ধে এই দুই শক্তির সংঘর্ষ হয়। যুদ্ধের শেষে একটি সালিশি বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্তু এই সালিশি বোর্ডের সিদ্ধান্ত সবার মনোযোগ কাড়তে পারেনি। ফলে হযরত আলির কিছু অনুসারী তাঁর বিরোধিতা করে খারিজি নামে একটি গোষ্ঠী গঠন করে। হযরত আলি (রা.) খারিজীদের বিরুদ্ধে ৬৫৮ সালে নাহরাওয়ানের যুদ্ধে তাদের পরাজিত করেন।[১৮] ৬৬১ সালে একজন খারিজি ভিন্নমতাবলম্বী ইবনে মুলজাম হযরত আলিকে কুফার মসজিদে তলোয়ারের আঘাতে হত্যা করে, যা মুয়াবিয়ার ক্ষমতা দখল এবং বংশগত উমাইয়া খিলাফত প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করে। কুফা শহরের বাইরে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। পরে তার মাজার নাজাফ শহর নির্মিত হয়।[১৮]
হযরত আলি (রা.) কে সুন্নি মুসলমানরা চার খলিফার একজন এবং পাক পাঞ্চাতানের অংশ হিসেবে সম্মান করেন[১৭], হিসেবে সম্মান করেন এবং শিয়া মুসলমানরা তাঁকে প্রথম ইমাম হিসেবে পূজ্য মনে করেন। হযরত আলি (রা.) একজন সাহসী, সত্যবাদী এবং ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ইসলামের প্রতি অবিচল ছিলেন এবং সকল মানুষের প্রতি সমান আচরণ করতেন। তাঁর জীবন এবং কর্মকাণ্ড ইসলামি ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আলির উত্তরাধিকার বহু গ্রন্থে সংরক্ষিত ও অধ্যয়ন করা হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো "নাহজুল আল-বালাগা"।
জন্ম ও বংশপরিচয়
সম্পাদনাহযরত আলি মক্কায় একটি সম্মানিত কুরাইশ পরিবারে আনুমানিক ৬০১ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পরিবার কাবা শরিফের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল এবং সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। তাঁর পিতা আবু তালিব, কুরাইশ গোত্রের একটি শক্তিশালী শাখা বনু হাশিমের প্রধান ছিলেন এবং কাবার প্রহরীর দায়িত্ব পালন করতেন। আলির দাদাও হাশিম বংশের অন্য অনেক সদস্যের মতো হানিফ ছিলেন, অর্থাৎ ইসলামের আগে থেকেই এক ঈশ্বরবাদী বিশ্বাসে বিশ্বাসী ছিলেন। আলি ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবার অভ্যন্তরে জন্মগ্রহণ করেন।[২৪] তার মাতা ছিলেন ফাতিমা বিনতে আসাদ।[১৫]
আবু তালিবের স্ত্রী ফাতিমা বিনতে আসাদ ১৩ রজব, শুক্রবার, কাবা শরিফের সামনে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে তাঁর যন্ত্রণা দূর করার জন্য প্রার্থনা করছিলেন। হঠাৎ, কাবার দরজা নিজে থেকে খুলে গেল এবং তিনি অনুভব করলেন কোনো অদৃশ্য বাহিনী থাকে কাবার ভেতরে প্রবেশ করালেন। সেখানে তিনি এক অলৌকিক ঘটনায় আলি নামে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন। আলি সম্ভবত একমাত্র ব্যক্তি যিনি কাবার ভেতরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[২৫][২৬][২৭] তিনি এবং তার মা তিন দিন কাবার ভেতরে অবস্থান করেছিলেন। এরপর তারা বের হয়ে আসার পর মুহাম্মদ (সা.) তাদের স্বাগত জানান এবং শিশু আলিকে অন্ন দান করেন। মুহাম্মদ (সা.) নিজেই শিশুটির নাম 'আলি' রাখেন যার অর্থ 'সমুন্নত'। পরে মুহাম্মদ (সা.) আলিকে দত্তক নিতে চান।
আবু তালিব তার ভাতিজা মুহাম্মদকে তার বাবা-মায়ের ইন্তেকালের পর লালন-পালন করেছিলেন। পরবর্তীকালে, যখন আবু তালিব দরিদ্রতায় পড়েন, তখন আলিকে প্রায় পাঁচ বছর বয়সে মুহাম্মদ (সা.) এবং তার স্ত্রী খাদিজা (রা.) তাদের কাছে নিয়ে যান এবং তাকে লালন-পালন করেন[২৫]। ইসলামের ইতিহাসে তিনি সর্বপ্রথম নবুয়ত ডাকে সাড়া দিয়ে মাত্র ১০ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন।[২৮] মুহাম্মদ (সা.) আলিকে নিজের পরিবারের সদস্যের মতো লালন-পালন করেছিলেন। আলি ছিলেন প্রথম পুরুষ যিনি মাত্র দশ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।[২৯] তিনিই প্রথম পুরুষ যিনি মুহাম্মদ (সা.) এর সাথে নামাজ আদায় করেছিলেন। মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে আলি তাঁর পাশে ছিলেন। তিনি মুসলমানদের প্রায় সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং একজন অকুতোভয় যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বদরের যুদ্ধে তাঁর বীরত্বের জন্য মুহাম্মদ (সা.) তাকে জুলফিকার নামক তরবারি উপহার দিয়েছিলেন।[৩০] খাইবারের যুদ্ধে তাঁর অসাধারণ সাহসের জন্য মুহাম্মদ (সা.) তাকে আসাদুল্লাহ বা "আল্লাহর সিংহ" উপাধি দিয়েছিলেন।[৩১] গাদীর খুমের ভাষণ মুহাম্মদ (সা.) তাঁকে মুমিনদের "মওলা" হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।[৩২][৩৩]
শুরুর দিককার দিনগুলো
সম্পাদনাআলি এবং মুহাম্মদ (সা.) এর মধ্যে একটি অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, যা আলির শৈশব থেকেই গড়ে উঠেছিল। আলির বাবা, আবু তালিব, মুহাম্মদ (সা.) এর খুব কাছের ছিলেন। মুহাম্মদ (সা.) যখন এতিম হয়ে পড়েন এবং তার দাদা আবদুল মুত্তালিব মারা যান, তখন আবু তালিব তাকে নিজের পরিবারের সদস্যের মতো লালন-পালন করেন। মুহাম্মাদ (সা) খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদকে বিয়ে করার দুই-তিন বছর পরে আলির জন্ম হয়। পরবর্তীতে, যখন আলি ছোট্ট একজন শিশু ছিলেন, মুহাম্মদ (সা.) তাকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন এবং তাকে লালন-পালন করতে শুরু করেন। আলি ছোটবেলা থেকেই মুহাম্মদ (সা.) এর সাথে অবিচ্ছেদ্য ছিলেন। মুহাম্মদ (সা.) যেখানেই যেতেন, আলি তাঁর সাথেই থাকতেন। তিনি মুহাম্মদ (সা.) এর সব কাজে তাঁকে সাহায্য করতেন। এমনকি হেরা পর্বতমালায়ও যখন তিনি ধ্যানের জন্য গিয়েছিলেন আলি বেশিরভাগ সময় তার সাথে যেতেন। কখনও কখনও তারা ৩ বা ৪ দিন পাহাড়ে থাকতেন। মাঝে মাঝে আলি তার খাবার সেখানে নিয়ে যেতেন। নাহজুল বালাগায় আলি নিজে বলেছেন যে, তিনি নবীজি (সা.) এর সাথে যেমনটা বাচ্চা উট তার মায়ের সাথে যায়, ঠিক তেমনি তিনিও নবীজির সাথে থাকতেন।
ইসলাম গ্রহণ
সম্পাদনাযখন মুহাম্মদ (সা.) প্রথম ওহি পেয়েছিলেন, তখন মাত্র ১১ বছর বয়সী আলি বিশ্বাস সহকারে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম পুরুষ ছিলেন। তিনি খাদিজা পরে দ্বিতীয় ব্যক্তি, ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। ইসলামের ইতিহাসবিদ সৈয়দ আলি আসগর রাজউয়ের মতে, "মুহাম্মদ এবং খাদিজার ঘরে যমজ হয়ে আলি এবং কুরআন একসাথে বড় হয়েছিল।" অর্থাৎ, আলির জীবন ইসলামের জন্মের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ছিল। কাবায় নামাজ আদায়কারী প্রথম তিনজন ব্যক্তি ছিলেন মুহাম্মদ (সা.), খাদিজা (রা.) এবং আলি (রা.)।
আলি ১১ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করার পর থেকেই মুহাম্মদ (সা.) এর সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি মুহাম্মদ (সা.) এর সব কাজে তাঁকে সাহায্য করতেন। শিয়া মতবাদ অনুসারে, আলি কোনো পুরানো মক্কানীয় ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগেই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ইব্রাহিম (আ.) এর অনুসারী হিসেবে মূর্তি ভাঙার মতো কাজ করেছিলেন এবং লোকদের মূর্তিপূজা সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন। এটি প্রমাণ করে যে, খুব কম বয়সেই আলি ধর্মীয় বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে বুঝতেন এবং সাহসের সাথে নিজের বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়াতেন।
