মধু

ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি ভেষজ তরল

মধু হলো এক প্রকারের মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে[] এবং মৌচাকে সংরক্ষণ করে।[] এটি উচ্চ ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি ভেষজ তরল; এটি সুপেয়। বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুতিতে এর ব্যবহারে চিনির চেয়ে এর অনেক সুবিধা রয়েছে। এর বিশিষ্ট গন্ধের জন্য অনেকে চিনির চাইতে মধুকেই পছন্দ করে থাকেন। বাংলাদেশের সুন্দরবনের মধু স্বাদ, রং, হালকা সুগন্ধ এবং ঔষধিগুণাবলীর জন্য প্রসিদ্ধ। সুন্দরবনের বেশিরভাগ মধু কেওড়া গাছের ফুল থেকে উৎপন্ন। সুন্দরবনের মাওয়ালী সম্প্রদায়ের লোকেরা মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে এবং তা বিক্রয় করে জীবন নির্বাহ করে। মধুর অন্য একটি গুণ হলো এটি কখনো নষ্ট হয় না। হাজার বছরেও মধুর গুণাগুণ নষ্ট হয় না।[][]

একটি পাত্রে মধু, সাথে আমেরিকান বিস্কুট

রাসায়নিক উপাদান

সম্পাদনা

মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে। ফুলের পরাগের মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৫-১২ শতাংশ মন্টোজ। আরো থাকে ২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ এবং ১১ ভাগ এনজাইম। এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই। ১০০ গ্রাম মধুতে থাকে ২৮৮ ক্যালরি। মধুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, আয়োডিন, জিংক ও কপার সহ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান।

ভৌত বৈশিষ্ট্য

সম্পাদনা

বাংলাদেশের জাতীয় মধু বোর্ডের সংজ্ঞা অনুযায়ী "মধু হলো একটি বিশুদ্ধ পদার্থ যাতে পানি বা অন্য কোন মিষ্টকারক পদার্থ মিশ্রিত করা হয় নাই।"[] মধু চিনির চাইতে অনেক গুণ মিষ্টি। তরল মধু নষ্ট হয় না, কারণ এতে চিনির উচ্চ ঘনত্বের কারণে প্লাজমোলাইসিস প্রক্রিয়ায় ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। প্রাকৃতিক বায়ুবাহিত ইস্ট মধুতে সক্রিয় হতে পারে না, কারণ মধুতে পানির পরিমাণ খুব অল্প। প্রাকৃতিক, অপ্রক্রিয়াজাত মধুতে মাত্র ১৪% হতে ১৮% আর্দ্রতা থাকে। আর্দ্রতা মাত্রা ১৮% এর নিচে যতক্ষণ থাকে, ততক্ষণ মধুতে কোন জীবাণু বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। পাস্তুরাইয্‌ড মধুতে মধুর প্রাকৃতিক ঔষধি গুণাবলী হ্রাস পায়।

মানুকা হানি

সম্পাদনা

নিউজিল্যান্ডের মানুকা হানি বাজারে প্রাপ্য অন্য সকল মধুর চেয়ে বেশি ঔষধিগুণ সম্পন্ন গণ্য করা হয়। মানুকা নামক একপ্রকার ঝোপ জাতীয় উদ্ভিদের ফুল থেকে উৎপন্ন মধু "মানুকা হানি" নামে পরিচিত। এছাড়াও স্পেন দেশের ফরএভার বী হানি সবচেয়ে বিশুদ্ধ ও ঔষধিগুন সম্পন্ন। এটি বিশ্বের সেরা মধুর খেতাব অর্জন করেছে।[]

ব্যবহার

সম্পাদনা

প্রাচীন গ্রিসের খেলোয়াড়েরা মধু খেয়ে মাঠে নামতো; কারণ মধুতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফ্রুক্টোজগ্লুকোজ[][] যা যকৃতে গ্রাইকোজেনের রিজার্ভ গড়ে তোলে। রাতে ঘুমানোর আগে মধু খেলে মস্তিষ্কের ক্রিয়াক্ষমতা ভালো থাকে। নিয়মিত মধু পানে রোগ-বালাই হ্রাস পায় কেননা মধু মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ঠাণ্ডায় মধু ভালো কাজ করে; পেনসিলভেনিয়া স্টেট কলেজের পরীক্ষায় দেখা গেছে বাজারে যত ঔষধ পাওয়া যায় তার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর এক চামচ মধু। মধুর ভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা উচ্চ। মধু হজমে সাহায্য করে। পেটরোগা মানুষদের জন্য মধু বিশেষ উপকারী।[] প্রাচীন কাল থেকে গ্রিস ও মিশরে ক্ষত সারাইয়ে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ২০০৭-এ সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরীক্ষায় দেখা গেছে অধিকাংশ ক্ষত ও জখমের উপশমে মধু ডাক্তারী ড্রেসিং-এর চেয়েও বেশি কার্যকর। অগ্নিদগ্ধ ত্বকের জন্যও মধু খুব উপকারী।[১০]

