কুরআনের কাহিনীর তালিকা
কুরআনে অনেক কিংবদন্তি, নীতিকথা বা লোককাহিনীর কিয়দাংশ উপস্থাপিত হয়েছে, যা কুরআনের আগেকার যুগের হিসেবে প্রায়শই ইহুদি ও খ্রিস্টান ঐতিহ্যের সাথে একই রকম ভাবে ফুটে উঠেছে।[১] অ্যালান ডান্ডেস, একজন লোকশাস্ত্রবিদ, কুরআনে তিনটি "লোককাহিনী" নোট করেছেন যা আর্নে-থম্পসন শ্রেণিবিন্যাসের লোককাহিনীর বর্ণনা-ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের ধরন অনুসারে রচিত। [২] পিটার জি. বিটেনহলজও কুরআনের কিংবদন্তিগুলোকে ইহুদি ও খ্রিস্টান কিংবদন্তিতে প্রাপ্ত কাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত বলে উল্লেখ করেছেন।[১]
ইহুদি কিংবদন্তি
সম্পাদনাকেইন এবং আবেল পাঠ
সম্পাদনাবেশ কয়েকটি আখ্যান ইহুদিদের মিদরাশ তানহুমার কিংবদন্তির উপর নির্ভর করে, সূরা ৫:৩১-তে আবেলের দেহকে কেইনের বর্ণনার মতো কবর দেয়ার কথা বলা হয়েছে।[৩][৪] সূরা ৫:৩২, ইহুদি মিশনাহ ঐতিহ্যের উপর নির্ভর করে কেইন এবং আবেলের গল্পের আইনি ও নৈতিক প্রয়োগগুলো নিয়ে আলোচনা করেছে এবং সানহেড্রিন ৪:৫-এ উদ্ধৃত হয়েছে:[৫]
Sanhedrin 4:5 ...if any man has caused a single life to perish from Israel, he is deemed by Scripture as if he had caused a whole world to perish; and anyone who saves a single soul from Israel, he is deemed by Scripture as if he had saved a whole world.[৬]
কুরআন ৫:৩২ এই কারণেই বনি ইসরাইলিদের এই বিধান দিলাম যে নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করার কারণ ব্যতীত যদি কেউ কাউকে হত্যা করে সে যেন দুনিয়ার সকল মানুষকেই হত্যা করল। যদি কেউ একটি প্রাণ রক্ষা করে সে যেন সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করলো। অতপর যদিও তাদের নিকট আমার রাসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণসহ এসেছিল এরপরও তাদের মধ্যে অনেকেই সীমালঙ্ঘনকারীই থেকে গেল।[৭]
আব্রাহাম কিংবদন্তি
সম্পাদনাসূরা ২১, যেখানে আব্রাহাম মূর্তিগুলোকে ধ্বংস করার কথা বলা হয়েছে, অতঃপর সৃষ্টিকর্তা তাকে আগুনে নিক্ষেপ থেকে উদ্ধার করেন, এটি মধ্যযুগের মিদরাশ রাব্বা কিংবদন্তিতে পাওয়া যায়।[৮]
সলোমন
সম্পাদনাপিঁপড়ার উপত্যকা
সম্পাদনাইহুদিদের কিংবদন্তি ৫: "একসময় তিনি ঘোরাফেরা করার সময় পিঁপড়ের উপত্যকা দিয়ে ভ্রমণ করছিলেন। তিনি শুনলেন যে সলোমনের সেনাবাহিনী কর্তৃক পদদলিত না হওয়ার জন্য সে অন্যান্য সকল পিঁপড়েদের সরে যেতে আদেশ করল। বাদশা থামলেন এবং তিনি যে পিপড়াটি কথা বলেছিল তাকে ডেকে পাঠালেন। তখন সে বলল যে সে পিঁপড়েদের রানী ছিল এবং তার সেই আদেশের কারণ জানাল। বাদশা সলোমন পিপীলিকার রানীর কাছে একটি প্রশ্ন রাখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাদশা যদি তাকে উপরে তুলে হাতে না নেন তবে সে উত্তর দিবে না বলে জানায়। তিনি রাজি হয়ে অতঃপর প্রশ্নটি করেন: ' সমগ্র পৃথিবীতে আমার চেয়ে বড় আর কেউ আছে কি?' 'হ্যাঁ,' পিপীলিকা বলল। 'কে?' পিঁপড়: 'আমিই।' সলোমন: 'এটা কীভাবে সম্ভব?' পিঁপড়া: 'আমি তোমার চেয়ে বড় না হলে ঈশ্বর আমাকে এখানে আপনার হাতে রাখতে দিতেন না?' হতাশ হয়ে সলোমন তাকে মাটিতে ফেলে দিলেন এবং বললেন: 'তুমি জান যে আমি কে? আমি দাউদের পুত্র সলোমন।' মোটেও ভীত নই, পিপড়াটি তার পার্থিব রাজাকে স্মরণ করিয়ে দিল এবং তাকে বিনয়ের সাথে উপদেশ দিল এবং বাদশা লজ্জা পেয়ে গেলেন।[৯]
কুরআন ২৭:১৯–১৯ "যখন তারা পিপীলিকা অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌছাল, তখন এক পিপীলিকা বলল হে পিপীলিকা দল, তোমরা তোমাদের গৃহে প্রবেশ কর। অন্যথায় সোলয়মান (সলোমন) ও তার বাহিনী অজ্ঞতাসরে তোমাদের পিষ্ট করে ফেলবে। তার কথা শুনে সুলায়মান মুচকি হাসলেন এবং বললেন হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও যাতে আমি তোমার সেই নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, যা তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে দান করেছ এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মপরায়ন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর।'"[১০]
খ্রিস্টান কিংবদন্তি
সম্পাদনাকুরআনে কিছু যাচাইহীন খ্রিস্টান কিংবদন্তিও রয়েছে।[১১]
সাত শয়নওয়ালা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Historia and Fabula: Myths and Legends in Historical Thought from Antiquity ... By Peter G. Bietenholz
- ↑ Dundes, Fables of the Ancients?, 2003: p.66
- ↑ Samuel A. Berman, Midrash Tanhuma-Yelammedenu (KTAV Publishing house, 1996) 31–32
- ↑ Gerald Friedlander, Pirḳe de-R. Eliezer, (The Bloch Publishing Company, 1916) 156
- ↑ Herbert Danby, The Mishnah: Translated from the Hebrew with Introduction and Brief Notes (Hendrickson Publishing, 2011) 388
- ↑ Sefaria: Sanhedrin 4:5
- ↑ ClearQuran: Surah 5
- ↑ Rabbi H. Freedman and Maurice Simon, Midrash Rabbah: Translated into English with Notes, Glossary, and Indices: Volume 1 – Rabba Genesis (Stephen Austin and Sons, LTD 1939) 310–311. http://archive.org/stream/RabbaGenesis/midrashrabbahgen027557mbp#page/n357/mode/2up
- ↑ SacredTexts: Legends of the Jews
- ↑ ClearQuran: Surah 27
- ↑ G. Luling asserts that a third of the Quran is of pre-Islamic Christian origins, see Uber den Urkoran, Erlangen, 1993, 1st Ed., 1973, p. 1.