জুল আশিরার ভোজনোৎসব
সম্পাদনাইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর প্রথম দাওয়াত। এই দাওয়াতকে 'দাওয়াত দুল-আশিরাহ' নামেও ডাকা হয়, যার অর্থ 'দশজনের দাওয়াত'। এই দাওয়াতের মাধ্যমে তিনি তার নিকটাত্মীয়দের ইসলামের দিকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী, আল্লাহ নবীকে প্রথমেই নিজের পরিবারের লোকদের ইসলামে দাওয়াত দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন। তাই, তিনি প্রকাশ্যে দাওয়াত দেওয়ার আগে প্রায় তিন বছর ধরে গোপনে কয়েকজনকে ইসলামে দাওয়াত দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে, আল্লাহর নির্দেশে মুহাম্মাদ (সা.) একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি তার বংশীয় গোত্র বনু হাশিমের সকল সদস্যকে একত্রিত করেছিলেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি ইসলামের মূলনীতিগুলো তাদের সামনে তুলে ধরেছিলেন এবং তাদেরকে ইসলাম গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। এইভাবে ইসলামের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি বড় গোষ্ঠীর সামনে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। এই উদ্দেশ্যে তিনি সকলের নিকট জিজ্ঞাসা করলেন:
আমি আল্লাহর প্রতি তার অশেষ করুণার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি তাঁর প্রশংসা করি এবং তাঁর পথনির্দেশের জন্য প্রার্থনা করি। আমি তাঁর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করি এবং তাঁর ওপরই ভরসা রাখি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই; তাঁর কোনো অংশীদার নেই। আমি এও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আমি তাঁর প্রেরিত রসূল। আল্লাহ আমাকে এই নির্দেশ দিয়েছেন যে, "তোমার নিকট আত্মীয়দের সতর্ক কর।" তাই, আমি আপনাদের সতর্ক করছি এবং আপনাদের সামনে এই সাক্ষ্য দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, এবং আমি তাঁর প্রেরিত রসূল। হে আবদুল মুত্তালিবের সন্তানগণ! আমি তোমাদের কাছে যা নিয়ে এসেছি, তা এমন একটি জিনিস, যা তোমাদের জন্য আগে কেউ কখনো আনেনি। এটি গ্রহণ করলে তোমাদের দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ নিশ্চিত হবে। এখন বলো, তোমাদের মধ্যে কে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমাকে সমর্থন করবে? আমার পাশে দাঁড়াবে কে? এই মহান দায়িত্বের বোঝা কে আমার সাথে ভাগ করবে? কে আমার ডাকে সাড়া দিয়ে আমার উত্তরসূরি ও উত্তরাধিকারী হবে? সর্বশক্তিমান আল্লাহর পথে কে আমার সঙ্গী হবে?[৩৪]
পুরো সমাবেশে নীরবতা নেমে এলো, কিন্তু তরুণ আলি দৃঢ় চেতনায় উঠে দাঁড়ালেন। সাহসিকতার সঙ্গে, পরিচিত ধার্মিকতার ভাষায় তিনি তার অটুট বিশ্বাস প্রকাশ করলেন। তিনি বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল, যদিও এখানে উপস্থিত সকলের মধ্যে আমিই সবচেয়ে কম বয়সী, তবুও আমি আপনার পাশে দাঁড়াব।” মুহাম্মদ (সা.) যখন তৃতীয়বারের মতো একই প্রশ্ন করলেন, তখনও আলি একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে সমর্থন জানালেন। তখন মুহাম্মদ (সা.) আলিকে গ্রহণ করলেন, এবং আলি প্রথম যুবক হিসেবে ইসলামের পথে প্রবেশ করলেন। এই ঘটনা দেখে বনু হাশিম বংশের লোকেরা মুহাম্মদ (সা.)-এর কথাকে বিদ্রূপ করতে শুরু করল এবং ভোজ ছেড়ে চলে গেল। আবু লাহাব মশকরার সুরে আবু তালিবকে বললেন, “যাও, এখন তোমার ছেলের আনুগত্য কর।” আবু তালিব এটি হাসিমুখে গ্রহণ করলেন। অন্যদিকে, আলি তার প্রতিশ্রুতির প্রতি অটল থাকলেন। তিনি মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রচারণায় সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং সারা জীবন সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছিলেন।
মুসলমানদের ওপর নীপিড়ন
সম্পাদনামক্কায় মুসলমানদের ওপর অত্যাচার এবং বনু হাশিমের প্রতি বর্জনের সময় আলি দৃঢ়ভাবে মুহাম্মদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি ইসলামের শত্রুদের হাত থেকে মুহাম্মদকে রক্ষা করেছিলেন। একবার নবী তায়েফ শহরে ইসলাম প্রচারে গেলে, তায়েফের শিশু-কিশোরেরা তাকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করেছিল। সেই সময় আলি নবীকে রক্ষা করেছিলেন এবং শিশুদের সরিয়ে দিয়েছিলেন। তরুণ বয়সে আলি ছিলেন শক্তিশালী, দৃঢ়চেতা এবং সাহসী। তার প্রশস্ত বুক, মজবুত বাহু এবং আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিত্ব তাকে সবার মধ্যে অনন্য করে তুলেছিল। তার বয়সী বা বড়রা তাকে ভয় পেত। যখনই কেউ নবীকে অপমান করার চেষ্টা করত, তারা আলিকে দেখে পালিয়ে যেত, কারণ তারা জানত আলি নবীর রক্ষক।
ইসলাম প্রচারের শুরুতে আলি ছিলেন মুহাম্মদের নিকটতম সমর্থকদের একজন। অনেকেই নবীর বিরোধিতা করলেও, আলি কখনো তার চাচাত ভাইয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে পিছপা হননি। প্রতিটি প্রতিকূলতার সময় তিনি নবীর ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। একসময় মুহাম্মদ ও তার পরিবারের ওপর শত্রুদের বর্জনের সিদ্ধান্ত কঠোর হয়ে ওঠে। তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে নবী মুহাম্মদ আল্লাহর নির্দেশে মক্কা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাতে তিনি আলিকে তার বিছানায় শোয়ার নির্দেশ দেন এবং সঙ্গে সঙ্গে আলি আনন্দের সঙ্গে আদেশটি মান্য করেন। নবীর গচ্ছিত সম্পত্তি মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দিতে আলি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে রাতে আলি মুহাম্মদের বিছানায় শুয়ে নিজের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেন। কাফেররা ভেবেছিল মুহাম্মদ ঘরে আছেন এবং তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু আলির অসীম সাহসিকতার কারণে তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়। মুহাম্মদ আবু বকরের সঙ্গে নিরাপদে মদিনায় হিজরত করেন। এই রাতটি লাইলাতুল মবিত নামে পরিচিত।
আলি তার নিজের জীবনের চিন্তা না করে নবীর খেদমতে নিবেদিত ছিলেন। তিনি গচ্ছিত সম্পদ সফলভাবে মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেন এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মদিনার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তাদের মধ্যে ছিলেন তার মা ফাতিমা বিনতে আসাদ, তার খালা, হামজার স্ত্রী, নবীর কন্যা ফাতিমা এবং আরও অনেক নারী। মক্কার কাফেররা আলিকে থামানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আলি তাদের সঙ্গে লড়াই করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। অবশেষে তারা মদিনায় পৌঁছান। নবী মদিনার বাইরে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি আলি এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন। কিছু সূত্র মতে, মদিনায় পৌঁছানো মুহাম্মদের প্রথম মক্কা অনুসারীদের মধ্যে আলি অন্যতম ছিলেন।