মালয়েশিয়ার তুয়ালাং মধু (Tualang honey) স্ট্যাফ (Staph) রোধে এবং পেপটিক আলসার ও এইচ পিলরি (H. pylori)  ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস করতে পারে।

গুণাগুণ ও উপকারিতা

সম্পাদনা
  • শক্তি প্রদায়ী: মধু ভালো শক্তি প্রদায়ী খাদ্য। তাপ ও শক্তির ভালো উৎস। মধু দেহে তাপ ও শক্তি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে।
  • হজমে সহায়তা: এতে যে শর্করা থাকে, তা সহজেই হজম হয়। কারণ, এতে যে ডেক্সট্রিন থাকে, তা সরাসরি রক্তে প্রবেশ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ক্রিয়া করে। পেটরোগা মানুষের জন্য মধু বিশেষ উপকারী।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স। এটি ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ১ চা–চামচ খাঁটি মধু ভোরবেলা পান করলে কোষ্ঠবদ্ধতা এবং অম্লত্ব দূর হয়।
  • রক্তশূন্যতায়: মধু রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে বলে এটি রক্তশূন্যতায় বেশ ফলদায়ক। কারণ, এতে থাকে খুব বেশি পরিমাণে কপার, লৌহ ও ম্যাঙ্গানিজ।
  • ফুসফুসের যাবতীয় রোগ ও শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে: বলা হয়, ফুসফুসের যাবতীয় রোগে মধু উপকারী। যদি একজন অ্যাজমা (শ্বাসকষ্ট) রোগীর নাকের কাছে মধু ধরে শ্বাস টেনে নেওয়া হয়, তাহলে সে স্বাভাবিক এবং গভীরভাবে শ্বাস টেনে নিতে পারবে। অনেকে মনে করে, এক বছরের পুরোনো মধু শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য বেশ ভালো।
  • অনিদ্রায়: মধু অনিদ্রার ভালো ওষুধ। রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস পানির সঙ্গে দুই চা–চামচ মধু মিশিয়ে খেলে এটি গভীর ঘুম ও সম্মোহনের কাজ করে।
  • যৌন দুর্বলতায়: পুরুষদের মধ্যে যাঁদের যৌন দুর্বলতা রয়েছে, তাঁরা যদি প্রতিদিন মধু ও ছোলা মিশিয়ে খান, তাহলে বেশ উপকার পাবেন।
  • প্রশান্তিদায়ক পানীয়: হালকা গরম দুধের সঙ্গে মিশ্রিত মধু একটি প্রশান্তিদায়ক পানীয়।
  • মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য রক্ষায়: মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য রক্ষায় মধু ব্যবহৃত হয়। এটা দাঁতের ওপর ব্যবহার করলে দাঁতের ক্ষয়রোধ করে। দাঁতে পাথর জমাট বাঁধা রোধ করে এবং দাঁত পড়ে যাওয়াকে বিলম্বিত করে। মধু রক্তনালিকে সম্প্রসারিত করে দাঁতের মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষা করে। যদি মুখের ঘায়ের জন্য গর্ত হয়, এটি সেই গর্ত ভরাট করতে সাহায্য করে এবং সেখানে পুঁজ জমতে দেয় না। মধু মিশ্রিত পানি দিয়ে গড়গড়া করলে মাড়ির প্রদাহ দূর হয়।
  • পাকস্থলীর সুস্থতায়: মধু পাকস্থলীর কাজকে জোরালো করে এবং হজমের গোলমাল দূর করে। এর ব্যবহার হাইড্রোক্রলিক অ্যাসিড ক্ষরণ কমিয়ে দেয় বলে অরুচি, বমিভাব, বুকজ্বালা এগুলো দূর করা সম্ভব হয়।
  • তাপ উৎপাদনে: শীতের ঠান্ডায় এটি শরীরকে গরম রাখে। এক অথবা দুই চা–চামচ মধু এক কাপ ফুটানো পানির সঙ্গে খেলে শরীর ঝরঝরে ও তাজা থাকে।
  • পানিশূন্যতায়: ডায়রিয়া হলে এক লিটার পানিতে ৫০ মিলিলিটার মধু মিশিয়ে খেলে দেহে পানিশূন্যতা রোধ করা যায়।
  • দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে: চোখের জন্য ভালো। গাজরের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে।
  • রূপচর্চায়: মেয়েদের রূপচর্চার ক্ষেত্রে মাস্ক হিসেবে মধুর ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। মুখের ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধির জন্যও মধু ব্যবহৃত হয়।
  • ওজন কমাতে: মধুতে নেই কোনো চর্বি। পেট পরিষ্কার করে, চর্বি কমায়, ফলে ওজন কমে।
  • হজমে সহায়তা: মধু প্রাকৃতিকভাবেই মিষ্টি। তাই মধু সহজে হজম হয় এবং হজমে সহায়তা করে।
  • গলার স্বর: গলার স্বর সুন্দর ও মধুর করে।
  • তারুণ্য বজায় রাখতে: তারুণ্য বজায় রাখতে মধুর ভূমিকা অপরিহার্য। এটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের রং ও ত্বক সুন্দর করে। ত্বকের ভাঁজ পড়া ও বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে। শরীরের সামগ্রিক শক্তি ও তারুণ্য বাড়ায়।
  • হাড় ও দাঁত গঠনে: মধুর গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম দাঁত, হাড়, চুলের গোড়া শক্ত রাখে, নখের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে, ভঙ্গুরতা রোধ করে।
  • রক্তশূন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে: এতে রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, যা রক্তশূন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
  • আমাশয় ও পেটের পীড়া নিরাময়ে: পুরোনো আমাশয় এবং পেটের পীড়া নিরাময়সহ নানাবিধ জটিল রোগের উপকার করে থাকে।
  • হাঁপানি রোধে: আধা গ্রাম গুঁড়ো করা গোলমরিচের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু এবং আদা মেশান। দিনে অন্তত তিনবার এই মিশ্রণ খান। এটা হাঁপানি রোধে সহায়তা করে।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমায়: দুই চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ রসুনের রস মেশান। সকাল-সন্ধ্যা দুইবার এই মিশ্রণ খান। প্রতিনিয়ত এটার ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ কমায়। প্রতিদিন সকালে খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে খাওয়া উচিত।
  • রক্ত পরিষ্কারক: এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে এক বা দুই চামচ মধু ও এক চামচ লেবুর রস মেশান। পেট খালি করার আগে প্রতিদিন এই মিশ্রণ খান। এটা রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। তা ছাড়া রক্তনালিগুলোও পরিষ্কার করে।
  • রক্ত উৎপাদনে সহায়তা: রক্ত উৎপাদনকারী উপকরণ আয়রন রয়েছে মধুতে। আয়রন রক্তের উপাদান- আরবিসি, ডব্লিউবিসি, প্লাটিলেট কে অধিক কার্যকর ও শক্তিশালী করে।
  • হৃদরোগে: এক চামচ মৌরি গুঁড়োর সঙ্গে এক বা দুই চামচ মধুর মিশ্রণ হৃদ্রোগের টনিক হিসেবে কাজ করে। এটা হৃৎপেশিকে সবল করে এবং এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায়: মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায় এবং শরীরের ভেতরে এবং বাইরে যেকোনো ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতাও জোগান দেয়। মধুতে আছে একধরনের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধকারী উপাদান, যা অনাকাঙ্ক্ষিত সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।

সাধারণভাবে বলা যায়- মধু হলো লাখ লাখ মৌমাছির অক্লান্ত শ্রম আর সেবাব্রতী জীবনের দান। মৌমাছিরা ফুলে ফুলে বিচরণ করে ফুলের রেণু ও মিষ্টি রস সংগ্রহ করে পাকস্থলীতে রাখে। তারপর সেখানে মৌমাছির মুখ নিঃসৃত লালা মিশ্রিত হয়ে রাসায়নিক জটিল বিক্রিয়ায় মধু তৈরি হয়। এরপর মুখ হতে মৌচাকের প্রকোষ্ঠে জমা করা হয়।

খাদ্য ও ঋতুর বিভিন্নতার কারণে মধুর রঙ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ কারণেই কোন বিশেষ অঞ্চলে কোন বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া তাপমাত্রা,আদ্রতা ও সময়ের হেরফেরের কারণে মধু জমাট বাধতে পারে। কোনো কোনো সময় মধু ক্রিম আবার কখনও আবার ক্রিস্টালাইজড হতে পারে।

ধর্মীয় তাৎপর্য

সম্পাদনা

প্রাচীন গ্রীক ধর্মে, জিউস এবং অলিম্পাসের বারো দেবতার খাদ্য ছিল অমৃত এবং অমৃত আকারে মধু।[১১]

হিন্দু ধর্মে, মধু জীবনের পাঁচটি অমৃতের মধ্যে একটি (পঞ্চামৃত)। মন্দিরে, মধু অভিষেক নামক একটি রীতিতে দেবতাদের উপর মধু ঢেলে দেওয়া হয়। বেদ এবং অন্যান্য প্রাচীন সাহিত্যে মধুর ব্যবহার একটি মহাঔষধি এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।[১২]

আরবি পরিভাষায় মধুপোকা বা মৌমাছিকে ‘নাহল’(نحل) বলা হয়। পবিত্র কোরআনে এই নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা বিদ্যমান আছে। সূরা নাহল এর আয়াত ৬৯-এ আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন--

"তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার।"[১৩]

মধু হচ্ছে  ওষুধ এবং খাদ্য উভয়ই। মধুকে বলা হয়- বিররে এলাহি ও তিব্বে নব্বী। অর্থাৎ খোদায়ী চিকিৎসা ও নবী করীম (সা.)- এর বিধানের অন্তর্ভুক্ত। সূরা মুহাম্মদ- এর ১৫ আয়াতে আল্লাহ তায়ালার এরশাদ হচ্ছে- “জান্নাতে স্বচ্ছ মধুর নহর প্রবাহিত হবে।”[১৪]

খাদ্য ও ঋতুর বিভিন্নতার কারণে মধুর রঙ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ কারণেই কোন বিশেষ অঞ্চলে কোন বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয়।

মধুর পুষ্টিগুণ

সম্পাদনা
Honey
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
শক্তি১,২৭২ কিজু (৩০৪ kcal)
৮২.৪ g
চিনি৮২.১২ g
খাদ্য আঁশ০.২ g
০ g
০.৩ g
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
রিবোফ্লাভিন (বি)
৩%
০.০৩৮ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
১%
০.১২১ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
১%
০.০৬৮ মিগ্রা
ভিটামিন বি
২%
০.০২৪ মিগ্রা
ফোলেট (বি)
১%
২ μg
ভিটামিন সি
১%
০.৫ মিগ্রা
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
১%
৬ মিগ্রা
লৌহ
৩%
০.৪২ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম
১%
২ মিগ্রা
ফসফরাস
১%
৪ মিগ্রা
পটাশিয়াম
১%
৫২ মিগ্রা
সোডিয়াম
০%
৪ মিগ্রা
জিংক
২%
০.২২ মিগ্রা
অন্যান্য উপাদানপরিমাণ
পানি১৭.১০ g

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।

মধুতে রয়েছে ৪৫টিরও বেশি খাদ্যগুণ। তার মধ্যে কয়েকটি হলো:[১৫]

  1. মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ,
  2. ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ,
  3. ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ
  4. ৫ থেকে ১২ শতাংশ মন্টোজ
  5. ২২ শতাংশ অ্যামাইনো অ্যাসিড
  6. ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ
  7. ১১ শতাংশ এনকাইম
  8. ১০০ গ্রাম মধুতে থাকে ৩০৩ ক্যালরি।
  9. ভিটামিন বি১
  10. ভিটামিন বি২
  11. ভিটামিন বি৩
  12. ভিটামিন বি৫
  13. ভিটামিন বি৬
  14. আয়োডিন
  15. জিংক
  16. কপার
  17. অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান
  18. অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Crane, Eva (১৯৯১)। "Honey from honeybees and other insects"Ethology Ecology & Evolution (ইংরেজি ভাষায়)। 3 (sup1): 100–105। আইএসএসএন 0394-9370ডিওআই:10.1080/03949370.1991.10721919 
  2. Crane, E., Walker, P., & Day, R. (১৯৮৪)। Directory of important world honey sources। International Bee Research Association। আইএসবিএন 086098141X 
  3. Geiling, Natasha (২২ আগস্ট ২০১৩)। "The Science Behind Honey's Eternal Shelf Life"Smithsonian। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-২৮ 
  4. Prescott, Lansing; Harley, John P.; Klein, Donald A. (১৯৯৯)। Microbiology। Boston: WCB/McGraw-Hill। আইএসবিএন 0-697-35439-3 
  5. "জাতীয় মধু বোর্ড, ২০০৩"। ১০ আগস্ট ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০০৬ 
  6. "মানুকা মধু বিষয়ক তথ্যতীর্থ"। ২২ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১০ 
  7. National Honey Board. "Carbohydrates and the Sweetness of Honey" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ জুলাই ২০১১ তারিখে. Last accessed 1 June 2012.
  8. Oregon State University "What is the relative sweetness of different sugars and sugar substitutes?". Retrieved 1 June 2012.
  9. "Spoonful of honey boosts energy - The Times of India"। ১৫ জুলাই ২০১২। ১৫ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  10. "Kitchen honey better at healing burns than standard NHS treatments, say scientists" 
  11. Henrichs, Albert (১ এপ্রিল ১৯৮০)। Harvard Studies in Classical Philology (ইংরেজি ভাষায়)। Harvard University Press। আইএসবিএন 9780674379305 
  12. A Meaningful Story of Buddha, Elephant and Monkey ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ মার্চ ২০০৮ তারিখে by Marguerite Theophil, United Press International, 16 November 2006, accessed 9 August 2008
  13. কুরআন ১৬:৬৯
  14. কুরআন ৪৭:১৫
  15. "Honey Composition and Properties | Beesource Beekeeping" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৩ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা