অ্যাথিনা প্রাচীন গ্রিক ধর্ম ও পুরাণে জ্ঞান, সাহস, অণুপ্রেরণা, সভ্যতা, আইন ও ন্যায়বিচার, যুদ্ধকৌশল, গণিত, শক্তি, কৌশল, চারু ও কারুশিল্প এবং দক্ষতার দেবী ছিলেন। মিনার্ভা হচ্ছেন তার সমকক্ষ রোমান দেবী।

অ্যাথিনা
জ্ঞানের দেবী
ল্যুভরে অবস্থিত মাত্তেই অ্যাথিনা । খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে গ্রিক সংস্করণের আদলে খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দী খ্রিস্টাব্দের ১ম শতকে রোমানদের সংস্করণ। শিল্পী সেফিসোডোটোস বা ইউফ্রানোর।
আবাসমাউন্ট অলিম্পাস
প্রতীকপেঁচা, জলপাই বৃক্ষ, সাপ, বর্ম, শিরস্ত্রাণ, অ্যাজিস ,বর্শা, গরগোনিওন
ব্যক্তিগত তথ্য
মাতাপিতামেটিস, জিউস
সহোদরআর্টেমিস, আফ্রোদিতে, মিউস, গ্রেইস, আরেস, অ্যাপোলো, ডায়োনিসাস, হিব, হার্মিস, হেরাকেলস, হেলেন অফ ট্রয়, হেফেস্টাস, মিনস, পের্সেউস, পোরাস
রোমান সমকক্ষমিনার্ভা

গ্রিক পুরাণে অ্যাথিনাকে বীরপুরুষদের একজন বিচক্ষণ সঙ্গী হিসেবে দেখানো হয়েছে এবং তিনি বীরত্বপূর্ণ প্রচেষ্টার পৃষ্ঠপোষক দেবী। তিনি অ্যাথেন্স নগরের পৃষ্ঠপোষক কুমারী দেবী। তার সম্মানে অ্যাথেন্সবাসী নগরের অ্যাক্রোপলিসে(প্রাচীন গ্রিসের উচ্চভূমিতে নগরদুর্গ) পার্থেনন প্রতিষ্ঠা করে, অ্যাথেন্স নগরের নামকরণও তার নামানুসারে করা।

অ্যাথিনার পূজা-অর্চনা এতটাই অব্যাহত ছিল যে তার সম্পর্কে প্রচলিত প্রাচীন পুরাণ কাহিনীগুলো পুনর্গঠন করে পরিবর্তনশীল সংস্কৃতির উপযোগী করে তোলা হয়েছিল। নগরের রক্ষাকর্ত্রী হিসেবে তার ভূমিকা থেকে গ্রিক সাম্রাজ্যের অনেক মানুষ অ্যাথিনা পোলিয়াস ("শহরের অ্যাথিনা") হিসেবে তার আরাধনা করত (প্রাচীন গ্রিসে পোলিস বলতে নগররাষ্ট্র বুঝাতো)। যদিও অ্যাথেন্স নগর ও দেবী অ্যাথিনা কার্যত একই নাম বহন করে (দেবী অ্যাথিনা, নগর অ্যাথিনাই), তবে এটি জানা সম্ভব হয়নি এই দুটো শব্দের কোনটি থেকে অপরটির উৎপত্তি হয়েছে।আথিনার অভিশাপে মেডুসা তার রুপ হারায় এবং সর্বনাশি দানবি তে পরিনত হয়

অ্যাথিনার জন্ম ও জিউস কন্যা

সম্পাদনা
 
এই মার্বেল পাথরের মূর্তিতে এন্টিওকোস লিখে সই করা। এটি খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে অ্যাক্রোপলিসে দণ্ডায়মান আসল সংস্করণের কপি যেটি ফিডিয়াস ১ম খ্রিস্টপূর্বাব্দে তৈরি করেন।

সাধারণ বর্ণনায় অ্যাথিনাকে জিউসের কন্যা হিসাবে বলা হয়। এছাড়াও তার আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে তিনি জিউসের প্রথম কন্যা। যে অস্ত্রর জন্য তিনি বিখ্যাত তা তিনি

এবং জিউস দুজনেই ব্যবহার করেছিলেন।

দায়িত্ব

সম্পাদনা

অ্যাথেনাকে গ্রিক নগর সমূহের বিশেষ করে এথেন্সের প্রধান রক্ষক বলা হতো। তার নাম অনূসারেই এথেন্সের নামকরণ করা হয়। দেবীদের মধ্যে একমাত্র তিনিই কঠোরভাবে সতীত্ব রক্ষা করতেন।

প্যালাস অ্যাথিনা

সম্পাদনা

চিরকুমারী অ্যাথিনা প্যালাস অ্যাথিনা নামেও অভিহিত হয়ে থাকেন। কথিত আছে প্যালাস নামে তার এক প্রিয় শখী ছিল। একদিন খেলার সময় দুর্ঘটনাক্রমে তার হাতেই

প্যালাস নিহত হয়। শোকার্ত অ্যাথিনা নিহত শখীর স্মরণে নিজের নামের সাথে প্যালাস যুক্ত করে নেন। অন্য কাহীনিতে আছে, প্যালাস নামে এক টাইটানকে হত্যা

করার পর তিনি এই ঘটনার স্মারক হিসাবে নিযের নামের সাথে প্যালাস যুক্ত করে নেন।

জন্ম ইতিহাস

সম্পাদনা

অ্যাথিনা জিউসের প্রথম কন্যা। মেটিসের গর্ভস্থ সন্তান জিউসের উপর প্রাধান্য বিস্তার করবে- এই ভয়ে ভীত হয়ে জিউস গর্ভবতী মেটিসকে

গিলে ফেলেন। এর কিছুদিন পর জিউস মাথায় অত্যন্ত যন্ত্রণা বোধ করতে থাকেন। তঁর মনে হতে থাকে মাথা ভেদ করে কিছু একটা বের হয়ে আসতে চায়। দেব-কারি গর

হেফেস্টাস তখন কুড়ুল দিয়ে জিউসের মাথা ফাঁক করে দেন। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই পূর্ণযুবতী অ্যাথিনা রণরঙ্গিনী বেশে চতুর্দিক প্রকম্পিত করে আবির্ভুত হন।

ট্রয় যুদ্ধে অবস্থান

সম্পাদনা

'সুন্দরী শ্রেষ্ঠার প্রাপ্য' বাক্য খচিত স্বর্ণ আপেল প্যালাস অ্যাথিনাকে না দেয়ায় তিনি ট্রয় যুদ্ধে গ্রিক পক্ষ অবলম্বন করেন।

পৃষ্ঠপোষক

সম্পাদনা

অডিসিউস, জ্যাসন, অর্গোনেটদের তিনি প্রধান পৃষ্ঠপোষ্ক ছিলেন। অ্যাথিনার অভিশাপেই আরাকনি মাকড়সায় পরিণত হন।

রোমান পুরাণ

সম্পাদনা

রোমান পুরাণে অ্যাথেনাকে মিনার্ভা বলা হয়।

বারো অলিম্পিয়ান
জিউস | হেরা | পসেইডন | হেডিস | হেস্তিয়া | দিমিতির | আফ্রোদিতি | আথেনা | অ্যাপোলো | আর্তেমিস | আরেস | হেফাইস্তোস | হার্মিস | দিয়োনুসোস