মুহাম্মদের সাহচর্য
সম্পাদনা৬২২ সালে নিজের ওপর পরিকল্পিত হত্যার ষড়যন্ত্রের খবর পেয়ে মুহাম্মদ ইয়াসরিবে, যা বর্তমানে মদিনা নামে পরিচিত, হিজরত করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে আলি মক্কায় থেকে যান এবং নবীর ছদ্মবেশ গ্রহণ করেন। মুহাম্মদের জন্য নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুরআনের এই আয়াতটি নাজিল হয়েছিল বলে মনে করা হয়: " আর (এর বিপরীতে) মানুষের মাঝে কেউ এমনও রয়েছে, যে আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজের জীবনও বাজি রাখে। আর আল্লাহ বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল।" এই হিজরতের ঘটনাই ইসলামী বর্ষপঞ্জির (হিজরি সনের) সূচনা চিহ্নিত করে। মুহাম্মদের কাছে আমানত হিসেবে রাখা সমস্ত মালামাল তাদের প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার পর আলিও মক্কা থেকে মদিনায় চলে যান। মদিনায় পৌঁছানোর পর, মুহাম্মদ মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য তাদের জোড়ায় জোড়ায় বিভক্ত করেন এবং আলিকে নিজের ভাই হিসেবে বেছে নেন। ৬২৩ থেকে ৬২৫ সালের মধ্যে মুহাম্মদ তার কন্যা ফাতিমাকে আলির সঙ্গে বিয়ে দেন। সেই সময় আলির বয়স ছিল প্রায় বাইশ বছর। এর আগে, মুহাম্মদ তার সাহাবীদের মধ্যে আবু বকর এবং উমরের মতো ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে আসা ফাতিমার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
মুহাম্মাদ (সাঃ) এর যুগ
সম্পাদনাআলি যখন মদিনায় হিজরত করেছিলেন তখন তার বয়স ২২ বা ২৩ বছর ছিল। মুহাম্মদ(সা) যখন তার সাহাবীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করছিলেন, তখন তিনি আলিকে তার ভাই হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে, "আলি ও আমি একই গাছের যখন মানুষ বিভিন্ন গাছের অন্তর্গত হয়।" দশ বছর ধরে মুহাম্মদ(সা) মদীনাতে সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে ছিলেন, আলি তার সম্পাদক এবং প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন,প্রতিটি যুদ্ধে ইসলামের পতাকার আদর্শ বাহক ছিলেন, আক্রমণে যোদ্ধাদের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং বার্তা এবং আদেশ বহন করেছিলেন। মুহম্মদ(সা)র একজন প্রতিনিধি হিসাবে এবং পরে তার ছেলে আইন অনুসারে, আলি মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন কর্তৃত্বের অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন৷
ফাতিমার সাথে বিবাহ
সম্পাদনামদিনায় হিজরতের দ্বিতীয় বছরে মুহাম্মাদ(সা) তার কন্যা ফাতিমার জন্য বহু বৈবাহিক প্রস্তাব পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আল্লাহর আদেশে তাকে আলির সাথে বিবাহের সিদ্ধান্ত নেন। বদরের যুদ্ধের বেশ কয়েকদিন আগে তার সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। তবে তিন মাস পরে এই বিবাহ উদ্যাপিত হয়েছিল। আলির বয়স প্রায় ২৩ বছর এবং ফাতেমার বয়স ১৮ বছর। এটি সবচেয়ে আনন্দময় এবং উদযাপিত বিবাহ ছিল। তারা ছিলেন আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট দম্পতি। তাদের দুই পুত্র সন্তানের নাম যথাক্রমে হাসান (আল-হ়াসান ইবনে ʿআলি ইবনে ʾআবী ত়ালিব) এবং হুসাইন (হোসাইন ইবনে আলি )।
সামরিক কর্মজীবন
সম্পাদনাআলি মুহাম্মদের সকল সামরিক অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তবে ৬৩০ সালে তাবুকের যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করতে পারেননি। এই অভিযানের সময় আলি মদিনায় দায়িত্বে ছিলেন।[৩৫] এই ঘটনার সাথে সম্পর্কিত একটি হাদিস হলো, "আলি, তুমি কি সন্তুষ্ট নও যে তুমি আমার সাথে সেই অবস্থানে থাকবে যেমন হারুন মুসার সাথে ছিলেন? তবে আমার পরে কোনো নবী থাকবে না।" এই উক্তি সহীহ বুখারি এবং সহীহ মুসলিমসহ সুন্নি উৎসগুলোতে উল্লেখিত হয়েছে।[৩৬] শিয়া মতে, এই হাদিস আলির সেই অধিকারকে ইঙ্গিত করে যা মুহাম্মদের পরে তার উত্তরাধিকার হিসেবে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।[৩৭] মুহাম্মদের অনুপস্থিতিতে, আলি ৬২৮ সালে ফাদকের অভিযানের নেতৃত্ব দেন।[৩৮][২৫]
আলি যুদ্ধক্ষেত্রে তার সাহসিকতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন[৩৯][৩৮] এবং পরাজিত শত্রুদের প্রতি উদারতার জন্যও পরিচিত ছিলেন।[৪০] তিনি বদর যুদ্ধ (৬২৪) এবং খায়বারের যুদ্ধ (৬২৮)-এ মুসলিম বাহিনীর পতাকাবাহী ছিলেন।[৪১] উহুদ যুদ্ধের (৬২৫) সময় মুসলিম বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে তিনি নবীকে রক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন।[৩৯][২৫] খায়বারের যুদ্ধের বিজয় তার সাহসিকতার জন্য উৎসর্গ করা হয়,[৩৮] যেখানে বলা হয় যে তিনি শত্রুর দুর্গের লোহার দরজা ভেঙে ফেলেছিলেন।[৩৯] এছাড়াও, ৬২৭ সালের খন্দকের যুদ্ধে তিনি পৌত্তলিক চ্যাম্পিয়ন আমর ইবনে আবদে ওয়ুদ্দকে পরাজিত করেন।[২৬]ইতিহাসবিদ আল-তাবারির মতে,[২৬] মুহাম্মদ (সা.) উহুদ যুদ্ধে একটি ঐশী কণ্ঠ শুনেছিলেন, যেখানে বলা হয়, "জুলফিকার (আলির তলোয়ার) ছাড়া আর কোনো তলোয়ার নেই, আর আলি ছাড়া কোনো বীর যুবার নেই।"[৪২][২৫] ৬২৬–৬২৭ সালের মধ্যে আলি এবং তার সঙ্গী যুবাইর বনু কুরাইজা গোত্রের পুরুষদের হত্যার দেখভাল করেছিলেন বলে মনে করা হয়, কারণ তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।[৩৮] তবে, এই ঘটনার ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে।[৪৩][৪৪][৪৫]
তিনি খন্দকের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন, যেখানে তিনি কিংবদন্তি আরব যোদ্ধা আমর ইবনে আবদ-ওদকে পরাজিত করেছিলেন। ইহুদীদের বিরুদ্ধে খায়বারের যুদ্ধের সময় মুসলমানরা খাইবারের শক্তিশালী ইহুদি দুর্গটি দখলের চেষ্টা করেছিল। রাসূল ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি সেই ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেবেন যিনি আল্লাহ ও তার রাসূলকে ভালবাসেন এবং তারাও তাকে ভালবাসে। পরের দিন মুহাম্মদ (সা) আলির তুলনাহীন লড়াইয়ের ক্ষমতাকে বিশ্বাস করে তাকে দায়িত্ব দেন এবং তাকে মুসলিম নির্দেশ দিতেন। ইহুদিরা কেবল তার ইসলামের দাওয়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছিল তাই নয়, তারা তাদের প্রখ্যাত ও সাহসী যোদ্ধা, মহারাবকে সামনে পাঠিয়েছিল, যারা আলিকে যুদ্ধার্থে আহ্বান করেছিল। আরবগণ আলির অবিশ্বাস্য শক্তি ও শক্তি প্রত্যক্ষ করেছিলেন, যিনি তার তলোয়ারটির প্রবল আঘাতের দ্বারা মাহরবকে হত্যা করেছিলেন। অতঃপর, মুহাম্মাদ(সা) তাকে “আসাদুল্লাহ” উপাধি দিয়েছিলেন, যার অর্থ “আল্লাহর সিংহ”।
ইসলামের জন্য আত্মোৎসর্গ
সম্পাদনামুহম্মদ(সা) আলিকে কুরআনের পাঠ্য রচনাকারীদের একজন হিসাবে মনোনীত করেছিলেন, যা পূর্ববর্তী দুই দশকে মুহাম্মদ(সা)র প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল। ইসলাম যেভাবে আরব জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল, আলি নতুন ইসলামিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন। ৬২৮ সালে তাকে হুদায়বিয়ার সন্ধি, মুহাম্মদ(সা) ও কুরাইশের মধ্যে সন্ধি রচনা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আলি এতটাই বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন যে মুহাম্মদ(সা) তাকে বার্তা বহন করতে ও আদেশগুলি ঘোষণা করতে বলেছিলেন। ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে আলি মক্কায় তীর্থযাত্রীদের বিশাল সমাবেশে কুরআনের একটি অংশ আবৃত্তি করেছিলেন যা মুহাম্মদ(সা) এবং ইসলামী সম্প্রদায়কে আরব মুশরিকদের সাথে পূর্ববর্তী চুক্তি দ্বারা আবদ্ধ ঘোষণা করে না। ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা বিজয়ের সময় মুহাম্মদ (সা)আলিকে নিশ্চয়তা দিতে বলেছিলেন যে এই বিজয় রক্তহীন হবে। তিনি আলিকে বনু আউস, বানু খাজরাজ, তায়ে এবং কাবা'র সমস্ত পূজা মূর্তি ভাঙার আদেশ দিয়েছিলেন যা পুরাতন কালের শিরক দ্বারা এটি অশুচি হওয়ার পরে এটিকে পবিত্র করা হয়েছিল। ইসলামের শিক্ষার প্রচারের জন্য এক বছর পর আলিকে ইয়েমেনে প্রেরণ করা হয়েছিল। তিনি বিভিন্ন বিবাদ নিষ্পত্তি এবং বিভিন্ন উপজাতির বিদ্রোহ রোধের দায়িত্ব পালন করেন।
মুবাহালার ঘটনা
সম্পাদনাদক্ষিণ আরবে অবস্থিত নজরান থেকে একজন খ্রিস্টান দূত মদিনায় আসেন এবং প্রায় ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মদ (সা.) এর সাথে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।[৪৬][৪৭] ঐ দূত মুহাম্মদ (সা.) এর সাথে ঈসা (আ.) এর প্রকৃতি, তিনি মানব নাকি দৈবী, এই বিষয়েও বিতর্ক করেন।[৪৮][৪৯] এই ঘটনার সাথে কুরআনের ৩:৬১ আয়াত যুক্ত[৫০], যেখানে মুহাম্মদ (সা.) কে তাঁর বিরোধীদের সাথে মুবাহালা (অর্থাৎ পরস্পর অভিশাপ) করার জন্য বলা হয়েছে, সম্ভবত যখন তাদের বিতর্ক একটি অচল অবস্থায় পৌঁছেছিল।[৪৯] যদিও প্রতিনিধি দল অবশেষে এই চ্যালেঞ্জ থেকে সরে গিয়েছিল[৪৭], মুহাম্মদ (সা.) মুবারালার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন, তার সাথে ছিলেন আলি, তাঁর স্ত্রী ফাতিমা এবং তাদের দুই পুত্র হাসান ও হুসাইন।[৫১][৩৯] মুহাম্মদ (সা.) মুবারালা অনুষ্ঠানে এই চারজনকে তাঁর সাক্ষী ও গ্যারান্টর[৫২][৫৩] হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে সম্ভবত সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের ধর্মীয় মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছিল।[৪৮][৫৪] যদি আয়াতে ব্যবহৃত 'আমরা' শব্দটি আলি এবং মুহাম্মদ (সা.) কে বোঝায়, যেমন শিয়া লেখকরা দাবি করেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই কুরআনে পরবর্তীতে আলি (আ.) এর ধর্মীয় কর্তৃত্ব মুহাম্মদ (সা.) এর মতোই উচ্চ।[৫৫][৫৬]
গাদীর খুম
সম্পাদনা৬৩২ সালে হজ্জ পালন শেষে ফিরতি পথে, গাদীর খুম নামক স্থানে মুহাম্মদ (সা.) হাজিদের বিশাল কাফেলাকে থামালেন এবং জামায়াতের নামাজ শেষে তাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখলেন। নামাজের পর, তিনি বহুসংখ্যক মুসলমানের সামনে উপদেশ দেন।[৫৭] নামাজ শেষ করার পর,[৫৮] তিনি এক বিশাল মুসলিম সমাবেশে খুতবা প্রদান করেন। সেখানে তিনি কুরআন এবং তাঁর আহল আল-বাইত (অর্থাৎ ‘গৃহের লোক’ বা তাঁর পরিবার) এর গুরুত্ব সম্পর্কে জোর দেন।[৫৯][৬০][৬১][৬২] এরপর, আলির হাত ধরে মুহাম্মদ (সা.) জনসাধারণকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি কি তাদের নিজেদের থেকেও বেশি কর্তৃত্বশীল (আওলা) নন? আওলা শব্দের অর্থ হলো ‘বেশি কর্তৃত্বসম্পন্ন’ বা ‘আরও নিকটবর্তী’।[৬২][৬৩] এটি কুরআনের সূরা আহযাবের আয়াত ৩৩:৬-এর দিকে ইঙ্গিত বলে মনে করা হয়।[৬৪][৬৫] যখন লোকেরা এই প্রশ্নের পক্ষে সম্মতি জানায়, তখন মুহাম্মদ (সা.) ঘোষণা করেন, “আমি যার মাওলা, আলিও তার মাওলা।”[৬৬][৬২] মুসনাদ ইবনে হাম্বল, যা একটি সুন্নি গ্রহণযোগ্য উৎস, জানায় যে মুহাম্মদ (সা.) এই কথাটি তিন বা চারবার পুনরাবৃত্তি করেন। খুতবা শেষে উমর (রা.) আলিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আপনি এখন প্রতিটি বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীর মাওলা হয়েছেন।”[৬৭][৬১] এর আগে, মুহাম্মদ (সা.) মুসলমানদের তাঁর আসন্ন মৃত্যুর বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।[৬৮][৫৯][৬৯] শিয়া সূত্রগুলো এই ঘটনার আরও বিশদ বর্ণনা দিয়েছে এবং এটি কুরআনের সূরা মায়িদার আয়াত ৫:৩ এবং ৫:৬৭-এর সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।[৬৮]
গাদীর খুমের সত্যতা নিয়ে খুব কমই প্রশ্ন উঠে।[৬২][৭০][৭১][৫৯] ক্লাসিক্যাল ইসলামিক সূত্রগুলোতে এটি সবচেয়ে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত এবং প্রমাণিত ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি।[৭২] তবে, 'মওলা' একটি আরবি বহুবচন শব্দ এবং গাদীর খুমের প্রেক্ষাপটে এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে মতবিরোধ রয়েছে। শিয়া সূত্রগুলো 'মওলা' কে 'নেতা', 'মালিক' এবং 'পৃষ্ঠপোষক' হিসাবে ব্যাখ্যা করে, অন্যদিকে সুন্নি সূত্রগুলো এটিকে আলির প্রতি ভালোবাসা বা সমর্থন হিসাবে ব্যাখ্যা করে।[২৫][৭৩] অতএব, শিয়া মুসলমানরা গাধির খুম্মকে মুহাম্মদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষমতা আলির কাছে হস্তান্তর হিসাবে দেখে, [৭৪][৭৫][২৬]অন্যদিকে সুন্নি মুসলমানরা এটিকে দুই ব্যক্তির মধ্যকার সম্পর্কের বিবৃতি হিসাবে দেখে[২৫][৫৯][৭৬] অথবা আলি মুহাম্মদের ইচ্ছা কার্যকর করবেন বলে মনে করে।[২৫] শিয়ারা এই ঘোষণার অসাধারণ প্রকৃতি, কুরআনিক ও পাঠ্যগত প্রমাণ প্রদান করে[৭৭][৬৮][৫৯] এবং হাদিসে মাওলার অন্যান্য অর্থগুলো বাতিল করার যুক্তি দেখায়, যা শুধুমাত্র কর্তৃত্বকেই নির্দেশ করে। [৭৮]বিপরীতে, সুন্নিরা গাদীর খুমের গুরুত্বকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে, এটিকে আলির বিরুদ্ধে পূর্বের কিছু অভিযোগের সাধারণ প্রতিক্রিয়া হিসেবে উপস্থাপন করে।[৭৯] আলির খিলাফতকালে, তিনি মুসলমানদের আহ্বান করেন যাতে তারা গাদীর খুম সম্পর্কে তাদের সাক্ষ্য প্রকাশ করে[৮০][৮১][৮২]। ধারণা করা হয়, তিনি এটি করেছিলেন তাঁর বৈধতার প্রতি যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য।[৮৩]
খুলাফায়ে রাশেদীনদের সময় জীবনু
সম্পাদনামুহাম্মদের (সা.) উত্তরাধিকার
সম্পাদনাসাকিফা
সম্পাদনামুহাম্মদ (সা.) ৬৩২ সালে ইন্তেকাল করেন, সেই সময় আলির বয়স তিরিশের কাছাকাছি ছিল।[৮৪] আলি এবং তার অন্যান্য ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা মুহাম্মদের দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন,[৮৫][৮৬] তখন আনসারদের (মদিনার স্থানীয় বাসিন্দা,আক্ষ.সাহায্যকারী’) একটি দল সাকিফায় জড়ো হন মুসলমানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করার জন্য বা মদিনার ওপর পুনরায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য। মুহাজিরদের (মক্কার ধর্মান্তরিত মুসলমান, আক্ষ.অভিবাসী) মধ্যে আবু বকর এবং উমর কয়েকজন প্রতিনিধি হিসেবে সাকিফায় উপস্থিত ছিলেন।[৮৭] সাকিফায় আলির বিষয়ে আলোচনা তোলা হলেও তিনি সেখানে উপস্থিত না থাকায় তা ব্যর্থ হয়।[৮৮][৮৯] পরবর্তীতে, সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিরা একটি তীব্র বিতর্কের পর আবু বকরকে নেতৃত্বের দায়িত্ব দেন, যা সহিংস হয়ে উঠেছিল বলে জানা যায়।[৯০] সাকিফায় গোত্রীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা আবু বকরের পক্ষে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল,[৮৫][৯১] এবং একটি বৃহত্তর পরিষদে (শুরা) আলিকে প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারত।[৯২][৯৩]বিশেষত, কুরাইশ গোত্রের বংশানুক্রমিক উত্তরাধিকারের প্রথা আলির পক্ষে ছিল,[৯৪][৯৫][৯৬] যদিও তার যুবক হওয়া তার অবস্থানকে দুর্বল করেছিল।[৩৮][৮৪] অন্যদিকে, আবু বকরের খিলাফতের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয় যে, মুহাম্মদের শেষ সময়ে কিছু নামাজের ইমামতি করেছিলেন।[৮৫][৯৭] তবে, এসব প্রতিবেদনের সত্যতা এবং তাদের রাজনৈতিক গুরুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।[৮৫][৯৮][৯৯]
ফাতিমার ঘরে আক্রমণ
সম্পাদনামদিনায় আবু বকরের নিয়োগের বিরোধিতা কম হলেও, খুব দ্রুত বনু হাশিম এবং মুহাম্মদের কিছু সাহাবি আলির বাড়িতে প্রতিবাদ করতে জড়ো হন। তাদের মধ্যে ছিলেন জুবায়ের এবং মুহাম্মদের চাচা আব্বাস। এই প্রতিবাদকারীরা আলিকে মুহাম্মদের সঠিক উত্তরাধিকারী মনে করতেন, সম্ভবত গাদিরে খুমের ঘটনার উল্লেখ করে। আল-তাবারিসহ অন্যান্যদের মতে, এরপর উমর একটি সশস্ত্র দল নিয়ে আলির বাড়ির দিকে অগ্রসর হন এবং হুমকি দেন যে, যদি আলি ও তার সমর্থকরা আবু বকরের প্রতি আনুগত্য স্বীকার না করেন, তবে তিনি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেবেন। বিষয়টি শীঘ্রই সহিংসতায় রূপ নেয়, তবে ফাতিমা তাদের কাছে অনুরোধ করার পর দলটি পিছু হটে। পরবর্তীতে আবু বকর বনু হাশিমদের উপর সফলভাবে বয়কট চাপান, যারা শেষ পর্যন্ত আলির প্রতি তাদের সমর্থন ত্যাগ করেন। সম্ভবত, আলি নিজে আবু বকরের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেননি যতক্ষণ না তার স্ত্রী ফাতিমা, মুহাম্মদের ইন্তেকালের ছয় মাসের মধ্যে মারা যান। শিয়া সূত্রমতে, অল্প বয়স্ক ফাতিমার মৃত্যু (এবং গর্ভপাত) আবু বকরের নির্দেশে আলীকে দমন করার জন্য তার বাড়িতে হামলার কারণে বলা হয়। সুন্নি সূত্রে এই বিষয়টিকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে, তবে তাদের প্রাথমিক সূত্রে প্রমাণ রয়েছে যে, একটি দল জোরপূর্বক ফাতিমার বাড়িতে প্রবেশ করে এবং আলীকে গ্রেপ্তার করে, এমন একটি ঘটনা যার জন্য আবু বকর তার মৃত্যুশয্যায় অনুশোচনা করেছিলেন। এটি সম্ভবত বনু হাশিমদের দুর্বল করার একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল। এর আগে আবু বকর ফাতিমার কাছ থেকে ফাদকের সমৃদ্ধ ভূমি বাজেয়াপ্ত করেছিলেন, যা তিনি তার বাবার উত্তরাধিকার (অথবা উপহার) বলে মনে করতেন। ফাদাক জব্দ করার কারণটি প্রায়শই সুন্নি সূত্রগুলোতে নবুয়তের উত্তরাধিকার সম্পর্কিত হাদিস দিয়ে ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করা হয়, যার সত্যতা সন্দেহ করা হয়েছে আংশিকভাবে কারণ এটি কোরআনের নির্দেশাবলীর সাথে সাংঘর্ষিক।
খিলাফত
সম্পাদনাপ্রথম ফিতনা
সম্পাদনাউসমান ঘাতক কর্তৃক নিহত হলে অনেক ব্যক্তিবর্গ আলিকে হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট, একথা বলাবলি করতে থাকে। আলি সরাসরি এ কথা অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে জনগণ তাকে খলিফা নিযুক্ত করতে চাইলে তিনি অস্বীকৃতি জানান। তবুও জণগণ জোরপূর্বক তাকে খলিফা মনোনীত করে। এরপরেও হত্যার সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে আলির সম্পর্ক বিষয়ে তর্ক বিতর্ক চলতে থাকে। একপর্যায়ে তা চরম আকার ধারণ করতে থাকে এবং আয়িশা ও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। হত্যার প্রতিশোধ নেওবার উদ্দেশ্যে তিনি জনগণের সাথে এক হন এবং বসরার ময়দানে আলির বিরুদ্ধে যুদ্ধের আয়োজনে শরিক হন। আলির বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে তিনি পেছন থেকে নির্দেশনা ও নেতৃত্ব দেন। ইসলামের ইতিহাসে এ যুদ্ধটি বসরার যুদ্ধ বা উটের যুদ্ধ নামে পরিচিত। যুদ্ধে আলির বিরুদ্ধবাহিনী পরাজিত হয় কিন্তু পরবর্তী ইতিহাসে এ যুদ্ধের প্রভাব ছিল ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী।[১০০][যাচাই প্রয়োজন]
কুফায় গুপ্তহত্যা
সম্পাদনা৪০ হিজরীর ১৯শে রমজান বা ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে জানুয়ারি মসজিদে কুফায় নামাজ পড়ার সময় তিনি, খারেজী আব্দুর রহমান ইবনে মুলজাম কর্তৃক হামলার শিকার হন। তিনি নামাজে সেজদা দেওয়ার সময় ইবনে মুলজামের বিষ-মাখানো তরবারী দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হন।[১০১] আলি তার পুত্রকে নির্দেশ দেন কেউ যেন খারেজীদের আক্রমণ না করে, তার বদলে তিনি নির্দেশ দেন যে, যদি তিনি বেঁচে যান, তবে যেন ইবনে মুলজামকে ক্ষমা করে দেয়া হয়; আর যদি তিনি মারা যান, তবে ইবনে মুলজামকে যেন নিজ আঘাতের সমতুল্য একটি আঘাত করা হয় (তাতে ইবনে মুলজামের মৃত্যু হোক বা না হোক।)।[১০২] আলি হামলার দুদিন পর ২৯শে জানুয়ারি ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে (২১শে রমজান ৪০ হিজরী) মৃত্যুবরণ করেন।[১০১] আল-হাসান তার নির্দেশনা অনুযায়ী কিসাস পূর্ণ করেন এবং আলির মৃত্যুর পর ইবনে মুলজামকে সমপরিমাণ শাস্তি প্রদান করেন।
জ্ঞান সাধনা
সম্পাদনাহযরত আলি (রা.) অসাধারণ মেধার অধিকারী ছিলেন। ছোট বেলা থেকেই তিনি ছিলেন জ্ঞান তাপস ও জ্ঞান সাধক। তিনি সর্বদা জ্ঞানচর্চা করতেন। হাদিস, তাফসির,আরবি সাহিত্য ও আরবি ব্যাকরণে তিনি তাঁর যুগের সেরা ব্যাক্তিত্ব ছিলেন। কথিত আছে যে, 'হযরত মুহাম্মদ (স.) হলেন জ্ঞানের শহর, আর আলি হলেন তার দরজা '। তার রচিত 'দিওয়ানে আলি' নামক কাব্য গ্রন্থটি আরবি সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
পারিবারিক জীবন
সম্পাদনাআলির নয়টি স্ত্রী এবং বেশ কিছু উপপত্নীর থেকে চৌদ্দোটি পুত্র ও উনিশটি কন্যা ছিল, তাদের মধ্যে হাসান, হুসাইন এবং মুহাম্মদ ইবনে আল হানাফিয়াহ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে এবং তাদের মধ্যে মাত্র পাঁচজন বংশধর রেখে গেছেন।[১০৩] আলি, মুহাম্মদ(সা)র ছোট মেয়ে ফাতিমার কাছ থেকে চারটি সন্তান ছিলঃ হাসান, হুসাইন, জায়নব এবং উম্মে কুলসুম।
দৃষ্টিভঙ্গি
সম্পাদনাকোরআনে আলির উল্লেখ
সম্পাদনাহযরত আলির রাঃ শানে পবিত্র কুরআনের আয়াত নাযিল হয়েছে বলে উলামা কেরাম মনে করেন। ইবনে আসাকির হযরত ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে,কোন ব্যক্তির গুণ বর্ণনায় এত অধিক কুরআনের বাণী অবতীর্ণ হয়নি যা হযরত আলি সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস আরও বলেছেন যে,হযরত আলির শানে অনেক ’ আয়াত নাযিল হয়েছে এবং তাঁর গুণাবলি অত্যধিক ও প্রসিদ্ধ। পবিত্র কুরআনের নাযিলকৃত আয়াতগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হল :
১. সূরা বাকারার ২০৭ নং আয়াত
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ
"এবং মানুষের মধ্যে এমনও আছে,যে আল্লাহর সন্তোষ লাভের জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত বিক্রয় করে দেয় এবং আল্লাহ (এরূপ) বান্দাদের প্রতি অতিশয় অনুগ্রহশীল।"
সালাবী তাঁর তাফসীর গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করার প্রস্তুতি নিলেন সেই সময় হযরত আলিকে তাঁর বিছানায় শুয়ে থাকার নির্দেশ দেন যাতে কাফির-মুশরিকরা মনে করে যে,রাসূল তাঁর নিজ ঘরেই রয়েছেন। আলি (আ.) নির্দ্বিধায় এ নির্দেশ পালন করলে মহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন।
সূরা শূরার ২৩ নং আয়াত
قُلْ لَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى
"বল,আমি এর বিনিময়ে তোমাদের নিকট থেকে আমার নিকটাত্মীয়দের প্রতি ভালবাসা ছাড়া আর কোন প্রতিদান চাই না।"
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকটাত্মীয় আহলে বাইতের সদস্যদের প্রতি ভালবাসা পোষণকে এ আয়াত দ্বারা মহান আল্লাহ মুসলমানদের জন্য ফরয বলে ঘোষণা করেন।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেছেন : যখন এ আয়াত নাযিল হল তখন সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেন,হে রাসূলুল্লাহ! আপনার নিকটাত্মীয়,যাদেরকে ভালবাসা আমাদের ওপর ওয়াজিব করা হয়েছে তারা কারা? রাসূল (সা.) বললেন : আলি,ফাতেমা,হাসান ও হুসাইন।
সূরা মায়েদার ৫৫ নং আয়াত
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ
"(হে বিশ্বাসিগণ!) তোমাদের অভিভাবক তো কেবল আল্লাহ,তাঁর রাসূল এবং সেই বিশ্বাসীরা যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং রুকু অবস্থায় যাকাত প্রদান করে।"
শীয়া-সুন্নি উভয় মাযহাবের তফসীরকাররা একমত যে,আয়াতটি হযরত আলি (আ.)-এর শানে নাযিল হয়েছে। যেমন ইবনে মারদুইয়া এবং খাতীব বাগদাদী ইবনে আব্বাস সূত্রে এবং তাবরানী ও ইবনে মারদুইয়া আম্মার ইবনে ইয়াসির ও আলি ইবনে আবি তালিব সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে,আয়াতটি আলি ইবনে আবি তালিব (আ.) সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে যখন তিনি রুকু অবস্থায় যাকাত দেন।
ঘটনাটি এরূপ : একদিন হযরত আলি (আ.) মদীনার মসজিদে নামায পড়ছিলেন। এমন সময় একজন ভিক্ষুক এসে ভিক্ষা চাইল। কিন্তু কোন ভিক্ষা না পাওয়ায় সে ফরিয়াদ করল যে,রাসূলের মসজিদ থেকে সে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। এ সময় হযরত আলি রুকু অবস্থায় ছিলেন। তিনি সেই অবস্থায় তাঁর ডান হাতের আঙ্গুল থেকে আংটি খুলে নেওয়ার জন্য ভিক্ষুকের প্রতি ইশারা করেন। ভিক্ষুক তাঁর হাত থেকে আংটি খুলে নেয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে উপরিউক্ত আয়াত নাযিল হয়।
শিয়া দৃষ্টিভঙ্গি
সম্পাদনাআলি রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিকভাবে শিয়া সম্প্রদায়ের নিকট গুরুত্বপূর্ণ। আলি সম্পর্কিত অসংখ্য আত্মজৈবনিক সূত্র প্রায়শই সাম্প্রদায়িক ধারায় পক্ষপাতদুষ্ট, তবে তারা একমত যে তিনি ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান, ইসলামের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এবং কোরআন ও সুন্নাহর অনুসারী ন্যায়পরায়ণ শাসক। আলি ইসলামের চতুর্থ খলিফা হলেও শিয়ারা তাঁকে নবীপরবর্তী প্রথম খলিফা ও ইমাম হিসেবে গণ্য করে। শিয়া মুসলমানেরা আরও বিশ্বাস করে যে, আলি ও অন্য ইমামগণ—যাদের সকলেই মুহাম্মদ(সা)এর পরিবার তথা আহল আল-বাইতের অন্তর্ভুক্ত—হলেন মুহম্মদ(সা)র ন্যায্য উত্তরাধিকারী।
সূফী দৃষ্টিভঙ্গি
সম্পাদনাمظهر العجائب مولى المؤمنين كرم الله وجهه
ইতিহাসলিখনধারা
সম্পাদনাআরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনাউদ্ধৃতি
সম্পাদনা- ↑ https://sunnah.com/bukhari:4947
- ↑ https://www.islamweb.net/ar/fatwa/10967/
- ↑ https://sunnah.com/nasai:5627
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Britannica
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ গ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Iranica
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ গ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Al-Islam
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Rahim, Husein A.; Sheriff, Ali Mohamedjaffer (১৯৯৩)। Guidance From Qur'an (ইংরেজি ভাষায়)। Khoja Shia Ithna-asheri Supreme Council। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ Shad, Abdur Rahman. Ali Al-Murtaza. Kazi Publications; 1978 1st Edition. Mohiyuddin, Dr. Ata. Ali The Superman. Sh. Muhammad Ashraf Publishers; 1980 1st Edition. Lalljee, Yousuf N. Ali The Magnificent. Ansariyan Publications; January 1981 1st Edition.
- ↑ Sallaabee, Ali Muhammad। Ali ibn Abi Talib (volume 2)। পৃষ্ঠা 621। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ Madelung, Wilferd (১৯৯৭)। The Succession to Muhammad: A Study of the Early Caliphate। Cambridge University Press। আইএসবিএন 0-521-64696-0।
- ↑ Nasr 2006, পৃ. 38
- ↑ Campo 2009, পৃ. 676
- ↑ Tabataba'ei 1975, পৃ. 34
- ↑ Nasr, পৃ. 143–144
- ↑ ক খ Sallabi, Dr Ali M (২০১১)। Ali ibn Abi Talib (volume 1)। পৃষ্ঠা 52–53।
- ↑ Algar, H.। "Al-E Aba"। Encyclopædia Iranica। I/7। পৃষ্ঠা 742। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১৪।
- ↑ ক খ Ahl al-Bayt, Encyclopedia of Islam
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;:1
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Momen, Moojan (১৯৮৫)। An Introduction to Shiʻi Islam: The History and Doctrines of Twelver Shiʻism (ইংরেজি ভাষায়)। Yale University Press। পৃষ্ঠা ১২। আইএসবিএন 978-0-300-03531-5।
- ↑ ক খ গ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;:0
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Al-Tabataba'i, Muhammad H.; Ṭabāṭabāʼī, Muḥammad Ḥusayn; Tabataba'i, Muhammad Husayn; Al-Taba-Tabai, Muhammad-Husayn; Ṭabāṭabā'ī, Muḥammad Ḥusain al-; al-Ṭabāṭabāʼī, Muḥammad Ḥusayn; Ṭabāṭabā'ī, Sayyid Muḥammad Ḥusayn; Tabatabai, Seyyed Muhammad Husayn (১৯৭৫)। Shiʻite Islam (ইংরেজি ভাষায়)। State University of New York Press। পৃষ্ঠা ৪০। আইএসবিএন 978-0-87395-272-9।
- ↑ Madelung, Wilferd (১৯৯৭)। The Succession to Muhammad: A Study of the Early Caliphate (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা ২৬–২৭, ৩০–৪৩, ৩৫৬–৩৬০। আইএসবিএন 978-0-521-64696-3।
- ↑ The encyclopaedia of Islam. Volume I, Volume I, (English ভাষায়)। Leiden; London: E. J. Brill ; Luzac। ১৯৫৪। পৃষ্ঠা ৩৮১–৩৮৬। আইএসবিএন 978-90-04-08114-7। ওসিএলসি 495469456।
- ↑ Biographies of the Prophet's companions and their successors, Ṭabarī, translated by Ella Landau-Tasseron, pp. 37–40, Vol:XXXIX.
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ Afsaruddin ও Nasr 2023।
- ↑ ক খ গ ঘ Shah-Kazemi 2015b।
- ↑ Gleave 2008।
- ↑ ফয়সাল, ফেরদৌস (২০২৩-০৫-০৮)। "হজরত আলী (রা.)–র সাহসে এসে মিশেছে পাণ্ডিত্ব"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-২৪।
- ↑ লেখা (২০২১-০৫-১১)। "পুরুষদের মধ্যে প্রথম মুসলমান আলী ইবনে আবু তালিব (রা.)"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-২৪।
- ↑ Pratidin, Bangladesh (২০২০-১২-০৪)। "ইসলাম ধর্ম প্রচারে চার খলিফা"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-২৪।
- ↑ লেখা (২০২৩-১২-২১)। "শত্রুদের প্রতি আলী (রা.)-র সংযত প্রতিবাদ"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-২৪।
- ↑ Razwy, Sayed Ali Asgher। A Restatement of the History of Islam and Muslims। পৃষ্ঠা 274–276।
- ↑ Tahir-ul-Quadri, Muhammad। The Ghadir Declaration।
- ↑ রাজউই, সৈয়দ আলী আসগর। A Restatement of the History of Islam & Muslims। পৃষ্ঠা ৫৪–৫৫।
- ↑ Huart 2012a।
- ↑ Miskinzoda 2015, পৃ. 69।
- ↑ Miskinzoda 2015, পৃ. 76–7।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Veccia Vaglieri 2012a।
- ↑ ক খ গ ঘ Poonawala 1982।
- ↑ Shah-Kazemi 2019, পৃ. 46।
- ↑ Momen 1985, পৃ. 13।
- ↑ Shah-Kazemi 2014।
- ↑ Faizer 2006।
- ↑ Donner 2010, পৃ. 72–3।
- ↑ Arafat 1976।
- ↑ Momen 1985, পৃ. 13 – 14।
- ↑ ক খ Schmucker 2012।
- ↑ ক খ Madelung 1997, পৃ. 16।
- ↑ ক খ Osman 2015, পৃ. 110।
- ↑ Nasr et al. 2015, পৃ. 379।
- ↑ Haider 2014, পৃ. 36।
- ↑ McAuliffe 2023।
- ↑ Fedele 2018, পৃ. 56।
- ↑ Lalani 2006, পৃ. 29।
- ↑ Mavani 2013, পৃ. 72।
- ↑ Bill ও Williams 2002, পৃ. 29।
- ↑ Dakake 2007, পৃ. 34–9।
- ↑ Mavani 2013, পৃ. 79।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Amir-Moezzi 2014।
- ↑ Momen 1985, পৃ. 16।
- ↑ ক খ Mavani 2013, পৃ. 80।
- ↑ ক খ গ ঘ Veccia Vaglieri 2012b।
- ↑ Lalani 2000, পৃ. 70–71।
- ↑ Dakake 2007, পৃ. 34।
- ↑ Lalani 2000, পৃ. 71।
- ↑ Dakake 2007, পৃ. 34–7।
- ↑ Momen 1985, পৃ. 15।
- ↑ ক খ গ Veccia Vaglieri 2012d।
- ↑ Jones 2009।
- ↑ Mavani 2013, পৃ. 20।
- ↑ Dakake 2007, পৃ. 35।
- ↑ Lalani 2011।
- ↑ Dakake 2007, পৃ. 45।
- ↑ Mavani 2013, পৃ. 2।
- ↑ Dakake 2007, পৃ. 47।
- ↑ Jafri 1979, পৃ. 21।
- ↑ Mavani 2013, পৃ. 70।
- ↑ Dakake 2007, পৃ. 46।
- ↑ Dakake 2007, পৃ. 44–5।
- ↑ Lalani 2006, পৃ. 590।
- ↑ Madelung 1997, পৃ. 253।
- ↑ McHugo 2017, §2.IV।
- ↑ Dakake 2007, পৃ. 41।
- ↑ ক খ Afsaruddin 2013, পৃ. 51।
- ↑ ক খ গ ঘ Jafri 1979, পৃ. 39।
- ↑ Momen 1985, পৃ. 18।
- ↑ Madelung 1997, পৃ. 30–2।
- ↑ Jafri 1979, পৃ. 37।
- ↑ Madelung 1997, পৃ. 35।
- ↑ Madelung 1997, পৃ. 31–33।
- ↑ Momen 1985, পৃ. 18–9।
- ↑ Madelung 1997, পৃ. 36, 40।
- ↑ McHugo 2017, §1.III।
- ↑ Madelung 1997, পৃ. 5।
- ↑ Mavani 2013, পৃ. 34।
- ↑ Keaney 2021, §3.1।
- ↑ Walker 2014, পৃ. 3।
- ↑ Lecomte 2012।
- ↑ Shaban 1971, পৃ. 16।
- ↑ Black 1994, পৃ. 34 ( ইংরেজি ভাষায়)
- ↑ ক খ Tabatabaei 1979, পৃ. 192
- ↑ Kelsay 1993, পৃ. 92
- ↑ The encyclopaedia of Islam. Volume I, Volume I, (English ভাষায়)। Leiden; London: E. J. Brill ; Luzac। ১৯৫৪। পৃষ্ঠা ৩৮৫। আইএসবিএন 978-90-04-08114-7। ওসিএলসি 495469456।
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Muslim Jama'at, Ahmadiyya (২০০৯)। পাক্ষিক আহ্মদী - নব পর্যায় ৭১ বর্ষ | ১৩তম সংখ্যা | ১৫ই জানুয়ারি ২০০৯ইং | The Fortnightly Ahmadi - New Vol: 71 Issue: 13 Date: 15th January 2009। Ahmadiyya Muslim Jama'at, Bangladesh.।
- ইসহাক, ইবনে (১১ মে ২০২১)। "পুরুষদের মধ্যে প্রথম মুসলমান আলী ইবনে আবু তালিব (রা.)"। দৈনিক প্রথম আলো।
- Wellhausen Julius (১৯০১)। Die Religios Politischen Oppositionsparteien Im Alten Islam।
- Kenney, Jeffrey Thomas; Kenney, Jeffrey T. (২০০৬-১০-১২)। Muslim Rebels: Kharijites and the Politics of Extremism in Egypt (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press, USA। আইএসবিএন 978-0-19-513169-7।
- Wellhausen, J. (১৯২৭)। The Arab Kingdom And Its Fall। Osmania University, Digital Library Of India। By The University Of Calcutta.।
- "Supplications (Du`a) Hardback"। Muhammadi Trust (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৫-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৯।
- Esposito, John L.; Esposito, Director of the Center for Muslim-Christian Understanding John L. (২০০৩-০৫-১৫)। The Oxford Dictionary of Islam (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press, USA। আইএসবিএন 978-0-19-512559-7।
- Watt, William Montgomery (১৯৬১)। Muhammad: Prophet and Statesman (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-881078-0।
- Abdul-Rauf, Muhammad (১৯৯৬)। Imam Ali Ibn Abi Talib: The First Intellectual Muslim Thinker (ইংরেজি ভাষায়)। Al Saadawi Publications। আইএসবিএন 978-1-881963-49-3।
- Hadrat'Ali (১৯৯৬)। Living and Dying with Grace: Counsels of Hadrat Ali (ইংরেজি ভাষায়)। Shambhala। আইএসবিএন 978-1-57062-211-3।
- Crone, Patricia (২০০৫)। Medieval Islamic Political Thought (ইংরেজি ভাষায়)। Edinburgh University Press। আইএসবিএন 978-0-7486-2194-1।
- Jurdāq, Jūrj (১৯৮২)। The Voice of Human Justice (ইংরেজি ভাষায়)। Islamic Seminary। আইএসবিএন 978-0-941724-24-1।
- Kattānī, Sulaymān (১৯৮৩)। Imam ʻAlī Source of Light, Wisdom, and Might (ইংরেজি ভাষায়)। Muhammadi Trust of Great Britain and Northern Ireland। আইএসবিএন 978-0-9506986-6-3।
- Kattānī, Sulaymān (১৯৯১)। Imam ʻAlī: A Beacon of Courage (ইংরেজি ভাষায়)। Islamic Education Center। আইএসবিএন 978-0-9506986-6-3।
- Salim, Mahmoud (১৯৯৬)। The BATTLES of Badr and Uhud. Adapted from the Arabic by Amal Khatab (ইংরেজি ভাষায়)। Ta-Ha Publishers Limited। আইএসবিএন 978-1-897940-39-6।
- Lakhani, M. Ali; Shah-Kazemi, Reza; Lewisohn, Leonard (২০০৬)। The Sacred Foundations of Justice in Islam: The Teachings of ʻAlī Ibn Abī Ṭālib (ইংরেজি ভাষায়)। World Wisdom, Inc। আইএসবিএন 978-1-933316-26-0।
- Madelung, Wilferd (১৯৯৭)। The Succession to Muhammad: A Study of the Early Caliphate (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-64696-3।
- Muṭahharī, Murtaḍā (১৯৯৭)। Glimpses of the Nahj Al-Balaghah (ইংরেজি ভাষায়)। Department of Translation and Publication, Islamic Culture and Relations Organization। আইএসবিএন 978-964-472-071-0।
- "Polarization Around the Character of 'Ali ibn Abi Talib"। web.archive.org। ২০০৭-১০-১১। Archived from the original on ২০০৭-১০-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৯।
- Rogerson, Barnaby (২০১০-১১-০৪)। The Heirs Of The Prophet Muhammad: And the Roots of the Sunni-Shia Schism (ইংরেজি ভাষায়)। Little, Brown Book Group। আইএসবিএন 978-0-7481-2470-1।
- Rogerson, Barnaby (২০০৮)। The Heirs of Muhammad: Islam's First Century and the Origins of the Sunni-Shia Split (ইংরেজি ভাষায়)। Overlook Press। আইএসবিএন 978-1-59020-022-3।
- Shah-Kazemi, Reza (২০০৭-০৩-১৫)। Justice and Remembrance: Introducing the Spirituality of Imam Ali (ইংরেজি ভাষায়)। Bloomsbury Academic। আইএসবিএন 978-1-84511-526-5।
- Al-Tabataba'i, Muhammad H.; Ṭabāṭabāʼī, Muḥammad Ḥusayn; Tabataba'i, Muhammad Husayn; Al-Taba-Tabai, Muhammad-Husayn; Ṭabāṭabā'ī, Muḥammad Ḥusain al-; al-Ṭabāṭabāʼī, Muḥammad Ḥusayn; Ṭabāṭabā'ī, Sayyid Muḥammad Ḥusayn; Tabatabai, Seyyed Muhammad Husayn (১৯৭৫)। Shiʻite Islam (ইংরেজি ভাষায়)। State University of New York Press। আইএসবিএন 978-0-87395-272-9।
- Esposito, Ed (১৯৯৯)। The Oxford History of Islam (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press, USA। আইএসবিএন 978-0-19-510799-9।
- Hossein, Modarressi; Tabataba'i, Hossein Modarressi (২০০৩)। Tradition and Survival: A Bibliographical Survey of Early Shi'ite Literature (ইংরেজি ভাষায়)। Oneworld Publications। আইএসবিএন 978-1-85168-331-4।
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- "Encyclopaedia of Islam online"। Encyclopaedia of Islam online (English ভাষায়)। ২০০৭। আইএসএসএন 1573-3912। ওসিএলসি 219379457।
- Halm, Heinz (২০০৪)। Shiism। Internet Archive। Edinburgh : Edinburgh University Press। আইএসবিএন 978-0-7486-1888-0।
- F. E. Peters (২০০৩)। The monotheists। Internet Archive। Princeton University Press। আইএসবিএন 978-0-691-11460-6।
- Shaban, M. A. (১৯৭১)। Islamic history, a new interpretation। Internet Archive। Cambridge [Eng.] University Press। আইএসবিএন 978-0-521-08137-5।
- TĐabatĐabaơi, MuhĐammad HĐusayn (১৯৮৭)। The Qurơan in Islam : its impact and influence on the life of Muslims। Internet Archive। London : Zahra। আইএসবিএন 978-0-7103-0265-6।
- Lewinstein, Keith (২০০১)। "Review of The Succession to Muhammad: A Study of the Early Caliphate"। Journal of the American Oriental Society। 121 (2): 326–327। আইএসএসএন 0003-0279। ডিওআই:10.2307/606600।
- Newman, Andrew J. (১৯৯৯)। "Review of The Succession to Muhammad: A Study of the Early Caliphate"। Iranian Studies। 32 (3): 403–405। আইএসএসএন 0021-0862।
- Hinds, Martin (১৯৭১)। "Kûfan Political Alignments and their Background in the Mid-Seventh Century a.d."। International Journal of Middle East Studies (ইংরেজি ভাষায়)। 2 (4): 346–367। আইএসএসএন 1471-6380। ডিওআই:10.1017/S0020743800001306।
- Yarshater, Ehsan (১৯৯৭)। Encyclopedia Iranica (ইংরেজি ভাষায়)। Mazda Publishers, Incorporated। আইএসবিএন 978-1-56859-050-9।
- Meri, Josef W. (২০০৬)। Medieval Islamic Civilization: A-K, index (ইংরেজি ভাষায়)। Taylor & Francis। আইএসবিএন 978-0-415-96691-7।
- None (২০০৫)। Encyclopedia of religion। Internet Archive। Detroit : Macmillan Reference USA। আইএসবিএন 978-0-02-865733-2।
- The encyclopaedia of Islam. Volume I, Volume I, (English ভাষায়)। Leiden; London: E. J. Brill ; Luzac। ১৯৫৪। আইএসবিএন 978-90-04-08114-7। ওসিএলসি 495469456।
- Watt, W. Montgomery (২০১২-০৪-২৪)। "Abū Bakr"। Encyclopaedia of Islam, Second Edition (ইংরেজি ভাষায়)। Brill।
- Madelung, W. (২০১২-০৪-২৪)। "S̲h̲īʿa"। Encyclopaedia of Islam, Second Edition (ইংরেজি ভাষায়)। Brill।
- Gibb, Hamilton Alexander Rosskeen (১৯৫৪)। The Encyclopaedia of Islam (ইংরেজি ভাষায়)। Brill। আইএসবিএন 978-90-04-11211-7।
- Mosāheb, Ġolāmhosejn (২০০১)। Dājerat'ol-ma'āref-e fārsi: bachš-e awwal š-l. Ğ. 2 (ফার্সি ভাষায়)। Entešārāt-e Amir Kabir. Ketābhā-je Ğibi। আইএসবিএন 978-964-303-044-5।
- Daftary, Farhad (২০০৮-১২-০১)। "ʿAlids"। Encyclopaedia of Islam, THREE (ইংরেজি ভাষায়)। Brill।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- The Secret of Imam Ali's Force of Attraction
- ইউটিউবে Al-Nebras (The Lantern) - A film depicting various events and occurrences in the life of Imam Ali
- Ali ibn Abi Talib by I. K. Poonawala and E. Kohlberg in Encyclopædia Iranica
- Ali, article in Encyclopædia Britannica Online
- "হযরত আলী (রাঃ): বহুগুণে গুণান্বিত এক খলিফা"। ইতিবৃত্ত (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৬-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৯।
- Pratidin, Bangladesh (২০২০-০৯-০৪)। "হজরত আলী (রা.)-এর পরিবারে যত মর্মস্পর্শী ঘটনা | বাংলাদেশ প্রতিদিন"। Bangladesh Pratidin। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৯।
- "হযরত আলী (আ.)-এর গুণাবলী | Al Shia"। bn.al-shia.org। ২০২২-০৬-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৯।
- "আলী ইবন আবী তালিব (রাঃ)"। ইসলামিক অনলাইন মিডিয়া। ২০১৫-০৫-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৯।
- "আলী (আ.)-এর গোপনে দাফন"। alhassanain.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৯।
- "হযরত আলী (আ.)'র কয়েকটি বিস্ময়কর ক্ষমতা ও অলৌকিক জ্ঞান"। Parstoday। ২০১৭-০৬-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৯।
আলী কুরাইশ এর ক্যাডেট শাখা জন্ম: আনু. ৬০০ মৃত্যু: আনু. ২৮ জানুয়ারি ৬৬১
| ||
সুন্নি ইসলাম পদবীসমূহ | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী উসমান ইবন আফফান |
ইসলামের খলিফা ৪র্থ রাশেদীন ৬৫৬ |
উত্তরসূরী হাসান ইবনে আলী |
শিয়া ইসলামী পদবীসমূহ | ||
পূর্বসূরী মুহাম্মাদ শেষ নবী হিসেবে |
বারো ইমামজায়েদি ইমামকায়সানাইটস ইমামবাতিনিয়া ইসমাইলি ইমামগণ ৬৩২–৬৬১ |
উত্তরসূরী হাসান ইবনে আলী ইমাম হিসেবে |
Asās/Wāsihin মুস্তালি ইসমাইলিজম ইসমাইলি ৬৩২–৬৬১ | ||
নিজারি ইসমাইলি ইসমাইলি ইমামগণ ৬৩২–৬৬১ |
উত্তরসূরী হাসান ইবনে আলী মুস্তাউদা হিসেবে | |
উত্তরসূরী হোসাইন ইবনে আলী ইমাম হিসেবে | ||
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
পূর্বসূরী মুহাম্মদ |
— TITULAR — মুহাম্মাদের স্থলাভিষেক ৬৩২–৬৫৬ |
খেলাফতের নির্বাচন |
পূর্বসূরী উসমান ইবন আফফান |
খুলাফায়ে রাশেদীন ৬৫৬–৬৬১ |
উত্তরসূরী হাসান ইবনে আলী |
উপজাতীয় উপাধি | ||
পূর্বসূরী আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব |
বনু হাশিমের প্রধান ৬৫৩–৬৬১ |
উত্তরসূরী ? |
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |